বাবুল মিয়া ইসলামের বিধিবিধান পালন করে না। সে মনে করে, এসব নিরর্থক। এগুলোর মোটেও প্রয়োজন নেই। এমনকি সম্প্রতি সে গলায় একটি চেইনে বিধর্মীদের ক্রুশচিহ্ন ব্যবহার করে। অন্যদিকে মকবুল জোরপূর্বক ক্ষমতার বলে বিভিন্ন অনৈতিক কাজ করে থাকে। এলাকার মুরব্বি নাসিম মিয়া বলেন, “একদিন এ পৃথিবী ধ্বংস হয়ে যাবে। সকলকে আল্লাহর সামনে হাজির হয়ে দুনিয়ার সকল কাজকর্মের হিসাব দিতে হবে।”
চেয়ারম্যান গালিব সাহেব নির্বাচিত হওয়ার পরই কয়েক হাজার কাঠ ও ফলের চারা এলাকার প্রধান সড়কের আশপাশে রোপণ করে দেন। একই গ্রামের সবুর আলী নিজ আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধবদের প্রয়োজনে ব্যয় করার পাশাপাশি এলাকার অসহায় অভাবীদের সাহায্য করেন। তিনি ইয়াতিমদের তাড়িয়ে দেন না। তিনি হাশরের দিনকেও অস্বীকার করেন না। মাওলানা রফিক বিষয়টি জানার পর সবুর আলীকে বলেন, “আপনার কাজের জন্য মহান প্রভুর কাছে উত্তম প্রতিদান রয়েছে।”
নাসিমপুর গ্রামের একজন মুদি ব্যবসায়ী শহীদ মিয়া নামাযের সময় হলেই দোকান বন্ধ করে কর্মচারীদের নিয়ে মসজিদে হাজির হন। অপরদিকে হাসান অনেক ধন- সম্পদের মালিক। তিনি হিসাব ছাড়াই গরিব-মিসকিনদের সাহায্য-সহযোগিতা করেন। ইমাম সাহেব তার এ ধরনের দানের কথা শুনে তাকে বলেন, সম্পদশালী ব্যক্তিদের উচিত অবশ্যই আল্লাহর নির্ধারিত বিধান অনুযায়ী দান করা।
রাসেল ও রিয়াজ দুই বন্ধু। রাসেল একটি প্রাইভেট ফার্মে চাকরি করেন। তিনি তার নির্ধারিত বেতনে কোনো রকমে সংসার পরিচালনা করেন। অপরদিকে রিয়াজ সম্প্রতি গাজা, ইয়াবার ব্যবসায় করে বিলাসবহুল জীবনযাপন করছে। ঘটনাটি রিয়াজের পিতার দৃষ্টিগোচর হলে তিনি রিয়াজকে রাসুল (স.)-এর হাদিস পাঠ করে শোনান, “যে শরীর অবৈধ অর্জনে গঠিত, তা জাহান্নামের ইন্ধন হবে।”
আজমল সাহেব প্রতিবছরের মতো এ বছরও নির্দিষ্ট মাসে রাতের শেষ প্রহরে কিছু খেয়ে সারাদিন অনাহারে থাকেন। তবে অফিসে তার ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালনে গড়িমসি করেন। তার ছোট ভাই আলম ব্যাংকে জমাকৃত ১০,০০,০০০ (দশ লক্ষ) টাকা থেকে বছরান্তে ১৫,০০০ (পনেরো হাজার) টাকা গরিব-দুঃখী ও অসহায়দের মাঝে বিলিয়ে দেন। ঘটনাক্রমে মাওলানা আকমল হোসেন উপলব্ধি করে বলেন, জমাকৃত সম্পদ শরিয়তের হুকুম অনুযায়ী দান না করলে সম্পূর্ণ দান নিষ্ফল হবে।
নাইমুল একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে গণিত বিষয় নিয়ে অধ্যয়ন করেন। ছাত্রাবাসে বন্ধুদের সাথে আলোচনান্তে তার বন্ধু হাসিব তাকে অযু ও সালাতের নিয়মকানুন জিজ্ঞাসা করলে তিনি জানেন না বলে উত্তর দেন। একই গ্রামের আবু হানিফ তার সাংসারিক কাজে সহযোগিতার জন্য রাফসান নামক একজন যুবককে নির্ধারিত বেতনে নিয়োগ দেন। মাস শেষে সঠিকভাবে বেতন পরিশোধের পাশাপাশি তার কাজে আবু হানিফ নিজেও সহযোগিতা করেন।
দশম শ্রেণির ছাত্র আরিফ সম্প্রতি দেশজুড়ে ছড়িয়ে পড়া ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হয়। বন্ধু হাসিব চিকিৎসার জন্য কিছু টাকা দিবে বলে কথা দেয়। কিন্তু আরিফ বারবার ফোন করলেও হাসিব রিসিভ না করে এড়িয়ে যায়। অন্যদিকে তাজুল তার স্ত্রীর একটি স্বর্ণের চেইন প্রতিবেশী মিছবাহের কাছে জমা রাখে। কিছুদিন পর তাজুল চেইনটি ফেরত চাইলে মিছবাহ নির্ধারিত সময় ফেরত দেয় ।
জনাব নেছার উদ্দিন জেলা ভূমি অফিসের কর্মকর্তা। অফিসে যাওয়ার পথে লক্ষ করেন, জীর্ণ-শীর্ণ পোশাক পরিহিত এক বৃদ্ধকে গাড়ির ভাড়া দিতে না পারায় কন্ডাক্টর গালমন্দ করছে। তিনি নিজ পকেট থেকে ভাড়া পরিশোধ করেন, এমনকি স্টেশনে পৌঁছে তাকে একটি পোশাক কিনে দেন। অপরদিকে তার বন্ধু ওয়াসিম পিতার মৃত্যুর পর সংসারের ভার তার কাঁধে অর্পিত হয়। ভাইবোন আত্মীয়স্বজনের কল্যাণে একজন নিঃস্বার্থ অভিভাবক হিসেবে দায়িত্ব পালন করার পাশাপাশি সামাজিক কল্যাণমূলক কাজেও তিনি ভূমিকা রাখেন ।
মধুপুর গ্রামের বাসিন্দা রুহুল আমিনের একমাত্র সন্তান আঃ রহমান ছয় বছর বয়সে পবিত্র কুরআন মুখস্থ করেন। ১৬ বছর বয়সে রাসুলের (স.) অসংখ্য হাদিস হৃদয়ঙ্গম করেন। পরবর্তীতে রাসুলের (স.) অসংখ্য বিশুদ্ধ হাদিসের সমন্বয়ে একটি গ্রন্থ রচনা করেন। একই গ্রামের চাটলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের বিজ্ঞান শিক্ষক শ্রেণিকক্ষে বিজ্ঞানের কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা যেমন— দ্রবণ, পরিস্রাবণ, লোহার মরিচা রোধক ইত্যাদি বিষয়ে সফলভাবে সম্পন্ন করেন। বিষয়টি প্রধান শিক্ষকের দৃষ্টিগোচর হলে তিনি বলেন, এজন্যই মধ্যযুগের একজন মুসলিম মনীষীকে এ শাস্ত্রের জনক বলা হয়।
পৌর মেয়র সাদিকুর রহমান নির্বাচিত হওয়ার পরই এলাকার জনগণের সম্মুখে এক যুগান্তকারী বক্তৃতা দিয়ে বলেন, তোমরা সকলেই ইসলামের ওপর প্রতিষ্ঠিত থাকবে। সর্বদা অন্যের জমাকৃত সম্পদ নিরাপদে রাখবে। অন্যদিকে তার বন্ধু কাউন্সিলর শাহাদত অত্যন্ত নিষ্ঠাবান এবং সর্বদা সত্যের ওপর অটল। সত্যকে মিথ্যার সাথে মিশ্রিত করেন না । এমনকি স্বীয়পুত্র নেশাগ্রস্ত হওয়ায় নিজ হাতেই তার বিচার করেন।