জনাব ইমরান একজন সমাজসেবক। ইউপি চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পেয়ে তিনি নিজ ইউনিয়নে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করলেন। তার পুত্র একদিন নেশাজাতীয় দ্রব্য সেবন করলে তিনি তাকে জনসম্মুখে বেত্রাঘাত করলেন। তার আদর্শে লালিত তার এক ছোট ভাই জনাব ইশতি একজন ধনী মুসলিম। তিনি জনসাধারণের কষ্ট সহ্য করতে না পেরে এলাকায় ২০টি গভীর নলকূপ তৈরি করে পানির সুব্যবস্থা করে দেন। কোনো এক সময় এলাকায় দুর্ভিক্ষ দেখা দিলে তিনি ত্রাণসামগ্রী দিয়ে সাহায্য করে থাকেন। জনাব ইশতির কর্মকাণ্ড দেখে প্রবীণ অধিবাসী জনাব জাকারিয়া মুসলিম জাহানের খলিফাগণের কথা স্মরণ করে বলেন, এমন নেতার আগমন কিয়ামত পর্যন্ত ঘটতে থাকুক।
আসিফ দ্রুত বাড়ি ফেরার জন্য দ্বিগুণ ভাড়া দিয়ে রংপুর হতে সৈয়দপুরগামী বিরতিহীন গাড়িতে উঠেন কিন্তু গাড়ির চালক রাসেল বেশি টাকার আশায় তার কথা রক্ষা না করে বিভিন্ন স্থানে থেমে যাত্রী উঠায়। ক্ষুব্ধ হয়ে সাহেদ নামে একজন যাত্রী পথেই নামতে গিয়ে মাথায় আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে অজ্ঞান হয়ে পড়লে অন্য একজন পথযাত্রী জনাব জাহিদ তাকে দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি করে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা শেষে তাকে বাড়িতে পৌঁছে দিলেন। তার মা ঘটনাটি শুনে বললেন, মানুষ যতক্ষণ অন্যের সাহায্য করবেন, আল্লাহ ততক্ষণ তার প্রতি রহমত বর্ষণ করতে থাকবেন।
কারিমা ও ডেইজি দুই বোন। ডেইজির পোশাকের দিকে তাকিয়ে একদল যুবক তাকে উত্ত্যক্ত করে। এমতাবস্থায় তার বোন কারিমা বলে তোমার পোশাক পরিবর্তন করে চলাফেরা করা দরকার। তখন ডেইজি বলে আমি সেকেলে পোশাক পরতে পছন্দ করি না। তার মা তাদের দু'বোনের এমন পরিস্থিতি দেখে বলল, আল্লাহ তায়ালা পর্দার আয়াতের মাধ্যমে নারী-পুরুষের পোশাকের একটি সীমানা নির্ধারণ করে দিয়েছেন। পাশাপাশি অপচয়কারীকে আল্লাহ শয়তানের ভাই বলে অ্যাখ্যা দিয়েছেন ।
জনাব 'ক' একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা। তিনি অফিসের কাজকর্ম করতে গিয়ে অতিরিক্ত টাকা লোকদের কাছ থেকে নেন। তার স্ত্রী সাবিহা তাকে এসব টাকা নিতে নিষেধ করলে তিনি বলেন, এ টাকা বৈধ। কারণ আমি দ্রুত তাদের কাজ করে দিয়ে থাকি। সাবিহার কোনো সন্তান না থাকায় সে মিরপুর মাজারে গিয়ে পীর বাবার কাছে সন্তান চাইল । তার স্বামী বলল, পীর বাবার সন্তান দেওয়ার ক্ষমতা নেই । তুমি • তো আল্লাহর কাছে দোয়া করতে পারতে। আমাদের সবকিছু তাঁর হাতে।
জনাব 'ক'-এর বাড়িতে তার মেয়ের শ্বশুর জনাব 'খ' বেড়াতে আসল। যুহরের সালাত তারা দুজনে জামাতের সাথে মসজিদে আদায় করে বের হলে পথে কিছু *ভিক্ষুকের সাথে দেখা হলো। তাদের কাছে ভিক্ষা চাইলে জনাব 'খ' ধমক দিয়ে তাড়িয়ে দিল। বাড়িতে ফিরে জনাব 'ক' জানতে পারল রান্না করার মতো লবণ ঘরে নেই। তিনি তার স্ত্রীকে প্রতিবেশী 'গ'-এর বাড়ি থেকে কিছু লবণ ধার চাইতে বলেন। জনাব 'গ'-এর স্ত্রী লবণ দিতে অস্বীকার করল। জনাব 'ক' বিষয়টি শুনে 'গ'-এর স্ত্রীকে ধিক্কার দিয়ে বললেন, তার জন্য পরকালে কঠিন শাস্তির ব্যবস্থা রয়েছে।
জনাব 'ক' একটি কোম্পানিতে কম্পিউটার অপারেটরের চাকরি করেন। টাকার বিনিময়ে সে অফিসের প্রয়োজনীয় ডাটা অন্যত্র বিক্রয় করে ফেললেন। এতে কোম্পানিটি অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। একদিন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা 'ক'-এর নিকট প্রয়োজনীয় তথ্য চাইলে সে দিতে পারল না। তখন একই অফিসের করণিক, জনাব “খ” তার কাছে রাখা ফাইল থেকে উক্ত তথ্যের ফটোকপি বের করে দিলেন। এতে তার প্রতি সন্তুষ্ট হয়ে কর্তৃপক্ষ তার জন্য একটি উৎসাহ ভাতা ঘোষণা করলেন। পাশাপাশি জনাব 'ক'-কে চাকরি হতে অব্যাহতি দিয়ে দিলেন।
জনাব 'ক' একজন ব্যবসায়ী। প্রতি বছরের ন্যায় এবারও রমযান মাসে এক হাজার পিস শাড়ি ও এক হাজার পিস লুঙ্গি ক্রয় করে গরিবদের মাঝে বিতরণ করে তার আর্থিক ইবাদত পালন করলেন। পাশাপাশি তার ছোট ভাই জনাব 'খ' এর ওপর হজ ফরজ হলে তিনি হজ বাবদ খরচ হিসাব করে গরিব-মিসকিনকে দান করলেন। তিনি মনে করেন হজ না করে ঐ অর্থ গরিব-মিসকিনকে দান করলেই হজের সওয়াব পাওয়া যাবে।
সালাম ও কালাম দু'বন্ধু কক্সবাজারে বেড়াতে যায়। সমুদ্র সৈকতে অবস্থান করার সময় তাদের চোখের সামনে একজন পর্যটক মৃত্যুবরণ করে। এ দৃশ্য দেখে সালাম বলে, যারা স্রষ্টাসহ কতিপয় বিষয়ের ওপর আস্থা রেখে মৃত্যুবরণ করে তারা জান্নাতি । একথা শোনার পর কালাম বলে, আমরা যে দ্বীনের বিধিবিধান পালন করি তা সেকেলে হয়েছে। আমাদের গ্রামের 'ক' নামক পীর বাবাই শেষ জামানার দ্বীনের পথ প্রদর্শক । তিনিই সুপারিশ করে আমাদেরকে জান্নাতে নিবেন ।
জনাব লিমন একজন বিত্তশালী ব্যক্তি। তিনি জনাব নোমানের ওপর অনেক অত্যাচার করেন। এমন কি তার অত্যাচারের কারণে নোমান নিজ এলাকা ছেড়ে অন্যত্র চলে যেতে বাধ্য হয়। পরবর্তীতে জনাব নোমান সুযোগ পাওয়ার পরেও তার প্রতিশোধ গ্রহণ করেননি। আর তাঁর ছোট ভাই জনাব মানিক ইউপি চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার পরও সাধারণ মানুষের মতো জীবনযাপন করেন । নিজের কাজ নিজ হাতে সম্পাদন করেন।
মি. কাশেম শুক্রবার সকালে কাওরান বাজারে বাজার করতে যান। তিনি একদল যুবককে জটলা করতে দেখেন। যুবকরা হঠাৎ হাত বোমা নিক্ষেপ করে তাণ্ডবলীলা চালায়। মুহুর্তের মধ্যে লোকজন পালিয়ে গেলে তারা দোকানের মালপত্র, টাকা-পয়সা নিয়ে পালিয়ে যায়। জনাব কাশেমের স্ত্রী জামিলা একজন নামাজি মহিলা। তিনি নামায, রোযা পর্দা করেন। কিন্তু তার বাড়িতে থাকা কাজের মেয়ে সালমাকে ঠিকমতো খেতে দেয় না। পাশাপাশি মাসিক বেতনও ঠিকমতো পরিশোধ করেন না। ফলে উভয়ের মধ্যে দূরত্ব তৈরি হয়।