অজয়নগর ও বিজয়নগর পাশাপাশি অবস্থিত দুটি গ্রাম। শাহাদৎ সাহেব অজয়নগর গ্রামের সবচেয়ে প্রভাবশালী ব্যক্তি, অন্যদিকে আমিন সাহেব বিজয়নগরের একজন ধনাঢ্য ব্যবসায়ী। দুইজনেরই শক্তিশালী লাঠিয়াল বাহিনী আছে, যারা ছোটখাট বিষয় নিয়ে দ্বন্দ্ব ও সংঘাতে জড়িয়ে পড়ে। কিছুদিন আগে শাহাদৎ সাহেবের এলাকা থেকে আমিন সাহেবের লোকজন শস্য ও গবাদি পশু জোর করে নিয়ে যায়। শাহাদৎ সাহেব আমিন সাহেবের কাছে এর বিচার চান। আমিন সাহেব তাতে কর্ণপাত করেননি। এতে শাহাদৎ সাহেব রাগান্বিত হয়ে আমিন সাহেবের এলাকায় হামলা চালায়। আমিন সাহেব তা প্রতিহত করতে গিয়ে পরাজিত হন এবং তিনি নিজেও প্রাণ হারান।
অনলাইন শপিং এর জনপ্রিয়তা দিন দিন বেড়েই চলছে মানুষের ব্যস্ততা ও কর্মপরিধি বাড়তে থাকায় তারা আজ বাজারে যাবার পর্যাপ্ত সময় পাচ্ছে না। তাছাড়া প্রতিটি পণ্যের দাম নির্ধারিত থাকায়, সঠিক ওজন ও পণ্যের গুণগত মানের নিশ্চয়তা বিধান করায় এ শপিং ব্যবস্থার উপর ক্রেতাদের আস্থা ও বিশ্বাস বৃদ্ধি পাচ্ছে। পণ্যের সরবরাহ নির্বিঘ্ন, উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা, দ্রব্য সামগ্রীর বিপুল সমাহার ও বৈচিত্র্য থাকায় অনলাইন শপিং মানুষের সময় ও অর্থ দুটোই সাশ্রয় করছে।
উচ্চাভিলাষী জমিদার প্রবাল রায়ের অত্যাচার ও কঠোর কর আদায় নীতির কারণে সাধারণ প্রজাগণ বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে যায়। ব্যবসায়ীরা ব্যবসা বন্ধ করে দেয়, কৃষক কৃষিকাজ ফেলে পালিয়ে যায়। বিদ্রোহ দমন করতে যেয়ে তার মৃত্যু হয়। গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের অনুরোধে চাচাত ভাই শ্যামল রায় নিজ ইচ্ছার বিরুদ্ধে জমিদারির দায়িত্ব নেন। তিনি জমিদারের প্রতি প্রজাদের আস্থা ফিরিয়ে আনার জন্য অনেক জনকল্যাণকর কাজ করেন। তিনি সাধারণ প্রজার বকেয়া কর মাফ করে দেন। আবার ঋণ প্রদান করেন। তবে অধিক হারে ঋণ প্রদান ও বেহিসেবি দান খয়রাতের ফলে রাজকোষে প্রচণ্ড অর্থ ঘাটতি দেখা দেয়। ফলে জমিদারির দূরবস্থার জন্য তাকে দায়ী করা হয়।
হায়দার গ্রুপের স্বত্বাধিকারী আলী হায়দার উত্তরাধিকারসূত্রে বিশাল ধন-সম্পদ ও ক্ষমতার অধিকারী হন। তিনি পিতার মত সৌখিন, রুচিশীল ও স্থাপত্যের প্রতি দুর্বল ছিলেন। তিনি বসবাসের জন্য একটি বিলাসবহুল বাড়ি তৈরি করেন। অফিসে বসার জন্য একটি মণিমুক্তা খচিত চেয়ার তৈরি করেন । তিনি তার স্ত্রীকে খুব ভালোবাসতেন। সন্তান জন্ম দিতে গিয়ে তার মৃত্যু হয়। শোকাহত আলী হায়দার তার প্রিয়তমা স্ত্রীর স্মৃতিকে অমর করে রাখার জন্য অনেক টাকা খরচ করে একটি সমাধি সৌধ নির্মাণ করেন। বিশাল ধন-সম্পদের মালিক হয়েও সন্তানদের সংঘাতের কারণে তার শেষ জীবন সুখের হয়নি।
সুলতান সুলেমান সিংহাসনে আরোহণ করে রাজ্য শাসনে পুরাতন ধ্যান-ধারণার সংস্কার করেন। তিনি প্রশাসন, বিচার ও সৈন্য বাহিনীর জন্য আলাদা বিভাগ ও পদ সৃষ্টি করেন। তিনি প্রত্যেকের পদ মর্যাদা অনুযায়ী ক্ষমতা ও অবস্থান নির্ধারণ করে দেন। এতে উচ্চ রাজ কর্মকর্তাগণের মাঝে মর্যাদার বিরোধ নিরসন হয়। ফলে সাম্রাজ্য শাসনে শৃঙ্খলা ফিরে আসে। তবে তার এ ব্যবস্থা ত্রুটিমুক্ত ছিল না।
পবিত্র হজ পালনের জন্য জনাব হারুন সাহেব সৌদি আরব গমন করেন। একজন ধর্মপ্রাণ মুসলমান হিসেবে সেদেশের মানুষের ধর্মীয় অনুশাসন ও আচার-আচরণ তিনি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করেন। দীর্ঘদিন সেদেশে অবস্থান করে তিনি নিজ দেশে ফিরে আসেন। স্বদেশে ফিরে এসে দেখেন, মানুষ নানাবিধ ধর্মীয় গোঁড়ামি ও কুসংস্কারে লিপ্ত। এক শ্রেণির মানুষ মাজারে গিয়ে মানত করছে, সেজদা করছে, পিরের মুরিদ হয়ে পরস্পর হানাহানিতে লিপ্ত আছে। এহেন অনৈসলামিক কর্মকাণ্ড তাকে মর্মাহত করে । তিনি ঐ সকল বিপথগামী মুসলমানদের ইসলামের মূলধারায় ফিরিয়ে আনার জন্য আত্মনিয়োগ করেন। এর ফলে। মানুষের মধ্যে ইতিবাচক পরিবর্তন আসে।
চাকলা রোশনাবাদ পরগনার রাজা মানিক্য বাহাদুর শাসন পরিচালনায় নানাবিধ অসুবিধায় সম্মুখীন হন। সমতলে সাধারণ বাঙালি, কৃষক প্রজা, পাহাড়ে ত্রিপুরাসহ অন্যান্য ক্ষুদ্র উপজাতি প্রজার বসবাস। একদিকে হিন্দু, মুসলিম ও পাহাড়িদের ধর্মীয় বিরোধ, অন্যদিকে স্বাধীনতাকামী প্রজার জমিদারি প্রথা বিরোধী হিংসাত্মক আন্দোলন, তাকে ব্যতিব্যস্ত করে ফেলে। জমিদার বিরোধী আন্দোলন প্রশমনের জন্য তিনি কৌশলে প্রজাদের ধর্মীয় বিরোধে প্রণোদনা দেন। এতে ধর্মীয় বিদ্বেষ প্রকট হলে, তিনি পরগণাকে দুইভাগ করার সিদ্ধান্ত নেন। একদল মানুষ তার পরগনা বিভক্তিকে সমর্থন করলেও আরেক দল এর তীব্র প্রতিবাদ করে। পরিশেষে তিনি পরগনা ভাগের সিদ্ধান্ত বাতিল করেন।
পাহাড়পুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পদটি দক্ষিণ অঞ্চলের অধিকারে ছিল। এর ফলে উন্নয়নমূলক কাজ উত্তরাখাল থেকে দক্ষিণাঞ্চলে বেশি হয়েছে। স্কুল, ডাকঘর, কমিউনিটি সেন্টার, খেলার মাঠ, রাস্তাঘাট, বাজার দক্ষিণভাগেই স্থাপিত হয়। এলাকার লোকজনকে যে কোনো প্রয়োজনে দক্ষিণাঞ্চলের ওপর নির্ভর করতে হয়। এতে দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ প্রভাবশালী ও স্বেচ্ছাচারী হয়ে ওঠে। তাদের প্রভাব প্রতিপত্তি ও স্বেচ্ছাচারিতায় উত্তরাঞ্চলের মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে ওঠে। তারা বুঝতে পারল চেয়ারম্যান পদ উত্তরাঞ্চলের দখলে না আসা পর্যন্ত দক্ষিণাঞ্চলের অত্যাচার হতে মুক্তি পাওয়া সম্ভব নয়। ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে উত্তরের সকলে জোটবদ্ধ হয়ে উত্তরের প্রার্থীকে ভোট দিল। ফলে উত্তরের প্রার্থী বিপুল ভোটে নির্বাচিত হলো। কিন্তু নানা কৌশলে দক্ষিণের লোকজন নব নির্বাচিত চেয়ারম্যানকে তার পদে বসতে বাধা দিল।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অবিসংবাদিত নেতা প্রেসিডেন্ট আব্রাহাম লিংকন দাস প্রথা বিলোপ এবং গণতন্ত্রের নবজাগরণের উদ্দেশ্যে গ্যাটিসবার্গ নামক স্থানে এক যুগান্তকারী ভাষণ প্রদান করেন যা পৃথিবীর ইতিহাসে 'গ্যাটিসবার্গ এড্রেস' নামে খ্যাত। তার এ ভাষণের ব্যাপ্তি ছিল মাত্র তিন মিনিট। ভাষণে তিনি গণতন্ত্র, শোষিত মানুষের মুক্তি ও অধিকারের কথা বলেছেন। পৃথিবীতে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা এবং দাস প্রথা বিলোপে এটি একটি মাইলফলক।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পৈরতলা রেল ব্রিজের পাশে একটি গণকবর আছে। এটি সম্পর্কে একজন প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, কোদাল দিয়ে মাটি খুঁড়তেই বের হয়ে আসল মানুষের হাড়-গোর আর পঁচা লাশ। পাশাপাশি দুইটা বিশাল গর্ত। আনুমানিক তিন চারশ মানুষের মরদেহ এখানে মাটি চাপা দেওয়া হয়েছে। এগুলো স্বাধীনতা সংগ্রামী ও নিরপরাধ মানুষের সমাধি। হানাদার বাহিনী এবং রাজাকার আল বদরদের হাতে তারা শহিদ হয়েছেন।