লাবু কৃষি বিষয়ক মাসিক পত্রিকা “কৃষি কথা"-র সদস্য। এই পত্রিকার একটি প্রতিবেদন পড়ে জানতে পারে যে, বর্ষা মৌসুমে বিশেষ এক ধরনের মাঠ ফসল ও মাছের সমন্বিত চাষ করা যায়। যেসব জমিতে পানির স্থায়িত্ব ৩-৪ মাস এবং পানির গভীরতা ১০-১২ সেমি হয়, সেসব জমিতে এই ফসল ও মাছের সমন্বিত চাষ করা যায়। সে মৎস্য কর্মকর্তার কাছ থেকে জমি তৈরি ও কয়েকটি ব্যবস্থাপনার পরামর্শ গ্রহণ করে বেশ লাভবান হয়।
মনি তার এক একর জমির পুকুরে যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে একটি হাঁসের খামার গড়ে তোলে। কিছুদিন পর দেখল যে, ২/১টি হাঁসের নাক মুখ দিয়ে তরল পদার্থ বের হচ্ছে এবং হাঁসগুলো আলো দেখে ভয় পাচ্ছে। সে দ্রুত স্থানীয় প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করে এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্ৰহণ করে। প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা তার খামারে আদর্শ প্রতিপালন পদ্ধতি অনুসরণ করতে বলেন
মামুন ডেইরি ফার্ম করে আত্মকর্মসংস্থানের প্রত্যয় ব্যক্ত করে। সে প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার পরামর্শে সংকর জাতের গাভি পালনের সিদ্ধান্ত নেয়। এই জাতের গাভির বর্ণ ছোট বড় সাদাকালো রঙে মেশানো। ভালই চলছিল মামুনের ডেইরি ফার্ম। কিন্তু কিছুদিন পর তার খামারের গরুগুলো অসুস্থ হয়ে পড়ে। প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা তার খামার পরিদর্শনকালে দেখেন যে, খামারটি বাঁশ ঝাড়ের পাশে স্যাঁত স্যাঁতে স্থানে এবং তাতে পর্যাপ্ত আলো বাতাসের অভাব। তিনি খামারের জন্য উপযুক্ত স্থানের পরামর্শ দেন।
শৈলেন সিরাজগঞ্জের একজন সমৃদ্ধ কৃষিজীবী। বাড়িতে ছোটখাটো একটি গরুর খামার গড়ে তুলেছেন। প্রতি বছর বন্যায় গবাদিপশুর খাদ্যের তীব্র সংকট হয়। তাছাড়া বন্যার সময় তার গরুগুলোর দেহের তাপমাত্রা অত্যাধিক বেড়ে যায় এবং শরীর কাঁপতে থাকে। এ বছর তিনি প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরে যোগাযোগ করে তার খামারের গবাদিপশুর সমস্যাগুলো সমাধানের জন্য প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার পরামর্শে তার বাড়ির পাশের জমিতে নেপিয়ার ঘাস চাষ করেন এবং বিশেষ প্রক্রিয়ায় বন্যার পূর্বেই তিনি সংরক্ষণের ব্যবস্থা করেন । এই সব পরামর্শে তিনি বিশেষভাবে উপকৃত হন ।
তানভীর সিদ্দিকী একজন বৃক্ষপ্রেমী। তিনি তার এলাকায় প্রায় ২০০ জন লোক নিয়ে ১০টি দলে বিভক্ত হয়ে রাস্তার দুইধারে শিশু, মেহগনি, দেবদারু, তাল, পাম ইত্যাদি বৃক্ষ রোপণ করেন এবং যত্ন নিয়ে বড় করেন। দলগুলোর নিয়মিত পরিদর্শন, পর্যবেক্ষণের কারণে রাস্তার দু'পাশে বেড়ে ওঠা গাছগুলোর নান্দনিক সৌন্দর্য সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করে। তানভীর সিদ্দিকীর এই মহৎ উদ্যোগের কারণে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারর এ বছর তাকে পুরস্কৃত করেছে।
মেধাবী ছাত্র মানিক লাল শেরে-বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ডিগ্রী অর্জন করে। মানিক লাল তার এলাকার প্রান্তিক চাষিদের নিয়ে একটি “কৃষি উন্নয়ন সংঘ” গড়ে তোলে, যেখানে “সকলেই সকলের তরে, প্রত্যেকে আমরা পরের তরে" এর ভিত্তিতে স্বেচ্ছাপ্রণোদিত হয়ে কাজ করবে। মানিক লালের এ উদ্যোগটি গ্রহণের পর ঐ বছরটি তারা বিগত কয়েক বছরের তুলনায় ভালো ফসল উৎপাদনে সক্ষম হয়।