বাংলাদেশের কুটির শিল্পকে সমৃদ্ধ করেছে নকশী কাঁথা। গ্রামের মেয়েরা সূচ- সুতার সাহায্যে অপূর্ব নকশা তোলে কাপড়ে। এই নকশী কাঁথা নিয়ে কাব্য রচিত হয়েছে। বিদেশে রপ্তানি হয় নকশী কাঁথা। এভাবে দরিদ্র মেয়েরা স্বাবলম্বী হয়ে উঠেছে শহরেও কুটির শিল্পের জনপ্রিয়তা বাড়ছে। এটি এখন একটি লাভজনক ব্যবসা। এর ফলে আমাদের লোকশিল্প তার হারানো গৌরব ফিরে পাচ্ছে।
নিঃসন্তান সৌদামিনী মালো দুর্ভিক্ষে মৃত এক মুসলমান কৃষক পরিবারের অসহায় শিশু পুত্রকে মাতৃস্নেহে বুকে তুলে নেয়। শিশুর নাম দেয় হরিদাস। বড় হয়ে হরিদাস যখন জানতে পারে সে মুসলমানের ছেলে তখন সে সৌদামিনীকে ছেড়ে পালিয়ে যায়। হরিদাসকে হারিয়ে সৌদামিনীর মাতৃহৃদয় হাহাকার করে ওঠে। ধর্ম, বর্ণ, অর্থ এসব কিছুর ঊর্ধ্বে মাতৃত্ব। শওকত ওসমানের' সৌদামিনী মালো' ছোটগল্পটিতে এভাবে মানবতার জয়গান ধ্বনিত হয়েছে।
কেউ ছালটা ছাড়িয়ে নিয়ে সিদ্ধ করছে। পাতাগুলো ছিঁড়ে শিলে পিষছে কেউ। কচি ডালগুলো ভেঙে চিবোয় কত লোক........ দাঁত ভাল থাকে। কবিরাজরা প্রশংসায় পঞ্চমুখ। কাটে না, কিন্তু যত্নও করে না। হঠাৎ একদিন একটা নতুন ধরনের লোক এল । মুগ্ধ দৃষ্টিতে চেয়ে রইল নিমগাছের দিকে। ছাল তুললে না, পাতা ছিঁড়লে না ডাল ভাঙলে না, মুগ্ধ দৃষ্টিতে চেয়ে রইলে শুধু।
বন্ধু তোমার ছাড় উদ্বেগ, সুতীক্ষ্ণ কর চিত্ত
বাংলার মাটি দুর্জয় ঘাঁটি বুঝে নিক দুর্বৃত্ত
মূঢ় শত্রুকে হানো স্রোত রুখে, তন্দ্রাকর ছিন্ন,
একাগ্র দেশে শত্রুরা এসে হয়ে যাক নিশ্চিহ্ন।
ঘরে তোল ধান বিপ্লবী প্রাণ প্রস্তুত রাখো কাস্তে,
গাও সারি গান, হাতিয়ারে শান দাও আজ উদয়াস্তে।”
সুকান্ত ভট্টাচার্য এই বিশ্বকে শিশুর বাসযোগ্য করার জন্য মহামানবকে আহ্বান জানিয়েছেন— "হে মহামানব একবার এসো ফিরে",
বহিপীর : : ... ... বিবি সাহেব-
তাহেরা: (বাধা দিয়ে উচ্চস্বরে) আমাকে বিবি ডাকবেন না'। বিয়েতে আমি মত দিই নাই । আপনার সঙ্গে আমার বিয়ে হয়নি।
বহিপীর : (একটু রেগে) আপনি মত না দিলেও আপনার বাপজান দিয়েছেন। তাহা ছাড়া সাক্ষী সাবুদ সমেত কাবিননামাও হইয়া গিয়াছে । এখন সেকথা বলিলে চলবে কেন । (সুর বদলিয়ে )।দেখুন মন দিয়া আমার কথা শুনুন।
তাহেরা : (আবার বাধা দিয়ে) আমি আপনার কোনো কথা শুনতে চাই না। আমার বাপজান আর সত্মা আপনাকে খুশি করার জন্য আপনার সঙ্গে বিয়ে দিয়েছেন। আমি যেন কোরবানির বকরি। আপনি পুলিশে খবর দিতে পারেন, আপনি আমার বাপজানকে ডেকে পাঠাতে পারেন, আমার ওপর জুলুম করতে পারেন। কিন্তু আমি আপনার সঙ্গে যাব না।
ওয়াজ করিবার সময় পীর সাহেবের প্রায়ই জয়বা আসিত। সে জয়বাকে মুরিদগণ 'ফানাফিল্লাহ' বলিত। এই ফানাফিল্লাহ'র সময় পীর সাহেব 'জ্বলিয়া গেলাম' পুড়িয়া গেলাম' বলিয়া চিৎকার করিয়া চিৎ হইয়া শুইয়া পড়িতেন। ……………
তাই জযবার সময় একখণ্ড কালো মখমল দিয়া পীর সাহেবের চোখ-মুখ ঢাকিয়া দিয়া তাঁহার হাত-পা টিপিয়া দিবার ওসিয়ত ছিল।
দ্বিজেন্দ্র লাল রায়ের বিখ্যাত ঐতিহাসিক নাটক 'শাজাহান। পুত্র ঔরঙ্গজেবের হাতে দারা সুজা আর মুরাদের মৃত্যু বৃদ্ধ সম্রাট শাহজাহানকে যন্ত্রণায় ক্ষত-বিক্ষত করে তোলে। তাঁর বন্দিদশা, পিতৃহৃদয়ের হাহাকার এই নাটকটিকে শ্রেষ্ঠ ট্যাজেডি নাটকে পরিণত করেছে। সম্রাট শাহজাহানের নাম অনুসারে নাটকের নাম ‘শাজাহান।’
ইতিহাসের এক বীর চরিত্র মহীশূরের টিপু সুলতান। ইংরেজদের বিরুদ্ধে টিপু যুদ্ধ করে প্রাণ দিয়েছেন। চতুর ইংরেজ টিপুর দরবারের এক উচ্চাভিলাষী সেনাপতিকে হাত করেছিল। এই সেনাপতি গোপনে টিপুর সব খবর ইংরেজদের কাছে পৌঁছে দিত। যুদ্ধের এক পর্যায়ে সে দুর্গের দরজা খুলে দিলে ইংরেজরা দুর্গে প্রবেশ করে। নিজ লোকের বিশ্বাসঘাতকতায় টিপু প্রাণ হারান।