মি. আজমাইন তৈরি পোশাক উৎপাদনকারী। তার বিনিয়োগকৃত প্রকল্পের বিগত পাঁচ বছরের গড় আয় ১৪% ৭%। ঈদ পরবর্তী সময়ে সুতা ও কাপড়ের দাম কমে যাওয়ায় ভবিষ্যতে অধিক মুনাফার আশায় এই প্রকল্পে প্রচুর অর্থ বিনিয়োগ করেন। ভোক্তার রুচি ও পছন্দ পরিবর্তন হওয়ায় তার প্রত্যাশা অনুযায়ী বিক্রয় হচ্ছে না। তাই তিনি অপরাজিতা ব্যাংক হতে ঋণ নিয়ে মৎস্য প্রকল্পে বিনিয়োগ করেন। উত্ত প্রকল্প হতে আগামী পাঁচ বছরের সম্ভাব্য আয়ের হার : ২৫%, ২২%, ২০%, -১৫% ও ১৮%। তিনি সঠিকভাবে ব্যবসায় পরিচালনা করতে পারলেও ব্যাংক সুদ পরিশোধে হিমশিম খাচ্ছেন ।
জনাব সুজন কুয়েতে চাকরি করেন। তিনি প্রতি মাসে তার বেতনের টাকা বাংলাদেশে ভীর নিকট পাঠান। স্ত্রী উক্ত টাকা দিয়ে গ্রামে বিশাল একটি খামার পরিচালনার কাজ শুরু করেন। তিনি উক্ত খামারে হাস-মুরগি, গবাদি পশু পালন করেন। অপরদিকে, জনাব সুমন একটি ফাস্টফুডের ব্যবসায় পরিচালনা করেন। তিনি ব্যবসায়ের একটি ফ্রিজ ক্রয় করেন। ফ্রিজটি কেনার পূর্বে তিনি ভবিষ্যতে বিক্রয় বৃদ্ধির পরিমাণ ও ফ্রিজের খরচ তুলনামূলক বিশ্লেষণ করেন। এছাড়া তিনি দৈনিক বিক্রয়লব্ধ অর্থ থেকে প্রতিদিনের বিভিন্ন খরচ নির্বাহ করেন।
ডেল্টা কোম্পানির মূলধনের শতভাগ সাধারণ শেয়ার দ্বারা গঠিত। মোট মূলধন প্রতিটি ১,০০০ টাকা মূল্যের ৫০.০০০ সাধারণ শেয়ারে বিভক্ত। বর্তমানে প্রতিটি শেয়ারের বাজার মূল্য ১,৬০০ টাকা। কোম্পানি গত বছর শেয়ারপ্রতি ১৫% হারে লভ্যাংশ দিয়েছিল। এ লভ্যাংশ বৃদ্ধির হার প্রতিবছর ১০% । মিতালি কোম্পানির বর্তমান মূলধন কাঠামোয় যায়, প্রতিটি ১,০০০ টাকা মূল্যের ১,০০০ সাধারণ শেয়ার, প্রতিটি ১,০০০ টাকা মূল্যের ১,০০০ অগ্রাধিকার শেয়ার এবং ১২% ঋণ মূলধন ৮০ লক্ষ টাকা। প্রতিটি সাধারণ শেয়ার ও অগ্রাধিকার শেয়ারের বাজারমূল্য যথাক্রমে ১,৬০০ টাকা ও ১,২৫০ টাকা। শেয়ারপ্রতি লভ্যাংশের হার সাধারণ ও অগ্রাধিকার শেয়ারের ৮%। কোম্পানির সাধারণ শেয়ার মূলধন বারা ৬.২৫%, গড় মূলধনি ব্যয় ৭.৫% এবং কর হার ৩৫%। কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদ নতুন মূলধন কাঠামো হিসেবে সাধারণ শেয়ার মূলধন ৮০%, অগ্রাধিকার শেয়ার মূলধন ১০% এবং ঋণ মূলধন ১০% রাখার প্রস্তাব দেয়।
জনাব পাবেল প্রীতি কোম্পানির একজন শেয়ারহোল্ডার। এই কোম্পানি প্রতিবছর শেয়ারহোল্ডারদের এমনভাবে লভ্যাংশ প্রদান করে, যার ফলে কোম্পানির কোনো অর্থ ব্যয় হয় না। এমনকি শেয়ারহোল্ডারগণও নগদে লাভবান হয় না। তবে কোম্পানির শেয়ার মূলধন বৃদ্ধি পায়। ধীরে ধীরে প্রীতি কোম্পানির শেয়ারের দরপতন ঘটতে থাকে। ফলে প্রীতি কোম্পানির শেয়ার বিক্রি করে জনাব পাবেল আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হন। উক্ত অর্থ জনাব পাবেল ইতি কোম্পানির এমন বিনিয়োগ হাতিয়ারে করতে চান যা থেকে তিনি নিয়মিত একটি নির্দিষ্ট আয় পেতে পারেন। তবে তিনি ইতি কোম্পানিকে সিদ্ধান্ত গ্রহণে মতামত প্রদানে রাজি নন। এছাড়া সব ধরনের পাওনাদারের দাবির আগে নিজের পাওনার দাবি রাখেন।
এমবিএ পাস করে কয়েকজন বন্ধু একত্রিত হয়ে নিজেদের মধ্য থেকে প্রয়োজনীয় অর্থ সংগ্রহ করে 'জাগরণ লি.' নামে একটি কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করেন। ধীরে ধীরে কোম্পানির কার্যক্ষেত্রের প্রসার ঘটায় বড় অঙ্কের মূলধন প্রয়োজন হয়। এক কোটি টাকা ঋণের জন্য 'সুরমা ব্যাংকের' নিকট গেলে ব্যাংক কোম্পানির সম্পদের দলিলপত্র জমা রাখতে বললেন। জমা রাখার মতো কোম্পানির কোনো দলিলপত্র না থাকায় ঋণ নিতে কোনো উপায় না পেয়ে জনসাধারণের নিকট শেয়ার বিক্রি করে এক কোটি টাকা মূলধন সংগ্রহ করেন।
জনাব শফিক মিতালি ব্যাংক' থেকে বার্ষিক ১০% সুদে মাসিক চক্রবৃদ্ধিতে ৩ বছরের জন্য ৫০ লক্ষ টাকা ঋণ গ্রহণ করেছেন। তিনি এ অর্থ বিনিয়োগ করার জন্য চারটি প্রকল্প বিবেচনা করছেন। প্রকল্প চারটিতে বিনিয়োগের পরিমাণ যথাক্রমে ক-প্রকল্পে ১০ লক্ষ টাকা, খ-প্রকল্পে ২০ লক্ষ টাকা, গ-প্রকল্পে ২০ লক্ষ টাকা এবং ঘ-প্রকল্পে ৪০ লক্ষ টাকা । ক. খ ও গ প্রকল্প তিনটির পে-ব্যাক সময় যথাক্রমে ৩ বছর, ৪.৫ বছর ও ৪ বছর। ঘ- প্রকল্পের বার্ষিক অবচয় ৫ লক্ষ টাকা এবং আগামী চার বছরের সম্ভাব্য লাভ যথাক্রমে- ৪ লক্ষ টাকা, ১০ লক্ষ টাকা, ১৩ লক্ষ টাকা এবং ১৫ লক্ষ টাকা। তিনি প্রকল্পগুলোর পে-ব্যাক সময় বিবেচনা করে বিনিয়োগ সিদ্ধান্ত নেওয়ার চিন্তাভাবনা করছেন।
কুমিল্লা ঝিনুক ব্যাংক'-এর মনোহরপুর শাখায় জনাব সায়মনের একটি ব্যাংক হিসাব রয়েছে। প্রতিমাসে প্রবাসী ছেলের পাঠানো টাকা তার ব্যাংক হিসাবে জমা হয়। সংসারের খরচ মেটানোর পর অবশিষ্ট টাকা ব্যাংক হিসাবে থেকে যায়। এভাবে টাকা জমতে জমতে গত দশ বছরে প্রায় ২০ লক্ষ টাকা তার ব্যাংক হিসাবে উদ্বৃত্ত থাকে। একজন ব্যাংক কর্মকর্তার পরামর্শে মি. সায়মন ১৮ লক্ষ টাকা উত্তোলন করে অপর একটি হিসাবে আগামী ১০ বছরের জন্য জমা রাখেন। তিনি মেয়াদ শেষে উক্ত হিসাব থেকে ১৪% হারে সুদসহ সমুদয় টাকা ফেরত পাবেন।
M, N, OR নামে খুলনা বিভাগে চারটি ব্যাংক রয়েছে। বাজারে ব্যাংকগুলোর সুনাম দিন দিন হ্রাস পাচ্ছে, ফলে গ্রাহকদের লেনদেনের পরিমাণও কম হচ্ছে। সম্প্রতি M ব্যাংকের গ্রাহক মিসেস রহিমা সৌদি আরবে যাওয়ার সময় তার অলংকার এবং সম্পত্তির দলিল ব্যাংকে রেখে যায়। সে সৌদি আরব থেকে তার হিসাবে প্রতি মাসে ৮০ হাজার টাকা করে জমা করে। প্রায় দুই বছর পর মিসেস রহিমার ভাই জনাব লতিফ M ব্যাংকে রহিমার কত টাকা আছে জানতে চাইলে ব্যাংক অফিসার জনাব ইউসুফ তাকে সেটি বলে দেয়। ফলে রহিমা M ব্যাংকের ওপর ক্ষুব্ধ হয়ে তার হিসাব বন্ধ করে দেয় এবং অন্য একটি ব্যাংকে তার সব টাকা জমা করে। এমতাবস্থায়, M. N, Q ও R ব্যাংক সিদ্ধান্ত নিল একই ব্যবস্থাপনায় পুনরায় ভালোভাবে ব্যাংকিং কার্যক্রম শুরু করবে। যেখানে ব্যাংকগুলো একে অপরকে সহযোগিতা করবে এবং নিজস্ব নামেই ব্যাংক পরিচালনা করবে।
স্বপ্নীল ব্যাংক একটি সুপ্রতিষ্ঠিত ব্যাংক। বাজারে দুর্গাপুজার পূর্বমুহূর্তে ক্রেতাদের নিকট তৈরি পোশাকের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় ব্যাংকটি পোশাক ব্যবসায়ীদেরকে বিপুল পরিমাণে ঋণ দিয়েছে। ফলে ব্যাংকটি তারল্য সংকটে পড়ে। স্বপ্নীল ব্যাংক বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানের নিকট অর্থ চেয়ে ব্যর্থ হয়ে অবশেষে অন্বেষা ব্যাংক থেকে অর্থ সংগ্রহ করে। অন্বেষা ব্যাংক স্বপ্নীল ব্যাংকের পাশে এসে দাঁড়ায় এবং বিভিন্ন ধরনের পরামর্শ দিয়ে সহায়তা করে। এক পর্যায়ে ব্যাংকটিতে প্রয়োজনীয় প্রশাসক নিয়োগপূর্বক উন্নয়নের দায়িত্বভার গ্রহণ করে। এতে ধীরে ধীরে ব্যাংকটির আর্থিক অবস্থার অগ্রগতি ঘটে।
নিলীমা ব্যাংক লি. একটি সুপ্রতিষ্ঠিত ব্যাংক। ব্যাংকটি জনগণের নিকট থেকে বিভিন্ন। হিসাবের মাধ্যমে অর্থ সংগ্রহ করে ব্যাংকিং কার্যক্রম সম্পাদন করে থাকে। সম্প্রতি ব্যাংকটি জনাব আদিব নামে একজন ব্যবসায়ীকে কিছু টাকা ঋণ মঞ্জুর করে। উক্ত ঋণের টাকা জনাব আদিব ব্যাংকে একটি হিসাব খুলে উক্ত হিসাবের মাধ্যমে উত্তোলন করেন। তাছাড়া 'নিলীমা ব্যাংক লিমিটেড জনাব আদিবকে বিদেশ থেকে পণ্য ক্রয়ের সময় রপ্তানিকারককে অর্থ প্রদানের বিভিন্ন রকম নিশ্চয়তাপত্র দিয়ে থাকে। ফলে জনাব আদিবের ব্যবসায়িক কার্যক্রম দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।
জনাব কবির ঢাকা বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় একটি ফ্ল্যাট ক্রয় করেন। তিনি ফ্ল্যাটের দলিল 'তৃপ্তি ব্যাংক লি.' এর নিকট জমা রেখে ১০,০০,০০০ টাকা ঋণ নিয়ে ফার্নিচার ব্যবসায় শুরু করেন। তিনি ফার্নিচার তৈরি করার জন্য প্রয়োজনীয় কাঠ বিভিন্ন ব্যক্তির নিকট থেকে ক্রয় করে থাকেন। হঠাৎ একটি দুর্ঘটনায় জনাব কবির মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েন। ফলে ব্যবসায়িক কার্যক্রম ঠিকমতো পরিচালনা করতে পারছেন না। সম্প্রতি জনাব সাইফুলের নিকট থেকে কাঠ ক্রয় বাবদ ২,০০,০০০ টাকা যথাসময়ে পরিশোধ করতে পারেননি। ফলে জনাব সাইফুল তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। আদালত 'তৃপ্তি ব্যাংক লি.' কে জনাব কবিরের সকল ব্যাংকিং লেনদেন বন্ধ করে দিতে। বলে। এতে জনাব কবিরের সাথে তুপ্তি ব্যাংক লি. এর কার্যক্রমের পরিসমাপ্তি ঘটে।