সালামতপুর গ্রামের পিতৃহারা মেধাবী ছাত্র আব্দুর রউফ। ১৯৭১ সালে ইপিআর বাহিনীতে যোগ দিয়ে সামরিক শিক্ষা নিয়ে ল্যান্স নায়েক হলেন। আব্দুর রউফসহ মুক্তিবাহিনীর একটি দল রাঙামাটি ও মহালছড়ির জলপথটি পাহারা দিচ্ছিল। হানাদার বাহিনী সাতটা স্পিডবোট, দুটো লঞ এবং অত্যাধুনিক অস্ত্র নিয়ে এগিয়ে আসে। আব্দুর রউফের অব্যর্থ এবং নির্ভুল নিশানায় তাদের সাতটা স্পিডবোট ডুবে যায়। নিশানার বাইরে গিয়ে তাদের একটি মর্টারের গোলার আঘাতে আব্দুর রউফের মৃত্যু হয়।
যুদ্ধে বাবা-মাকে হারিয়ে জিদান এক পথশিশু। যুদ্ধের নির্মমতা তার মধ্যে সৃষ্টি করেছে ক্ষোভ। তাদের পোড়া বাড়ির দিকে তাকিয়ে সে হাউমাউ করে কেঁদে ওঠে এবং এক সময় নিশ্চুপ হয়ে যায়। ঘর-বাড়ি নেই বলে সবার আশ্রয়ে বেঁচে আছে । যখন যেখানে ডাক আসে ছুটে যায় কাজের সন্ধানে। অন্যের কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে। এমনি করে সবার স্নেহে বেঁচে থাকে জিদান।
ফজর আলীর পরিবারে অশান্তি সবসময় লেগেই থাকে। একদিকে আর্থিক অসচ্ছলতা, অন্যদিকে তিন সংসারের বৌ-বাচ্চাদের দৈনন্দিন জীবনের চাহিদা দুটোই ঠিকমতো চালাতে হয়। সামনে বড় মেয়ে রাবেয়ার বিয়ে। পরিবারের প্রধান হিসেবে ফজর আলীকেই সব সমস্যার সমাধান করতে হয়। টাকা বাঁচানোর জন্য রাবেয়ার বিয়ে এক বৃদ্ধ মোড়লের সাথে ঠিক করে। কিন্তু এর প্রতিবাদ করে রাবেয়ার মা।
গ্রামের গরিব ও মেধাবী ছাত্রী আশা ৯ম শ্রেণিতে পড়ে। হঠাৎ তার বাবা গ্রামের এক প্রভাবশালীর ছেলের সাথে তার বিয়ে ঠিক করেন। কিন্তু আশার স্বপ্ন সে লেখাপড়া করে অনেক বড় হবে। প্রতিবেশী সৎ সাহসী যুবক মেহেদী বিষয়টি জানতে পেরে প্রতিবাদ করে। মেহেদী আশাকে পালিয়ে যেতে বলে। কিন্তু আশা তার বাবার অপমানের কথা চিন্তা করে পালায় না বরং মেহেদীকে নিয়ে স্কুলের প্রধান শিক্ষকের নিকট যায় এবং ব্যাপারটি খুলে বলে। শিক্ষক তার বাবাকে বুঝিয়ে বললে বাবা ভুল বুঝতে পারেন । এখন আশা তার স্বপ্ন পূরণ করার জন্য মনোযোগ দিয়ে লেখাপড়া চালিয়ে যাচ্ছে।