১৯৪৩-এর দুর্ভিক্ষে খাবার ও চিকিৎসা না পেয়ে মতি মাস্টারের স্ত্রী, পুত্র, কন্যা, বাবা ও গ্রামের অনেক মানুষ মারা যায়। সকলকে আলাদা করে দাফন করা সম্ভব হয়নি। এক করে অনেকগুলো লাশ একসাথে দাফন করা হয়। অনেক মৃতদেহ নদীতে ভাসিয়ে দেয়া হয়। শেয়াল-কুকুর মৃতদেহ নিয়ে টানাটানি করে। সেই থেকে মতি মাস্টার পাগল। তার ধারণা তার লাশও দাফন হবে না। তাই সে কবরে ঢুকে শুয়ে থাকে। ভাষাশহিদদের গণকবর দিতে পাক-হানাদার বাহিনী গভীর রাতে কবরস্থানে আসলে মতি মাস্টার বাধা দেয় ।
'ক' ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের নাম শুনলে গ্রামের মানুষ ভয়ে কাঁপে। তার ইচ্ছামতো এলাকার সবকিছু পরিচালিত হয়। মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি সৈনাদের তার বাড়িতে আশ্রয় দেয়। গ্রামের হাঁস-মুরগি, ছাগল, সবজি, ফলমূল প্রভৃতি জোরপূর্বক নিয়ে যায় সৈন্যদের জন্য। কেউ অবাধ্য হলে ঘর-বাড়ি জ্বালিয়ে দেয়। মুক্তিযোদ্ধাদের খোঁজখবর পাকহানাদারদের জানিয়ে দেয়। গ্রামের মেয়েদের ধরে নিয়ে যায় হানাদারদের ক্যাম্পে।
উদ্দীপক-১:
নদীর একূল ভাঙে ওকূল গড়ে
এইতো ভবের খেলা
সকাল বেলা আমির রে তুই
ফকির সন্ধ্যা বেলা।
উদ্দীপক-২:
দশম শ্রেণির মেধাবী ছাত্রী রাইসা একদিন প্রধান শিক্ষকের অফিসে এসে
কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলল, “স্যার, আমাকে বাঁচান।
আমি পড়ালেখা করতে চাই। আমায় বাবা-মা আমাকে বিয়ে দিতে চাইছে।” প্রধান শিক্ষক তাৎক্ষণিক যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে। রাইসার বাল্য বিয়ে বন্ধ করে তাকে পড়ালেখা চালিয়ে যাওয়ার সুযোগ করে দেন।
ভাগ্যবিড়ম্বিত মজিদ একদিন জীবিকার সন্ধানে নিজ গ্রাম ছেড়ে উপস্থিত হয় দুর্গম এক অজপাড়াগায়ে। একটি পুরনো কবর দেখিয়ে সে সহজ-সরল ও ধর্মপ্রাণ গ্রামবাসীকে বলতে থাকে, 'এটি মুদাচ্ছির পীরের মাজার। তিনি স্বপ্নে আমাকে মাজার খেদমত করার আদেশ দিয়েছেন। সেই থেকে মজিদ সেই কবরকে কেন্দ্র করে একটি মাজার গড়ে তোলে এবং নিজে পীর সেজে ভক্ত মুরিদদের হাদিয়া ও মানতের টাকায় প্রচুর অর্থ-বিত্ত গড়ে তোলে। কিন্তু গ্রামবাসীদের বিপদ-আপদে এতটুকু সাহায্যও সে করে না।