রুহান ও সগীর দুই বন্ধু। সম্প্রতি তারা দাখিল পাস করে আলিম শ্রেণিতে ভর্তি হয়েছে। বিষয় বেছে নেওয়ার ক্ষেত্রে উভয়ই সমস্যায় পড়ে। রুহান তার বাবার পরামর্শ চাইলে তিনি তাকে সুনাগরিকের গুণাবলি অর্জন, নাগরিক অধিকার ভোগ ও পরামর্শ চাইলে তিনি তাকে সুনাগরিকের গুণাবলি অর্জন, নাগরিক অধিকার ভোগ ও কর্তব্য যথাযথভাবে পালনের জন্য নাগরিকতা সংশ্লিষ্ট একটি বিষয়কে পাঠ্য হিসেবে নেওয়ার জন্য পরামর্শ দিলেন। অপরদিকে সগীরের বড় ভাই তাকে নাগরিক সেবা নিশ্চিত করার যায় এরূপ একটি বিষয়ের কথা বলেন, যেটি অধ্যয়ন করলে মোবাইলে পরীক্ষার ফল জানা যায় এবং ঘরে বসে অনলাইনে পড়াশোনার করা যায় এরূপ একটি বিষয় নেয়ার কথা বলে।
জনাব ক ও খ দুই বন্ধু। জনাব 'ক' সম্প্রতি পদোন্নতি পেয়ে একটি জেলার প্রধান কর্মকর্তা হিসেবে যোগদান করেছেন। তিনি তার অফিসে সিটিজেন চার্টার টানিয়েছেন এবং ওয়ান স্টপ সার্ভিস চালু করেছেন। তিনি দিনের সব কাজ দিনে শেষ করেন। অপরদিকে জনাব 'খ' সম্প্রতি কয়েকজন দাগী আসামীকে শাস্তি প্রদান করলে এলাকায় স্বস্তি ফিরে আসে।
ফাওজিয়া ও রাবেয়া দুই বান্ধবী। ফাওজিয়া সম্প্রতি পৌর নির্বাচনে কাউন্সিলর পদে নির্বাচিত হয়েছে এবং তার ভাই রাজিব সরকার প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক হিসাবে নিয়োগ লাভ করেছে। অপরদিকে রাবেয়া একটি বহুজাতিক কোম্পানিতে চাকরি করেন। তার কর্মরত কোম্পানির মালিক নিয়োগের ক্ষেত্রে যোগ্যতাকে প্রধান মাপকাঠি হিসাবে বিবেচনা করে এবং নারী পুরুষ সবাইকে যোগ্যতানুযায়ী মজুরি প্রদান করেন।
দৃশ্যকল্প-১। রাশেদের বয়স দশ । সে পাশের বাড়ির মাতাব্বর সাহেবের মুঠো ফোনটি চুরি করে এনে তার এক বন্ধুর নিকট বিক্রি করে দেয়। মাতাব্বর সাহেব খবরটি জানার পর রাশেদকে বেদম মারধর করে একটি বড় যাদের সাথে বেঁধে রাখে। এক পর্যায়ে রাশেদ অজ্ঞান হয়ে পড়ে।
দৃশ্যকল্প-২ : সেলিম একজন কৃষক। এ বছর সে তার দশ শতক জমিতে তরমুজের চাষ করে। তরমুজগুলো বাজারজাত করার সময় তার এলাকার কিছু যুবক দশটি তরমুজ জোরপূর্বক ছিনিয়ে নেয়। এ বিষয়ে সেলিম থানায় অভিযোগ দায়ের করলে পুলিশ অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করে আদালতে সোপর্দ করে।
নুরুল আলম ও আব্দুর রশিদ দুই বন্ধু। নূরুল আলম একটি সংগঠনের সদস্য। সে তার সংগঠনের কাজকর্মের প্রতি জনগণের সমর্থন আদায়ের জন্য সভা সমাবেশে বক্তৃতা দেন, পোস্টার ও প্রচারপত্র বিলি করেন। তাদের ইচ্ছা আগামী পর্বাচনে অংশগ্রহণ করে রাষ্ট্র ক্ষমতায় যাওয়া। অপরদিকে আব্দুর রশিদ এমন একটি সংগঠনের সদস্য হিসাবে নুরুল আলমের মত প্রচার প্রচারণা চালান। তবে তাদের উদ্দেশ্য সরকারের কিছু সিদ্ধান্ত নিজেদের স্বার্থের অনুকূলে আনা, রাষ্ট্রক্ষমতায় যাওয়া নয় ।
দৃশ্যকল্প-১ : জনাব কামাল একজন ব্যবসায়ী। তিনি সরকারকে নিয়মিত কর দেন না, ছেলেমেয়েদের লেখাপড়ার খোঁজখবর রাখেন না। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি ভোট দিতে যান নি ।
দৃশ্যকল্প-২ : জনাব সামাদ সম্প্রতি 'X' নামক একটি দেশে বেড়াতে যান। তিনি লক্ষ্য করেন দেশটির কর্মক্ষেত্রে নারী পুরুষের উপস্থিতি প্রায়ই সমান। বিরোধী দলগুলো নিয়মিত তাদের কর্মসূচি পালন করেন। জনাব সামাদ আরো লক্ষ্য করেন সে দেশে নানাবিধ সমস্যা বিদ্যমান থাকা সত্ত্বেও সংবাদপত্রগুলো শুধু সরকারের গুণ-গান করে।
সাদেক সাহেব একজন সজ্জন ব্যক্তি হিসেবে পরিচিত। তিনি কখনো মিথ্যা কথা বলেন না। কারো সাথে বিরোধ হলে তিনি সুষ্ঠুভাবে মীমাংসা করে দেন। বাসায় মেহমান আসলে খুব সমাদর করেন এবং কেউ বিপদে পড়লে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন। অপরদিকে তার ছেলে রমিজ একটি রাজনৈতিক দলের কর্মী। সে তার নিজ দলের নীতি আদর্শ মেনে চলে। অন্যের কথা মনোযোগ দিয়ে শুনে এবং খুব সহজে রেগে যায় না। সম্প্রতি পৌর নির্বাচনে সে হেরে গেলে বিজয়ী প্রার্থীর বাসায় গিয়ে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানায় ।
জনাব রহিম ও শাহীন দুই বন্ধু। জনাব রহিম একজন তৈরি পোশাক ব্যবসায়ী। তার কারখানায় কয়েক হাজার নারী-পুরুষ কাজ করে। কিন্তু জনাব রহিমের বিশ্বাস হলো নারীরা পুরুষের তুলনায় দুর্বল। তাই তিনি নারীদেরকে পুরুষের তুলনায় কম মজুরি দেন। অপর দিকে জনাব শাহীন একজন বিচারক। একটি জটিল মামলার রায় প্রদান করতে গিয়ে প্রচলিত আইনে কোন সমাধান না পেয়ে তিনি কিছু বিজ্ঞ লোকের লেখা বই-পুস্তকের সাহায্য নেন।
দৃশ্যকল্প-১: কবির সাহেব মাঝরাতে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে তার কলেজ পড়ুয়া মেয়ে সুলতানা সরকার স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ফোন করে। বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ মতে ব্যবস্থাপত্র গ্রহণ করে নিকটস্থ ফার্মেসী থেকে ঔষধ এনে খাওয়ানোর পর তিনি সুস্থ হয়ে ওঠেন।
দৃশ্যকল্প-২ : জনাব কাশেম একজন ব্যবসায়ী। তিনি অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দাখিল করেন। প্রতি মানে বিদ্যুৎ বিল ও পানির বিল মোবাইলে ফোনের মাধ্যমে পরিশোধ করেন। সম্প্রতি তার ছেলে আলিম পরীক্ষায় ফেল করলে তিনি অনুসন্ধান করে দেখেন যে, সে মাদরাসায় না গিয়ে মোবাইলে ফেসবুক চালিয়ে সময় নষ্ট করেছে।
১৯৭১ সালের সেলিমের বয়স ছিল বিশ বছর। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে মা বাবাকে না জানিয়ে বন্ধুদের সাথে সে ভারতে চলে যায় এবং প্রশিক্ষণ শেষে দেশে ফিরে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করে। পরে হানাদার বাহিনীর সাথে স সেলিম শহীদ হয়। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর সেলিমের না জায়েদা খাতুন ছেলের মৃত্যুর খবর শুনে একটুও বিচলিত না হয়ে গর্বের সাথে বলেন, আমার ছেলের জীবনের বিনিময়ে আমরা স্বাধীন স্বদেশ পেয়েছি।
জনাব রাজ্জাক একজন স্থপতি। দেশের বিভিন্ন জায়গায় তিনি অনেক নান্দনিক ইমারত তৈরি করে খ্যাতি অর্জন করেছেন। অন্যদিকে জনাব সজল একজন উদীয়মান সংগঠক। তিনি অত্যন্ত প্রাজ্ঞ, সৎ, কর্মঠ ও সুবক্তা হিসেবে পরিচিত। তার বক্তৃতা শোনার জন্য মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে সমবেত হয় এবং তিনি জনগণের ন্যায় দাবি মানা না হলে অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাবার ঘোষণা দেন। স্থানীয় মসজিদের ইমাম মাওলানা সোবহান সাহেব বলেন, জনাব সজলের মত নেতাদের কারণে আমাদের দেশ স্বাধীনতা লাভ করেছে।