বরিশালের আর্থিকভাবে অসচ্ছল ও ব্যবসায় সহায়ক কার্যাবলির সুবিধাবঞ্চিত মাছ ব্যবসায়ীদের বর্তমানে ব্যস্ত সময় যাচ্ছে । কারণ নদীগুলোতে প্রচুর ইলিশ মাছ ধরা পড়ছে। দেশি ও বিদেশি বাজারে এই মাছের ব্যাপক সুনাম আছে। শুধু স্থানীয় বাজারে ব্যাপক মাছ বিক্রি করলেও তাদের মুনাফার পরিমাণ খুব সামান্য হচ্ছে। এ অবস্থার উন্নয়নের জন্য তাৎক্ষণিক উপায় হিসেবে জেলা প্রশাসক মহোদয় কোল্ড স্টোরেজগুলো শুধু মাছ ব্যবসায়ীদের ব্যবহারের অনুমতি দেন। কিন্তু এরপরও মাছ ব্যবসায়ীরা কাঙ্ক্ষিত মুনাফা লাভ করতে পারছে না ।
মি. তপন আধুনিক যন্ত্রপাতির অপর্যাপ্ততা সত্ত্বেও তার এলাকার কিছু শিক্ষিত বেকার যুবকদের নিয়ে একটি গার্মেন্টস শিল্প গড়ে তোলেন। একটি বাণিজিক ব্যাংকের সহায়তায় তার ব্যবসায়ে সফলতা আসে। কিন্তু বর্তমানে ঘন ঘন হরতাল, পরিবহন ধর্মঘট প্রভৃতির কারণে তার প্রতিষ্ঠানের তৈরি মালামাল | সঠিক সময়ে সরবরাহ করা কঠিন হয়ে পড়ছে। ফলে তিনি ব্যবসায়ের ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তিত ।
জনাব X একটি বেসরকারি কলেজের প্রভাষক করেজের কাছেই বেশ কয়েকটি বাণিজ্যিক ব্যাংক এবং শিল্প প্রতিষ্ঠান আছে। তিনি তার সঞ্চিত অর্থ দিয়ে কলেজের পাশেই একটি ভবনের নিচতলা ভাড়া নিয়ে একটি বড় দোকান শুরু করবেন। তার দোকানের প্রথম অংশে স্টেশনারি, দ্বিতীয় অংশে ফটোকপি এবং তৃতীয় অংশে মোবাইল ব্যাংকিং ব্যবসায় শুরু করলেন। জনাব X তার তিন ভাইকে দোকানের তিনটি অংশের করতে দিলেন। অল্পদিনের মধ্যেই তার প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়টি সফলতা অর্জন করে ।
মি. বাইরন একজন ইঞ্জিনিয়ার। তিনি তার বন্ধু করিমসহ আরও ১০ জন বন্ধু নিয়ে একটি ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। মি. বাইরন বলেন, তিনি ব্যবসায় পরিচালনায় অংশ নিতে পারবেন না এবং বিনিয়োগের অতিরিক্ত দায় নেবেন না। তবে, বছর শেষে প্রতিষ্ঠানের হিসাব-নিরীক্ষার কাজটি করবেন । সর্বসম্মতিক্রমে জনাব করিমকে প্রতিষ্ঠান পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া হয়। পরবর্তীতে একজন প্রভাবশালী দেনাদার ৫০,০০০ টাকা না দেওয়ায় জনাব করিম তা আদায়ে সমর্থ হন ।
জনাব রহিম তার আরও ৪৯ জন ব্যবসায়ী বন্ধু মিলে PQR নামে একটি ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান গঠন করেন। তারা কোম্পানি নিবন্ধকের কাছ থেকে নিবন্ধন লাভ করেন। প্রতিষ্ঠানটি ব্যবসায়ের কাজ শুরু করার সিদ্ধান্ত নিতে গেলে একজন এ্যাডভোকেট সদস্য তাতে বাধা দেন। তিনি বলেন আরও একটি প্রয়োজনীয় আনুষ্ঠানিকতা বাদ আছে। প্রতিষ্ঠানটি প্রথমে মুনাফা অর্জন করলেও পরবর্তী তিন বছর ধারাবাহিকভাবে লোকসান দিতে থাকে। এ অবস্থায় XYZ নামে অন্য একটি ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান PQR প্রতিষ্ঠানের ৫২% মালিকানা শেয়ার কিনে নেয় এবং পরিচালনার দায়িত্ব নেয় ।
কুয়াকাটার সামুদ্রিক মাছ ধরা জেলেরা ২০ জন মিলে আইনসৃষ্ট একটি প্রতিষ্ঠান গঠনের উদ্যোগ নেয়। এই প্রতিষ্ঠান পরিচালনার জন্য তারা একটি ব্যবস্থাপনা কমিটি গঠন করে যেখানে চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান, সেক্রেটারি এবং কোষাধ্যক্ষ আছেন একজন করে এবং সধারণ সদস্য তিনজন । | প্রতিষ্ঠানটি নিবন্ধনের জন্য অন্যান্য আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করলেও ব্যবস্থাপনা কমিটি গঠনে ত্রুটি থাকার কারণে নিবন্ধক প্রতিষ্ঠানটির নিবন্ধনপত্র ইস্যু করতে বিরত থাকেন।
সিলেট গ্যাস ফিল্ড লিমিটেড মুনাফা অর্জনকে গুরুত্ব না দিয়ে কমমূল্যে রাসায়নিক সার ও বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানকে গ্যাস সরবরাহ করছে, যা দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। অন্যদিকে, অর্থনৈতিক ভিতকে আরও মজবুত করার জন্য সরকার অবকাঠামো নির্মাণে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে সংযুক্ত করছে। ফলে সরকার ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান উভয়ই লাভবান হচ্ছে। নতুন ব্যবসায় ধারণাটি বর্তমানে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে ।
জনাব শাহরিয়ার ব্যবসায় ব্যবস্থাপনা নামে একটি বই লেখেন। 'X' প্রকাশনী বইটির গ্রন্থস্বত্ব কিনে নেয়। বইটি ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের শিক্ষার্থীদের কাছে খুবই সমাদৃত হওয়ায় এর চাহিদা দিন দিন বাড়ছে। 'Y' প্রকাশনী বইটির কভার পৃষ্ঠা ও বিষয়বস্তুর সামান্য পরিবর্তন করে হুবহু প্রকাশ করে। ফলে 'X' । প্রকাশনীর বিক্রি কমে যায়। 'X' প্রকাশনী ক্ষতিপূরণ ও প্রতিকার চেয়ে 'Y' প্রকাশনীর বিরুদ্ধে মামলা করে।
জনাব হারুন একজন গার্মেন্টস ব্যবসায়ী। তিনি তার প্রতিষ্ঠানের তৈরি পোশাক বিদেশে রপ্তানি করেন। বিদেশের বাজার দখল করার জন্য তিনি আরও উন্নত যন্ত্রপাতি ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। কিন্তু এক্ষেত্রে সরকারি সহায়তা পর্যাপ্ত না হওয়ায় যন্ত্রপাতি আমদানিতে সমস্যা হচ্ছে। সম্প্রতি সরকার গার্মেন্টস খাতে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি আমদানি ও তৈরি পোশাক রপ্তানি উভয়টিতে শুল্কহার বাড়িয়েছে। এগুলো নিয়ে জনাব হারুন খুব চিন্তিত । অথচ তিনি ২০১৫ সালে এই গার্মেন্টস খাতে নিয়োজিত ব্যবসায় সংঘের সাহায্যে আন্তর্জাতিক প্রদর্শনীতে অংশ নিয়ে পুরস্কার লাভ করেন। এছাড়া ঐ সংঘ থেকে তার প্রতিষ্ঠান গার্মেন্টস সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন শিক্ষা ও প্রশিক্ষণও নিয়েছে।
মি. সুদর্শন X ব্যাংকের একজন অফিসার। ব্যাংকটি লেজার বুকের পরিবর্তে কম্পিউটারে গ্রাহকদের হিসাবের লেনদেন সংরক্ষণ করে। তথ্য আদান-প্রদানে ব্যাংকটি চিঠির পরিবর্তে মোবাইল মেসেজ, ই-মেইল প্রভৃতি ব্যবহার করে। ব্যাংকের গ্রাহকরা কার্ড ব্যবহার করে ব্যাংকে না গিয়ে যে কোনো বুথ থেকে সব সময় টাকা তুলতে পারে। বর্তমানে এ ব্যাংকের গ্রাহকরা এ প্রযুক্তিতে পণ্যের দাম ও বিল পরিশোধ এবং কর্মচারীদের বেতন-ভাতাদি দিচ্ছে।