দৃশ্যকল্প-১: ইকবাল সাহেব কলেজের শিক্ষক। তিনি শ্রেণিতে লক্ষ্য করলেন যে, সোহান নামে একজন ছাত্র শ্রেণিতে খাপ খাওয়াতে পারছে না। ইকবাল সাহেব ছেলেটিকে মনোবিজ্ঞানীর কাছে পাঠালেন। মনোবিজ্ঞানী সোহানকে কতগুলো কার্ড দেখান এবং কার্ডে কী দেখতে পাচ্ছে তা বলতে বলেন। তিনি সোহানের উত্তরগুলো লিখে রাখেন এবং তার সমস্যা বুঝতে পারেন।
দৃশ্যকল্প-২ : পাভেল, রুবেল ও জুয়েল তিন ভাই। পাভেল দেখতে খাট, গোলগাল ও মিশুক প্রকৃতির। রুবেল লম্বা, হাল্কা-পাতলা গড়নের এবং নির্জনতাপ্রিয়। অন্যদিকে জুয়েল সুঠাম দেহের অধিকারী। সে খেলাধুলা পছন্দ করে এবং দুঃসাহসিক কাজ করে আনন্দ পায় ।
নাহিন নবম শ্রেণিতে পড়ে। সে বাবার সঙ্গে প্রতিদিন খবরের কাগজ পড়ে এবং টেলিভিশনে খবর শুনে। সম্প্রতি বাংলাদেশে অনুপ্রবেশাধীন রোহিঙ্গাদের দুঃখ-দুর্দশার খবর তাকে খুব কষ্ট দেয়। কীভাবে তাদের সাহায্য করা যায় এই নিয়ে চিন্তা করতে থাকে। নাহিনের মামা মতিন সাহেব যে কোনো বিষয় সম্পর্কে যথার্থ বিবেচনা ছাড়াই যুক্তিহীন, নেতিবাচক ও বিদ্বেষপূর্ণ মনোভাব পোষণ করেন। যেমন-তিনি মনে করেন দরিদ্রদের লেখাপড়া করার প্রয়োজন নেই। মতিন সাহেবের এ ধরনের মানসিকতা অনেকের কাছেই গ্রহণযোগ্য নয় ।
রহিম সাহেবের দুই সন্তান সজল ও রিপন। তৃতীয় শ্রেণিতে ২য় স্থান অধিকার করায় রহিম সাহেব সজলকে একটি খেলনা কিনে দেয়। এতে সজলের উৎসাহ বৃদ্ধি পায় এবং পরবর্তী পরীক্ষায় ১ম স্থান অধিকার করার জন্য পড়ালেখায় আরও মনোযোগী হয়। অন্যদিকে রিপন অনেক অলস ছিল, কোনো কিছু সময়মতো করতো না। পরবর্তীতে শিক্ষকের নির্দেশ ও উপদেশনার কারণে তার মধ্যে নিয়মানুবর্তিতা,আত্মনির্ভরশীল ও শৃঙ্খলাবোধ দেখা যায়। রহিম সাহেব সন্তানদের লেখাপড়া ছাড়াও অন্যান্য বিষয়, যেমন-খাওয়া, কাপড় পরা, মার্জিত আচরণ করা ইত্যাদির প্রতিও খেয়াল রাখেন। এতে করে তার মধ্যে সুস্থ সামাজিকতার বিকাশ ঘটে।
দিনমজুর করিম শেখের মেধাবী ছেলে সিফাত এবার মেডিক্যাল ও বুয়েটের ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে দুটোতেই কৃতকার্য হয়। সে ভীষণ চিন্তিত কোনটাতে ভর্তি হবে। মেডিক্যাল না বুয়েটে। ছেলের সাফল্যে বাবা খুশী হলেও ভীষণ অস্থির ও চিন্তিত সিফাতের ভর্তি ও পড়াশুনার খরচ চালানো নিয়ে। অবশেষে ছেলের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে তার একমাত্র সম্বল দুধের গাভী বিক্রয় করার সিদ্ধান্ত নেয়। আর নিজেকে এই বলে সান্ত্বনা দেয় পড়াশুনা শেষ করে ছেলে সংসারের হাল ধরবে।
দৃশ্যকল্প-১ : অথই সপ্তম শ্রেণির মেধাবী ছাত্রী। তার বুদ্ধ্যঙ্ক কেমন হবে তা জানার আগ্রহে অথই-এর বাবা তাকে একজন মনোবিজ্ঞানীর কাছে নিয়ে যান। মনোবিজ্ঞানী ভাষাগত ৬টি মানকের মাধ্যমে তার বুদ্ধ্যঙ্ক নির্ণয় করলেন। ফলাফলে দেখলেন অথই এর বুদ্ধ্যঙ্ক স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি।
দৃশ্যকল্প-২ : আনিকা ও রাইয়ান দুইজন প্রতিবেশী। আনিকা সামান্য পড়তে ও লিখতে পারে, গান-বাজনা করতে পারে। শারীরিক বৈকল্যতা নেই। অন্যদিকে রাইয়ানের শারীরিক অক্ষমতা, কথা বলার জড়তা রয়েছে। তাদের বাবা-মা নিয়মিত চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে সন্তানের উন্নতির চেষ্টা করছেন।
জনাব আবু রায়হান একজন পরোপকারী ব্যক্তি। সমাজের 8 সকলের সুখে-দুঃখে তিনি ভূমিকা রাখেন। সমাজের মানুষের কল্যাণে সামাজিক শৃঙ্খলা রক্ষায় তিনি নিজ স্বার্থ বিসর্জন দিয়ে কাজ করেন। আবু রায়হানের চাচাত ভাই আবু আয়মানও একজন সমাজের মানুষের সুখে-দুঃখে সামাজিক মানুষ। তিনিও পাশে থাকেন, মানুষের সেবা করতে চান কিন্তু তিনি মনে করেন মানুষের সেবা করার ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হওয়া জরুরি। বয়সে ছোট হলেও তিনি অনেক সময় আবু রায়হান সাহেবের উপরও প্রভাব বিস্তার করে থাকেন। তবে, আবু আয়মান একজন সৌন্দর্যপ্রিয় ও শিল্পমনা ব্যক্তিও বটে। তিনি সবসময়ই পরিপাটি থাকেন এবং সন্তানদেরও সেভাবে রাখতে পছন্দ করেন।
জনাব মাহমুদুল হাছান শিশুদের আচরণের বিকাশ এবং শিক্ষণ কার্যক্রমের উপর গবেষণা করেন। তিনি লক্ষ্য করেন শিশুদের বলবর্ধক প্রদান করা হলে নির্দিষ্ট আচরণটি করার প্রবণতা বৃদ্ধি পায় এবং বলবর্ধকের অনুপস্থিতিতে উদ্দীপকের সাথে প্রতিক্রিয়ার সম্পর্ক দুর্বল করে তোলে। জনাব মাহমুদুল হাছান তাঁর গবেষণাকার্য নিয়ন্ত্রিত পরিবেশে বস্তুনিষ্ঠভাবে পরিচালনা করেছেন।