রিনার উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা সবেমাত্র শেষ হয়েছে। আর কিছুদিনের মধ্যে স্নাতক শ্রেণির ভর্তিযুদ্ধে অবতীর্ণ হতে হবে তাকে। তার জন্য যথাযথ প্রস্তুতিও চলছে। অবশেষে এমন একটি বিষয়ে তার উচ্চশিক্ষা গ্রহণের সুযোগ হয় যেটির জন্ম হয়েছে আধুনিক জটিল শিল্প সমাজের বহুমুখী সমস্যাগুলো সার্থকভাবে মোকাবিলা করার জন্য। বাস্তবতা এবং যুগের সাথে তাল মেলানোর জন্য বিষয়টির কতকগুলো সুনির্দিষ্ট নিজস্ব পদ্ধতি, নীতিমালা এবং মূল্যবোধও গড়ে উঠেছে।
ইসমাঈল শেখ তারুণ্যদীপ্ত একজন টগবগে যুবক। দেশে নিজের জন্য কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে না পেরে অবশেষে সে মালয়েশিয়াতে কাজের সন্ধানে পাড়ি জমালো। প্রায় দশ বছর পর নিজ এলাকায় ফিরে ইসমাইল শেখ অবাক হয়ে গেলো। কেননা অনেক ছোট বড় কারখানা গড়ে উঠেছে এলাকায় । আরও গড়ে উঠেছে অসংখ্য সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান। কাজের সন্ধানে তাদের এখন অন্য এলাকায় যেতে হয় না।
শাহেদ এবং কবির বাল্যবন্ধু। শাহেদ জ্ঞানের নির্দিষ্ট একটি শাখায় সর্বোচ্চ ডিগ্রি অর্জনের পর সেই জ্ঞানের উপর ভিত্তি করে জীবিকা অর্জনের পথ বেছে নিয়েছে। অপরদিকে দুর্ভাগা কবিরকে হঠাৎ করে বাবা মারা যাবার কারণে লেখাপড়া ছেড়ে সংসারের হাল ধরতে হয়েছে। বসত বাড়িটি ছাড়া বাবা আর কোনো সম্পত্তিই রেখে যেতে পারেননি। উপায়ন্তর না পেয়ে অবশেষে কবির জীবিকার জন্য অন্যের জমিতে দিনমজুরের কাজে লেগে গেল।
সীতানাথ বসু এবং রিয়াজুল ইসলাম একই গ্রামের বাসিন্দা। ধার্মিক ও দানশীল হিসাবে উভয়েরই গ্রামে যথেষ্ট সুনাম রয়েছে। জীবন সায়াহ্নে এসে উভয়েই স্রষ্টার সন্তুষ্টি এবং জনকল্যাণের জন্য তাদের সম্পত্তির একটা বড় অংশ যে যার ধর্মমতে আইনের সাহায্য নিয়ে দান করে দিলেন। উক্ত দানকৃত সম্পত্তির দ্বারা গ্রামে মন্দির
মসজিদ, বিদ্যালয়সহ নানা জনকল্যাণমূলক প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠতে লাগলো ।
ধনাঢ্য পরিবারের মেয়ে অতসী দেবনাথ। মহা ধুমধামের সাথে তার বিয়ে হল আর এক ধনাঢ্য পরিবারের ছেলে অভিজিৎ সাহার সাথে। কিন্তু বছর না ঘুরতেই অতসীর স্বামী মারা যাওয়ায় তাকে বাবার বাড়িতে ফিরে আসতে হল । বাস্তবতাকে মেনে নিয়ে মা-বাবা ও আত্মীয়-স্বজনের সহায়তায় কিছুদিনের মধ্যে অতসী শোক কাটিয়ে উঠলো । মেয়ের ভবিষ্যৎ চিন্তা করে মা-বাবা পুনরায় সৎ ও যোগ্য পাত্র ইন্দ্রজিৎ এর সাথে মেয়েকে বিয়ে দিলেন ।
বৃদ্ধ মা-বাবা, স্ত্রী সন্তান নিয়ে তাহসান সাহেবের সুখের সংসার। সকালে সন্তানকে স্কুলে দিয়েই অফিসে চলে যান। অফিস শেষ করেই বাসায় ফিরে মা-বাবার খোঁজ নেন। তারপর পরিবারের সকলের সাথে আনন্দে মেতে উঠেন। কখনও কখনও সবাইকে নিয়ে বাইরে কোথাও আনন্দ ভ্রমণেও বের হন। পরিবারের সদস্যরা একে অপরের প্রতি খুবই সহানুভূতিশীল ।