চট্টগ্রামের মি. শাহিন আর্থিক অসচ্ছলতার কারণে এইচএসসি পাসের পর উচ্চতর শিক্ষা গ্রহণ করতে পারেননি। তিনি পরিবারের ভরণপোষণের নিমিত্তে বাড়ির পাশের হালদা নদী থেকে চিংড়ির রেণু সংগ্রহ করে স্থানীয় বাজারে বিক্রি করা শুরু করলেন। তাঁর আহরিত রেণু চিংড়ির মান ভালো হওয়ায় চিংড়ি চাষিদের কাছে এই রেণুর চাহিদা ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পেতে থাকে। বিভিন্ন সীমাবদ্ধতার কারণে সব ক্রেতার অভার গ্রহণ সম্ভব হচ্ছে না বিধায় তিনি হ্যাচারি স্থাপনপূর্বক তাঁর কার্যক্রমকে বেগবান এবং প্রসারিত করার জন্য একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের শরণাপন্ন হন।
মি. ইলিয়াস একজন পোশাক ব্যবসায়ী। তাঁর ব্যবসায়ের পরিধি বৃদ্ধির লক্ষ্যে ব্যাংক থেকে ঋণ সহায়তা নিলেন। এতে তাঁর উৎপাদন অনেক বৃদ্ধি পেল। তিনি উৎপাদিত পোশাক দেশের পাশাপাশি বিদেশেও রপ্তানি করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করতে লাগলেন। কিন্তু বর্তমানে ধর্মঘটসহ শ্রমিক অসন্তোষের কারণে পোশাক উৎপাদন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
নাসিমা বেগম স্বামীর মৃত্যুর পর একটি মন্ত্রণালয়ের অধীনে পিঠা তৈরির উপর প্রশিক্ষণ নেন। তিনি আর্থিক প্রয়োজনে দেশীয় পিঠা তৈরি করে স্থানীয় দোকান ও সামাজিক বিভিন্ন অনুষ্ঠানে সরবরাহ করেন। তাঁর তৈরি পিঠা ও নাস্তা মুখরোচক ও স্বাস্থ্যসম্মত হওয়ায় ব্যাপক চাহিদা বৃদ্ধি পায়। এজন্য তিনি গ্রামের হতদরিদ্র ৫ জন মহিলাকে প্রশিক্ষিত করে আগের চেয়ে বেশি পিঠা তৈরি করে সরবরাহ করতে লাগলেন। তাঁর দৃঢ় বিশ্বাস সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা ও অন্যান্য সংস্থার সুযোগ পেলে তিনি বড় পরিসরে একটি পিঠা তৈরির কারখানা স্থাপন করে অবহেলিত মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করতে পারবেন।
অল্প শিক্ষিত তুষার কম্পোজ, ফটোকপি, মোবাইল রিচার্জের একটি দোকান চালু করেন। প্রতিষ্ঠানটি স্কুল, কলেজ এবং উপজেলা পরিষদের কাছে হওয়ায় দোকানে দিন দিন লোক সমাগম বাড়তে থাকে। তাই তিনি দোকানের জন্য আরও দুটি কম্পিউটার, একটি ফটোকপি ও একটি ডিজিটাল ক্যামেরা কিনেন। সেই সাথে তিনি দোকানে আরও কর্মচারী নিয়োগ দেন। তাঁর ব্যবসায়ের সফলতা দিন দিন বেড়েই চলেছে।
এমবিএ পাস জনাব পরাগ যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর থেকে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে বাবার কাছ থেকে ২০ হাজার টাকা নিয়ে ঘরের ছাদে ছোট পরিসরে কোয়েল পালন শুরু করেন। প্রথম বছরে তিনি কোনো লাভের মুখ দেখেননি। তারপরও তিনি দমে না গিয়ে সাহস ও একাগ্রতার সাথে এ কার্যক্রম অব্যাহত রাখেন। বর্তমানে তাঁর খামারে ২০ জন কর্মচারী কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করছেন। এ বাচ্চা এবং ডিম দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে রপ্তানি হয়। জনাব পরাগকে দেখে এলাকার অনেক বেকার যুবক উদ্বুদ্ধ হয়ে কোয়েল পালন শুরু করেন। ২০২০ সালে জনাব পরাগ সেরা খামারির পুরস্কার পেয়েছেন।
বগুড়ায় ২৫ জন কৃষক নিজেদের আর্থিক উন্নয়ন, কল্যাণ, সমঅধিকার এবং পণ্যের ন্যায্যমূল্য পাওয়ার জন্য একটি 'সোনালী কৃষি সমিতি' গঠন করেন। এই সমিতি সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার লক্ষ্যে ভোটের মাধ্যমে ৬ সদস্যবিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়। এই সংগঠন গড়ে তোলার ফলে সদস্যদের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়ন সাধিত হয়।
উচ্চ শিক্ষিত মি. মুসা 'নন্দিনী ড্রেস হাউস' নামে একটি দেশীয় পোশাক তৈরির কারখানা স্থাপন ও পরিচালনা করেন। তিনি কর্মীদের চাহিদা ও বিভিন্ন ধরনের সুযোগ-সুবিধা প্রদানে আন্তরিক হলেও কর্মীরা যেন তাদের উপর অর্পিত দায়িত্ব যথাযথ পালন করেন এ ব্যাপারে কঠোর হতে পিছপা হন না। প্রতিষ্ঠানের যেকোনো বিষয়ে কর্মীদের সাথে আলোচনা করলেও সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে সবসময় নিজের ইচ্ছাকে প্রাধান্য দেন। অন্যদিকে রুহি ফ্যাশন হাউস এর মালিক মি. নয়ন তার কর্মীদের স্বাধীনভাবে কাজ করার সুযোগ দেন।
মি. আনোয়ার ‘রাতুল গার্মেন্টস' এর ব্যবস্থাপক। কাজের ধরন অনুযায়ী। আলাদাভাবে দক্ষ কর্মী কর্মীদের কাজের তদারকির জন্য একজন বিশেষজ্ঞ সহকারী ব্যবস্থাপকের দায়িত্বে বিভিন্ন বিভাগ ভাগ করে দেন। আবার সকল বিভাগকে উপরিভাগের সাথে সংযুক্ত করে দেন। মাঝে-মধ্যে মি.. আনোয়ার কর্মীদের কাজের অগ্রগতির খবরাখবর নিয়ে থাকেন। অনেকের কাজে খুশি হয়ে তিনি পুরস্কৃতও করে থাকেন। এতে কর্মীরা তাদের দায়িত্ব সুচারুরূপে পালনে আরও উদ্বুদ্ধ এবং আন্তরিক হন। ফলে সমসাময়িক অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের চেয়ে তার প্রতিষ্ঠান আশাতীত মুনাফা লাভে সক্ষম হচ্ছে।
স্থানীয় বাজারের নাহিদ ফার্মেসিতে প্রায়শই ক্রেতাদের ভিড় থাকে। এই ফার্মেসিতে 'জীবন' ও 'সুমন' নামে ২ জন কর্মরত আছেন। জীবন ক্রেতাদের সন্তুষ্টিকে প্রাধান্য দিয়ে থাকেন। তবে অনেক সময় ক্রেতারা তাদের সাথে খারাপ আচরণের জন্য সুমনের নামে অভিযোগ করেন। এছাড়া পুরাতন ও নতুন ক্রেতাদেরকে স্থায়ী ক্রেতায় পরিণত করতে তারা সদা তৎপর থাকেন। তাই আশেপাশের অন্যান্য ফার্মেসির তুলনায় এই ফার্মেসিতে বিক্রয় দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।