পঞ্চম শ্রেণি (প্রাথমিক) - হিন্দু ধর্ম ও নৈতিক শিক্ষা - NCTB BOOK

দেশপ্রেম

প্রতিটি মানুষ জন্মগ্রহণ করে পৃথিবীর একটি নির্দিষ্ট ভূখণ্ডে, যা তার জন্মভূমি বা নিজ দেশ মানুষ জন্মভূমি বা দেশের আলো-বাতাস, অন্ন-জলে লালিত-পালিত হয়ে বেড়ে ওঠে। এ কারণে জন্মভূমি বা দেশের প্রতি মানুষের থাকে এক ধরনের আবেগময় অনুরাগ। দেশের ভাষা, সাহিত্য এবং ঐতিহ্যের সঙ্গে গড়ে ওঠে তার নাড়ির সম্পর্ক। দেশের জন্য জন্ম নেয় নিবিড় ভালোবাসা। দেশের প্রতি মানুষের এই অনুরাগ ও ভালোবাসাই দেশপ্রেম।

এই দেশপ্রেম কীভাবে প্রকাশ পায় ? দেশপ্রেম প্রকাশ পায় মানুষের কাজে, মানুষের আচরণে। দেশপ্রেম প্রকাশ পায় দেশের মঙ্গলের জন্য কঠোর পরিশ্রম ও আত্মত্যাগে। দেশ শত্রুর দ্বারা আক্রান্ত হলে দেশপ্রেমিক শত্রুর বিরুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েন। যুদ্ধ করে দেশের স্বাধীনতাকে রক্ষা করেন। দেশের উন্নতির জন্য কাজ করেন। এমনকি প্রয়োজনে দেশের জন্য হাসিমুখে জীবন পর্যন্ত উৎসর্গ করেন।

দেশপ্রেম আত্মমর্যাদার উৎস। মনুষ্যত্বের অঙ্গ। দেশপ্রেম মানুষকে স্বার্থপরতা, সম্প্রদায় ও গোষ্ঠীগত সংকীর্ণতা, রাজনৈতিক মতাদর্শগত ভেদাভেদ থেকে ঊর্ধ্বে উঠতে সহায়তা করে। জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবাইকে একই চেতনায় একপ্রাণ হয়ে কাজ করতে উদ্বুদ্ধ করে। উদ্বুদ্ধ করে দেশের কল্যাণে আত্মনিবেদনে।

দেশপ্রেম মানুষের মধ্যে আবেগ, উদ্যম ও কর্মচাঞ্চল্য সৃষ্টি করে। দেশ ও জাতির অগ্রগতির লক্ষ্যে প্রেরণাময় চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করে। তাই দেশ ও জাতির উন্নয়নে দেশপ্রেমের গুরুত্ব অপরিসীম।

দেশে দেশে যাঁরা দেশপ্রেমের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত রাখছেন বা রেখেছেন, তাঁরা সকলের শ্রদ্ধেয় ও পূজনীয়। তাঁরা সারা বিশ্বের মানুষের ভালোবাসায় সিক্ত। দেশপ্রেমের জন্য তাঁরা চির স্মরণীয় এবং বরণীয়।

প্রাচীনকালেও অনেকে দেশপ্রেমের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত রেখে অমর হয়ে আছেন। মহাভারত থেকে এমন একজন দেশপ্রেমিক রানির কাহিনী বলছি।

 

বিদুলার দেশপ্রেম

প্রাচীনকালে সৌবীর নামে একটি রাজ্য ছিল। বিদুলা ছিলেন সৌবীর রাজ্যের রানি। সৌবীররাজ আর বিদুলার একটি মাত্র পুত্র ছিলেন। তাঁর নাম সঞ্জয়। সঞ্জয় যখন যুবক, তখন হঠাৎ সৌবীররাজ মারা যান। এ সময় সুযোগ বুঝে সিন্ধুদেশের রাজা সৌবীর রাজ্য আক্রমণ করেন। সঞ্জয় সহজেই পরাজিত হলেন। সিন্ধুরাজ সৌবীর রাজ্য অধিকার করলেন। রাজ্য হারিয়ে ম্লান মুখে শুয়ে আছেন সঞ্জয়। হারানো রাজ্য পুনরুদ্ধারের কোনো চেষ্টাই তিনি করছেন না। এদিকে রানি বিদুলা পরাধীনতা সহ্য করতে পারছেন না। তিনি পুত্র সঞ্জয়ের কাছে গিয়ে তাঁকে যুদ্ধের প্রস্তুতি নিতে উৎসাহ দিলেন। সঞ্জয়কে ভর্ৎসনা করে তিনি বললেন, "মনে হচ্ছে তুমি আমার পুত্র নও। আমার পুত্র এমন কাপুরুষ হতে পারে না। তুমি তোমার পিতা সৌবীররাজের কথা স্মরণ কর। কী তেজ আর সাহস ছিল তাঁর। এ পরাধীনতা তিনি কিছুতেই মেনে নিতে পারতেন না। নির্ভীক হও। শত্রুকে পরাজিত করে হারানো রাজ্য উদ্ধার কর।"

 

Content added By

শূন্যস্থান পূরণ কর :

১। হিন্দুধর্ম তার অনুসারীদের মধ্যে ___ গুণের বিকাশ ঘটিয়েছে।

২। দেব-দেবীদের রূপের ধারণা দিয়েছেন ___ ৷

৩। ধর্মসংগীতের মধ্য দিয়ে ___ পরিচয় পাওয়া যায় ৷

৪। মহালয়া ঘোষণা দেয় দেবী দুর্গার ___ ৷

৫। এ-সকল ঐতিহ্যকে আমরা ___ রাখব।

 

ডান পাশ থেকে শব্দ এনে বাম পাশের শব্দের সঙ্গে মেলাও :

১। ঐতিহ্যের পরিচয় পাওয়া যায়

২। মন্দিরগুলোর কারুকার্য

৩। কান্তজি মন্দিরগাত্রের চিত্রকাহিনী

৪। ধর্মসংগীত

৫। আমাদের কর্তব্য

শিল্পচর্চার পরিচায়ক। 

ঐতিহ্যকে সংরক্ষণ করা । 

মর্মর পাথরে গড়া। 

পোড়ামাটির ফলকে খোদাই করা। 

আমাদের ঐতিহ্য। 

পূজার প্রতিমায়।

 

নিচের প্রশ্নগুলোর সংক্ষেপে উত্তর দাও :

১। ঋষি-কবিরা কিসের ধারণা দিয়েছেন ? 

২। আলপনা দেখে আমাদের মনোভাব কেমন হয় ? 

৩। ‘অপরপক্ষ’ বলতে কোন পক্ষটিকে বোঝানো হয়েছে? 

৪। মহালয়ায় কাদের স্মরণ করা হয় ? 

৫। দোলযাত্রায় কাদের কুমকুমে রাঙানো হয় ?

 

নিচের প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :

১। ঐতিহ্য বলতে কী বোঝ? হিন্দুধর্মীয় ঐতিহ্যবাহী তিনটি উপাদানের পরিচয় দাও।

২। মহালয়া অনুষ্ঠানের সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও।

৩। ‘ধর্মসংগীতের মধ্য দিয়ে শিল্পচর্চার ঐতিহ্য প্রকাশ পেয়েছে। ' - কীভাবে? সংক্ষেপে লেখ।

৪। বিশ্ব ঐতিহ্যের স্বীকৃতি পেয়েছে এমন একটি হিন্দুধর্মীয় ঐতিহ্যবাহী মন্দিরের নাম লেখ। কেন তার এই মর্যাদা?

৫। দোলযাত্রা উৎসবের সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দাও ৷

৬। চৈত্রসংক্রান্তির অনুষ্ঠান কেবল ধর্মীয় অনুষ্ঠান নয়, তা সকলের এক মিলন মেলা। ' — কীভাবে? বুঝিয়ে দাও ।

Content added By
ঢাকেশ্বরী মন্দিরগাত্রে
চট্টেশ্বরী মন্দিরগাত্রে
কান্তজি মন্দিরগাত্রে
জগন্নাথ মন্দিরগাত্রে
একাদশী তিথি
দ্বাদশী তিথি
চতুর্দশী তিথি
অমাবস্যা তিথি
লক্ষ্মীপূজার
দুর্গাপূজার
সরস্বতীপূজার
কালীপূজার
দোলযাত্রার সময়
নববর্ষের সময়
দুর্গাপূজার সময়
রথযাত্রার সময়