SATT ACADEMY

New to Satt Academy? Create an account


or

Log in with Google Account

On This Page
এসএসসি(ভোকেশনাল) - পোল্ট্রি রিয়ারিং অ্যান্ড ফার্মিং-১ - দ্বিতীয় পত্র (দশম শ্রেণি) | NCTB BOOK

ডিম একটি আমিষ সমৃদ্ধ পুষ্টিকর খাদ্য। আমরা বিভিন্ন উত্স যেমন- মুরগি, হাঁস ও কোৱেল থেকে খাবার ডিম বেশি পরিমাণে পেয়ে থাকি। মুরগির ডিম সবচেয়ে বেশি ভূমিকা পালন করে। তাই মুরগির ডিম উৎপাদন, সংগ্রহ, সংরক্ষণ ও বিপণনের উপর এর সুফল নির্ভর করে। আমিষের ক্রমবর্ধমান চাহিদা পূরণের জন্য ডিম উৎপাদন যেমন গুরুত্বপূর্ণ এর সংগ্রহ, সংরক্ষণ ও বিপণন অন্যতম ভূমিকা পালন করে। তাই জনস্বাস্থ্যের জন্য আমিষ সমৃদ্ধ এ উপাদানটি সুষ্ঠু উৎপাদন ও ব্যবস্থাপনার জন্য দক্ষ পোল্ট্রি কর্মীর প্রয়োজন। একজন দক্ষ পোল্ট্রি কর্মী এ কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে সম্পাদন করতে পারবে। তাই দক্ষ পোল্ট্রি কর্মী পড়ে তোলা আমাদের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব।

এই অধ্যার পাঠ শেষে আমরা-

  • মুরগির ডিম খামারের নিয়ম অনুযায়ী উৎপাদন ও সংগ্রহ করতে পারব 
  • খাবার ডিম স্ট্যান্ডার্ড অনুযারী প্রেডিং করতে পারব হ্যাচিং ডিম বাছাই করতে পারব
  • খাবার ডিম বিভিন্ন পদ্ধতিতে সংরক্ষণ করতে পারব 
  • লেয়ার মুরগির ডিম বিপণন করতে পারব

 

 

Content added By

৪.১ মুরগির ডিম উৎপাদন ও সংগ্রহ (Best Production and collection)

লেয়ার খামারে ডিম উৎপাদনেই প্রধান লক্ষ। ডিম উৎপাদনকারী মুরগিকে বিভিন্ন পদ্ধতিতে পালন করা হয়। লিটারে ডিমপাড়া মুরগি পালনের ক্ষেত্রে ময়লা ডিম ও মেঝেতে পাড়া ডিম সংগ্রহ করা মুরগি পালনের জন্য একটি বড় বাধা। এছাড়া মেঝেতে ডিম পাড়ার কারণে মুরগির ফ্রকে ডিম খাওয়ার অভ্যাস এবং মলদ্বার ঠোকরানো অভ্যাস দেখা দিতে পারে। এর ফলে খামারের প্রচুর অর্থনৈতিক ক্ষতি হয়। যদি ডিমপাড়া মুরগির পরে সঠিক সময়ে উপযুক্ত পরিমাণে বা সংখ্যায় ডিম পাড়া বাক্স স্থাপন করা যায়, তবে উপরোক্ত সমস্যাগুলো সমাধান করা সম্ভব ।

 

 

Content added || updated By

৪.১.১ লিটার পদ্ধতির ক্ষেত্রে(In the case of the Litter method): 

(ক) ডিম পাড়ার বাসা স্থাপন 

লিটার পদ্ধতিতে প্রতি ৪-৫ টি মুরগির জন্য ১টি ডিম পাড়ার বাক্স বরাদ করতে হবে, যার পরিমাপ হবে ১২ ইঞ্চি x ১২ ইঞ্চি x ১৪ ইঞ্চি দৈর্ঘ্য-প্রস্থ-উচ্চতা) । মুরগির ঘরের এক পার্শ্বে অন্ধকারযুক্ত স্থানে (কষ আলো) যেখানে মুরগিদের চলাফেরা কম প্রথম স্থানে ডিম পাড়ার বাক্স বসাতে হবে।

পুলেট মুরগির ডিম পাড়া শুরুর ৪-৫ সপ্তাহ পূর্বে মিটার ও মাচাতে পালিত মুরগির ঘরে পর্যাপ্ত পরিমাণে উপযুক্ত পরিমাপের ৰাসা স্থাপন করতে হবে। ফলে মুরগিগুলো ডিম পাড়া বাসার সাথে পরিচিত হবে। চিত্র পাড়ার সমরে মুরগিগুলো একটি নিরিবিলি জারগা খোজে, যেখানে সে ঝামেলা ছাড়াই ডিম পাড়তে পারবে। যদি ডিম পাড়া বাসা ঝামেলামুক্ত ও আরামপ্রদ না হয় বা সংখ্যার অপর্যাপ্ত পরিমাণ ও পরিমাপে সঠিক না হয় তাহলে মুরগিগুলো ঘরের ছায়াযুক্ত কোথায় বা খাবার পাত্র বা পানির পাত্রের নিচে বসে ডিম পাড়ে। মেঝেতে ডিম পাড়ার সময় অন্য মুরগি তার ডিম্বনালির শেষ অংশ ঠোকর দিয়ে ডিম্বনালি বের করতে পারে। ডিম পাড়া অবস্থায় মুরগির মাথা বাইরের দিকে থাকবে।

 

(খ) ডিম পাড়ার বাসার আকর্ষণীয়তা: 

ডিম পাড়া শুরু করার পূর্বে মুরগির ঘরে ডিম পাড়ার বাসা স্থাপন করে বাক্সের মধ্যে শুকনো, নরম ও আরামদায়ক বিছানা তৈরি করতে হবে। তাতে মুরগির কাছে বাসাগুলো আকর্ষণীয় হয়ে উঠতে পারে। আবার একইসাথে সব বাসায় খড়ের টুকরা দেওয়া উচিত না। বাসার ভেতর ডিম পাড়তে অভ্যস্ত করার জন্য পূর্ব থেকে কোনো সিদ্ধ ডিম বা কৃত্রিম ডিম রাখা যেতে পারে। রাতে বাক্সের দরজা বন্ধ রাখতে হবে ও সকালে দরজা খুলতে হবে।

(গ) মেঝেতে ডিম পাড়ার কারণসমূহ:

  • সঠিক সময়ে মুরগির ঘরে ডিম পাড়া বাক্স স্থাপন না করলে। 
  • কম পরিমাণে ডিম পাড়া বাসা স্থাপন করলে । 
  • ডিম পাড়া বাসার পরিমাপ সঠিক না হলে। 
  • বাসা ঘরের নির্জন শান্ত ছায়াযুক্ত স্থানে না হলে ।
  • বাসা যথেষ্ট গভীর ও আরামপ্রদ না হলে। 
  • ডিম পাড়ার বাসায় ব্যবহৃত লিটার দ্রব্যের ত্রুটি থাকলে । 
  • ডিম পাড়ার বাসার ধরন সঠিক না হলে । 
  • খাদ্য প্রদান সময় ।

উপরোক্ত বিষয়গুলোর সঠিক ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে মেঝেতে ডিম পাড়ার অভ্যাস কমানো যায় ৷

 

 

 

Content added By

৪.১.২ ডিম পাড়া বাক্স বা বাসা 

দুই ধরনের হয়, যথা- 

(ক) পৃথক বা একক বাক্স :

  • ভারী জাতের ক্ষেত্রে ১৪ ইঞ্চি×১০ইঞ্চি×১৪ইঞ্চি (দৈর্ঘ্য-প্রস্থ-উচ্চতা) এবং হালকা জাতের ক্ষেত্রে ১২ইঞ্চি×১২ ইঞ্চি×১৪ইঞ্চি (দৈর্ঘ্য-প্রস্থ-উচ্চতা) মাপের ১ টি বাক্সেই ৪-৫ টি মুরগি ডিম পাড়ার জন্য যথেষ্ট।
  • তবে ডিম পাড়া একক বাক্স বহুতল বিশিষ্ট করা যায়, সেক্ষেত্রে বাক্সের সামনে সমান্তরাল সিঁড়ি দিতে হয় ।
  • একক বাসা পাশাপাশি স্থাপন করা যায়। 
  • বাসা কাঠ বা আয়রন শিট দিয়ে তৈরি করা যায় ।
  • বাসার উপরিভাগে ঢালু থাকে, ফলে মুরগি বসে পায়খানা করে নোংরা করতে পারে না । 
  • বাসার সামনে মুরগির দাঁড়ানোর প্লাটফরম থাকে। রাত্রে প্লাটফরম ভাঁজ করে বাসায় ঢোকার রাস্তা বন্ধ করা যায় ।
  • রাত্রে বাসার ভেতর মুরগি বসতে পারলে ব্রুডি হতে পারে এবং পারখানার করে নোংরা করতে পারে।
  • ঘরের নির্জন ছায়াযুক্ত, ঠাণ্ডা ও পর্যাপ্ত বায়ু চলাচল সম্পন্ন জায়গায় বাসা দিতে হবে। প্রয়োজনে বাসাগুলো সরানো যাবে।

খ) দলভিত্তিক বাক্স

  • বড় বাণিজ্যিক খামারে এই ধরণের বাক্স ব্যবহৃত হয়। ৫০টি ডিমপাড়া মুরগির জন্য ৬০ইঞ্চিx ২৪ইঞ্চি× ২৪ ইঞ্চি (দৈর্ঘ্য গ্রন্থ x উচ্চতা) যাগের ১টি দলভিত্তিক বাক্সই যথেষ্ট।
  • বাসার ভেতর এককভাবে ডিম পাড়ার জন্য কোনো পার্টিশন থাকে না। 
  • এই বাসার উভয় প্রাজ্ঞে মুরগি ঢোকার পথ থাকে। 
  • ডিম সংগ্রহের জন্য স্লাইডিং দরজা থাকে ।

গ) রোল ওয়ে বাসা: 

  • মুরগির খাঁচার মেঝের সামনে চালু তৈরি করা হয়। 
  • খাঁচার মেঝের উপর ডিম পাড়লে গড়িয়ে খাচার বাইরে চলে আসে।
  • পাঁচার বাইরে ডিম জমা হওয়ার ব্যবস্থা থাকে। 
  • যান্ত্রিকভাবে ডিম সংগ্রহের জন্য ২ সারিতে খাঁচা স্থাপন করা হয়।
  • উভয় সারির নিজ দিয়ে কনভেয়র বেল্ট থাকে। 
  • ডিম পড়িয়ে এই বেল্টের উপর পড়লে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ডিম সংগ্রহ ঘরে চলে যায়।

 

 

 

Content added By

৪.১.৩ খাঁচা হতে ডিম সংগ্রহ (Collect eggs from the cage)

  • খাঁচায় লেয়ার পালন করলে ডিম পাড়ার জন্য আলাদা কোনো বাক্সের প্রয়োজন হয় না। 
  • মুরগি খাঁচায় মেঝেতেই ডিম পাড়ে। খাঁচার তল বা মেঝে এমনভাবে তৈরি করা থাকে যেন ডিম পাড়ার সাথে সাথেই গড়িয়ে সামনের দিকে চলে আসে।
  • ডিম গড়িয়ে আসার পর জমা হওয়ার জন্য খাঁচার সামনের দিকে বাড়তি তলের ধার বা কোনো উপরের দিকে বাঁকা করা থাকে। বাঁকা করা স্থানে এসে ডিম স্থির হয়। মুরগি এই ডিমের নাগাল পায় না ।
  • লিটার পদ্ধতির মতই দিনে ২-৩ বার ডিম সংগ্রহ করে ট্রেতে রাখতে হয়। 
  • এক্ষেত্রে ডিম পরিষ্কার থাকে । 
  • ডিম জমা হওয়ার স্থানে নরম প্যাড ব্যবহার করলে ডিমে ফাটল সৃষ্টি হয় না ।

অটোমেটিক বেল্টের মাধ্যমে এই পদ্ধতিতে ডিম সংগ্রহ করা যায়। সেক্ষেত্রে ডিম গড়িয়ে এসে বেল্টের উপর পড়ে এবং নির্দিষ্ট সময় পর পর বেল্ট ঘুরতে থাকে এবং ডিম নির্দিষ্ট স্থানে জমা হয় ।

 

 

 

Content added By

৪.১.৪ ডিম উৎপাদনে প্রভাব বিস্তারকারী বিষয়সমূহ (Factors affecting eggproduction )

মুরগির ডিম উৎপাদনের সাথে বা ডিম উৎপাদন হ্রাস পাওয়ার সাথে যে বিষয়গুলো জড়িত সেগুলো নিচে আলোচনা করা হলোঃ 

১. খাদ্য: 

খাদ্য উপাদানে পরিবর্তন ঘটলে, যেমন- খাদ্যে গম বা ভুট্টা প্রদান না করলে অথবা নতুন কোনো উপাদান হঠাৎ বেশি দিলে, খাদ্য সরবরাহ পদ্ধতির পরিবর্তন ঘটলে যেমন, ম্যাশ খাবারের পরিবর্তে পিলেট খাবার প্রদান করলে, খাদ্য প্রদানের সময় পরিবর্তন করলে ইত্যাদি বিভিন্ন কারণে ডিম উৎপাদন কমে যেতে পারে। 

২. খাদ্যমানঃ 

খাদ্যের গুণাগুণ ভালো না হলে, প্রয়োজন অনুযায়ী খাদ্যে সব উপাদান না থাকলে এবং খাদ্যে কোনো দোষ দেখা দিলে আমিষ, শর্করা, ক্যালসিয়াম ইত্যাদির অভাব হলে ডিম উৎপাদন কমে যেতে পারে । 

৩. পানি: 

পর্যাপ্ত পরিষ্কার বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ কোনো কারণে বন্ধ থাকলে ডিম উৎপাদন কমে যায়।

৪. মেঝের জায়গা: 

ঘরে প্রয়োজন অনুযায়ী জায়গা কম থাকলে, মুরগির ঘনত্ব বেশি হলে বা গাদাগাদি হলে বা ঠোকরা-ঠুকরি করলে উৎপাদন ব্যাহত হয়। 

৫. তাপমাত্রাঃ 

অতিরিক্ত গরম বা অতিরিক্ত ঠান্ডা মুরগি সহ্য করতে পারে না। ঘরের তাপমাত্রা ৫০° ফা. এর কম বা ৮০° ফা. এর বেশি হলে ডিম উৎপাদন হঠাৎ কমে যেতে পারে বা বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। মুরগি সাধারণত ৭০° ফা. তাপমাত্রায় কাম্য হারে ডিম পাড়ে। 

৬. উত্তেজনা ও ভয়: 

মুরগি হঠাৎ স্থান পরিবর্তন করলে, এক ফার্ম থেকে অন্য ফার্মে নিলে, এমনকি এক ফার্মে অভ্যন্তরে এক ঘর থেকে অন্য ঘরে নিলে, নতুন কোনো অতিথি দর্শনার্থী বা একসঙ্গে বেশি লোক, বন্য জীব জন্তু বা যানবাহন, অস্বাভাবিক শব্দ ইত্যাদি হতে আতঙ্কিত হয় বা ভয় পায়। ফলে ডিম উৎপাদন ব্যাহত হয় । 

৭. কুঁচে ভাব ও পালক বদলানো: 

মুরগির মধ্যে কুঁচে ভাব দেখা দিলে বা বছরের নির্দিষ্ট সময়ে পালক বদলালে উৎপাদন কমে যায়। পালক বদলানোর শুরুতে পালক বদলানো বন্ধ করার জন্য উচ্চ আমিষ যুক্ত খাদ্য প্রদান করতে হবে।

৮. রোগ-ব্যাধি: 

মুরগির ঝাঁকে কোনো রোগব্যাধি দেখা দিলে উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায় বা কমে যায়। মুরগির মধ্যে কৃমি থাকলে এবং উকুন, মাইট ও টিকের আক্রমণ হলে এদের স্বাস্থ্য নষ্ট হয়ে যায় এবং উৎপাদন কমে যায়। ককসিডিওসিস, রাণীক্ষেত, ইনফেকশাস ব্রংকাইটিস, এগড্রপ সিনড্রম ইত্যাদি রোগ হলে ডিমের সংখ্যা কমে যায়। 

৯. বংশগত দোষ : 

বংশগতভাবে কোনো কোনো মুরগির মধ্যে বিভিন্ন ধরনের দোষত্রুটি থাকতে পারে। যেমন- কিছু মুরগি ২-৩ দিন পর পর ডিম দেয়। আবার কিছু মুরগি আছে দীর্ঘদিন পর পর ডিম দেয়। 

১০. আলো নিয়ন্ত্রণ: 

ডিমপাড়া মুরগির ঘরে ১৬ ঘণ্টা আলো প্রদানের পরিবর্তে কম আলো প্রদান করলে ডিম উৎপাদন আশানুরূপ হয় না । 

১১. মুরগির বয়সঃ 

সাধারণত ১৯-২০ সপ্তাহ বয়সে মুরগি ডিম দিতে শুরু করে এবং ১৮ মাস বয়স পর্যন্ত একটানা গড়ে ৭৫- ৮৫% ডিম দিয়ে থাকে। মুরগির ব্যস বেশি হলে ডিম উৎপাদন কমে যায় ৷

১২. ঋতু পরিবর্তন: 

শীতকাল খামার মালিকদের জন্য অধিক লাভের জন্য উপযুক্ত সময়। গ্রীষ্মকালের চেয়ে শীতকালে মুরগি অধিক ডিম দিয়ে থাকে । 

১৩. পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতাঃ 

খামারে জৈব নিরাপত্তা ব্যবস্থার নিয়ম শৃঙ্খলাগুলো মেনে না চললে বা সার্বিক পরিচ্ছন্নতার অভাব ঘটলে উৎপাদন ব্যাহত হতে পারে । 

১৪. ডিম পাড়া বাক্স: 

ডিমপাড়া বাক্স যদি পর্যাপ্ত সংখ্যায় না থাকে তবে মুরগির ডিম উৎপাদন ব্যাহত হতে পারে এবং মেঝেতে ডিমপাড়ার হার বেড়ে যাবে । 

১৫. খাবারের পরিমাণ: 

খাবারের পরিমাণ যদি বেশি হয় তবে ফ্যাটি লিভার সিন্ড্রম দেখা যায়। ফলে ডিমের সংখ্যা প্রচন্ডভাবে কমে যায়। খাবারের পরিমাণ যদি কম হয় তাহলেও ডিমের সংখ্যা কমে যাবে। খাবারের পরিমাণ সঠিকভাবে দিলে এবং প্রোটিনের ভাগ যদি ঠিক থাকে তাহলে ডিমের সংখ্যা আবার বেড়ে যাবে । 

১৬. মুরগির দেহে হরমোনের অভাব হলে ডিম উৎপাদন কমে যায় ।

 

 

 

Content added || updated By

৪.১.৫ ডিমের অস্বাভাবিকতা (Egg abnormalities): 

মুরগির ডিম সব সময় একই আকার আকৃতির হয় না। ভিতর ও বাইরের গঠনে কিছু পরিবর্তন বা অস্বাভাবিকতা দেখা যায়। যেমন-

(১) দ্বিকুসুম ডিম: 

একটি ডিমের মধ্যে ২টি কুসুম থাকে, ফলে ডিমটি আকারে অনেকটা বড় হয়। এই ডিম ফুটানো যায় না ৷ 

(২) রক্ত ছিটা ডিম: 

ডিম্বাশয় বা ডিম্বনালিতে রক্তক্ষরণের ফলে ডিমের মধ্যে বিভিন্ন অংশে অনেক সময় কিছুটা জমাট রক্ত দেখা যায়। এ ডিম খেলে ক্ষতি নেই।

(৩) চান ডিম/ খোসা বিহীন ডিমঃ 

খাদ্য ক্যালসিয়ামের অভাব বা ক্যালসিয়াম ও ফসফরাসের অনুপাত সঠিক না থাকলে পর্দার মতো পাতলা খোসাযুক্ত ডিম হতে পারে।

(৪) কুসুমবিহীন ছোট ডিমঃ 

শরীরের কোন পদার্থ বা জমাট রক্ত যদি কোন কারণে ডিম্বনালির ভিতরে প্রবেশ করে এবং এটি যদি কুসুমের মতোই ডিম্বনালির বিভিন্ন অংশের মধ্যে দিয়ে চলে আসে , তাহলে ঐ পদার্থটি ঘিরে ডিমের অন্য সব অংশ তৈরি হবে। 

(৫) ডিমের ভেতর ডিম:

যদি একটি পূর্ণাঙ্গ ডিম কোনো কারণে ডিম্বনালিতে শেষ প্রাপ্ত থেকে পুনরার প্রথম প্রান্তে যার এবং আগের মত শেষ প্রান্তে নামতে থাকে, তবে ঐ ডিমের উপর ডিম্বনালি হতে ডিমের সাদা অংশ, খোসা ইত্যাদি সৃষ্টি হবে। ফলে ডিমের মধ্যে ডিম দেখা দিবে।

(৬) শ্বেত কুসুম ডিম:

মুরগির রক্তক্ষন্যতা বা রক্তস্বল্পতা বা মুরগি রোগাক্রান্ত হলে ডিমের কুসুম হলদে না হয়ে সাদা হতে পারে । কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই খাদ্যে হলুদ রং সৃষ্টিকারী খাদ্যোপদানের অভাব হলে ডিমের রং সাদা হয়।

 

 

 

Content added By

৪.১.৬ খামার থেকে দৈনিক ডিম সংগ্রহ

  • শীতের সময় সকাল ১০-১১ টা ও বিকাল ৪.০০-৪.৩০ টার সময় ডিম সংগ্রহ করতে হয়। 
  • গরমের সময় সকাল-বিকাল ছাড়াও দুপুরে আরও একবার ডিম সংগ্রহ করতে হয়।
  • ডিম সংগ্রহের সময় বাক্সে ১টি ডিম রাখতে হয়। 
  • সন্ধ্যাবেলা বাসায় কোনো ডিম না রেখে সকালে বাসার দরজা খোলার সময় একটি করে ডিম রাখা যায়।
  • ডিম পাড়ার প্রাথমিক অবস্থায় মুরগিগুলো মেঝেতে ডিম পাড়লে তা প্রতি ১ ঘন্টা পর পর সংগ্রহ করতে হবে এবং ঐ মুরগিগুলোকে চিহ্নিত করে ডিম পাড়ার বাক্সে তুলে দিয়ে বাক্সে ভিম পাড়ার অভ্যাস করাতে হবে।

 

 

Content added By

৪.২ ডিমের গ্রেডিং (Egg grading)

Content added By

৪.২.১ ডিমের প্রাথমিক শ্রেণী বিন্যাস

ডিমকে প্রধানতঃ দু'শ্রেণীতে বিভক্ত করা যায়, যথা: 

(ক) ফোটানোর জন্য ডিম (Hatching eggs) 

(খ) খাবার ডিম (Table eggs)

(ক) ফোটানোর জন্য ডিম

এ ধরনের ডিম উৎপাদন করতে হলে প্রতি ৮-১০ টি মুরগির জন্য ১টি করে সুস্থ প্রজনন সক্ষম মোরগ থাকতে হবে। মোরগ ও মুরগির যৌন ক্রিয়ার ৭ দিন পর থেকে বাচ্চা ফোটানোর ডিম সংগ্রহ করতে হবে। মোরগের উপস্থিতিই মূল কথা নয় মুরগির সাথে যৌন সক্ষম কিনা তা পরীক্ষা করে দেখতে হবে। মোরগ ছাড়া উৎপাদিত ডিম অনুর্বর।

(খ) খাবারের জন্য ডিম: 

বাণিজ্যিক মুরগির খামারে যে ডিম উৎপাদন করা হয় সেগুলো অনুর্বর ডিম। এ সব ডিম পাড়া মুরগির সাথে মোরগ থাকে না। অনুর্বর ডিম সহজে নষ্ট হয় না। ভোক্তাদের চাহিদার দিকে লক্ষ্য রেখে বাণিজ্যিক খামারগুলো ডিম উৎপাদন করে থাকে। এ চাহিদা ডিমের আকার, ডিমের রং, ডিমের খোসার গড়ন, কুসুমের রংয়ের উপর নির্ভরশীল। অনেকে সাদা খোসাযুক্ত বিশেষ করে গবেষণা কাজের জন্য আবার সাধরণ ভোক্তারা বাদামি খোসাযুক্ত ডিম পছন্দ করে। অনেকের পছন্দ হলুদ বা কমলা রং এর কুসুম। ডিমের কুসুমকে হলুদ করার জন্য খাদ্যের সাথে ভূট্টা ব্যবহার করলে ডিমের কুসুম হলুদ হয়।

 

 

Content added By

৪.২.২ ডিমের ওজন, আকার ও খোসার গঠনের প্রকৃতির ভিত্তিতে শ্রেণী বিন্যাস- যথা : গ্রেডিং

১) গ্রেড এ এ- অতিরিক্ত বড় ডিমঃ

এ শ্রেণির ডিমের ওজন ৬০ গ্রাম বা এর চেয়ে বেশি হয়। ডিমের খোসা হবে সুগঠিত মসৃণ, সমতল ও মাঝারি, টেকসই। সাধারণত বাণিজ্যিক হাইব্রীড জাতের ডিম আবরণে কোনো প্রকার ফাটল থাকে না। বাজারে এ জাতের ডিমের চাহিদা বেশি এবং অধিক দামে বিক্রি হয় ।

২) গ্রেড এ - বড় ডিমঃ 

এ শ্রেণির ডিমের ওজন ৫৬-৫৯ গ্রাম পর্যন্ত হয়। ডিমের খোসা সুগঠিত, মসৃণ, সমতল ও মাঝারি, হয়। এ ডিমের খোসায় কোনো ফাটল থাকে না বা ডিমের খোসা খুব শক্ত ও মোটা হবে না । 

৩) গ্রেড বি -মাঝারি আকারের ডিম : 

এ শ্রেণির ডিমের ওজন ৫০ থেকে ৫৬ গ্রাম পর্যন্ত হয়। ডিমের আকার সুগঠিত। খোসা মসৃণ সমতল ও মাঝারি টেকসইয়ের হয়। এ ডিমের খোসায় কোনো ফাটল থাকে না। ডিমের খোসা খুব শক্ত বা মোটা হবে না । 

৪ গ্রেড-সি - বাতিলকৃত ডিমঃ 

যে সমস্ত ডিম বাচ্চা ফোটানোর অনুপযুক্ত বলে বাতিল করা হয় অথবা খাবার ডিম হিসেবে পৃথক করার পর অবশিষ্ট থাকে সেগুলো এ শ্রেণিভুক্ত। ডিমের খোসা ময়লাযুক্ত থাকে, ডিমের খোসায় ফাটল থাকতে পারে। এ শ্রেণিভুক্ত ডিম কোনো নির্দিষ্ট ওজন বা আকারের হয় না । বাজারে এ ডিমের দাম কম ।

 

 

 

Content added By

৪.২.৩ বিভিন্ন প্রজাতির ডিমের খোসার বর্ণের উপর শ্রেণী বিভাগ (Classification of Egg on the shell color of different species):

 

 

Content added By

৪.২.৪ খাবার ডিমের গ্রেডিং (Grading of Edible Egg) 

ওজনের ভিত্তিতে ডিমের গ্রেডিং

 

 

Content added By

৪.২.৫ উন্নত দেশে বা আন্তর্জাতিক ভিমের গ্রেডিং (Grading of eggs in developed countries or international)

 

Content added By

8.৩ হ্যাচিং ডিম বাছাই ও সংরক্ষণ 

ডিম থেকে বাচ্চা উৎপাদন প্রক্রিয়াকে ডিম ফোটানো বা ইংরেজীতে হ্যাচিং বলে। তাই ফোটানোর ডিম উৎপাদন করার পরের ধাপই হচ্ছে ডিম ফোটানোর পর্ব। এ পর্বে উৎপাদিত ফোটানোর ডিম বাছাই করতে হয় এবং এদের যত্ন নিতে হয়। ডিম দুভাবে ফোটানো যায়। যেমন- প্রাকৃতিক ও কৃতিমভাবে। তবে যেভাবেই ডিম ফুটানো হোক না কেন উভয় পদ্ধতিতেই একই সময় লাগবে।  অল্প বাচ্চা ফোটানোর জন্য প্রাকৃতিক ও বেশি বাচ্চা ফোটানোর জন্য কৃতিম পদ্ধতির কোন বিকল্প নেই। কৃতিম পদ্ধতিতে যেভাবে ডিম ফোটানো হয় তাকে হ্যাচারি বলে। হ্যাচারিতে ভালো মানের অধিক সংখ্যক বাচ্চা উৎপাদন করতে হলে এ সম্পর্কে ভালো জ্ঞান থাকতে হবে।

 

Content added || updated By

৪.৩.১ হ্যাচিং ডিম বাছাইয়ের বিবেচ্য বিষয়সমূহ 

ডিমের আকারঃ

বাচ্চার আকার ডিমের আকারের উপর নির্ভরশীল। প্রজাতি ও জাতভেদে ডিম বিভিন্ন আকারের হয়ে থাকে। তবে সবসময় নির্দিষ্ট প্রজাতি ও জাতের মাঝারি আকারের ডিম ফোটানোর জন্য বাছাই করা উচিত।

ডিমের আকৃতি 

সব সময় ডিম্বাকৃতির ডিম ফোটানোর জন্য বাছাই করা উচিত। লম্বাটে বা গোলাকার ডিম ফোটানোর জন্য ভালো নয় । 

পাতলা খোসা: 

পাতলা খোসার ডিম বাছাই করা উচিত নয়। পাতলা খোসার ডিম মুরগির নিচে অথবা ইনকিউবেটরে বসালে খোসা ভেঙ্গে ডিমের ভেতরের অংশ অন্যান্য ডিমের খোসার উপর ছড়িয়ে পড়বে। এতে করে অন্যান্য ভালো ডিমের খোসার উপর আবরণ পড়ে বাচ্চা উৎপাদনে ব্যাঘাত সৃষ্টি করবে।

ডিম সংরক্ষণ: 

গ্রীষ্মকালে ৩-৫ দিন এবং শীতকালে ৭-১০ দিনের বেশি বাচ্চা ফোটানোর ডিম সংরক্ষণ করা উচিত নয়। 

ডিমের খোসার রঙ : 

যে জাত বা উপজাতের মুরগি যে রঙের ডিম পাড়ে হ্যাচিং এর জন্য সে রঙের খোসার ডিমই বসানো উচিত। 

খোসার মসৃণতা 

সাধারণত সুষম খাদ্যের অভাবেই ডিমের খোসার মসৃণতা নষ্ট হয়ে থাকে। যে খাদ্যের মধ্যে ক্যালসিয়াম অথবা ভিটামিন ডি এর অভাব থাকে সে ধরণের খাদ্য ডিমপাড়া মুরগিকে খাওয়ানো উচিত নয়। এ ছাড়া যে সব ডিমের খোসা বেশি খসখসে সেগুলো ভালো ফোটে না। কাজেই শক্ত ও মসৃণ খোসা দেখে ডিম বসানো ভালো।

ফাটা ডিম : 

ডিমের খোসা যাতে ফাটা না থাকে সেদিকে বিশেষ লক্ষ্য রাখতে হবে। সাধারণত ফাটা কিংবা ভাঙ্গা খোসা বিশিষ্ট ডিম থেকে বাচ্চা ফোটে না। দূরবর্তী কোনো স্থান থেকে ডিম সংগ্রহ করলে তা সঙ্গে সঙ্গে ইনকিউবেটরে না বসিয়ে কিছু সময় রাখার পর বসাতে হয়।

ময়লাযুক্ত ডিম: 

বাচ্চা ফোটানোর জন্য ময়লাযুক্ত ডিম বাছাই করা উচিত নয়। 

ডিমের ভেতরের গুণাবলী: 

আলোর সাহায্যে ডিমের ভেতরের অংশ পরীক্ষা করলে যদি কোনো ডিমের ভেতর রক্তের দাগ অথবা ডিমের সাদা অংশ এবং কুসুম ঘোলাটে দেখা যায় তাহলে সে ডিম থেকে বাচ্চা ফুটবে না ।

ঋতুর প্রভাব: 

ডিমের উর্বরতা ঋতু পরিবর্তনের সাথে বদলে যায়। যেমন- বসন্তকালে ডিমের উর্বরতা বেশি ও গ্রীষ্মকালে কম।

রোগমুক্ত মুরগি 

ডিমের মাধ্যমে বংশ পরম্পরায় রোগ বিস্তার লাভ করে। পুলোরাম, মুরগির টাইফয়েড প্রভৃতি রোগে আক্রান্ত মুরগির ডিম ফোটানোর জন্য বাছাই করা উচিত নয় ।

ডিমপাড়া মুরগির পুষ্টি: 

ভ্রুণের বৃদ্ধি ডিমের ভেতরের পুষ্টিকর খাদ্যের ওপর নির্ভর করে। সে জন্য ডিমপাড়া মুরগিকে সুষম খাদ্য দিতে হয়। সুষম খাদ্য না দিলেও মুরগি ডিম পাড়বে তবে সে ডিম থেকে যে বাচ্চা হবে তার বৃদ্ধি আশানুরূপ হবে না। একইভাবে সুষম খাদ্যের অভাবে মোরগের শুক্রাণু উৎপাদন কমে যাবে। উর্বরতা ও স্ফুটনক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য ব্রিডিং ফ্লকে ব্যবহৃত মোরগকে পর্যাপ্ত পরিমাণ আমিষজাতীয় খাবার দেয়া প্রয়োজন ।

মুরগির বয়স: 

ভালো ডিম পেতে হলে মুরগির বয়সের প্রতি বিশেষ লক্ষ্য রাখতে হবে। মুরগি ডিম দিতে শুরু করার ৩-৪ সপ্তাহ পরে প্রাপ্ত ডিমের স্ফুটনক্ষমতা সবচেয়ে বেশি। মুরগির বয়স খুব বেশি বাড়ার সাথে সাথে পরবর্তী বছরগুলোতে ডিমের ফুটন ক্ষমতা কমতে থাকে। প্রজননের জন্য ব্যবহৃত মুরগির বাসস্থান স্বাস্থ্যকর ও আরামদায়ক হতে হবে। বাসস্থানের বাহির ও ভেতর সর্বদা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা এবং তা মুক্ত আলোবাতাস চলাচলের উপযোগী করতে হবে।

মোরগ ও মুরগির মিলনের পর যে ডিম পাওয়া যায় তা সাধারণভাবে উর্বর বলে ধরা হয়।

হ্যাচিং ডিমের উৎস: 

যে সমস্ত ফার্ম বাচ্চা উৎপাদনের লক্ষ্যে সঠিক অনুপাতে মোরগ- মুরগীর মিলন ঘটিয়ে উর্বর ডিম উৎপাদন করে সে সমস্ত ফার্মই হল হ্যাচিং ডিমের উৎস। এ সমস্ত ফার্মকে ব্রিডিং/প্রজনন ফার্ম বলা হয়। বর্তমানে আমাদের দেশে সরকারি পর্যায়ে মীরপুরে কেন্দ্রিয় পোল্ট্রি প্রজনন খামার আছে। এছাড়াও বর্তমানে সরকারি পর্যায়ে বিভিন্ন জেলায় আরও কয়েকটি প্রজনন খামার রয়েছে।

 

 

 

Content added || updated By

৪.৩.২ ফোটানোর ডিম সংরক্ষণ (Preservation of hatching eggs):

মুরগির ঘর থেকে ট্রে বা ঝুড়িতে করে ডিম সংগ্রহ করার পর ডিমগুলো পরিষ্কার কাপড়ের সাহায্যে শুষ্ক অবস্থায় অথবা ঈষৎ গরম পানির সাহায্যে ডিম পরিষ্কার করা যায়। এর সাথে সাথেই জীবাণুমুক্ত পরিষ্কার শুকনা কাপড় দিয়ে ডিমের খোসার পানি শুকিয়ে নিতে হবে। হঠাৎ ঠান্ডা বা গরমে ডিমের ক্ষতি হতে পারে। সে জন্য সতর্ক থাকতে হবে। অসুস্থ বা স্বাস্থ্যহীন মুরগির ডিম ফোটানো উচিত নয়।

সংরক্ষণের নিয়মাবলি নিম্নরূপ: 

১. পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন স্থানে ডিম সংরক্ষণ করতে হয়, কারণ ময়লা লাগলে ডিমের খোসার ছিদ্রগুলো বন্ধ হয়ে যায় এবং ভ্রুণের শ্বাসকার্য ব্যাহত হয়। 

২. ডিম সাধারণত ১০-১৫.৬ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রায় সংরক্ষণ করতে হয়। ডিম কখনও অতিরিক্ত গরম বা অতিরিক্ত ঠান্ডা পরিবেশে রাখা ঠিক নয়। বড় বড় হ্যাচারিতে ডিম সংরক্ষণ করতে হলে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কক্ষ ব্যবহার করা উচিত। গ্রামে ডিম সংরক্ষণের জন্য ঠান্ডা ছায়াযুক্ত স্থান ব্যবহার করা উচিত।

৩. ৬০-৭০% আপেক্ষিক আর্দ্রতা ডিম সংরক্ষণের জন্য উপযুক্ত। ঘরের ভিতরে পানির পাত্র বসিয়ে বা ভিক্ষা চট দিয়ে ঘরের আর্দ্রতা কিছুটা নিররণ করা যায় । যদি ঘরের আর্দ্রতা অনেক কম হয় তবে ডিমে বাস্পীভবন হবে, ফলে বায়ুকোষ আকারে বড় হবে এবং হ্যাচাবিলিটি কমে যাবে।

৪. ডিম সংরক্ষণের সময় ডিমের মোটা অংশের উপরের দিকে রাখতে হয় । 

৫. ডিম গ্রীষ্মকালে ৩-৪ দিন এবং শীতকালে ৭-১০ দিনের বেশি সংক্ষরণ করা যায় না। বেশি দিন ডিম সংরক্ষণ করলে ডিম হতে পানি বেরিয়ে বায়ুকোষ বেশি বড় হয়, ফলে সেই ডিম ফোটে না । 

৬. ডিম ৭(সাত) দিনের বেশি সংরক্ষণ করলে দিনে ৩-৪ বার উল্টিয়ে দেয়া ভালো।

 

 

Content added By

8.8 খাবার ডিম সংরক্ষণ ও বিপণন (Table Fee storage And Marketing)

Content added By

8.8.১ ডিম সংরক্ষণের বিভিন্ন পদ্ধতি (Different methods of cre preservation);

ডিম সংরক্ষণ করার বিষয়ে যথাযথ গুরুত্ব আরোপ করা প্রয়োজন। যথাযথ সংরক্ষণ ব্যবস্থার অভাবে প্রতিবছর বিপুল সংখ্যক ডিম নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। বিশেষত গ্রীষ্মকালে ডিম নষ্ট হওয়া বা পঁচে যাওয়ার সংখ্যা অনেক বেশি। এ মৌসুমে বিশেষত মুরগির ডিম অল্প কয়েকদিনের মধ্যেই নষ্ট হয়ে যায়। এ কারণে ডিম সংরক্ষণ পদ্ধতি সম্পর্কে যথাযথ ও স্পষ্ট জ্ঞান থাকা প্রয়োজন ।

(ক) দেশীয় প্রথায় ডিম সংরক্ষণ: 

বাংলাদেশের গ্রামাঞ্চলে ঐতিহ্যগতভাবে সাধারণ মানুষরা বিভিন্ন পদ্ধতিতে ডিম সংরক্ষণ করে থাকে । যথা-

১) মাটির হাড়িতে ডিম সংরক্ষণ: 

প্রথমে মাটির হাঁড়ির মধ্যে ডিম রাখা হয়। পরে হাঁড়ির অর্ধাংশ ভেজা মাটিতে পুঁতে রাখা হয়। এভাবে সংরক্ষিত ডিমের মেয়াদ স্বল্পমেয়াদি বিধায় এটি তেমন কার্যকর পদ্ধতি নয়। ঠান্ডায় সহজ পদ্ধতিতে ডিম সংরক্ষণের উদ্দেশ্য গ্রামাঞ্চলে ঘরের কাঁচা মেঝেতে একটি গর্ত করা হয়। ঐ গর্তের মধ্যে বসানো হয় একটি মাটির হাঁড়ি। হাঁড়ির চারপাশে কাঠ কয়লা দিয়ে ভরাট করা হয়। প্রতিদিন কয়েকবার পানি দিয়ে কাঠ কয়লা ভিজিয়ে দেয়া হয়। এতে হাঁড়ির মধ্যভাগ বেশ ঠান্ডা হয়ে যায় । হাঁড়ির মধ্যে ডিম রেখে মাটির সরা বা ঢাকনা দিয়ে হাঁড়িটি ঢেকে দেয়া হয়। এভাবে সংরক্ষিত ডিম বেশ কিছুদিন ভালোভাবে টিকে থাকে। ফলে এটিকে ডিম সংরক্ষণের একটি মোটামুটি লাগসই প্রযুক্তি বলা যায় ।

২) সিদ্ধ করে ডিম সংরক্ষণ : 

ডিম সিদ্ধ করে সংরক্ষণ করা যায়। ৬০° সেলসিয়াস তাপমাত্রায় গরম পানির মধ্যে ১৫ মিনিট ধরে ডিম সিদ্ধ করলেও তা বেশ কিছুদিন পর্যন্ত ব্যবহারযোগ্য রাখা যায়। গ্রামের হাট, ফেরিঘাট, বাসস্ট্যান্ড, রেলস্টেশন প্রভৃতি জনবহুল স্থানে ফেরি করে সিদ্ধ ডিম বিক্রি করা হয়। ১০০ টি সিদ্ধ ডিম একই দিনে বিক্রি না হলে তা পরদিন এবং প্রয়োজনবোধে আরও একদিন পর্যন্ত রেখেও বিক্রি করা হয়। এভাবে সিদ্ধ করার পর অন্তত ২ দিন পর্যন্ত ডিম ভালো অবস্থাতেই থাকে। 

৩) ডিমের খোসার ছিদ্র বন্ধ করে ডিম সংরক্ষণ : 

ডিমের খোসা বা উপরিভাগের আবরণে থাকে অসংখ্য অতি ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ছিদ্র। বাইরের গরম বাতাস এসব ছিদ্রের মধ্য দিয়ে ডিমের মধ্যে প্রবেশ করে এবং তা বের হয়ে আসে জলীয় বাষ্প আকারে। এসব ছিদ্র দিয়ে নানা ধরনের অণুজীব প্রবেশ করে ডিমকে পচিয়ে দেয় বা নষ্ট করে । এসব সূক্ষ্ম ছিদ্র খালি চোখে দৃশ্যমান নয়। তবে ডিমের এসব ছিদ্র যদি বন্ধ করা যায় তবে ডিমের ভেতরের গুনাগুণ অপরিবর্তিত থাকে । 

(ক) সরিষার তেল ব্যবহার: 

ডিমকে ১ মিনিট খাঁটি সরিষার তেলের মধ্যে ডুবিয়ে রাখলে ডিমের খোসার গায়ে ছিদ্র বন্ধ হয়ে যায় । এভাবে তেলে ডোবানো ডিম তুলে স্বতন্ত্র পাত্রে রেখে দিতে হয়। এভাবে রাখা ডিম বেশ কিছুদিন ভালো থাকলেও খাওয়ার সময় ডিমে সরিষার তেলের ঝাঁজ পাওয়া যেতে পারে। 

(খ) মিনারেল তেল ব্যবহার: 

বর্ণ, গন্ধ ও স্বাদহীন মিনারেল তেলের মধ্যে ডিম ডুবিয়ে পরে তুলে তা শুকিয়ে রাখতে হয়। এভাবে তেলে ডুবিয়ে পরে শুকানোর ফলে ডিমের মধ্যকার জলীয় অংশ বাষ্পীভূত হতে পারে না। এভাবে সংরক্ষণের জন্য প্রথমে একটি পাত্রের মধ্যে পর্যাপ্ত পরিমাণে মিনারেল তেল নিতে হয়। একটি তারের জালের খাচার মধ্যে ভরে নিয়ে খাঁচাটিসহ মিনারেল তেলের মধ্যে কিছুক্ষণ ডুবিয়ে রাখতে হয়। তারপর খাঁচাসহ তুলে নিতে হয়। আজকাল আধুনিক পন্থায় ডিমের উপরে মিনারেল তেল উত্তমরূপে স্প্রে করা হয়। তারপর ঐ ডিম প্যাকেট বন্ধ করা হয়। এভাবে ডিম সংরক্ষিত থাকলেও ব্যবহৃত মিনারেল তেলে যদি কেন গন্ধ বা স্বাদ তবে তা ডিমের মধ্যে প্রবেশ করে ।

(গ) চুনের পানি ব্যবহার: 

কোথাও কোথাও চুনের পানির মধ্যে ডিম ডুবিয়ে রেখে পরে তা সংরক্ষণ করা হয়। এভাবে চুনের পানিতে ডুবিয়ে রাখলে ডিমের সূক্ষ্ম ছিদ্রগুলো বন্ধ হয়ে যায়। এভাবে সংরক্ষিত ডিম দীর্ঘ দিন পর্যন্ত ভালো অবস্থায় থাকে। এভাবে সংরক্ষণের লক্ষ্যে প্রথমে একটি পাত্রে ১ লিটার পানি নিতে হয়। পানিতে ১০০ গ্রাম লবণ ভালোভাবে গুলে তারপর গরম করতে হয়। লবণ মেশানো পানি চুলা থেকে নামিয়ে রাখতে হয়। ঐ পানি ঠান্ডা হওয়ার পর তার মধ্যে ২৫০ গ্রাম চুন উত্তমরূপে গুলে নিতে হয়। এরপর পাত্রটি ১ দিন রেখে দিতে হয়। পাত্রের নিচে তলানি জমে। ওপরের পরিষ্কার পানি আরেকটি পাত্রে এমনভাবে ঢেলে নিতে হয় যাতে নিচের তলানি নড়ে না যায়। এরপর ঐ পরিষ্কার পানির মধ্যে তারের খাঁচাসহ ডিম ডুবিয়ে দিতে হয়। খাঁচাসহ ডিম তুলে ছায়াযুক্ত স্থানে রেখে দিলে ডিম শুকিয়ে যায়। ডিম সংরক্ষণের জন্য এটি একটি সহজ উত্তম পদ্ধতি।

(ঘ) সোডিয়াম সিলিকেটের সাহায্যে 

এ পদ্ধতিতে ডিম সংরক্ষণের জন্য প্রথমে একটি পাত্রের মধ্যে পানি নিয়ে তা গরম করে পরে আবার ঠান্ডা করতে হয়। পানি ঠান্ডা হলে ৯:১ অনুপাতে ঠান্ডা পানি ও সোডিয়াম সিলিকেট একত্রে মেশাতে হয়। তারের খাঁচাসহ ডিম ঐ সিলিকেট পানির মধ্যে ২০ মিনিট কাল ডুবিয়ে রাখতে হয়। এরপর খাঁচা তুলে নিয়ে ছাঁয়ায় রাখলে ডিম শুকিয়ে যায়। ডিমের গায়ে সিলিকেট পানি শুকিয়ে গেলে ডিমের গায়ের সূক্ষ্ম ছিদ্র বন্ধ হয়ে যায়। এভাবে সংরক্ষিত ডিম দীর্ঘদিন পর্যন্ত ভালো অবস্থায় থাকে। শুকানোর পর ডিম প্যাকেটজাত করে কোনো ঠান্ডা জায়গায় রাখতে হয়। তবে ডিমের সূক্ষ্ম ছিদ্র বন্ধ করে সংরক্ষণ করার ফলে এসব ডিম থেকে বাচ্চা ফুটানো যায় না ।

 

ডিম সংরক্ষণ সম্পর্কে সাধারণ তথ্য: 

ডিম যদি ফেটে যায় বা ডিমের গায়ে যদি ময়লা থাকে তবে তা সংরক্ষণ করা যায় না। ডিমের খোসার গায়ে লেগে থাকা ময়লা নরম ব্রাশের সাহায্যে পরিষ্কার করতে হয়। সামান্য কুসুম গরম পানিতে তুলা, স্পঞ্জ বা কাপড়ের টুকরা ভিজিয়ে তা দিয়ে ডিমের গায়ে লেগে থাকা ময়লা পরিষ্কার করা যায়। কোনো অবস্থাতেই ডিম পরিষ্কার করার জন্য ঠান্ডা পানি বা কোনো ধরনের রাসায়নিক পদার্থ ব্যবহার করা যাবে না। রসুন, পেঁয়াজ বা গন্ধযুক্ত অন্য কোনো দ্রব্যের পাশে ডিম রাখা অনুচিত। কারণ গন্ধ খুব | সহজেই এবং দ্রুত ডিমের মধ্যে শোষিত হয়।

তাত্ত্বিক কাজঃ

  • চুনের পানিতে ডিম সংরক্ষণে চুন ও পানির অনুপাত -
  • সোডিয়াম সিলিকেট দিয়ে ডিম সংরক্ষণে সোডিয়াম সিলিকেট ও পানির অনুপাত-

 

(খ) উন্নত পদ্ধতিতে ডিম সংরক্ষণ (Preserve eggs in an improved manner):

১) হিমাগারে সংরক্ষণ:

 বাচ্চা ফুটানোর জন্য ডিম হিমাগারে ১ সপ্তাহ সংরক্ষণ করা হয়। হিমাগারে তাপমাত্রা রাখা হয় ১২° সেলসিয়াস। খাবার খাবার ডিম সংরক্ষণের জন্য হিমাগারের তাপমাত্রা ও আর্দ্রতা রাখতে হয় যথাক্রমে ০-৩° সেলসিয়াস ও ৬০% আপেক্ষিক আর্দ্রতা। 

২) গভীর হিমায়িত ডিমঃ 

এ পদ্ধতিতে ডিম ভেঙে ভেতরের কুসুম ও সাদা অংশ ০° সেলসিয়াস বা তার চেয়েও কম তাপমাত্রায় সংরক্ষণ করা যেতে পারে। বেকারি, কনফেকশনারি এবং ন্যুডলস্ তৈরির কারখানায় ব্যবহারের জন্য এভাবে ডিম সংরক্ষণ করা হয়।

৩) শুকনো ডিম:

 ডিম শুকানোর পদ্ধতিসমূহঃ 

(ক) ডিম ভেঙে ভেতরের তরল কুসুম ও সাদা অংশ “ক্ল্যরিফায়ার” যন্ত্রের মধ্যে দেয়া হয়। 

(খ) ছাকনির সাহায্যে ডিমের চ্যালাজা এবং ভাইটিলিন পর্দাসমূহ আলাদা করে ফেলা হয় ৷ 

(গ) তারপর ৬০° সেলসিয়াস তাপমাত্রায় উষ্ণ বাতাস ডিমের জলীয় অংশ শোষণ করে নেয় এবং ডিম গুঁড়া পাউডার হয়ে যায় ।

এভাবে শুকানো পাউডারকৃত গুঁড়া ডিম অবিলম্বে প্যাকেটবন্ধি ও সীলমোহর করতে হয়। বাতাসে কিছুক্ষণ থাকলে ও ডিম বাতাস থেকে জলীয় বাষ্প শোষণ করতে পারে। অনেক সময় ডিমের সংরক্ষণ ক্ষমতা বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে প্যাকেটে কার্বন ডাই অক্সাইড ব্যবহার করা হয়। এভাবে কার্বন ডাই অক্সাইড ব্যবহার করা হলে তা ডিমের মধ্যে অণুজীবের প্রবেশ এবং বংশ বিস্তার রোধ করে । প্যাকেটজাত গুঁড়ায় ২% এর অধিক আর্দ্রতা থাকা অনুচিত ।

 

 

 

Content added || updated By

৪.৪.২ ডিম প্যাকেজিং পদ্ধতি (Egg packaging method):

  • ডিমের সুষ্ঠু বিপণনের জন্য ডিমের যথাযথ প্যাকেজিং অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ডিম পরিবহনের ক্ষেত্রেও যেমন প্যাকেজিং দরকার, আবার ডিম বিপণনের ক্ষেত্রেও বিভিন্ন সংখ্যক ডিম প্যাকেট করা হয়ে থাকে।
  • ডিম পরিবহনের ক্ষেত্রে প্লাস্টিকের এগ ট্রে তে ডিম সাজিয়ে ডিমের ক্রেটে ভরে এক স্থান হতে অন্য স্থানে নেওয়া হয়। বাঁশের ঝুড়িতে প্যাক করে ও গ্রামাঞ্চল থেকে শহরের আড়তে ডিম আনা হয়।
  • যদি বাজারে বিক্রির ক্ষেত্রে প্যাকেজিং এর কথা চিন্তা করা যায়, তাহলে দেখা যায় সুপার মার্কেটগুলোতে মোটা কাগজের বা প্লাস্টিকের ট্রেতে ১২ টা বা ৬ টা ডিম পলিথিন দিয়ে মুড়িয়ে বিক্রি করা হয়। অনেক সময় পলিথিনের পরিবর্তে কাগজের প্যাকেটের মধ্যে কাগজের ট্রেতে ডিম বসিয়ে বিক্রি করা হয়। তবে খুচরা দোকান থেকে ডিম কিনতে গেলে কাগজের প্যাকেট বা পলিথিনের ব্যাগে ভরে ডিম সরবরাহ করা হয় ।  

 

 

 

Content added By

৪.৪.৩ ডিমের পরিবহন (Egg transport):

দূরের বড় বাজারে ডিম পাঠাতে হলে যত্ন ও সতর্কতার সাথে প্রেরণ করতে হবে। না হলে ডিম ভেঙে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে গ্রাম থেকে শহরে ডিম পরিবহন করে নিয়ে আসা হয় । ৩ টি পদ্ধতিতে সাধারণত ডিম পরিবহন করা হয় । যথাঃ-

ক) বাঁশের ঝুড়িতে ডিম পরিবহন 

এ পদ্ধতিতে তলা চ্যাপ্টা বাঁশের ঝুড়িতে ডিম পরিবহন করা হয়। ঝুড়ির তলাতে ২ ইঞ্চি পুরু করে খড় বিছিয়ে তার উপর তুষ বা কাঠের গুঁড়া বিছিয়ে ডিম সাজাতে হয়। এর উপর আবার তুষ বিছিয়ে আবার ডিম বসানো হয় এভাবে কয়েক স্তরে ডিম সাজানো যায়। সর্ব উপরে খড়ের টুকরা দিয়ে মুখ চট দিয়ে সেলাই করতে হয়। 

খ) প্লাস্টিকের ট্রেতে ডিম পরিবহন : 

বর্তমানে প্লাস্টিকের তৈরি ট্রেতে নিরাপদে ডিম বসিয়ে পরিবহণ করা হচ্ছে। ১টি ট্রেতে ৩০ টি ডিম বাসানো যায়। এভাবে ২০ টি ট্রে আবার ১ টি ডিমের ক্রেটে ভরা যায়। এভাবে ক্রেট ভর্তি ডিম সহজেই রিকশা ভ্যানে, পিক আপে, ট্রাকে, বাসে, ট্রেনে, নৌকায়, সাইকেলে করেও ডিম পরিবহন করা যায়। এতে ডিম রাখার জন্য পৃথক খোপ থাকে বিধায় ডিমগুলি পরস্পর ঠোকাঠুকি খায় না ।

গ) কাঠের বাক্সে ডিম পরিবহন 

হালকা ও কম দামি কাঠ দিয়ে বাক্স তৈরি করে ডিম পরিবহণ করা যায়। বাক্সের তলায় খড়ের টুকরো বিছিয়ে দিয়ে তার উপর কাঠের গুঁড়া বা তুষ বিছিয়ে স্তরে স্তরে ডিম সাজাতে হবে। এরপর বাক্সের মুখ ঢাকনা দিয়ে বন্ধ করে ডিম শহরে নিয়ে যাওয়া হয়। বাক্সের গায়ে “সাবধান, ডিম আছে” কথাটি লিখে দেয়া ভালো ।

 

 

 

Content added By

৪.৪.৪ ডিম বিপণন (Egg marketing):

দেশে অধিকাংশ ডিম গ্রামের কৃষকের বাড়িতে উৎপন্ন হয়। কৃষক সাধারণত সাপ্তাহিক হাটে বা বাজারে বিক্রি করে । আবার ফেরিওয়ালা সরাসরি কৃষকদের নিকট থেকে এবং হাট থেকে ডিম সংগ্রহ করে পাইকারদের নিকট বিক্রি করে । পাইকার খুচরা বিক্রেতা (স্থানীয়ভাবে) অথবা বড় শহরের আড়তদারের নিকট ডিম বিক্রি করে । 

তবে মাঝারী ও বড় খামারিদের নিকট থেকে ভোক্তা পর্যায়ে নিম্নলিখিতভাবে ডিম পৌছায়:

তবে ডিম বিপণনের প্রক্রিয়ায় মধ্যস্থতাকারী অনুপস্থিত থাকলে উৎপাদানকারীগণ ন্যায্যমূল্য পাবে ও ভোক্তা সঠিক হবে।

 

 

 

Content added By

জব ০৬ : ফোটানোর জন্য ডিম বাছাই ও সংরক্ষণ

পারদর্শিতার মানদণ্ড

  • স্পেসিফিকেশন অনুযায়ী যন্ত্রপাতি ও টুলস নির্বাচন ও সংগ্রহ করা 
  • ডিমের আকৃতি, খোসার রং ও মসৃণতা, ফাটা, ময়লাযুক্ততা ইত্যাদির উপর ভিত্তি করে হ্যাচিং ডিম বাছাই করা
  • সংরক্ষণাগার পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করা 
  • নির্দিষ্ট তাপমাত্রা ও আর্দ্রতায় বিভিন্ন পদ্ধতিতে ডিম সংরক্ষণ ডিম সংরক্ষণ করা 
  • সংরক্ষণের সময় ডিমের মোটা অংশ উপর দিকে রাখার ব্যবস্থা গ্রহণ করা

(ক) ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জাম (PPE)

 

(খ) প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি (টুলস, ইকুইপমেন্ট ও মেশিন )

 

(গ) প্রয়োজনীয় কাঁচামাল (Raw Materials)

 

ক) ফুটানোর ডিম বাছাই

কাজের ধারাঃ 

১. একটি ট্রেতে ফোটানোর জন্য কিছু উর্বর ডিম নাও । 

২. এগ সর্টিং মেশিনের মাধ্যমে অপরিস্কার ও ভাঙ্গা ডিম গুলি পৃথক করো। 

৩. এরপর নিম্নলিখিত বৈশিষ্ট্যসমূহ পর্যবেক্ষণ করে ডিম বাছাই করে ট্রেতে সংরক্ষণ করো।

  • ওজনঃ ফুটানোর ডিমের ওজন ৫৫-৬০ গ্রাম হতে হবে । 
  • আকার: মাঝারী আকারের হতে হবে । 
  • আকৃতি: ডিম্বাকৃতি হতে হবে ।
  • বর্ণ / রং জাত অনুসারে স্বাভাবিক বর্ণের হতে হবে । 
  • খোসার দৃঢ়তা: খোসা খুব শক্ত বা ভঙ্গুর হবে না । 
  • খোসার গঠন: খোসা মসৃন হবে ।
  • ডিমের বয়স: ৬-৭ দিন হবে। 
  • ডিমের খোসার রক্তের দাগ থাকা যাবে না । 
  • এদিনের বেশী বয়সী ডিম বাদ দাও।
  • ফাটা দাগ থাকলে তা বাদ দাও । 
  • মোরগ-মুরগির অনুপাত ঠিক ছিল কিনা তা জেনে নাও ।

উর্বর ও অনুর্বর ডিম গুলো চিহ্নিত করে পৃথক করে রাখ।

 

খ) ফুটানোর ডিম সংরক্ষণ 

কাজের ধারা:

১. সংরক্ষণের উদ্দেশ্যে ফুটানোর ডিম সংগ্রহ করো ও ঝুড়িতে রাখ। 

২. ডিমগুলো পরিস্কার করে ট্রেতে রাখ। 

৩. ডিমের ট্রে গুলোতে মার্কিং করে লেবেল লাগাও। (জাত ও তারিখ) 

৪. ডিমসহ ট্রে খলো ১২ ডিগ্রি সেঃ তাপমাত্রার ও ৬০% আর্দ্রতায় হিমাগারে বা রেফ্রিজারেটরের সাধারণ অংশে সংরক্ষণ করো। এভাবে ডিম ৭ থেকে ১০ দিন সংরক্ষণ করে রাখতে পার।

 

সতর্কতাঃ

১) ডিমের বাহ্যিক বৈশিষ্ট্যগুলো সর্তকতার সাথে পরীক্ষা করতে হবে 

২) জিম কনো যাবে না এতে ডিম নষ্ট হয়। । 

৩) সংরক্ষণ কক্ষের তাপমাত্রা তা সঠিক ভাবে নিরণ করতে হবে।

 

 

 

Content added By

জব ০৭ : ইনকিউবেটরের সাহায্যে ডিম ফুটানো

পারদর্শিতার মানদণ্ডঃ

  • স্পেসিফিকেশন অনুযায়ী যন্ত্রপাতি ও টুলস নির্বাচন ও সংগ্রহ করা 
  • ডিমের আকৃতি, খোসার রং ও মসৃণতা, ফাটা, ময়লাযুক্ততা ইত্যাদির উপর ভিত্তি করে হ্যাচিং ডিম বাছাই করা
  • ইনকিউবেটর পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করা 
  • বাছাইকৃত ডিম ইনকিউবেটরে বসানো
  • ইনকিউবেটর নির্দিষ্ট তাপমাত্রা, আর্দ্রতায় ও ডিম টার্নিং পর্যবেক্ষণ করা 
  • ডিম সেটিং ট্রে হতে হ্যাচিং ট্রেতে স্থানান্তর ও পিপিং পর্যবেক্ষণ করা 
  • ডিম ফোটার পর বাচ্চা ইনকিউবেটর থেকে নামানো ও বাছাই করে প্যাকেজিং করা

(ক) ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জাম (PPE)

খ) প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি (টুলস, ইকুইপমেন্ট ও মেশিন )

 

(গ) প্রয়োজনীয় কাঁচামাল (Raw Materials)

 

(ঘ) কাজের ধারাঃ 

১. ইনকিউবেটরটি পরিস্কার পরিচ্ছন্ন করে বিদ্যুৎ সংযোগ প্রদান করে দেখ তা সঠিকভাবে কার্যকর আছে কি না। 

২. নির্ভরযোগ্য উৎস হতে উর্বর ডিম সংগ্রহ কর এবং যথাযথ ভাবে সংরক্ষণ করো। 

৩. ডিমগুলো পরিক্ষার করে নাও। 

৪. সঠিক আকার ও আকৃতির ডিম বাছাই করো। 

৫. ফাটা, ভাঙ্গা, রক্তের দাগ, মেঝেতে পাড়ে এমন ভিষ গুলি বাদ দাও। 

৬. ইনকিউবেটরটি ফিউমিগেশনের মাধ্যমে জীবাণু মুক্ত করো। 

৭. ধারণ ক্ষমতা অনুসারে ইনকিউবেটরের সেটারে ভিম বসাও। খেয়াল রাখ যেন স্কিম ফেটে না যায় । 

৮.এবার ফিউমিগেশনের সাহায্যে ডিম জীবাণু মুক্ত করো ।

 

৯. ইনকিউবেটরটি চালু করে তাপমাত্রা (১০১ ফা.), আর্দ্রর্তা (৬৫%), টার্নিং ঠিকমত হচ্ছে কিনা তা পর্যবেক্ষণ কর এবং রেকর্ডশীটে লিপিবদ্ধ করো। 

১০. ৭ম ও ১৪তম দিনে ডিমগুলি ক্যান্ডেলারের সাহায্যে পর্যবেক্ষণ করে নষ্ট ডিমগুলি বাদ দাও । 

১১. এরপর ১৮তম দিনে ডিমগুনি সেটিং ট্রে হতে হ্যাচিং ট্রে তে স্থানান্তরিত কর। (মুরগির ডিমের ক্ষেত্রে) 

১২. হ্যাচিং পিরিয়ডে কাঙ্খিত ভাগ ও আর্দ্রতা সঠিকভাবে নিয়ন্ত্রণ কর, যাতে ডিম ফুটতে কোন সমস্যা না হয়। কারণ এই সময় তাপমাত্রা সামান্য কম (৯৯° ফা.) এবং আর্দ্রতা বেশী (৭৫%) প্রয়োজন হয় । 

১৩. সঠিকভাবে ভাপ, আর্দ্রতা নিয়ন্ত্রণ এবং টার্নিং করলে ২০তম দিনের পর হতে পিপিং দেখা যাবে এবং ২১ দিন হবে বাচ্চা ফুটা শুরু করবে।

 

১৪. বাচ্চা ফুটানোর পর ইনকিউবেটরে আরো ১২ ঘণ্টা রেখে দাও, যাতে বাচ্চার ভেজা পালক শুকিয়ে যায়।

১৫. এরপর বাচ্চাগুলি বাছাই কর (লেয়ারের ক্ষেত্রে সেক্স অনুসারে) এবং ভাল বাচ্চাগুলি প্যাক করে বাজারজাত করো ।

 

সতর্কতা

  • ডিম বসানোর পূর্বে ইনকিউবেটরটি চালু করে কার্যকারিতা অবশ্যই পরীক্ষা করতে হবে।
  • সঠিক মাত্রা, আদ্রর্তা ও টার্নিং হার নিয়ন্ত্রণ করতে পারনে ।
  • হ্যাচিং থেকে বাচ্চা স্থারের পর অবশ্যই টার্নিং বন্ধ করতে হবে এবং তাপমাত্রা কমিরে আর্দ্রতা বাড়াতে হবে।

ব্যবহারিক কাজ 

  • ইনকিষ্টৰেটরে তাপমাত্রা, আর্দ্রতা ও টার্নিং নিয়ণ পর্যবেক্ষণ।
  • সেটিং ট্রেতে ডিম কিভাবে বসানো অনুশীলন।
  • গিপিং পর্যবেক্ষণ।

 

 

Content added By
Please, contribute to add content into অনুশীলনী প্রশ্নমালা.
Content

১. লিটার পদ্ধতিতে লেয়ার ঘরে একক ডিম পাড়া বাক্সের পরিমাপ কত? 

২. ডিম পাড়া বাসা স্থাপনের কৌশল কী? 

৩. ডিম সংরক্ষণ বলতে কী বোঝায়? 

৪. ডিম সংরক্ষণে পানি ও সোডিয়াম সিলিকেটের অনুপাত কত? 

৫. উন্নত পদ্ধতিতে ডিম সংরক্ষণের পদ্ধতিগুলো কী কী? 

৬. হিমাগারে ডিম সংরক্ষণে তাপমাত্রা ও আর্দ্রতা কত? 

৭. অস্বাভাবিক ডিম কত প্রকার? 

৮. ডিম পাড়ার শুরুর কত দিন আগে ডিম পাড়ার বাসা স্থাপন করতে হবে? 

৯. দলভিত্তিক বাক্সের পরিমাপ কত?

 

 

Content added || updated By

১.মেঝেতে ডিম পাড়ার কারণসমূহ কী কী? 

২.ডিম পাড়া বাক্স কত প্রকার ও কী কী? 

৩.একক বাক্সের বৈশিষ্ট্য উল্লেখ কর।

 

 

Content added By

১.খাঁচা হতে ডিম সংগ্রহের কৌশল বর্ণনা করো । 

২.ডিম উৎপাদনের প্রভাব বিস্তারকারী বিষয়সমূহ কী কী, বর্ণনা করো। 

৩. ডিম পরিবহনের পদ্ধতিগুলো বর্ণনা করো । 

৪. শুকানো পদ্ধতিতে ডিম সংরক্ষণ ব্যবস্থা লেখ।

 

 

Content added || updated By

Promotion