নবম-দশম শ্রেণি (মাধ্যমিক) - হিসাববিজ্ঞান - দুতরফা দাখিলা পদ্ধতি | NCTB BOOK

চলমান ধারণা অনুযায়ী ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম অনন্তকাল ধরে চলতে থাকবে বলে অনুমান করা হয়। ব্যবসায়ের হিসাব সংরক্ষণের ধারাবাহিক আবর্তনকেই হিসাব চক্র বলে।

১। লেনদেন শনাক্তকরণ : হিসাব চক্রের প্রথম ধাপে ব্যবসায়ের প্রতিটি ঘটনাকে বিশ্লেষণ করে লেনদেন হিসেবে চিহ্নিত করা হয় ।

২। লেনদেন বিশ্লেষণ : এই ধাপে প্রতিটি লেনদেন বিশ্লেষণ করে সংশ্লিষ্ট হিসাবখাতগুলো চিহ্নিত করা হয়। যেমন: ৫,০০০ টাকার যন্ত্রপাতি কেনা হলো। এখানে দুটি হিসাব বিদ্যমান । একটি যন্ত্রপাতি হিসাব ও অপরটি নগদান হিসাব।

৩। জাবেদাভুক্তকরণ : বিশ্লেষণকৃত হিসাবখাতগুলো দুতরফা দাখিলা অনুসারে প্রযোজ্য হিসাবের প্রাথমিক বইতে ডেবিট-ক্রেডিট বিশ্লেষণ করে তারিখের ক্রমানুসারে জাবেদায় লিপিবদ্ধ করা হয়।

৪। খতিয়ানে স্থানান্তর : এই ধাপে জাবেদায় লিপিবদ্ধকৃত লেনদেনগুলোকে আলাদা আলাদা হিসাবে শিরোনামে লিপিবদ্ধ করা হয়। প্রতিটি হিসাবখাতের জন্য আলাদা আলাদা খতিয়ান তৈরি করে প্রতিটি হিসাবের নির্দিষ্ট সময়ান্তে উদ্বৃত্ত নির্ণয় করা হয়।
৫। রেওয়ামিল প্রস্তুতকরণ : লেনদেনসমূহ নির্ভুলভাবে হিসাব বহিতে লিপিবদ্ধ হয়েছে কি না তা যাচাই করার উদ্দেশ্যে খতিয়ানের ডেবিট উদ্বৃত্ত ও ক্রেডিট উদ্বৃত্তের সাহায্যে রেওয়ামিল প্রস্তুত করা হয় ।

৬। সমন্বয় দাখিলা : ব্যবসায়ের প্রকৃত আর্থিক অবস্থা নির্ণয়ের জন্য সংশ্লিষ্ট হিসাবকালের প্রাপ্য আয়, বকেয়া খরচ, অগ্রিম খরচ এবং অনুপার্জিত আয় ইত্যাদি দফাগুলোকে সমন্বয় করতে সমন্বয় দাখিলা প্রদান করা হয়।

৭। কার্যপত্র প্রস্তুত : আর্থিক বিবরণী প্রস্তুত সহজতর করার উদ্দেশ্যে ঐচ্ছিক কাজ হিসেবে বহুঘরবিশিষ্ট একটি বিবরণী প্রস্তুত করা হয়, যাকে কার্যপত্র (Worksheet) বলে ।
৮। আর্থিক বিবরণী প্রস্তুত : আর্থিক বিবরণী প্রস্তুতের মাধ্যমে ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের লাভ-ক্ষতি, সম্পদ, দায় ও মালিকানা স্বত্বের পরিমাণ নির্ণয় করা হয় ।
৯। সমাপনী দাখিলা : কারবারের মুনাফাজাতীয় আয় এবং মুনাফাজাতীয় ব্যয়গুলোর জের ও উত্তোলন হিসাব বছরান্তে বন্ধ করতে হয়। এক বছররের আয়-ব্যয় পরবর্তী হিসাব বছরে যাবে না, তাই সমাপনী দাখিলার প্রয়োজন হয়।
১০। হিসাব পরবর্তী রেওয়ামিল বা প্রারম্ভিক জাবেদা : সমাপনী দাখিলা প্রদানের মাধ্যমে ব্যবসায়ের আয়, ব্যয় ও উত্তোলন হিসাব বন্ধ হয়ে যায়। অবশিষ্ট সম্পদ, দায় ও মালিকানা স্বত্ব হিসাবের জের নিয়ে পরবর্তী হিসাব বছর শুরু করা হয়। এর জন্য হিসাব পরবর্তী রেওয়ামিল বা প্রারম্ভিক জাবেদা প্রস্তুত করা হয়।

Content added By

Promotion