নবম-দশম শ্রেণি (মাধ্যমিক) - ব্যবসায় উদ্যোগ - আত্মকর্মসংস্থান | NCTB BOOK

যে সমাজ ও দেশে উদ্যোক্তার সংখ্যা যত বেশি, সে সমাজ বা দেশ অর্থনৈতিকভাবে তত উন্নত। বাংলাদেশে আত্মকর্মসংস্থানে সহায়তাকারী বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান আছে। এ সকল সংস্থা ভূমিহীন, বিত্তহীন জনগণকে আত্মকর্মসংস্থানমূলক কাজ গ্রহণে উদ্বুদ্ধকরণ, দক্ষতা উন্নয়নের প্রশিক্ষণ দান, ক্ষুদ্র ব্যবসায় স্থাপনের জন্য ক্ষুদ্র ঋণ প্রদান, ঋণ ব্যবহার তত্ত্বাবধান প্রভৃতি কার্যক্রমের মাধ্যমে দুস্থ লোকদের আয়ের সুযোগ সৃষ্টি করেছে। এগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ম্যানেজমেন্ট, মহিলা বিষয়ক মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ পল্লি উন্নয়ন বোর্ড, গ্রামীণ মহিলাদের কর্মসংস্থানের প্রকল্প, যুব প্রশিক্ষণ কেন্দ্ৰ, নট্রামস উল্লেখযোগ্য। নিম্নে এগুলোর কার্যক্রম ব্যাখ্যা করা হলো-
১. বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ম্যানেজম্যান্ট (Bangladesh Institute of Management )

বাংলাদেশ ব্যবস্থাপনা ইনস্টিটিউট শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীন একটি স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান। নির্দিষ্ট ফি-এর বিনিময়ে এটি আত্মকর্মসংস্থান ও উদ্যোগ উন্নয়নের বিভিন্ন বিষয়ে প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকে। প্রধান প্রধান কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে ক্ষুদ্র শিল্প স্থাপন প্রক্রিয়া ও ব্যবস্থাপনা, নতুন শিল্প প্রতিষ্ঠাকরণ, মহিলা উদ্যোক্তা উন্নয়ন প্রভৃতি ।


২. মহিলা বিষয়ক মন্ত্রণালয় (Ministry of Women Affairs )

মহিলা বিষয়ক মন্ত্রণালয় মূলত মহিলাদের জন্য উন্নয়ন কর্মসূচি গ্রহণ করে থাকে। বিশেষ করে গ্রামের দুস্থ, শিক্ষিত, অর্ধ-শিক্ষিত মহিলাদেরকে স্বকর্মসংস্থানের সুযোগ করে দেওয়া এর মূল উদ্দেশ্য। এটি উদ্যোগী মহিলাদের কারিগরি দক্ষতা উন্নয়নের লক্ষ্যে অনানুষ্ঠানিক কারিগরি ও প্রযুক্তিগত প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করে।


৩. বাংলাদেশ পল্লি উন্নয়ন বোর্ড (Bangladesh Rural Development Board)

বাংলাদেশ পল্লি উন্নয়ন বোর্ড বা বিআরডিবি গ্রামের দুস্থ ও ভূমিহীন নারী-পুরুষদের আত্মকর্মসংস্থানের জন্য বিভিন্ন বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকে যাতে প্রশিক্ষণ গ্রহণের পর তারা স্বাধীনভাবে একটি পেশা বেছে নিয়ে উপার্জন করতে পারে। দেশের সকল জেলা ও উপজেলায় বিআরডিবির কার্যক্রম বিস্তৃত।

৪. গ্রামীণ মহিলাদের কর্মসংস্থান প্রকল্প (Employment Generation Project of Rural Women)
এ প্রকল্পের মাধ্যমে পল্লি অঞ্চলের মহিলাদেরকে বিভিন্ন পেশায় প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় এবং প্রশিক্ষণ শেষে তাদের মধ্যে ঋণ বিতরণ করা হয়। শুধুমাত্র প্রশিক্ষণপ্রাপ্তরাই ঋণ পাওয়ার যোগ্য বলে বিবেচিত হয়।

৫. যুব প্রশিক্ষণ কেন্দ্র (Youth training centre) যুব প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় কর্তৃক পরিচালিত প্রশিক্ষণ কেন্দ্র। দেশের প্রতিটি থানায় এর কেন্দ্র রয়েছে। এ সকল কেন্দ্রের মাধ্যমে বেকার যুবক-যুবতীদেরকে বিভিন্ন পেশায় প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়, যেমন- হাঁস মুরগির খামার তৈরি, মৎস্য চাষ,সবজি বাগান, নার্সারি করা, সেলাইয়ের কাজ, কুটির শিল্পের কাজ, কম্পিউটার চালনা প্রভৃতি। এ সকল বিষয়ে প্রশিক্ষণ নিয়ে প্রশিক্ষণার্থীরা আত্মকর্মসংস্থানের সুযোগ পায়।

৫. নট্রামস (Notrams):
নট্রামস শিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক পরিচালিত একটি প্রতিষ্ঠান। বিভিন্ন ধরনের কম্পিউটার প্রোগ্রামিং ও কম্পিউটার চালনা শিক্ষা দেওয়াই এ প্রতিষ্ঠানের প্রধান কাজ। এ প্রতিষ্ঠান থেকে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেও বহু শিক্ষিত বেকার যুবক-যুবতী আত্মকর্মসংস্থানের সুযোগ করে নিয়েছে। পরিশেষে বলা যায়,আলোচ্য প্রতিষ্ঠানসমূহ বিভিন্ন ধরনের প্রশিক্ষণ কর্মসূচি গ্রহণ করে আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টিতে সহায়ক ভূমিকা পালন করছে। তাদের এ কার্যক্রমের ফলশ্রুতিতে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন সাধিত হচ্ছে।

৬. এনজিও (NGO):
বর্তমানে দেশের বিভিন্ন এনজিও বেকার যুব সমাজকে জীবন ও জীবিকা সম্পর্কে বিভিন্ন প্রশিক্ষণ প্রদান করে থাকে । যেমন ব্রাক, আহাছানিয়া মিশন, প্রশিক্ষণ ইত্যাদি ।

Content added || updated By