নবম-দশম শ্রেণি (মাধ্যমিক) - ব্যবসায় উদ্যোগ - আত্মকর্মসংস্থান | NCTB BOOK

কোনো বিশেষ কাজ যথার্থভাবে সম্পাদন করার স্বার্থে এবং জ্ঞান ও দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য প্রশিক্ষণ একান্ত প্রয়োজন। প্রশিক্ষণ কর্মদক্ষতা ও যোগ্যতা বৃদ্ধি করে। বড় প্রতিষ্ঠানের ন্যায় ক্ষুদ্রায়তন প্রতিষ্ঠানগুলোর কর্মীদের দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য প্রশিক্ষণ ব্যবস্থা করা উচিত। নিয়োগ পদ্ধতি ও প্রশিক্ষণের একটি সুস্পষ্ট কর্মসূচি থাকলে অভিজ্ঞ ও যোগ্য কর্মীর জন্য বাইরে থেকে কর্মী নিয়োগের প্রয়োজন পড়ে না। প্রশিক্ষণ হলো সর্বস্তরের কর্মীদের জ্ঞান ও দক্ষতা বৃদ্ধি এবং মানসিকতা বিকাশের অবিরাম ও নিয়মিত প্রচেষ্টা যাতে তাদের যোগ্যতা ক্রমশ বৃদ্ধি পেতে থাকে এবং প্রতিষ্ঠানটিও লাভবান হয়। কোনো কর্মীকে সঠিক কাজে নিয়োগ করার পূর্বে তাকে প্রশিক্ষণ বা ট্রেনিং দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। এ প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানের উদ্যোক্তাসহ নতুন ও পুরাতন সকল কর্মীর জন্যই অপরিহার্য। নিম্নে প্রশিক্ষণের প্রয়োজনীয়তা ব্যাখ্যা করা হলো :

  • কার্য প্রকৃতি ও পরিবেশের সাথে পরিচিতি: প্রতিষ্ঠানের কর্মের প্রকৃতি ও কর্ম পরিবেশের সাথে পরিচিত হওয়া নবনিযুক্ত কর্মীদের জন্য আবশ্যক। প্রশিক্ষণ ব্যবস্থা নতুন কর্মীদের কর্ম পরিবেশের সাথে পরিচয় করিয়ে দেয় ৷
  • দক্ষ ও অভিজ্ঞ কর্মীদের অপ্রতুলতা দূরীকরণ: প্রতিষ্ঠানের পক্ষে সবসময় উপযুক্ত শিক্ষাপ্রাপ্ত ও অভিজ্ঞ ব্যক্তি সংগ্রহ করা সম্ভব হয় না। সেজন্য নিয়োগের পর কর্মীদেরকে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে সে প্রয়োজন পূরণ করা হয়। এভাবে প্রতিষ্ঠানের দক্ষ ও অভিজ্ঞ কর্মীর অভাব দুরীভূত হয় ।
  • কর্মীর দক্ষতা বৃদ্ধি: প্রশিক্ষণ কর্মীর কর্মদক্ষতা বৃদ্ধি করে। তাই নতুন পুরাতন সকল কর্মীর জন্য প্রশিক্ষণ দেওয়ার প্রয়োজন হয়
  • সম্পদের সদ্ব্যবহার: প্রশিক্ষণের মাধ্যমে কর্মীদের কর্মদক্ষতা বেড়ে যায়। ফলে উদ্যোক্তা বা কর্মী কর্তৃক প্রতিষ্ঠানের যন্ত্রপাতি, সাজ-সরঞ্জাম ও অন্যান্য সম্পদের উৎকৃষ্ট ব্যবহার সম্ভব হয়।
  • নৈতিক বল বৃদ্ধি: প্রশিক্ষণ উদ্যোক্তা বা কর্মচারীদের মনোভাবের উন্নতি সাধন করে। ফলে তাদের নৈতিক বল বৃদ্ধি পায় ৷ প্রশিক্ষণ কর্মীদের মধ্যে সহযোগিতা ও সমন্বয় আনয়নে সহায়তা করে। ফলে প্রতিষ্ঠানের কার্য কাম্য গতিতে চলতে পারে।
  • অপচয় ও দুর্ঘটনা হ্রাস: প্রশিক্ষিত কর্মীগণ অধিকতর দক্ষতা ও মিতব্যয়িতার সাথে কার্য সম্পাদন করতে পারে। এতে প্রতিষ্ঠানের কার্য সম্পাদনের ক্ষেত্রে অপচয় হ্রাস পায়। প্রশিক্ষণ কর্মীদেরকে নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা গ্রহণের বিবিধ কলা-কৌশল সম্পর্কে জ্ঞান দান করে। ফলে কারখানার যন্ত্রপাতি ব্যবহারসহ অন্যান্য দুর্ঘটনা এড়ানোও সহজ হয় ।

পরিশেষে বলা যায়, কর্মীর দক্ষতা ও যোগ্যতা বৃদ্ধির মাধ্যমে সুষ্ঠুভাবে ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের কার্য নির্বাহের জন্য প্রশিক্ষণের প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। নতুন ও পুরাতন উভয় প্রকার কর্মীকেই উপযুক্ত প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ করে তুলতে না পারলে তাদের দিয়ে ভালো কাজ আশা করা যায় না। তাই কর্মীদেরকে প্রশিক্ষণ দিয়ে উপযুক্ত করে গড়ে তোলা প্রতিষ্ঠানের আবশ্যকীয় কর্তব্য।

Content added || updated By