নবম-দশম শ্রেণি (মাধ্যমিক) - ফিন্যান্স ও ব্যাংকিং - ব্যাংকের আমানত | NCTB BOOK

ব্যাংক আমানত বা হিসাবের উদ্দেশ্য ও গুরুত্ব গ্রাহক বা আমানতকারীর প্রেক্ষাপটে একধরনের, আবার ব্যাংকের প্রেক্ষাপটে ভিন্ন ধরনের হয়। আবার ব্যষ্টিক অর্থনীতির ক্ষেত্রেও ব্যাংক আমানত কিছু ভূমিকা পালন করে। ১১.১ নং ছকে এগুলো সংক্ষেপে আলোচনা করা হলো:

গ্রাহকের ক্ষেত্রে ব্যাংকের ক্ষেত্রে সামগ্রিক অর্থনৈতিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে

১) অর্থের নিরাপত্তা

২) ব্যবসায়িক লেনদেন

৩) ঋণের সুবিধা

৪) ঝুঁকিহীন বিনিয়োগ

৫) সেবা অর্জন

৬)অতিরিক্ত অর্থের প্রয়োজন মিটানো

১) তহবিলের মূল উৎস

২) বিনিয়োগ

৩) বৈদেশিক বিনিময় 

১) সঞ্চয়প্রবণতা সৃষ্টি

২) পুঁজি বা মূলধন গঠন

৩) বিনিয়োগ ও উৎপাদন

৪) আন্তর্জাতিক বাণিজ্য

ছক নং ১১.১: ব্যাংক আমানতের উদ্দেশ্য

ক) গ্রাহকের ক্ষেত্রে

১) অর্থের নিরাপত্তা : আমানতকারীদের উদ্বৃত্ত অর্থ ব্যাংকে নিরাপদে সংরক্ষণ করা ব্যাংক হিসাবের অন্যতম উদ্দেশ্য।

২) ব্যবসায়িক লেনদেন : ব্যাংক নগদ অর্থ ও বিভিন্ন ব্যাংকিং পণ্যের মাধ্যমে ব্যবসায়িক লেনদেন সম্পন্ন করে। যেমন: চেক, বিনিময় বিল বাট্টাকরণ, ব্যাংক ড্রাফট ইত্যাদি।

৩) ঋণের সুবিধা : ব্যাংক চলতি, স্থায়ী হিসাবের মালিকদের প্রয়োজনে ঋণ প্রদান করে থাকে। ফলে এ সুবিধা পাওয়ার উদ্দেশ্যও ব্যাংক হিসাব খোলা প্রয়োজন ।

৪) ঝুঁকিহীন বিনিয়োগ : ব্যাংকে টাকা জমা রাখলে নির্দিষ্ট হারে সুদ পাওয়া যায়। শেয়ারবাজারের বিনিয়োগের মতো এটা ঝুঁকিপূর্ণ নয়। তাই এটি একটি ঝুঁকিহীন বিনিয়োগ।

৫) সেবা অর্জন : হিসাব খোলার কারণে ব্যাংক তার গ্রাহককে নানাবিধ সেবামূলক কার্যাদি প্রদান করে, যা হিসাব খোলার জন্য অনুপ্রেরণা হিসাবে কাজ করে।

৬) অতিরিক্ত অর্থের প্রয়োজন মিটানো : ব্যাংক তার গ্রাহককে চলতি হিসাবে জমাতিরিক্ত অর্থ উত্তোলনের সুবিধা দিয়ে থাকে, যা ব্যাংক হিসাব সংরক্ষণ করতে জনগণকে আকৃষ্ট করে।

খ) ব্যাংকের ক্ষেত্রে

১) আমানত গ্রহণ : বিভিন্ন হিসাবের মাধ্যমে জনগণের সঞ্চিত অর্থ আমানত হিসেবে গ্রহণ করে ব্যাংক তার তহবিল গঠন করে।

২) বিনিয়োগ : গ্রাহকের কাছ থেকে আমানত গ্রহণ করে ব্যাংক বিভিন্ন লাভজনক খাতে বিনিয়োগ করে থাকে। সুতরাং লাভজনক বিনিয়োগ নিশ্চিত করাও ব্যাংক হিসাবের অন্যতম উদ্দেশ্য।

৩) বৈদেশিক বিনিময় : ব্যাংক বৈদেশিক মুদ্রারও ব্যবসা করে থাকে, যার জন্য গ্রাহককে কখনো কখনো হিসাব খুলতে হয়।

গ) সামগ্রিক অর্থনৈতিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে

১) সঞ্চয়প্রবণতা সৃষ্টি : ব্যাংক হিসাব খোলার মাধ্যমে জনগণের মধ্যে সঞ্চয়প্রবণতার সৃষ্টি হয়।

২) পুঁজি বা মূলধন গঠন : ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে অলস বিক্ষিপ্ত সঞ্চয়গুলো পুঞ্জীভূত হয়ে মূলধন সৃষ্টি করে থাকে

৩)বিনিয়োগ ও উৎপাদন : ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে বিনিয়োগ বৃদ্ধি পায়, যা পরবর্তীতে দেশের উৎপাদন ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

৪) কর্মসংস্থান : অর্থনৈতিক উন্নয়নের সাথে সাথে কর্মসংস্থানের সুযোগ করে।

৫) আন্তর্জাতিক বাণিজ্য : ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যে অংশগ্রহণ করে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য প্রসার করে।

Content added || updated By