জনাব মনির সম্প্রতি একটি প্রতিষ্ঠানের ‘বিপণন ব্যবস্থাপক' পদে যোগদান করেন। যোগদানের পর তিনি তার অধীনস্থ বিক্রয় কর্মকর্তাদের কার্য ও দায়িত্ব বণ্টন করে দেন। নিয়মিত তদারকি ও যোগাযোগের মাধ্যমে মাসের নির্দিষ্ট বিক্রয় টার্গেট অর্জন করলেন। মাস শেষে তিনি লক্ষ্য করলেন, একই ধরনের যোগ্যতাসম্পন্ন ও একই সাথে যোগদান করা অন্য ব্যবস্থাপকের সম্মানী তার থেকে অনেক বেশি। এ ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার সাথে আলোচনা করেও কোনো সমাধান না হওয়ায় তিনি প্রতিষ্ঠান ত্যাগ করার সিদ্ধান্ত নিলেন ।
জনাব বিপ্লব গ্লোরী নিটওয়ার লি: এ কারখানা ব্যবস্থাপক হিসেবে কর্মরত। প্রতিষ্ঠানের মৌলিক উদ্দেশ্য ও পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য তিনি নিজস্ব বিভাগীয় পরিকল্পনা তৈরি করে অধীনস্থ ইউনিটসমূহকে বাস্তবায়নের নিদর্শনা দেন। কর্মীদের দাবী-দাওয়া ও সমস্যার প্রতি তিনি খুবই সহানুভূতিশীল। অন্যদিকে জনাব বকুল তার অধীনে থেকে শ্রমিক-কর্মীদের কাজের তদারক করেন এবং প্রতিষ্ঠানের উদ্দেশ্য ও পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করেন। জনাব বিপ্লবও তাকে বিভিন্ন কাজে সহযোগিতা করেন । অর্পিত দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি জনাব বকুলকে মাঝে মাঝে নিজস্ব পরিকল্পনাও তৈরি করতে হয়। প্রাতিষ্ঠানিক সাফল্য অর্জনে
তাদের উভয়ের কর্মকাণ্ড গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে ।
হাসিন এন্টারপ্রাইজ: একটি বৃহৎ আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান। তাঁরা তাদের ক্রেতাদের। নিয়মিত ২/১৫, N-৩০ শর্তে ধারে পণ্য বিক্রয় করে। পূর্বে ক্রেতারা বাট্টার সুযোগ গ্রহণ করলেও কোভিড পরিস্থিতির কারণে বর্তমানে পাওনা পরিশােেধ ব্যর্থ হয়। কর্তৃপক্ষ যথাসময়ে পাওনা আদায়ের জন্য কয়েকজন কর্মী নিয়োগ দেয়। মাস শেষে সর্বোচ্চ পাওনা আদায়কারীকে ‘Employee of the month' হিসেবে ঘাষেণা দেয়ার পাশাপাশি বোনাসও প্রদান করে। ফলে পাওনা আদায়ের পরিমাণ দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।
মুগ্ধ ফার্মাসিউটিক্যালস লি: এ মান নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাপক ও সুপারভাইজার এর দুটি পদ শূন্য হয়েছে। উক্ত প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহীর সুপারিশে এ দুটি পদে দুজন লোক নিয়োগ দেয়া হয়। সুপারভাইজার তার কাজ কোনোভাবে সামলে নিতে পারলেও মান নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাপক এর এ বিষয়ে পূর্ব-অভিজ্ঞতা না থাকায় তিনি কার্যসম্পাদনে প্রতিনিয়ত সমস্যার সম্মুখীন হলেন।
হাই-টেক ফ্যাশন্স একটি পোশাক রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান। এ প্রতিষ্ঠানের কাজগুলোকে উৎপাদন, মান-নিয়ন্ত্রণ, হিসাব ও মানবসম্পদ এ চারভাগে ভাগ করা হয়েছে। প্রতিটি বিভাগের ব্যবস্থাপক সম্পূর্ণ ক্ষমতা ভোগ করেও নিজের কাজের জবাবদিহিতা প্রদান করে। প্রতিটি বিভাগ ও বিভাগে কর্মরত কর্মীর দায়িত্ব নির্দিষ্ট থাকায় এবং বিভাগসমূহে প্রয়োজনীয় সংখ্যক কর্মী থাকার ফলে উপকরণসমূহের কার্যকর ব্যবহার নিশ্চিত হয়। ফলে প্রতিষ্ঠানটি সহজে লক্ষ্য অর্জনে সক্ষম হয়।
জনাব আহসান একটি ব্যাংকের মতিঝিল শাখার প্রিন্সিপাল অফিসার ও জনাব সোবহান সহকারী প্রিন্সিপাল অফিসার পদে কর্মরত। প্রধান অফিস কর্তৃক গৃহীত সিদ্ধান্ত তাদের বাস্তবায়ন করতে হয়। একটি কর্মশালায় অংশগ্রহণের জন্য প্রধান অফিস থেকে একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তার মনোনয়ন চাওয়া হলে অত্র শাখার ব্যবস্থাপক জনাব শাকুর, জনাব সোবহানের নাম অনুমোদন করেন, যিনি তার নিজ এলাকার বাসিন্দা ।
দীপিতা এন্টারপ্রাইজ এর পরিচালনা পর্ষদ চলতি বছর বিক্রয় বিভাগকে ৩,০০,০০০ একক পণ্য বিক্রয়ের নির্দেশ প্রদান করে। ছয় মাস পর কর্তৃপক্ষ দেখতে পায় শুধুমাত্র ১,২০,০০০ একক পণ্য বিক্রয় হয়েছে। অনুসন্ধানে জানা যায় দুইজন দক্ষ কর্মী কাজ ছেড়ে চলে যাওয়ায় লক্ষমাত্রা অর্জন সম্ভব হয়নি। নির্ধারিত সময়ে প্রতিষ্ঠানের কাংখিত লক্ষ্য অর্জনে দুজন বিক্রয়কর্মী নিয়োগ দেয়া হয় এবং বিক্রয়কর্মীদের তাদের জন্য নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার অতিরিক্ত বিক্রয়ের উপর ১% কমিশন দেয়ার ঘোষণা করা হয়।
জাহারা ফুডস্ লি: এর গুদামে রাখা পণ্যের হিসেবে গড়মিল থাকায় সাধারণ ব্যবস্থাপক, ক্রয় ব্যবস্থাপককে প্রধান করে তিন সদস্যের দলকে কারণ অনুসন্ধান করে তিন দিনের মধ্যে রিপার্টে প্রদানের নির্দেশ দিলেন। বাজারে তাদের চিপসের বিক্রয়ের পরিমাণ ভালো হলেও চকলেটের বিক্রয়ের পরিমাণ আশানুরূপ নয়। তাই সাধারণ ব্যবস্থাপক, চকলেটের উৎপাদন ব্যবস্থাপককে কার্যিক ব্যবস্থাপক হিসেবে ঘোষণা করে বিদেশ থেকে একজন অভিজ্ঞ ব্যক্তিকে প্রকল্প ব্যবস্থাপক পদে নিয়োগ দিলেন। উৎপাদন ব্যবস্থাপক প্রকল্প ব্যবস্থাপকের প্রত্যাশা ও ফরমায়েশ অনুযায়ী কাজ করবেন। কর্মীরা উভয় ব্যবস্থাপকের আদেশ মানতে বাধ্য
থাকবে।
জনাব আরিয়া একটি কলেজের ব্যবসায় সংগঠন ও ব্যবস্থাপনা বিষয়ের শিক্ষক। তিনি ছয় মাসের জন্য চিকিৎসা ছুটিতে গেলে তার স্থলে জনাব জুমাইরাহকে ছয় মাসের জন্য উক্ত পদে নিয়োগ দেয়া হয়। জনাৰ জুমাইরাহ'র কর্মকালীন সময়ে BISE থেকে একটি প্রশিক্ষণ কোর্সে অংশগ্রহণের চিঠি আসে, যেখানে প্রশিক্ষক শিক্ষার্থীদের সামনে তার বক্তব্য উপস্থাপনের পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের প্রশ্ন করার সুযোগ দান করে। কলেজ কর্তৃপক্ষ জনাব জুমাইরাহকে উক্ত প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণের নির্দেশ দান করে।
। জনাব জাহিদ “সুরমা ব্যাংকের শাখা ব্যবস্থাপক। তিনি অফিসে নিজের খেয়াল খুশিমত আসেন। তাঁর অধীনে কর্মীরাও নিজেদের ইচ্ছামাফিক কাজ-কর্ম সম্পাদন করেন। ফলে ব্যাংকটি বার্ষিক লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ব্যর্থ হয়। অপরদিকে কর্ণফুলী ব্যাংকের শাখা ব্যবস্থাপক জনাব আকবর কর্মীদের সাথে আলাপ-আলোচনা করে নিবিড় তত্ত্বাবধানে সফলতার সাথে ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনা করেন ৷
জনাব এ্যাপোলো একটি প্রতিষ্ঠানের মালিক। তিনি কর্মীদের প্রতি যথেষ্ট সহানুভূতিশীল হলেও কাজের ব্যাপারে ছাড় দেন না। ২০১৯ এর শেষের দিকে যখন কোভিড মহামারী শুরু হয় তিনি বুঝতে পারেন এটি দ্রুত বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়বে। তাই তিনি তার কর্মীদের আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে কীভাবে ঘরে বসে অফিসের কাজ করা সম্ভব সে বিষয়ে প্রশিক্ষণ দিলেন। প্রযুক্তি বিষয়ে নিজের জ্ঞান থাকায় সকল কর্মীকে বিশেষ করে প্রযুক্তিতে দুর্বল কর্মীদের আলাদাভাবে সময় দিয়ে শেখালেন।
করানো মহামারীর সময়েও তাই তার প্রতিষ্ঠানে নিয়মমাফিক কাজ চলতে লাগল ।