রাজশাহীর জনাব সোহেল সম্প্রতি ব্যবস্থাপনায় এমবিএ সম্পন্ন করেছেন। তিনি বেকার বসে না থেকে আত্মীয়-স্বজনদের কাছ থেকে কিছু টাকা সংগ্রহ করে আমের ব্যবসায় শুরু করেন। তিনি আমের মৌসুমে স্থানীয় আম চাষিদের কাছ থেকে মানসম্পন্ন বিভিন্ন জাতের আম ক্রয় করে ঢাকার বিভিন্ন বাজারে খুচরা ব্যবসায়ীদের কাছে সরবরাহ করেন। এতে মৌসুম শেষে তার যথেষ্ট পরিমাণ মুনাফা হয়। সে ধারের অর্থ পরিশোধ করে অবশিষ্ট টাকা দিয়ে কয়েকটি আম বাগান লিজ নেয়। বর্তমানে তিনি আর চাকরির কথা না ভেবে নিজের ব্যবসায়ের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার কথা ভাবছেন ।
জনাব রফিক লেখাপড়া শেষ করে দেশের পরিবেশ পরিস্থিতি সম্বন্ধে চিন্তা-ভাবনা করে সাভারে একটি গার্মেন্টস কারখানা স্থাপন করেন। স্বল্প মজুরিতে দক্ষ-অদক্ষ শিক্ষিত শ্রমিকের প্রাপ্যতা, শ্রমিকদের কর্মদক্ষতার কারণে কয়েক বছরের মধ্যে তিনি সফল ব্যবসায়ী হয়ে ওঠেন। তিনি তার কারখানায় উন্নত শর্ট-সার্কিট প্রতিরোধ ব্যবস্থা, শ্রমিকদের জন্য চাইল্ড ডে-কেয়ার সেন্টার, জরুরি ক্ষেত্রে সহজ নির্গমন পথ, নিজস্ব উন্নত অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা ও শ্রমিকদের জন্য কারিগরি প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেন । এতে শ্রমিকদের দক্ষতা ও কাজের মান বৃদ্ধি পায়। একদিন জনাব রফিক দেখেন তার পার্শ্ববর্তী একটি কারখানায় শর্ট-সার্কিট থেকে আগুন ধরে যায় এবং অগ্নিনির্বাপণ গাড়ি আসতে দেরি হওয়ায়ও পর্যাপ্ত পানির অভাবে আগুন নেভাতে দেরি হয়। ফলে বেশ ক্ষয়ক্ষতি হয় এবং অনেক শ্রমিক হতাহত হয়। এতে তিনি খুবই মর্মাহত হন।
জনাব আসিক তার নিজস্ব কারখানায় মানসম্মত সুতা উৎপাদন করে বিভিন্ন বৃহদায়তন শিল্প কারখানায় সরবরাহ করে থাকেন। উন্নত মানসম্পন্ন হওয়ায় আসিফের উৎপাদিত সুতা বিভিন্ন পোশাক শিল্প-কারখানায় ব্যাপকভাবে সমাদৃত। নিজস্ব তত্ত্বাবধান ও নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে উৎপাদন কার্য পরিচালনার কারণে ধীরে ধীরে তিনি আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন সুতা উৎপাদন করতে সক্ষম হয়েছেন। ভবিষ্যতে তার আন্তর্জাতিক বাজারে প্রবেশের পরিকল্পনা আছে।
জনাব করিম ও তার দুই বন্ধু মিলে সমঝোতার ভিত্তিতে ও মুনাফা ভাগাভাগির উদ্দেশ্যে 'সমতা প্রিন্টিং প্রেস' নামে একটি ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। সর্বসম্মতিক্রমে মি. করিম পরিচালনায় অংশগ্রহণ করেন এবং বার্ষিক ১.০০ লক্ষ টাকা বেতন গ্রহণ করেন কিন্তু কোনো মূলধন সরবরাহ করেন না। কয়েক বছরের মধ্যে প্রতিষ্ঠানটি আশানুরূপ মুনাফা অর্জন করায় সফলতার সাথে চলতে থাকে। কিন্তু হঠাৎ করিম অসুস্থ হয়ে পড়লে সে তার ব্যবসায় চালিয়ে যেতে পারবে না বলে জানান ।
জনাব রশিদ ও তার ছয় বন্ধু একত্র হয়ে ৫০.০০ কোটি | টাকা অনুমোদিত মূলধন নিয়ে ‘রয়েল ট্রেডার্স' নামে একটি ব্যবসায় গঠন করেন। জনাব রশিদ ও তার এক বন্ধু পরিচালক নিযুক্ত হন। কয়েক বছর পর তারা ব্যবসায়টি সম্প্রসারণের উদ্যাগ নিয়েও অর্থসংস্থানের সীমিত সুযোগের কারণে ব্যর্থ হয়ে ব্যবসায়ের ধরন পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নেন। এজন্য বার্ষিক সাধারণ সভায় সিদ্ধান্ত নিয়ে অনুমোদিত মূলধন ১০০ কোটি টাকায় উন্নীত করেন এবং আরেকজন পরিচালক নিযুক্ত করেন। অতঃপর শেয়ার ও ঋণপত্র ইস্যুর মাধ্যমে মূলধন বৃদ্ধির উদ্যোগ নেন । ফলে ব্যবসায়ের আওতা বৃদ্ধি পায় ।
পদ্মা নদীর তীরবর্তী একটি গ্রামের ৫০ জন প্রান্তিক কৃষক নিজেদের উৎপাদিত ফসলের ন্যায্যমূল্য পাওয়ার জন্য আইনগত সত্তা বিশিষ্ট একটি প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। এ প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে তারা প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদি সংগ্রহ, উৎপাদন ও বাজারজাতকরণ কার্যক্রম গ্রহণ করেন। ফলে প্রতিষ্ঠানটি অল্পসময়ে অনেক পরিমাণে মুনাফা ও পুঁজি বাড়াতে সমর্থ হয়। বর্তমানে উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য তারা সংরক্ষিত তহবিলের অর্থ দিয়ে আধুনিক কৃষি যন্ত্রপাতি ক্রয় ও উচ্চ ফলনশীল বিভিন্ন জাতের বীজ ক্রয় ইত্যাদি সিদ্ধান্ত গ্রহণের বিষয়ে একমত হতে পারছে না। ফলে প্রতিষ্ঠানটির অগ্রগতি ব্যাহত হচ্ছে।
‘ক’ একটি সদ্য স্বাধীন রাষ্ট্র। যুদ্ধ-বিধ্বস্ত দুর্বল অর্থনীতির এদেশে পর্যাপ্ত মূলধন ও অবকাঠামোগত সুবিধার অভাবে শিল্প প্রতিষ্ঠান তেমন গড়ে ওঠেনি। এজন্য দেশটির সরকার যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে ব্যক্তিমালিকানাধীন কিছু বড় বড় প্রতিষ্ঠানের সাথে চুক্তিবদ্ধ হয়। চুক্তির শর্তানুযায়ী ঐ প্রতিষ্ঠানগুলো বড় বড় ব্রিজ, উড়াল সেতু ও মেট্রোরেল ইত্যাদি নির্মাণ করবে এবং নির্দিষ্ট হারে টোল আদায়ের মাধ্যমে বিনিয়োজিত অর্থ ফিরিয়ে আনবে এবং অর্জিত মুনাফা ঐসব প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি সরকারও পাবে। সম্প্রতি সরকার দেশটির নিরাপত্তা ব্যবস্থা উন্নয়নের জন্য সম্পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মালিকানার অধীনে একটি সমরাস্ত্র তৈরির কারখানা স্থাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
জনাব জসিম একটি কারখানার মালিক। পদ্মা নদীর অদূরে তার কারখানা অবস্থিত। কখন কী ঘটে যায়, এ ভেবে তিনি একটি বিমা কোম্পানির পলিসি গ্রহণ করেন। বিমার শর্তানুযায়ী যদি তার মৃত্যু ঘটে তার পরিবার ১০.০০ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ পাবেন। জনাব জসিম নিজের বিষয়ে সচেতন হলেও তার কারখানায় তিনি বর্জ্য শোধন যন্ত্রপাতি বসান নি। ফলে অপরিশোধিত বর্জ্য নদীতে ফেলছেন, যা প্রাণিকুল ও পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর ও ঝুঁকিপূর্ণ। এটি তিনি বুঝতে চাচ্ছেন না।
বিস্তীর্ণ এলাকায় গো-চারণভূমি থাকায় পাবনা জেলার | গ্রামাঞ্চলের অনেক বাড়িতে ছোট ছোট দুগ্ধ খামার গড়ে উঠেছে। জনাব তাপস ঘোষ দরিদ্র অথচ সৎ দুধ বিক্রেতা। এ কারণে সবাই তাকে সম্মান করে। তিনি পাবনার গ্রামাঞ্চল থেকে গরুর খাঁটি তরল দুধ সংগ্রহ করে পাবনা শহরের বাড়ি বাড়ি ন্যায্যমূল্যে শিশুখাদ্য হিসেবে সরবরাহ করেন। দুধের চাহিদা বাড়লেও তিনি দুধে ভেজাল মেশান না। তিনি ভাবেন, ভেজালমিশ্রিত দুধ পান করলে শিশুরা অপুষ্টিতে ভুগবে ।