SATT ACADEMY

New to Satt Academy? Create an account


or
Log in with Google Account

Job

Focus Writing in Bangla: "অপ্রতিরোধ্য অগ্রযাত্রার বাংলাদেশ"

Created: 1 year ago | Updated: 11 months ago

নানা প্রতিকূলতা অতিক্রম করে খরস্রোতা উত্তাল পদ্মায় আজ বাংলাদেশের পর্ব। প্রমত্তা পদ্মায় ৬ হাজার ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের সেতু গড়েছে বাংলাদেশের নতুন এক দিগন্ত। বিশ্বের অন্যতম খরস্রোতা পরার সাথে প্রকৃতির বিরূপ নানামুখী সমালোচনাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে বাংলাদেশ প্রমাণ করেছেন বাংলাদেশ উঁচু করে কথা বলতে শিখেছে এই দেশ বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের দেশ। এই দেশ স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বলীয়ান। বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জিং নির্মাণ কাজ ছিল এটি। ৬.১৫০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য এবং ১৮.১০ মিটার এই সেতু এখন। বাংলাদেশের বড় সেতু। এই সেতু প্রমাণ করেছে বাঙালি জাতি আর পিছিয়ে নেই। নিজস্ব অর্থায়নে বড় প্রকল্প বাস্তবায়নের ক্ষমতা রাখে। 

স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা (এলডিসি) থেকে বেরিয়ে উন্নয়নশীল দেশের স্বীকৃতি পেয়েছে বাংলাদেশ। বিশ্বে এখন বাংলাদেশের নতুন পরিচেনা মধ্যম আয়ের দেশ। বাংলাদেশ এখন উদ্ভাবনের মডেল। উন্নয়নশীল দেশ হতে যে তিনটি সূচকে দরকার হয়, তা অর্জন করেছে বাংলাদেশ। জাতিসংঘের মূল্যায়নের নানা আনুষ্ঠানিকতা শেষে এ ঘোষনা কার্যকর হবে ২০২৪ সালে। জাতিসংঘের ইকোনমিক ও সোশ্যাল কাউন্সিল উল্লিখিত তিনটি বিষয় বিবেচনা করে বাংলাদেশকে এ ঘোষণা দিয়েছে। ডেভলপিং কান্ট্রি হতে যে তিনটি শর্ত পূরণ করতে হয়, তা বাংলাদেশ অর্জন করেছে। শর্ত অনুযায়ী একটি দেশকে উন্নয়নশীল হতে হলে সেই দেশকে প্রথমত, মাথাপিছু আয় ১ হাজার ২৪২ মার্কিন ডলার হতে হয়, বর্তমানে বাংলাদেশের মানুষের মাথাপিছু আয় ২ হাজার ২২৭ মার্কিন ডলার। দ্বিতীয়ত, মানবসম্পদের উন্নয়ন অর্থাৎ দেশের ৬৬ ভাগ মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নত হতে হয়, বর্তমানে বাংলাদেশের ৭০ ভাগ মানুষের জীবনযাত্রার মানের উন্নতি হয়েছে। আর তৃতীয়ত, অর্থনৈতিকভাবে ভরত না হওয়ার মাত্রা নামিয়ে আনতে হয় ৩২ শতাংশে। বাংলাদেশ এ মুহূর্তে এই সূচকটি ২৫ শতাংশে নামিয়ে এনেছে।

করোনার সার্বিক অভিদাত মোকাবিলার সক্ষমতা বিবেচনায় বিশ্বে বসবাস উপযোগী নিরাপদ দেশের তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান ২০ তম। দক্ষিণ এশিয়ার আর কোনো দেশ এই তালিকায় বাংলাদেশের ওপরে নেই। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্য ব্লুমবার্গ বিশ্বে নভো করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯) সংক্রমণসহ অর্থনীতিতে করোনার অভিঘাত মোকাবিলায় কার্যকর ভূমিকা রাখা দেশগুলোর যে ব্যাংকিং করেছে, সেখানে এই তথ্য উঠে এসেছে। বিশ্বব্যাপী করার পর থেকে বিশ্বের ৫০টি দেশের সামাজিক ও অর্থনৈতিক মানদণ্ডে মহামারি মোকাবিলার সক্ষমতা দিয়ে ১০টি সূচকের ওপর ভিত্তি করে এই ব্যাংকিং করা হয়। এমনকি জার্মানি, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের মতো দেশগুলোও রয়েছে এই তালিকায় বাংলাদেশের পেছনে। তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে চলা মিয়ানমার ও ভারতের সঙ্গে সমুদ্র সীমার বিরোধ নিষ্পত্তি একটি যুগান্তকারী অর্জন। এই অর্জনের ফলে ১ লাখ ১৮ হাজার ৮১৩ বর্গকিলোমিটারের টেরিটোরিয়াল সমুদ্র, ২০০ নটিক্যাল মাইল একচ্ছত্র অর্থনৈতিক অঞ্চল এবং চট্টগ্রাম উপকূল থেকে ৩৫৪ নটিক্যাল মাইল পর্যন্ত সমুদ্রের তলদেশে অবস্থিত সব ধরনের প্রাণিজ ও অপ্রাণিজ সম্পদের ওপর বাংলাদেশের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়।  

রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে মানবতার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আমরা ১৬ কোটি মানুষের দেশ। সবার জন্য খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পেরেছি। সেখানে আরও ৭ লাখ মানুষকেও খেতে দিতে পারবো - জাতির জনকের কন্যার এই মন্তব্যই বিরল মানবিকতার প্রমাণ।  
ভারতের সঙ্গে হিটমহল বিনিময় আওয়ামী লীগ সরকারের একটি যুগান্তকারী সফলতা। ২০১৫ সালের ২১ জুলাই মধ্যরাত থেকে বাংলাদেশ ও ভারতের ছিটমহল বিনিময় চুক্তি কার্যকর হয়। ফলে দীর্ঘদিন ধরে সমস্যায় থাকা বাংলাদেশ ও ভারতের ১৬২টি ছিটমহলের প্রায় ৫৫ হাজার মানুষের বন্দিত্বের অবসান হয়। 

নারীর ক্ষমতায়নে বর্তমান সরকারের রয়েছে বেশ কিছু সফলতা। নারীর প্রতি সহিংসতা রোধে পারিবারিক সহিংসতা প্রতিরোধ ও সুরক্ষা আইনটি ছিল সময়োপযোগী। প্রধানমন্ত্রীকে ইউএন উইমেন প্লানেট ৫০-৫০ মাম্পিয়ন এবং এজেন্ট এর ভূষিত করা হয়। এছাড়া ২০১৪ সালে ইউনেস্কোর পা এবং গ্লোবাল উইমেন লিডারশিপ ২০১৮ পুরস্কারে ভূষিত হন। জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত আসন ৫০ উন্নিতকরণ, উপজেলা পরিষদে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদ সৃষ্টি, ইউনিয়নে সংরক্ষিত নারী আসন ব্যবস্থা ছিল জেন্ডার গ্যাপ রিপোর্ট ২০১৫ অনুযায়ী রাজনৈতিক ক্ষমতায়নে বাংলাদেশ বিশ্বে ষষ্ঠ স্থানে রয়েছে। নারী উদ্যোক্তা ও ক্ষমতায়নে উৎসাহিতকরাণে ভাগ্নিতা পুরস্কার তৃণমূলে একারনের প্রতিযোগিতা তৈরি করেছে। তথ্য আপা প্রকল্পটিও নারীর প্রতি সহিংসতা রোধে কার্যকনা ভূমিকা রাখছে। নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধে ন্যাশনাল হেল্পলাইন ১০৯ নয় মোবাইল এপস যুগান্তকারী ভূমিকা রাখছে।

ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠনের লক্ষ্যে সরকারের নানামুখী পদক্ষেপ ছিল দৃশ্যমান। ১১ মে ২০১৮ বাংলাদেশের জন্য ছিল এক ঐতিহাসিক দিন। যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার কেনেডি স্পেস স্টেশন থেকে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ। তথ্য প্রযুক্তি ও সফটওয়ার শিল্পের বিকাশে বিভিন্ন কার্যক্রম এই খাতকে অনেক এগিয়ে নিয়েছে। দেশের বিভিন্ন এলাকায় হাইটেক পার্ক, টেকনোলজি পার্ক, টেনিং ইনস্টিটিউট যুবকদের কর্মসংস্থানে ব্যাপক ভূমিকা রেখেছে। এক্সেস টু ইনফরমেশন (এটুআই) প্রকল্পটি ডিজিটাল বাংলাদেশের বিনির্মাণ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। বাংলাদেশের সরকারি দপ্তরে ২৫ হাজারেরও অধিক ওয়েবসাইটকে একই স্থানে নিচে আনার কার্যক্রমটি সত্যিই প্রশংসনীয়। এই জাতীয় তথ্য বাতায়ন ২০১৫ সালে দ্য ওয়ার সামিট অন দ্য ইনফরমেশন সোসাইটি পুরস্কারে ভূষিত হন। তথ্য প্রযুক্তির সেবা তনমূলে পৌঁছে দেয়া ছিল অভূতপূর্ব। সারা দেশের প্রায় ৪৫৪৭টি ইউনিয়ন, ৩২৫টি পৌরসভা এমনকি প্রতিটি সিটি করপোরেশনের ওয়ার্ড ভিত্তিক ডিজিটাল সেন্টার স্থাপন ডিজিটাল বাংলাদেশকে অন্য উচ্চতায় নিয়ে যায়। স্বাস্থ্যসেবাকে মানুষের হাতের নাগালে পৌছানোর লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রীর অনাধিকার প্রকল্প কমিউনিটি ক্লিনিক যুগান্তকারী সফলতা এনে দিয়েছে। সারাদেশে বর্তমানে সাড়ে ১০ হাজার ক্লিনিক চালু রয়েছে। স্বাস ব্যবহারে সাউথ সাউথ এওয়ার্ড ২০১১ অর্জন। টিকাদান কর্মফল ২০০৯ সালে এবং ২০১২ সালে গ্লোবাল এলায়েন্স ফর প্র্যাকসিন এন্ড ইমানাইজেশন শ্রেষ্ঠ এওয়ার্ড অর্জন। অগ্রিম ও প্রযুবিকাশজনিত সমস্যার সমাধানে ইনস্টিটিউট ফর পেডিয়াট্রিক নিউরো ডিসর্ডার এন্ড অটিকান স্থাপন। মূলত ২০১৬ সালে ন্যাশনাল স্ট্যাটেজি কান প্লান অন আটগ্রাম এন্ড নিউরো ডেভেলপমেন্টাল ডিজঅর্ডারস বাস্তবায়নে নানামুখী পদক্ষেপ ছিল প্রশংসনীয়। 

জলবায়ু প্রভাবজনিত প্রভাব মোকাবেলায় বাংলাদেশের সাফল্য বিশ্ব স্বীকৃত। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতিসংঘের পরিবেশ বিষয়ক পুরস্কার চ্যাম্পিয়ন অব দ্য আর্থ পুরস্কারে ভূষিত হন। বাংলাদেশ দ্য গ্লোবাল গ্রিন ওয়ার্ড ২০১৪ অর্জন করে। আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক উপ- কমিটিকে ওয়ার্ল্ড এনভায়রনমেন্ট ডে হিরো' পুরস্কার দিয়েছে জাতিসংঘ । শুধু ২০২০ সালেই বন ও পরিবেশ উপ কমিটি সারাদেশে প্রায় ১ কোটিরও বেশি গাছের চারা রোপন করে। অর্থনীতির চালিকাশক্তি বৃদি বাণিজ্যিক শক্তিতে রূপান্তরিত হয়েছে। জিডিপিতে কৃষি খাতের অবদান ১৪.১১ শতাংশ। কৃষিক্ষেতে বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও বায়োটেকনোলজির দাদন ব্যবহারের ফলে কর্নেল ইউনিভার্সিটি সায়েন্স এন্ড টেকনোলজি এওয়ার্ড ২০১৪ প্রদান করে। বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট আইডিবি প্রাইজ ২০১৬ অর্জন করে। কৃষিক্ষেত্রে ডিজিটাইলেয়াইশন, ই কৃষি প্রবর্তন, কৃষি কল সেন্টার, কৃষকের জানালা, কৃষি তথ্য বা প্রকৃতি অপূর্ব ভূমি রেখেছে কৃষির সম্প্রসারণে। কবি নীতি ২০১৮ একটি সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত। 

২০২১ সালের মধ্যে দেশকে ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত মধ্যম আয়ের দেশ গড়ার লক্ষে প্রধানমন্ত্রীর চিন্তার ফসল একটি বাড়ি একটি আমার পল্লী উন্নয়নের এক কার্যকর মডেল। ইতোমধ্যে প্রায় ৩ কোটি মানুষ এই প্রকল্পের আওতায় এসেছে। শট স্যাকে উৎসাহিত করতে রয়েছে পনপদের মানুষকে দারিদ্রতার বেড়াজাল থেকে উত্তরণের পথ সুগম করে দিয়েছে। যুব উন্নয়নে বেশ কিছু কর্মসূচি কার্যকর ভূমিকা রেখেছে। ঘরে ঘরে কর্মসংস্থান সৃষ্টির যে ঘোষণা ২০০৮ সালের নির্বাচনী ইশতেহারে দেয়া হয়েছে, তার বাস্তবায়নে ন্যাশনাল সার্ভিস কর্মসূচি বেশ আলোচিত ছিল। বর্তমানে এই সার্ভিস সারাদেশে রয়েছে। যা যুবকদের দক্ষ ও আত্মকর্মসংস্থানের জন্য তৈরি করার অনন্য এক সুযোগ করে নিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শিশুবিষয়ক তহবিল ইউনিসেফ জাপানের দক্ষতা উন্নয়নে বাংলাদেশের অসামান্য সাফল্যের স্বীকৃতি হিসেবে চ্যাম্পিয়ন অব স্কিল ডেভেলপমেন্ট ফাইল সম্মাননায় ভূষিত হয়েছেন। 

11 months ago

বাংলা

Please, contribute to add content.
Content

Related Question

View More

একজন লেখক তিনিই যিনি লেখেন। তবে সব লেখা লিখেই লেখক হওয়া যায় না। লেখক সব ধরনের হতে পারে। তবে সৃজনশীল লেখকই হচ্ছে আমাদের মূল কেন্দ্রবিন্দু। লেখক হচ্ছে পৃথিবীর অন্যতম একটি স্বাধীন সত্ত্বা।

একজন লেখক পুরোপুরি তার নিজের সত্ত্বার ওপরে বেঁচে থাকে। অনেকেই লেখক হবার সহজ উপায় খোঁজ করে। কিন্তু পড়তে পড়তে আর লিখতে লিখতেই শুধুমাত্র লেখক হওয়া যায়। এছাড়া আর কোনো উপায় নেই। লেখক অনেক ধরনের হতে পারে।

একজন সাংবাদিকও একজন লেখক। উপন্যাস, গল্প, কবিতা, ছড়া, সাহিত্য, প্রবন্ধ, রম্য, ব্লগ সব ধরনের লেখা যারা লেখে তারাই লেখক। অনেকেই মস্তিষ্কের মধ্যে ওকটা লেখার শক্তি পেয়ে যায় আর অনেকে হয়ত শিখে শিখে লেখক হয়।

সমাজ সভ্যতা কখনোই পুরোপুরি একজন লেখকের পক্ষে থাকে না। বরং বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই বিপক্ষে চলে যায়। স্বাভাবিকভাবেই একজন লেখক তার কলমের আঘাতে জর্জরিত করতে চায় সকল অন্যায়, অপবাদ। তাই হয়ত বেঁধে যেতে পারে সংঘাত। কলমই হচ্ছে একজন লেখকের দাঁড়ানোর জায়গা। কলম ছাড়া লেখকের অস্তিত্ব বিলীন। তবে সবাইকে যে প্রতিবাদ লিখতে হবে এমন কোনো কথা। কেউ কেউ মনোরঞ্জনের জন্যও লেখে। অনেকে আবার চাটুকারিতা করতে লেখে। কেউ আবার কীভাবে পুরষ্কার তুলে নেওয়া যায় সেই ধান্দা করার জন্য লেখে।

একজন লেখক হয়ে উঠতে পারে ন্যায় অন্যায়ের পার্থক্যকারী। সে কলমের ছোঁয়ায় প্রতিবাদ করতে অন্যায়ের আর ফুটিয়ে তুলবে ন্যায়ের কথা। লেখকের কলমের কালি প্রেরণার সুর হয়ে গান গাইবে। আর অশ্রুসিক্ত নয়নে হাসির ঝলক আনবে লেখকের কলম। একজন লেখকের প্রাণ তার লেখা, তার লেখার ভঙ্গি। সে তার লেখা দিয়ে বাঁচিয়ে তুলতে পারবে অসুস্থ কোনো সভ্যতাকে। লেখক তার কলম দিয়ে জাগ্রত করতে পারবে মানুষের ভীতরে লুকিয়ে থাকা অদম্য সাহস।

একজন লেখক কল্পনাকে নিয়ে আসতে পারে বাস্তবে। আমাদের নিয়ে যেতে পারে কল্পনার গহীন বনে। লেখক আমাদের সবাক যুগ থেকে অবাক যুগে নিয়ে যেতে পারে মুহূর্তের মাঝেই। লেখক জাগাতে পারে প্রেম, লেখক জাগাতে পারে নতুন কাজের স্পৃহা।

অনেকেই মনে করে লেখকের সকল বিষয়ে দ্বায় আছে। কিন্তু লেখকের মূলত কারো কাছেই কোনো দ্বায় নেই। তার দ্বায় থাকে শুধু নিজের মনের কাছে, নিজের বিবেকের কাছে, নিজের সুপ্ত চেতনার কাছে। সমাজ কি ভাববে তা নিয়ে লেখক মাথা ঘামাবে না। লেখক ভয়ে নাথা নোয়াবে না। লেখক যতদিন বাঁচবে বীরের মতোই বাঁচবে।

সারা বিশ্বেই লেখকরা নির্যাতনের শিকার হয়। অনেকেই বলে থাকে লিখে কিছুই হয় না। তাই যদি হতো তাহলে লেখার জন্য লেখকের শাস্তি হতো না। লেখকের ফাঁসি হতো না।

লেখকের কলমে অনেক জোর। সেই জোর ভেঙে চুরে গুড়িয়ে দিতে পারে যেকোনো কিছু। বিশেষ করে সাংবাদিকরা বিশ্বজুড়ে নির্যাতিত হয় অনিয়মের বিরুদ্ধে লিখতে গিয়ে। শাস্তি, সাজা বহু কিছু তাদের সহ্য করতে হয়। অন্যায়ের বিরুদ্ধে লিখলে হুমকি আসে, হামলা মামলা বহু ঘটনাই ঘটে। কারণ শাসক, শোষক আর অন্যায়কারীদের অনেক ক্ষমতা। লেখকের সমাজের দায়মুক্তির জন্য জীবনও দিতে হয়। তাইতো একজন লেখক সমাজের শক্তি, সমাজের সম্পদ।

1 year ago

সাহিত্য হচ্ছে মানুষের চিন্তা-ভাবনা, অনুভূতি তথা মানব-অভিজ্ঞতার কথা বা শব্দের বাঁধনে নির্মিত নান্দনিক বহিঃপ্রকাশ। এই অর্থে গল্প, কবিতা, উপন্যাস, নাটক, প্রবন্ধ ইত্যাদি উচ্চতর গুণাবলি সমন্বিত বিশেষ ধরনের সৃজনশীল মহত্তম শিল্পকর্ম। সাহিত্য-শিল্পীগণ যখন ‘অন্তর হতে বচন আহরণ’ করে আত্মপ্রকাশ কলায় ‘গীতরস ধারা’য় সিঞ্চন করে ‘আনন্দলোকে’ নিজের কথা- পরের কথা- বাইরের জগতের কথা আত্মগত উপলব্ধির রসে প্রকাশ করেন- তখনই তা হয়ে ওঠে সাহিত্য। রবীন্দ্রনাথের কথায় “বহিঃপ্রকৃতি এবং মানব-চরিত্র মানুষের মধ্যে অনুক্ষণ যে আকার ধারণ করিতেছে, যে-সঙ্গীত ধ্বনিত করিয়া তুলিতেছে, ভাষা-রচিত সেই চিত্র এবং সেই গানই সাহিত্য।…সাধারণের জিনিসকে বিশেষভাবে নিজের করিয়া – সেই উপায়ে তাহাকে পুনরায় বিশেষভাবে সাধারণের করিয়া তোলাই হচ্ছে সাহিত্যের কাজ।” [রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, সাহিত্য] সাহিত্য সত্য-সুন্দরের প্রকাশ হিসেবে প্রবহমাণ সময়ে যা ঘটে – সে-সবের মধ্য থেকে যা মহৎ, যা বস্তুসীমাকে ছাড়িয়ে বাস্তবাতীত প্রকাশ করে, যা জীবনের জন্য কল্যাণময় এবং মহৎ আদর্শের দ্যোতক তাকেই প্রকাশ করে। আসলে মহৎ সাহিত্য তাই- যা একাধারে সমসাময়িক-শাশ্বত-যুগধর্মী-যুগোপযোগী-যুগোত্তীর্ণ। সাহিত্য কেবল পাঠককে আনন্দ দেয় না- সমানভাবে প্রভাবিত করে পাঠক এবং সমাজকে।

আভিধানিকভাবে ‘সহিতের ভাব’ বা ‘মিলন’ অর্থে ‘সাহিত্য’ হলো কাব্য, নাটক, গল্প, উপন্যাস ইত্যাদি সৃজনশিল্পের মাধ্যমে এক হৃদয়ের সঙ্গে অন্য হৃদয়ের সংযোগ স্থাপন; সাহিত্য¯্রষ্টা-সাহিত্যের সাথে পাঠকের এক সানুরাগ বিনিময়। কিন্তু আভিধানিক অর্থের নির্দিষ্ট সীমায় সাহিত্যের স্বরূপ-গতি-প্রকৃতি-বৈচিত্র্য ও বিস্তৃতির সম্যক ধারণা দেওয়া যেমন অসম্ভব, কোনো বিশেষ সংজ্ঞায় তাকে সুনির্দিষ্ট করে দেওয়াও তেমন দুঃসাধ্য। বাচ্যার্থ ও ব্যঞ্জনার্থর সীমাকে অতিক্রম করে নানা রূপে, রসে, প্রকরণ ও শৈলীতে সাহিত্যের নিরন্তর যাত্রা সীমা থেকে অসীমে। প্রত্যক্ষ সমাজপরিবেশ তথা সমকালীন বাস্তব পারিপার্শ্বিক, নিসর্গপ্রীতি ও মহাবিশ্বলোকের বৃহৎ-উদার পরিসরে ব্যক্তিচৈতন্য ও কল্পনার অন্বেষণ ও মুক্তি- আর এইভাবেই শ্রেণিবিভাজন, নামকরণ ও স্বরূপমীমাংসার প্রচেষ্টাকে ছাপিয়ে উঠে সাহিত্যের যাত্রা সীমাহীনতায়। প্রকৃত সাহিত্য তাই যেমন তার সমসময় যা যুগমুহূর্তের, তেমনই তা সর্বকালের সর্বজনের। মার্কসবাদী সাহিত্যতত্ত্বে বাস্তব সমাজজীবনকে ‘ভিত্তি’ আর শিল্প-সাহিত্যকে সমাজের উপরিকাঠামোর [ঝঁঢ়বৎংঃৎঁপঃঁৎব] অংশ হিসেবে গণ্য করা হয়। সাহিত্যের মৌল উপকরণসামগ্রী আহৃত হয় জীবনের ভা-ার থেকে- সুখ-দুঃখ, আনন্দ-বেদনা, প্রেম-বৈরিতার বিচিত্র-অনিঃশেষ ভা-ার থেকে। সাহিত্যসৃষ্টির মূলে সক্রিয় যে সৃজনী-ব্যক্তিত্ব তা নিছক বিমূর্ত কোনো সত্তা নয়; আত্মপ্রকাশ ও মানবিক সংযোগ ও বিনিময়ের বাসনায় অনুপ্রাণিত সে সত্তা তার ভাব-ভাবনা, বোধ ও বিশ্বাসকে এক আশ্চর্য কৌশলে প্রকাশ করে জনসমক্ষে কোনো একটি বিশেষ রূপ-রীতি-নীতির আশ্রয়ে। ব্যক্তিক অনুুভূতি-যাপিতজীবন-মিশ্রকল্পনার জগৎ থেকেই সৃষ্টি হয় সাহিত্যের; যুগান্তরের আলোকবর্তিকা হিসেবে সাহিত্য সত্যের পথে সবসময় মাথা উঁচু করে থেকেছে- সত্যকে সন্ধান করেছে। আসলে সাহিত্য এমনি এক দর্পণ- যাতে প্রতিবিম্বিত হয় মানবজীবন, জীবনের চলচ্ছবি, পরিবেশ-প্রতিবেশ, সমাজজীবনে ঘটমান ইতিহাস- ইতিহাসের চোরাস্রােত নানাবিধ কৌণিক সূক্ষ্মতায়।

সাধারণত আত্মপ্রকাশের বাসনা, সমাজ-সত্তার সঙ্গে সংযোগ কামনা, অভিজ্ঞতার আলোয় কল্পলোক নির্মাণ এবং রূপপ্রিয়তা- এই চতুর্মাত্রিক প্রবণতাই মানুষের সাহিত্য-সাধনার মৌল-উৎস। চতুর্মাত্রিক প্রবণতার [আত্মপ্রকাশের কামনা, পারিপার্শ্বিকের সাথে যোগাযোগ বা মিলনের কামনা, কল্প-জগতের প্রয়োজনীয়তা এবং সৌন্দর্য-সৃষ্টির আকাক্সক্ষা বা রূপমুগ্ধতা] মধ্যে সমাজসত্তার সঙ্গে সংযোগ-কামনা এবং অভিজ্ঞতার আলোয় কল্পলোক নির্মাণ- এই উৎসদ্বয়ের মধ্যে নিহিত রয়েছে সাহিত্য ও সমাজের মধ্যে আন্তর-সম্পর্কের প্রাণ-বীজ। সমাজ শিল্পীকে সাহিত্য-সাধনায় প্রণোদিত করে। ‘সহৃদয়-হৃদয় সংবাদ’এর মাধ্যমে সাহিত্যিকগণ লেখক-পাঠকের মধ্যে সেতুবন্ধন রচনা করেন- উভয়ের হৃদয়বীণার তারগুলোকে একই সুতায় গেঁথে দেন। এর কারণে সাহিত্য দেশ-কাল-সমাজের সীমা অতিক্রম করে সর্বসাধারণের হৃদয়কে আকর্ষণ করে। এর ফলে সাহিত্য হয়ে ওঠে সার্বজনীন-সর্বকালের মানুষের হৃদয়ের সামগ্রী এবং সাহিত্য¯্রষ্টাও হয়ে ওঠেন অনেক বড়। কিন্তু বর্তমান বাংলা সাহিত্যচর্চার গতি-প্রকৃতি, সমস্যা-সংকট-সমাধান কোন দিকে? এসব বিষয়ের সন্ধান- এ প্রবন্ধের অন্বিষ্ট।

1 year ago

আমাদের লোকশিল্প প্রবন্ধটি আমাদের লোককৃষ্টি গ্রন্থ থেকে গৃহীত হয়েছে। লেখক এ প্রবন্ধে বাংলাদেশের লোকশিল্প ও লোক-ঐতিহ্যের বর্ণনা দিয়েছেন । এ বর্ণনায় লোকশিল্পের প্রতি তার গভীর মমত্ববোধের পরিচয় রয়েছে।
আমাদের নিত্যব্যবহার্য অধিকাংশ জিনিসই এ কুটিরশিল্পের ওপর নির্ভরশীল ।

শিল্পগুণ বিচারে এ ধরনের শিল্পকে লোকশিল্পের মধ্যে গণ্য করা যেতে পারে । পূর্বে আমাদের দেশে যে সমস্ত লোকশিল্পের দ্রব্য তৈরি হতো তার অনেকগুলোই অত্যন্ত উচ্চমানের ছিল। ঢাকাই মসলিন তার অন্যতম। ঢাকাই মসলিন অধুনা বিলুপ্ত হলেও ঢাকাই জামদানি শাড়ি অনেকাংশে সে স্থান অধিকার করেছে।

বর্তমানে জামদানি শাড়ি দেশে-বিদেশে পরিচিত এবং আমাদের গর্বের বস্তু। নকশি কাথা আমাদের একটি গ্রামীণ লোকশিল্প। এ শিল্প আজ বিলুপ্তপ্রায় হলেও এর কিছু কিছু নমুনা পাওয়া যায়। আপন পরিবেশ থেকেই মেয়েরা তাদের মনের মতো করে কীথা সেলাইয়ের অনুপ্রেরণা পেতেন । কাঁথার প্রতিটি সুচের ফোঁড়ের মধ্যে লুকিয়ে আছে এক-একটি পরিবারের কাহিনী, তাদের পরিবেশ, তাদের জীবনগাঁথা ।

আমাদের দেশের কুমোরপাড়ার শিল্পীরা বিভিন্ন ধরনের তৈজসপত্র ছাড়াও পোড়ামাটি দিয়ে নানা প্রকার শৌখিন দ্রব্য তৈরি করে থাকে। নানা প্রকার পুতুল, মূর্তি ও আধুনিক রুচির ফুলদানি, ছাইদানি, চায়ের সেট ইত্যাদি তারা গড়ে থাকে।
খুলনার মাদুর ও সিলেটের শীতলপাটি সকলের কাছে পরিচিত। আমাদের দেশের এই যে লোকশিল্প তা সংরক্ষণের দায়িত আমাদের সকলের । লোকশিল্পের মাধ্যমে আমরা আমাদের ঐতিহ্যকে বিশ্বের কাছে তুলে ধরতে পারি।

1 year ago

আমাদের অর্থনৈতিক সম্পদ

 

বাংলাদেশ, একটি দ্রুত উন্নতি লক্ষ্য নির্ধারণ করা দেশ, যা প্রচুর অর্থনৈতিক সম্পদের বেশিরভাগ সম্পদ নিয়ে এগিয়ে চলেছে। এই দেশের অর্থনৈতিক সম্পদ মৌলিকভাবে চারটি প্রধান উৎস থেকে আসে: জমি, কাজ, উদ্যোগ, এবং মানুষের কাজের দক্ষতা। এই সম্পদের বিকাশে বিভিন্ন রাজনৈতিক, আর্থিক এবং সামাজিক পরিবর্তনের ভূমিকা রয়েছে।

বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সম্পদের মূল স্তম্ভ হল কৃষি। দেশটি একটি প্রধানত কৃষিপ্রধান দেশ হিসেবে পরিচিত। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নতির মূল হিসেবে প্রধানত শস্য ও ফসল চাষ প্রসঙ্গে বিকাশ হয়েছে। বাংলাদেশে প্রধানত ধান, পাট, মশুর ডাল, আখ, পটল, পেঁপে, তেল সহ বিভিন্ন ফসল চাষ করা হয়। অত্যন্ত উচ্চ মানের খাদ্য সামগ্রী উৎপাদনের ফলে এই খাদ্য পণ্য রাষ্ট্রীয় অর্থনৈতিক সম্পদের গড়াতে সাহায্য করে।

আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক উৎস হল প্রবৃদ্ধি ও শিক্ষাগত উন্নতি। বাংলাদেশে শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের অভাব কমে আসছে এবং মানুষের দক্ষতা বৃদ্ধি করছে। বিশেষত, প্রযুক্তির আগমন এবং বিনিয়োগে বৃদ্ধি নেওয়া হচ্ছে, যা অর্থনৈতিক সম্পদের উন্নতির পথে সাহায্য করছে।

অন্যান্য উৎস হিসেবে প্রযুক্তিবিদ্যা এবং সেবা অংশ গুলির অগ্রগতি আছে। বাংলাদেশের সর্বোচ্চ অর্থনৈতিক সম্পদ হল তার মানুষের চাকরিভার্থী শ্রমিকেরা। তাদের দক্ষতা, উদ্যোগ, ও সামর্থ্য বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রগতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

যদিও বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সম্পদ উন্নতির পথে অনেক উত্সাহজনক প্রগতি হয়েছে, তবে এখনও অনেক চ্যালেঞ্জ র

য়েছে। প্রধানতঃ গরিব মানুষের জন্য আর্থিক সম্পদের অগ্রগতি নিশ্চিত করা গুরুত্বপূর্ণ হলেও এখনও বেশিরভাগ লোকের মধ্যে বৃদ্ধির অভাব আছে। তাছাড়া, পরিবেশের সম্পদ সংরক্ষণের জন্য সঠিক প্রশাসনিক ও আইনি ব্যবস্থা প্রয়োজন।

পুনর্নির্মাণ ও বাস্তবায়নের মাধ্যমে, বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সম্পদের বিস্তার ও উন্নতি নিশ্চিত করতে পারে। সঠিক নীতি নির্ধারণ, উদ্যোগের বৃদ্ধি, প্রযুক্তিগত প্রবর্তন এবং শিক্ষাগত উন্নতি এমন পরিবর্তন নিশ্চিত করতে সাহায্য করতে পারে।

শেষ কথায়, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সম্পদ একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় যা দেশটির সমৃদ্ধি ও উন্নতির সাথে অবিভাজ্যভাবে সংযোগিত। একটি দ্রুত বৃদ্ধির উপায় হল সঠিক পরিকল্পনা, ব্যবস্থাপনা এবং উদ্যোগের বৃদ্ধি করা। এই প্রস্তুতি নেওয়ার মাধ্যমে, বাংলাদেশ তার অর্থনৈতিক সম্পদ উন্নতির পথে আরও এগিয়ে যেতে পারে এবং তার মানুষের জন্য আরো উন্নত ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে পারে।

2 months ago
Promotion
Content for the offcanvas goes here. You can place just about any Bootstrap component or custom elements here.