Job

শ্রীকৃষ্ণকীর্তন কাব্য

- বাংলা - বাংলা সাহিত্য | NCTB BOOK
2.4k
Summary

শ্রীকৃষ্ণকীর্তন:

শ্রীকৃষ্ণকীর্তন মধ্যযুগের প্রথম কাব্য, যা কবি বড়ু চণ্ডীদাস রচনা করেন। এটি কৃষ্ণলীলা সম্পর্কিত পুরাণের কাহিনী এবং জয়দেবের গীতগোবিন্দের প্রভাব গ্রহণ করে গ্রাম্য প্রেম-গল্পের ভিত্তিতে রচিত।

১৯০৯ সালে বসন্তরঞ্জন রায় পশ্চিমবঙ্গের বাঁকুড়া জেলার কাঁকিল্যা গ্রামে অযত্নে রক্ষিত পুঁথিটি আবিষ্কার করেন। ১৯১৬ সালে এটি বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ থেকে প্রকাশিত হয়। পুঁথির কিছু পাতা অনুপস্থিত থাকার কারণে কবির আত্মপরিচয় ও রচনাকাল রহস্যময়ভাবে রয়ে গেছে।

এ কাব্য বৈষ্ণব মতবাদের বাইরে রাধাকৃষ্ণের রূপক শৈলী মেনে চলে এবং এই কারণে তা বিতর্কের সৃষ্টি করেছে। ভাষাতত্ত্বের দিক থেকে শ্রীকৃষ্ণকীর্তনের অসাধারণ গুরুত্ব রয়েছে এবং এটি প্রাচীন যুগের নিদর্শন চর্যাপদের পর প্রথম নিদর্শন হিসেবে বিবেচিত।

কাব্যটির সমকালীন অন্যান্য কাব্যের তুলনায় ভাষা তুলনামূলকভাবে প্রাচীন; তবে এর ধারণার বিরোধের কারণে এটি লোকসমাজের মধ্যে বিশেষ প্রচলিত হয়নি।

'শ্রীকৃষ্ণকীর্তন' মধ্যযুগের প্রথম কাব্য এবং বড়ু চণ্ডীদাস মধ্যযুগের আদি কবি। ভাগবত প্রভৃতি পুরাণের কৃষ্ণলীলা-সম্পর্কিত কাহিনি অনুসরণে, জয়দেবের গীতগোবিন্দ কাব্যের প্রভাব স্বীকার করে, লোকসমাজে প্রচলিত রাধাকৃষ্ণ প্রেম-সম্পর্কিত গ্রাম্য গল্প অবলম্বনে কবি বড়ু চণ্ডীদাস শ্রীকৃষ্ণকীর্তন কাব্য রচনা করেন। ১৯০৯ সালে (১৩১৬ বঙ্গাব্দ) বসন্তরঞ্জন রায় বিদ্বদ্বল্লভ পশ্চিমবঙ্গের বাঁকুড়া জেলার কাঁকিল্যা গ্রামে এক গৃহস্থ বাড়ির গোয়ালঘর থেকে পুঁথি আকারে অযত্নে রক্ষিত এ কাব্য আবিষ্কার করে বাংলা সাহিত্যে এক নতুন অধ্যায়ের সংযোজন ঘটান। বৈষ্ণব মহান্ত শ্রীনিবাস আচার্যের দৌহিত্র-বংশজাত দেবেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়ের অধিকারে এই গ্রন্থটি রক্ষিত ছিল। ১৯১৬ সালে (১৩২৩ সনে) বসন্তরঞ্জন রায়ের সম্পাদনায় গ্রন্থটি বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ থেকে প্রকাশিত হয়।

পুঁথিটির প্রথম দিকের দুটি পাতা এবং শেষের পাতাটি ছিল না। এ ছাড়া পুঁথির মধ্যেও কিছু পাতা নেই। রীতি অনুযায়ী পুঁথির প্রথম দিকে দেবতার প্রশংসা, কবির পরিচয় ও গ্রন্থনাম উল্লেখিত হয় এবং শেষ দিকের পাতায় পুঁথির রচনাকাল ও লিপিকাল লিখিত থাকে। প্রথম ও শেষ অংশ খণ্ডিত থাকায় কবির আত্মপরিচয় ও রচনাকালের মত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় লোকচক্ষুর আড়ালেই রয়ে গেছে।

বৈষ্ণব মতবাদে গৃহীত রাধাকৃষ্ণের রূপকের বাইরে এ কাব্যের পরিচয়। বৈষ্ণব সাধনা ও ঐতিহ্যের বিরোধী এ কাব্য রুচিহীন গ্রাম্যতা, যৌনকামনা ও মিলনের বর্ণনায় অশ্লীল, সূক্ষ্ম ইন্দ্ৰিয়াতীত অনুভূতির ব্যঞ্জনার অভাব এ কাব্যকে করে তুলেছে বিতর্ক মুখর। তাই মধ্যযুগের বাংলা সাহিত্যের আদি নিদর্শন হিসেবে কাব্যটি অচিরেই ব্যাপক কৌতূহলের সৃষ্টি করে ।

বাংলা সাহিত্যে শ্রীকৃষ্ণকীর্তনের স্থানটি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। ভাষাতত্ত্বের দিক থেকে বিবেচনা করলে এই কাব্যের মূল্য অসাধারণ বলে গ্রহণযোগ্য। ভাষাতাত্ত্বিকদের মতে প্রাচীন যুগের নিদর্শন চর্যাপদের পর এবং মধ্যযুগের প্রথম নিদর্শন শ্রীকৃষ্ণকীর্তনের মাঝামাঝি সময়ে আর কোন বাংলা কাব্য আবিষ্কৃত হয় নি। শ্রীকৃষ্ণকীর্তনের সমকালে বা কিছু পরে রচিত বিদ্যাপতির পদাবলি, কৃত্তিবাসের রামায়ণ, মালাধর বসুর শ্রীকৃষ্ণ বিজয় ইত্যাদি কাব্যের প্রাচীন পুঁথি পাওয়া যায় নি। এ সবের ভাষা যুগের পরিবর্তনে অপেক্ষাকৃত আধুনিক হয়ে পড়েছে। পরবর্তী বৈষ্ণব ভাবধারা ও রসপর্যায়ের সঙ্গে শ্রীকৃষ্ণকীর্তনের আদর্শগত বিরোধ বিদ্যমান থাকায় কাব্যটি লোকসমাজে বিশেষ প্রচলিত ছিল না। ফলে এর ভাষায় পরিবর্তন ঘটতে পারে নি।

Content added By
Content updated By

# বহুনির্বাচনী প্রশ্ন

জ্ঞানদাস
দীন চন্ডিদাস
বড়ু চন্ডীদাস
দীনহীন চন্ডিদাস
বড়ু চন্ডীদাস
দ্বিজ চন্ডীদাস
শ্রী চৈতন্যদেব
কাহ্নপা
বসন্তরঞ্জন
বড়ৃ চন্ডীদাস
ত্রৈলোক্য আচর্য
ব্রজসুন্দর সান্ন্যাস
Promotion
NEW SATT AI এখন আপনাকে সাহায্য করতে পারে।

Are you sure to start over?

Loading...