Blog

বর্তমান প্রযুক্তিতে WiFi এতো জনপ্রিয় কেনো ? WiFi কিভাবে কাজ করে? এর ব্যবহার ও সুবিধা অসুবিধা কি ?

WiFi (ওয়াইফাই) এর পূর্ণনাম হচ্ছে- Wireless Fidelity । WiFi (ওয়াইফাই) হচ্ছে ওয়ারলেস লোকাল এরিয়া নেটওয়ার্ক ব্যবস্থা যার সাহায্যে বহনযোগ্য কম্পিউটারের যন্ত্রপাতির সাথে সহজে ইন্টারনেট সংযুক্ত করা যায়। ওয়াইফাই যোগাযোগ ব্যবস্থায় উচ্চ ফ্রিকোয়েন্সী রেডিও ওয়েব ব্যবহার করা হয়। ওয়াইফাই হচ্ছে Wi-Fi Alliance এর বাণিজ্যক চিহ্ন অথবা ট্রেডমার্ক। IEE802.11 স্ট্যান্ডার্ড তারহীন স্থানীয় এলাকা নেটওয়ার্ক বা Wireless Local Area Network (WLAN) ডিভাইস ব্র্যান্ড করার জন্য ওয়াইফাই উৎপাদনকারীরা এই বাণিজ্যক চিহ্ন ব্যবহার করে। এখন পর্যন্ত সবথেকে বেশি ব্যবহৃত WLAN ক্লাশ হল IEE802.11। IEE802.11 এর প্রতিশব্দ হিসেবে ওয়াইফাই শব্দটি প্রায়ই ব্যবহৃত হয়।

Wi-Fi Alliance হচ্ছে একটি অলাভজনক প্রতিষ্ঠান যা ওয়াইফাই প্রযুক্তি উন্নীত করে এবং ওয়াইফাই পণ্য নিশ্চিত করে। ওয়াইফাই সাধারণত সকল ধরণের ল্যাপটপ, পেরিফেরাল ডিভাইস, প্রিন্টার, স্মার্ট ফোন, MP3 প্লেয়ার, ভিডিও গেম Console এবং ব্যক্তিগত কম্পিউটারে ব্যবহার করা যায়।

আগেকার সময়ে মোবাইলে ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারাটাই অনেক সাংঘাতিক ব্যাপার ছিল। তবে তারপর আসলো মোবাইল থেকে কম্পিউটারে ইন্টারনেট ব্যবহার করার প্রচলন। এবং শেষে, এখনের সময়ে একটি মোবাইলের থেকে আরেকটি মোবাইলে ইন্টারনেট পাঠিয়ে বা শেয়ার করে ব্যবহার করা হয়। আর এই ক্ষেত্রে ওয়াইফাই (WIFI) এর ব্যবহার প্রচুর পরিমানে করা হয়। তবে ওয়াইফাই (WIFI) যে কেবল ইন্টারনেট শেয়ার (share) করার জন্য ব্যবহার করা হয়, তেমন নয়। WIFI হলো এমন একটি wireless signal যেটা ব্যবহার করে একাধিক computer device পরস্পরে সংযুক্ত হয়ে থাকতে পারে। ফলে, সংযুক্ত হয়ে থাকা device গুলো একে আরেকজনের সাথে file বা data ইত্যাদির আদান প্রদান করতে পারে। আর এই wireless signal এর ফলেই device গুলো পরস্পরে “internet data” নিজেদের মধ্যে শেয়ার করে নেওয়ার সুবিধে পেয়ে থাকে। WIFI কে আমরা একটি wireless technology বলেও বলতে পারি, যেখানে কোনো তার ছাড়াই বেতার ভাবে একটি computer আরেকটি computer এর সাথে সংযুক্ত হতে পারে।

 

WiFi এর বৈশিষ্ট্য

  • ওয়াই-ফাই যোগাযোগ ব্যবস্থায় উচ্চ ফ্রিকোয়েন্সী রেডিও ওয়েব ব্যবহার করা হয়।
  • WiFi ব্যবহার করে একই সাথে একাধিক কম্পিউটারে ইন্টারনেট সংযোগ দেয়া যায়।
  • এটি ওয়ারলেস Local Area Network IEE802.11 এর জন্য (Institute of Electrical and Eletromics Enginners) প্রণীত স্ট্যান্ডার্ড।
  • কর্ডলেস টেলিফোনের ন্যায় বিভিন্ন পোর্টেবল ডিভাইস ও  ফিক্সড ডিভাইসের নেটওয়ার্কের ক্ষেত্রে এটি ব্যবহৃত হয়।
  • এর কাভারেজ এরিয়া একটি কক্ষ, একটি ভবন কিংবা কয়েক কিলোমিটার এলাকা জুড়ে হতে পারে।
  • হটস্পট গুলোতে এটি ব্যবহার করা যায় এবং এর কাভারেজ খুব বেশি এলাকায় পাওয়া যায় না।
  • ওয়াই-ফাই পণ্যসমূহ ওয়াইফাই এলায়েন্স কর্তৃক সনদ প্রাপ্ত।

 

WiFi এর প্রকারভেদ (Different types of WiFi technologies)

IEEE 802.11a: ১৯৯৯ সালে IEEE দ্বারা তৈরি করা হয়েছিল যেটা ১১৫ ফুট দূরত্ব পর্যন্ত কাজ করবে। এই WiFi network টি 54 Mbps গতিতে কাজ করতে পারে।

IEEE 802.11b: ১৯৯৯ সালে সাধারণ ভাবে ঘরোয়া ব্যবহারের উদ্দেশ্যে এটা তৈরি করা হয়েছিল যেটা 11 Mbps গতিতে ১১৫ ফুট পর্যন্ত কাজ করবে।

IEEE 802.11g: ২০০৩ সালে 802.11a এবং 802.11b দুটোকে মিলিয়ে এই 802.11g তৈরি করা হয়েছিল। এর গতি 54 Mbps এবং এই নেটওয়ার্ক ১২৫ ফুট পর্যন্ত কাজ করবে।

IEEE 802.11n: Dual band router গুলোতে কাজ করার জন্য এটাকে আনা হয়েছিল। এর data transfer করার ক্ষমতা হলো 54 Mbps এবং ২৩০ ফুট পর্যন্ত কাজ করে। ২০০৯ সালে তৈরি করা হয়েছিল।

IEEE 802.11ac: এটাও ২০০৯ সালে তৈরি করা হয়েছিল যার গতি 1.3 Gbps এবং ১১৫ দূরত্ব কভার করতে পারবে।
তাহলে দেখলেন তো, WiFi network এর আলাদা আলাদা প্রকার ও ক্ষমতার বিষয়ে।

প্রত্যেক আলাদা আলাদা ধরণের WiFi network গুলোর speed এবং দূরত্ব কভার করার ক্ষমতা আলাদা আলাদা হতে পারে।

 

WiFi কিভাবে কাজ করে ?

Device গুলোর মধ্যে তথ্যের (information) আদান-প্রদান করার উদেশ্যে WiFi যেই প্রক্রিয়াটিকে ব্যবহার করে সেটা হলো “নেটওয়ার্ক এর রেডিও তরঙ্গ“. মনে রাখবেন, WiFi ব্যবহার করার আগে, আপনার computer, smartphone বা অন্যান্য device গুলোতে একটি wireless adapter লাগানো থাকতেই হবে। আপনি নিজের কম্পিউটারে একটি wireless adapter আলাদা করেও লাগাতে পারবেন। আর এই wireless adapter এর মূল কাজ হল network এর মাধ্যমে গ্রহণ করা data বা information গুলোকে “radio signal” এর রূপে প্রেরণ (transmit) করা। তাই বলা যেতে পারে যে, ওয়াইফাই যেকোনো অন্য ওয়্যারলেস ডিভাইস (wireless device) এর মতোই কাজ করে। এখানে, সংযুক্ত থাকা computer device গুলোর মধ্যে signal পাঠানোর জন্য radio frequencies এর ব্যবহার করা হয়। Signal গুলোকে এন্টিনার মাধ্যমে ডিকোডার এর মধ্যে পাঠানো হয়। Signal decoder কে আমরা router এর নামেও বলি। একবার সিগন্যাল গুলো রাউটার এর মাধ্যমে ডিকোড হয়ে যাওয়ার পর সেগুলোকে ethernet connection এর দ্বারা internet এর কাছে পাঠানো হয়। ঠিক এভাবেই, ইন্টারনেট থেকে ডাটা গ্রহণ করা ডাটা প্রথমেই রাউটার এর মধ্যেই আসবে। এবং, রাউটারের মধ্যে ইন্টারনেট থেকে আসা প্রত্যেকটি ডাটা ডিকোড হয়ে রেডিও সিগন্যালে রূপান্তর করা হবে। তারপর শেষে, ওয়াইফাই রাউটার এর সাথে সংযুক্ত computer device গুলোতে থাকা wireless adapter, সেই রেডিও সিগন্যাল গুলোকে গ্রহণ করবে।

 

WiFi এর সুবিধা

  • WiFi প্রযুক্তি ব্যবহার করে একই সাথে একাধিক কম্পিউটারে ইন্টারনেট সংযোগ দেয়া যায়।
  • WiFi হচ্ছে ওয়ারলেস লোকাল এরিয়া নেটওয়ার্ক ব্যবস্থা।
  • এর সাহায্যে ইন্টারনেট অ্যাক্সেস করা যায়।
  • সীমিত এরিয়ার মধ্যে WiFi প্রযুক্তি ব্যবহার করা সহজ।
  • ওয়াইফাই লোকাল এরিয়া নেটওয়ার্কের তুলনায় সস্তা।

WiFi এর অসুবিধা

  • ওয়াইফাই ব্যবহারের সবচেয়ে বড় আসুবিধা হলো কেবল হটস্পটগুলোতে এটি ব্যবহার করা হয়।
  • এর কাভারেজ খুব বেশি এলাকায় পাওয়া যায় না।
  • ওয়াইফাই প্রযুক্তির ডাটা চলাচলের গতি খুব একটা বেশি নয়।
  • নিরাপত্তা ব্যবস্থা তুলনামূলকভাবে দুর্বল।

WiFi এর ব্যবহার

  • সীমিত এরিয়ার মধ্যে WiFi প্রযুক্তি ব্যবহার করা সহজ।
  • শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছাত্র-ছাত্রীদের ব্যবহারের সুবিধার্থে WiFi প্রযুক্তি ব্যবহার করা যায়।
  • বিমানবন্দর, হটেল, রেস্তোরাতে WiFi প্রযুক্তির সেবা প্রদান করা যায়।
  • ওয়াইফাই র‍য়েছে এরকম সকল ধরনের ইলেক্ট্রনিক ডিভাইসে ওয়াইফাই খুব সহযে ব্যবহার করা যায়।
  • ওয়াইফাই ব্যবহার করে বর্তমানে এক সাথে কয়েকজন মিলে একই ভিডিও গেম খেলা যায়। 
0 311
No bio avaliable
Author’s Profile