Blog

দাম্পত্য জীবনে সুখী হওয়ার উপায়

দাম্পত্য জীবনে সুখী হওয়ার উপায়ঃ স্বামী-স্ত্রীর জীবনে সবচেয়ে বেশি সুখের সময় হলো তাদের মধু চন্দ্রিমা বা হানিমুনের সময় টা। সবকিছু যেন নতুন নতুন, চারিদিকে ভালোলাগা একটা হাওয়া বইতে থাকে সব সময় মনের ভেতরে। কিন্তু সেই সুখ আর ভালোবাসা পরবর্তী জীবনে গিয়ে আগের মতো এতটা প্রবল ভাবে দেখা যায় না। পৃথিবীতে খুব কম সংখ্যক স্বামী স্ত্রী আছেন যাদের মধ্যে প্রচন্ড পরিমানে ভালোবাসার সম্পর্ক রয়েছে। আজকের দিনে ডিভোর্স, পরকীয়া এবং আলাদা থাকা যেন নৈমিত্তিক একটা ব্যাপারে পরিণত হয়েছে। এত সমস্যার মূলে একটাই কারণ কাজ করে যেটি হল দাম্পত্য জীবনের সুখের অভাব। 

দাম্পত্য জীবনে সুখী হওয়ার উপায়

দাম্পত্য জীবনে সুখ-শান্তি না থাকার ফলে স্বামী-স্ত্রীর মাঝে সব সময় ঝগড়া বিবাদ, মানসিক অশান্তি এবং অসামঞ্জস্যতা কাজ করে। এর প্রভাব অনেক সময় গিয়ে পড়ে সন্তানদের ওপরে। তাই বলা যায় দাম্পত্য জীবনে সুখী থাকা মানুষের জন্য অপরিহার্য একটি বিষয়। তাহলে চলুন কিভাবে দাম্পত্য জীবনে সুখী থাকবেন সে ব্যাপারে আলোকপাত করা যাক। 

১. একে অপরকে সম্মান করুন

পৃথিবীর প্রত্যেকটি সম্পর্কের ভিত্তি হিসেবে কাজ করে একে অপরের প্রতি সম্মান প্রদর্শন। ঠিক একইভাবে আপনি যদি একটি মানসম্মত দাম্পত্য জীবন পেতেচান তাহলে জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রেই আপনার সঙ্গী কে সম্মান প্রদর্শন করতে হবে। আপনার সঙ্গীর চাওয়া-পাওয়া, মতামত, পছন্দ-অপছন্দ এগুলোকে প্রাধান্য দেয়ার মাধ্যমে আপনি তার প্রতি সম্মান প্রদর্শন করতে পারেন যা তাকেও আপনার প্রতি সম্মান দেখাতে বাধ্য করে তুলবে। 

২. বর্তমান সময় নিয়ে ভাবুন

সম্পর্ককে দিন দিন উন্নত করতে হলে অবশ্যই আপনার সঙ্গীর অতীত নিয়ে কথা বলা বন্ধ করতে হবে। আপনাকে মনে রাখতে হবে যে পৃথিবীর কোন মানুষই চিরজীবন ভালো বা খারাপ থাকে না। হতে পারে আপনার সঙ্গীর কোন তিক্ত অতীত আপনাকে বার বার নাড়া দিচ্ছে। কিন্তু সেই বিষয়টি নিয়ে আপনি বর্তমান সময়ে যত বেশি কথা বলবেন আপনাদের মধ্যে অশান্তি ততই বেশি হবে। তাই অতীতে যা হবার হয়েছে সেটা ভুলে গিয়ে বর্তমান সময়ে দুজন দুজনকে নিয়ে ভালো থাকার চেষ্টা করুন। কিভাবে ভবিষ্যৎ কে আরো বেশি ভালো করা যায় সেটা নিয়ে ভাবতে থাকুন। 

৩. সঙ্গীর কথা শুনুন

পরিবারের কোন ব্যাপারে মতামত দেবার যেমন আপনার অধিকার রয়েছে তেমনি আপনার সহধর্মিনীর ও রয়েছে। তাই কোন ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবার আগে আপনার সঙ্গীর কথা মনোযোগ দিয়ে শুনুন এবং সেটা একবার হলেও ভেবে দেখুন। এতে করে আপনাদের মাঝে সুসম্পর্ক বজায় থাকার পাশাপাশি আপনি কার্যকরের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে সক্ষম হবেন। 

স্বাস্থ্য সম্পর্কিত যে কোন প্রশ্ন করুনঃ স্বাস্থ্য কথা

৪. প্রশংসা করুন

কোন মানুষের প্রশংসা করলে সে স্বাভাবিক ভাবেই আপনার প্রতি পজিটিভ মনোভাব পোষণ করবে। সেই প্রশংসা যদি হয় আপনার সঙ্গীর তাহলে তো কোন কথাই নেই। আপনাদের বিয়ের ১৫ বছর পরেও গিয়ে যদি আপনি আপনার সঙ্গীর প্রশংসা করেন তাহলে আপনাদের মধ্যে ভালোবাসা ঠিক আগের মতই বেড়ে যাবে। আপনার সঙ্গী ভাববে যে আপনি তাকে এখনো ততটাই ভালবাসেন যতটা ভালবেসে ছিলেন বিয়ের সময়। তাই সঙ্গীর ভালো কাজগুলোর প্রশংসা করুন। 

৫. ধন্যবাদ দিন

ধন্যবাদ খুব ছোট্ট একটি শব্দ হলেও এটি অনেক শক্তিশালী। ছোট ছোট কাজে যদি আপনি আপনার সঙ্গী কে ধন্যবাদ জানান তাহলে আপনাদের মানসিক সম্পর্কের উন্নয়ন ঘটবে। আপনি যদি ধন্যবাদ জানান তাহলে একটা সময়ে গিয়ে আপনিও ধন্যবাদ পাবেন। এছাড়া মানুষের ছোট ছোট কাজের কৃতজ্ঞতা স্বীকার করলে মানুষ স্বভাবতই ভালোলাগা অনুভব করে। আর এই ছোট্ট একটি শব্দ বলার মাধ্যমে যদি আপনি আপনার সঙ্গীকে একটুখানি ভালোলাগা উপহার দিতে পারেন তাহলে সেটা মন্দ কি। 

৬. নিজের যত্ন নিন

মানুষ স্বাভাবিকভাবেই পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন ব্যক্তিদের সংস্পর্শে থাকতে পছন্দ করে। তাই আপনিও নিজেকে সব সময় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখুন যাতে করে আপনার সঙ্গী আপনার প্রতি আকৃষ্ট হয়। কখনো এমনটা ভাববেন না যে বয়স হয়ে গেছে বলে আপনার সৌন্দর্য কমে গেছে। আসলে মানুষের সৌন্দর্য নির্ভর করে সে নিজেকে কতটা পরিচ্ছন্ন ভাবে উপস্থাপন করতে পারে তার ওপরে। তাই নিয়মিত চুল আঁচড়ানো, ব্রাশ করা, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন পোশাক পরিধান করা এই ব্যাপারগুলোতে মনোযোগ দিন। 

৭. ভাষা সংযত করুন

আপনার সঙ্গীর প্রতি সম্মান প্রদর্শনের অন্যতম একটি উপায় হল ভদ্র ভাষায় কথা বলা। মনে রাখতে হবে যে প্রত্যেক মানুষেরই ব্যক্তিগত একটি সত্তা রয়েছে। আপনি যদি স্বামী হয়ে স্ত্রীকে নোংরা ভাষায় গালাগালি করেন তাহলে আপনার স্ত্রী স্বভাবতই আপনার উপরে মনঃক্ষুন্ন হবে। তাই স্বামী স্ত্রী একে অপরের সাথে যথাসম্ভব সংযত ভাবে কথা বলুন। এতে করে কখনো আপনাদের মাঝে মনোমালিন্য তা হবে না বরং সম্পর্কের উন্নয়ন ঘটবে। 

৮. যৌন সঙ্গম

 যৌন সঙ্গম আপনার সম্পর্ককে জীবিত রাখতে সবচেয়ে বেশি সাহায্য করে থাকে। শুধু তাই নয়,  যৌন সঙ্গম আপনার ভেঙে যাওয়া সম্পর্ক কে নিমেষেই ঠিক করে ফেলতে পারে। গবেষকদের মতে  যৌন সঙ্গম স্বামী এবং স্ত্রীর মধ্যে নৈমিত্তিক একটি কার্যকলাপ হওয়া উচিত। তবে সঙ্গম করার আগে সময় নিয়ে ফোরপ্লে করবেন। যদিও আপনার মুড ভালো না থাকে তবুও কখনো  যৌন সঙ্গম করতে আপনার সঙ্গে কে নিষেধ করবেন না। আপনাদের মধ্যকার মনস্তাত্ত্বিক সম্পর্কের একমাত্র বহিঃপ্রকাশ এবং পূর্ণতা হল সফল  যৌন সঙ্গম। তবে  যৌন সঙ্গম করার সময় অবশ্যই একাধিক পদ্ধতি, জায়গা, কক্ষ ব্যবহার করবেন। এতে করে সম্পর্কে বৈচিত্রতার কোন অভাব থাকবে না। তবে সহবাস, জন্মনিয়ন্ত্রণ এবং আরো কিছু ব্যাপারে আপনার সঙ্গিনীর সাথে পরামর্শ করে সিদ্ধান্ত নিন। 

0 375
No bio avaliable
Author’s Profile