উচ্চশিক্ষা ও গবেষণার কেন্দ্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত বহু বিদ্যা চর্চার প্রতিষ্ঠানকে বলে বিশ্ববিদ্যালয়'। বিশ্ববিদ্যালয়ে একদিকে যেমন জ্ঞান বিতরণ করা হয়, অন্যদিকে তেমন নতুন জ্ঞান সৃষ্টির উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের অনার্স ও মাস্টার্স শ্রেণিগুলোতে জ্ঞান বিতরণ করা হয় এবং যাঁরা নতুন জ্ঞান সৃষ্টি করেন তাঁদের এমফিল ও পিএইচডি ডিগ্রি প্রদান করা হয়। যাঁরা জ্ঞান বিতরণের সঙ্গে জড়িত তাঁরা অধ্যাপক নামে এবং যাঁরা জ্ঞান সৃষ্টির সঙ্গে জড়িত তাঁরা গবেষক নামে পরিচিত। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিদ্যাশাখাগুলোকে সাধারণত মানবিক, সমাজতত্ত্ব, বিজ্ঞান, বাণিজ্য, কৃষি, আইন, চারুকলা, প্রযুক্তি, চিকিৎসা প্রভৃতি শৃঙ্খলা বা অনুষদে বিভক্ত করা হয়ে থাকে। প্রাচীন কালে উপমহাদেশে একটি আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে উঠেছিল যার নাম নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয়। এর বর্তমান ভৌগোলিক অবস্থান বাংলাদেশের সীমানার অদূরে। পৃথিবীর প্রাচীনতম যে বিশ্ববিদ্যালয়টি এখনো চালু আছে তার নাম আল কারাওয়াইন বিশ্ববিদ্যালয়। এটি মরক্কোর ফেজ শহরে অবস্থিত। বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠিত প্রথম বিশ্ববিদ্যালয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। ১৯২১ সালে এটি প্রতিষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশে এখন বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা দেড় শতাধিক। এগুলো বিভিন্ন শ্রেণিনামে পরিচিত: স্বায়ত্তশাসিত, সরকারি, বেসরকারি, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, কৃষি, প্রকৌশল, মেডিকেল, বিশেষায়িত, কেন্দ্রীয়, আন্তর্জাতিক ইত্যাদি। জ্ঞানচর্চার মধ্য দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়সমূহ বিশ্বকে কল্যাণমূলক ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে নিয়ে যায়।
বইমেলা হলো বইকে উপলক্ষ করে লেখক ও পাঠকের মিলনমেলা। আনন্দঘন পরিবেশে বই কেনা-বেচার সুযোগ ঘটে বইমেলায়। এই মেলাতে বইয়ের প্রকাশকগণ তাঁদের নতুন ও পুরনো বই নিয়ে দোকান সাজান, পাঠক সেখান থেকে তাঁর পছন্দের বই দেখেশুনে কিনতে পারেন। এটা বইমেলার সবচেয়ে বড়... সুবিধা। জার্মানির ফ্রান্ডফুর্ট শহরে বিশ্বের বৃহত্তম বইমেলার আয়োজন করা হয়। বাংলাদেশে বইমেলার সূচনা হয় ১৯৭২ সালে মুক্তধারার প্রকাশক চিত্তরঞ্জন সাহার উদ্যোগে। ১৯৭৮ সাল থেকে শুরু হয় বাংলা একাডেমি 'অমর একুশে গ্রন্থমেলা'। এই মেলায় শুধু বই কেনাবেচাই নয়, নানা ধরনের সাংস্কৃতিক ও একাডেমিক কর্মকাণ্ড বাংলা একাডেমি গ্রহণ করে। ২০১৪ সাল থেকে বইমেলা বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণ ছাড়িয়ে পার্শ্ববর্তী সোহরাওয়াদী উদ্যান পর্যন্ত বিস্তৃত হয়। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী প্রতি বছর এই মেলার উদ্বোধন করেন। বইমেলা মানুষের মধ্যে পাঠাভ্যাস বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে; বিশেষভাবে শিশু-কিশোররা বাবা- মার সাথে বইমেলায় গিয়ে নিজেদদের পছন্দের বইটি সংগ্রহ করতে পারে, নতুন নতুন বইয়ের সঙ্গে তাদের পরিচয় হয়। বইমেলাকে কেন্দ্র করে অনেক লেখক তাঁদের নতুন বই প্রকাশ করেন; পাঠকও নতুন নতুন ধারণার সঙ্গে পরিচিত হতে পারেন।
জাতীয় পতাকা একটি দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের প্রতীক। পৃথিবীর প্রতিটি দেশের আলাদা আতীয় পতাকা রয়েছে। সাধারণত এক খণ্ড কাপড় দিয়ে জাতীয় পতাকা তৈরি করা হয়। এর আকার সুনির্দিষ্ট। আয়তাকার পতাকাই বেশি। যে দণ্ডের সঙ্গে পতাকাটি বেঁধে টাঙানো হয়, ... েই দণ্ডকে বলে পতাকা-সহ। সরকারি অফিস-আদালত ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নিয়মিতভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। এছাড়া জাতীয় দিবসগুলোতে দেশের সর্বত্র জাতীয় পতাকা শোভা পায়। আন্তর্জাতিক খেলাধুলার সময়ে কোনো দেশের খেলোয়াড়দের সমর্থন করার সময়ে সমর্থকেরা সেই দেশের পতাকা উড়িয়ে থাকে। জাতীয় শোক দিবসে এর সরকারি ঘোষণা অনুযায়ী কোনো শোক পালন করার সময়ে জাতীয় পতাকাকে অর্ধনমিত করা হয়, অর্থাৎ পতাকা-দণ্ডের উপর দিকে পতাকার প্রন্থের সমান অংশ বাদ দিয়ে পতাকাটি টাঙানো হয়। বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার দৈর্ঘ্য-প্রন্থের অনুপাত ১০। ৬। এর পাঁচটি পরিমাপ রয়েছে- ১০ ফুট। ৬ ফুট, ৫ ফুট ৩ ফুট, ২.৫ ফুট। ১.৫ ফুট, ১৫ ইঞ্চি। ৯ ইঞ্চি, এবং ১০ ইঞ্চি। ৬ ইঞ্চি। 'প্রজাতন্ত্রের জাতীয় পতাকা হইতেছে সবুজ ক্ষেত্রের উপর স্থাপিত রক্তবর্ণের একটি ভরাট বৃত্ত'। বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার সবুজ রং সবুজ প্রকৃতি ও তারুণ্যকে নির্দেশ করে এবং উদীয়মান সূর্যের মতো এর লাল বৃত্ত বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে আত্মোৎসর্গকারীদের নির্দেশ করে।