সপ্তম শ্রেণি (মাধ্যমিক) - ডিজিটাল ও তথ্য প্রযুক্তি - NCTB BOOK

ষষ্ঠ শ্রেণিতে আমরা বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পদ ও স্বত্বাধিকারীর অধিকার সম্পর্কে জানতে পেরেছি। কিন্তু যখন ব্যক্তিগত ও বাণিজ্যিক কাজে অন্য কাউকে নিজের বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পদ আমরা ব্যবহার করতে দেব, আমাদের কিছু নীতিমালা তৈরি করে নেওয়া উচিত। এর ফলে কেউ আমাদের এই বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পদ অপব্যবহার করতে পারবে না ।

তুমি কি ‘মৈমনসিংহ গীতিকা'র নাম শুনেছ? এটি একটি সংকলনগ্রন্থ, যাতে ময়মনসিংহ অঞ্চলের পালাগান লিপিবদ্ধ করা আছে। এই পালাগানগুলো প্রাচীনকাল থেকে মানুষের মুখে মুখে প্রচারিত হয়ে আসছিল ময়মনসিংহ অঞ্চলে। এই বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পদ প্রথমে চন্দ্রকুমার সাহা সংগ্রহ করা শুরু করেন। এরপর ড. দীনেশ চন্দ্র সেন সবগুলো পালাগান একত্র করে সম্পাদনা করেন ও গ্রন্থাকারে প্রকাশ করেন। যদি এই কাজ না করা হতো তাহলে আজ হয়তো আমরা এই অসাধারণ সংকলন পেতাম না।

কেমন হয় যদি আমরা নিজেরাই আমাদের এলাকায় কোনো বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পদকে যথাযথভাবে বাণিজ্যিক ব্যবহারের উপযোগী করে তুলতে পারি? এই শিখন অভিজ্ঞতায় আমরা সেটা করার চেষ্টা করব।

 

সেশন ১ - ব্যক্তিগত ও বাণিজ্যিক কাজে বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পদ ব্যবহার

হাসির বাবা আফজাল হোসেনের একটি দই তৈরির কারখানা আছে। এই কারখানায় তৈরি দই বাজারে ‘হাসি দই' নামে বিক্রি হয়। আজ হাসি এই দই কিনে হঠাৎ অবাক হয়ে আবিষ্কার করে দইয়ের স্বাদ অন্যরকম লাগছে। ভালো করে প্যাকেট লক্ষ্য করে দেখল সেখানে ‘হাসি দই' এর পরিবর্তে ‘হাস দই' লেখা। অথচ প্যাকেট দেখতে একই রকম, একই রং, একই সাইজ, লেখার ফন্টও একই রকম, সবকিছুই মিল আছে, শুধু ‘হাসি’র জায়গায় ‘হাস’ লেখা।

সেটা খুব ভালো করে খেয়াল না করলে হঠাৎ বোঝার উপায় নেই এটা যে হাসি দই না! হাসি খুব চিন্তিত হয়ে বাবার কাছে গিয়ে প্যাকেট দেখিয়ে পুরো ঘটনা খুলে বলল। আফজাল হোসেন সবকিছু শুনে বললেন, তোমাকে অনেক ধন্যবাদ হাসি এই ব্যাপারটি লক্ষ্য করার জন্য।

তবে আমাদের দুশ্চিন্তার কিছু নেই। আমাদের হাসি দইয়ের স্বাদ অন্য দইয়ের তুলনায় আলাদা, তার কারণ, এই দই তৈরির ফর্মুলা আমার উদ্ভাবন করা এবং সেটি বেশ আলাদা অন্যগুলোর তুলনায়।

এ কারণে এই দই তৈরির কৌশল বা ফর্মুলা একটি বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পদ। | যারা আমাদের কোম্পানির দই নকল করে প্রায় হুবহু একই নামে বাজারে ছেড়েছে, আমি দ্রুত আমার একজন উকিল বন্ধুর সঙ্গে পরামর্শ করে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

যেহেতু আমাদের ট্রেডমার্ক করা আছে, তাই যারা আমাদের এই বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পদ নকল করে বাণিজ্যিকভাবে ছেড়েছে, তাদের অবশ্যই ক্ষতিপূরণ দিতে হবে ও বাণিজ্যিকভাবে এই পণ্য বাজারে বিক্রি করা বন্ধ করতে হবে। হাসি এখন একটু দুশ্চিন্তামুক্ত হলো।

উপরের গল্পে আমরা দেখতে পাচ্ছি, আফজাল হোসেন একটি বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পদ তৈরি করেছেন।

তিনি যেই ফর্মুলা ব্যবহার করে হাসি দই তৈরি করেছেন, সেটি অন্য দইয়ের ফর্মুলা থেকে ভিন্ন। তাই এটি একটি বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পদ। এরপর তিনি এটি বাজারজাত করেছেন।

বাজার থেকে যারা হাসি দই কিনছে, তারা কিন্তু শুধু পণ্য হিসেবে ব্যক্তিগত কাজে এটি কিনছে। অর্থাৎ এই দই কেনার সময় তারা দইটি শুধু খাবার অধিকার পাচ্ছেন।

এক্ষেত্রে বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পদের ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার হচ্ছে। 

ব্যক্তিগত কাজে বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পদ নির্দিষ্ট টাকা দিয়ে কেনার সময় পণ্যটি একজন মানুষ ব্যবহারের সুযোগ পেলেও সেটি বাণিজ্যিক কাজে ব্যবহারের অধিকার পান না। 

অন্যদিকে অন্য একটি প্রতিষ্ঠান যারা প্রায় হুবহু হাসি দইয়ের আদলে বাজারে হাস দই ছেড়েছেন তারা পণ্যটিকে বাণিজ্যিক কাজে ব্যবহার করছেন।

বাণিজ্যিক কাজে বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পদ ব্যবহার করতে গেলে অবশ্যই বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পদটির যিনি | স্বত্বাধিকারী তার থেকে যথাযথ আনুষ্ঠানিক অনুমতি নিয়ে, তার সঙ্গে চুক্তিপত্র করে তবেই বাণিজ্যিক কাজে ব্যবহার করা যাবে।

এবারে আমরা একটি কাজ করি, নিচে বেশকিছু বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পদের উদাহরণ দেওয়া হয়েছে। সেগুলো থেকে আমরা বের করি বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পদটি ব্যক্তিগত কাজে নাকি বাণিজ্যিক কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে এবং ব্যবহারটি যথাযথ হচ্ছে কি না।

ক. মিজান একটি বিখ্যাত বাংলা সিনেমা দেখার জন্য একটি ওয়েবসাইটে নিবন্ধন করল। সেখানে নির্দিষ্ট ফি পরিশোধ করে তাদের গ্রাহক হলো। কিন্তু ওই ওয়েবসাইটে সিনেমাটি দেখানোর সিনেমার প্রযোজকের কাছ থেকে অনুমতি গ্রহণ করা হয়নি। মিজান এখন খুশি মনে পছন্দের সিনেমা দেখছে।

সিদ্ধান্ত মিজান ব্যক্তিগত কাজে বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পদ ব্যবহার করছে। কিন্তু ওয়েবসাইটটি সিনেমাটি প্রদর্শনের অনুমতি না নিয়েই তাদের প্ল্যাটফর্মে বাণিজ্যিক কাজে সেটি ব্যবহার করছে। কাজেই তারা নিয়ম মানছে না ও সিনেমার প্রযোজক ওয়েবসাইটের সত্ত্বাধিকারীর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারেন।

খ. মিতু প্রয়োজনীয় একটি সফটওয়্যার অনলাইনে খুঁজতে গিয়ে দেখল ৫০ টাকা দিয়ে সফটওয়্যারটি তৈরিকারক কোম্পানি থেকে লাইসেন্স কিনে নিতে হবে। মিতুর বন্ধু হেনা বলল, আমার কাছেই সফটওয়্যারটি আছে, কেনার কোনো প্রয়োজন নেই, তুই আমার থেকে সফটওয়্যারটি কপি করে নিস। মিতু বলল এটা একদম উচিত হবে না। সফটওয়্যারটি কেনার যথাযথ ওয়েবসাইটে গিয়ে সেটির লাইসেন্স কিনে নিয়ে মিতু এখন ব্যবহার করছে।

সিদ্ধান্ত

 

 

 

 

 

 

 

গ. একটি বিখ্যাত কোমল পানীয় তৈরির কোম্পানি তাদের ফর্মুলা বাংলাদেশের একটি বাজারজাতকরণ কোম্পানির কাছে চুক্তিবদ্ধ হয়ে প্রদান করল। কিন্তু অন্য আরও একটি কোম্পানি সেই একই কোমল পানীয়র নামে বাজারে পণ্য বিক্রি শুরু করল। তখন যে কোম্পানি এই ফর্মুলা কিনে নিয়েছিল, তারা আদালতের দ্বারস্থ হলো।

সিদ্ধান্ত

 

 

 

 

 

 

 

ঘ. রায়হান একটি ভ্রমণবিষয়ক বই লিখেছে নিজের বিভিন্ন পরিদর্শন করা স্থানের অভিজ্ঞতা নিয়ে। রায়হান একটি প্রকাশক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়ে মেধাস্বত্ব পাবার শর্তে বইটি প্রকাশের অনুমতি দিয়েছে। সেই প্রতিষ্ঠান এই বছর বইমেলায় বইটি প্রকাশ করেছে ও বইটি পাঠকদের মধ্যে সাড়া ফেলেছে।

সিদ্ধান্ত

 

 

 

 

 

 

 

 

 

সেশন ২ - স্বত্বাধিকারীর অধিকার সংরক্ষণ

আমরা আগের সেশনে পড়া গল্পে জেনেছিলাম বাণিজ্যিক কাজে হাসি দইয়ের অপব্যবহারের কারণে আফজাল হোসেন আদালতে মামলা করে ক্ষতিপূরণ দাবি করার কথা ভাবছেন। তবে আফজাল হোসেন ক্ষতিপূরণ দাবি করতে পারতেন না যদি তার ট্রেডমার্ক না করা থাকত। আমরা এর আগে ষষ্ঠ শ্রেণিতে কপিরাইট ও পেটেন্ট সম্পর্কে জেনেছিলাম। কিন্তু ট্রেডমার্ক জিনিসটা কী?

ট্রেডমার্ক হলো কোনো স্বতন্ত্র প্রতীক বা লোগো বা নাম বা স্লোগান যেটি দিয়ে একটি বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পদকে একই ধরনের অন্য কোনো বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পদ থেকে পার্থক্য করা যায়।

একটি প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তি কোনো বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পদকে বাণিজ্যিকভাবে বাজারজাত করার সময় তাদের সেই সম্পদের জন্য নির্দিষ্ট ট্রেডমার্ক নিবন্ধন করেন। ফলে অন্য কেউ চাইলেই ইচ্ছেমতো তার সেই বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পদ নকল করে বাজারজাত করতে পারে না ।

এর ফলে স্বত্বাধিকারীর অধিকার সংরক্ষিত হয় ও অন্য কেউ তার বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পদের অপব্যবহার করতে গেলে তিনি আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারেন।

বাংলাদেশ বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা (World Trade Organization বা WTO) -এর একটি সদস্য দেশ। তাই এই সংস্থার করে দেওয়া নিয়ম অনুসরণ করে বাংলাদেশে ট্রেডমার্ক নিবন্ধনের সুযোগ আছে।

এক্ষেত্রে একটি বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পদের ট্রেডমার্ক নিবন্ধনের জন্য ৫ টি ধাপ অনুসরণ করতে হয়-

ক) গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের পেটেন্ট, ডিজাইন ও ট্রেডমার্ক অধিদপ্তরের ওয়েবসাইট থেকে ট্রেডমার্ক নিবন্ধনের আবেদন ফর্ম সংগ্রহ করে নির্দিষ্ট ফি জমা দিয়ে সেটি প্রথমে পূরণ করতে হয়। এই ফর্মে বিস্তারিত জানাতে হয় কেন এই বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পদের স্বত্বাধিকারী হিসেবে ট্রেডমার্ক নিবন্ধন করতে চাচ্ছি আমরা।

খ. অধিদপ্তরের দায়িত্বশীল কর্মকর্তা আবেদনটি যাচাই-বাছাই করবেন যে সম্পদের কথা উল্লেখ করা হয়েছে সেটি আসলেই একটি বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পদ কি না, সম্পদটি ট্রেডমার্ক পাবার যোগ্য কি না, একই রকম অন্য বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পদের সঙ্গে এই ট্রেডমার্ক হুবহু মিলে যাচ্ছে কি না ইত্যাদি।

গ. অধিদপ্তর আবেদনটি গ্রহণযোগ্য হিসাবে পেলে সংবাদপত্রে বিজ্ঞাপন দেবে ও অন্য কোনো একই ধরনের বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পদের ট্রেডমার্ক ধারণকারী কোনো স্বত্বাধিকারীর এই নতুন ট্রেডমার্কের ব্যাপারে আপত্তি আছে কি না, সেটি জানতে দৃষ্টি আকর্ষণ করবে।

ঘ. অন্য কোনো বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পদের স্বত্বাধিকারী নিজের ট্রেডমার্কের সঙ্গে নতুন ট্রেডমার্কের মিল খুঁজে পান, তাহলে তিনি নিজের আপত্তি জানাতে পারেন। এ জন্য অধিদপ্তরের ওয়েবসাইট থেকে আবেদন ফর্ম পূরণ করে তাকে জমা দিতে হয়। এ সময় তিনি যুক্তি প্রদান করেন, কেন নতুন ট্রেডমার্কটি গ্রহণযোগ্য হবে না।

আবার যিনি ট্রেডমার্কের জন্য আবেদন করেছেন, তিনি নিজের ট্রেডমার্কের পক্ষে যুক্তি প্রদান করেন। এরপর অধিদপ্তর দুই পক্ষের সকল যুক্তি বিবেচনা করে এই ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেন।

ঙ. সবশেষে যদি অধিদপ্তর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয় যে আবেদনকারীকে এই ট্রেডমার্ক প্রদান করা হবে, তাহলে ট্রেডমার্কের নিবন্ধন সম্পন্ন হয়। নিবন্ধিত হবার প্রমাণপত্র হিসেবে একটি ট্রেডমার্ক সনদ ঐ স্বত্বাধিকারীর নামে প্রদান করা হয়।

আমরা এই শিখন অভিজ্ঞতার একদম শেষে একটি বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পদকে যথাযথভাবে বাণিজ্যিক ব্যবহারের উপযোগী করতে যাচ্ছি তাই না? এবারে একটি কাজ করি।

সেই বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পদের জন্য মনের কল্পনা থেকে ট্রেডমার্ক হিসেবে কোনো লোগো বা ছবি বা ডিজাইন পরের পৃষ্ঠায় এঁকে ফেলি-

 

 

 

 

 

 

 

 

এবারে চল আরেকটি কাজ করি। আমাদের বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পদের জন্য ট্রেডমার্কের আবেদন করার একটি নমুনা ফর্ম আমরা পূরণ করে ফেলি। এখানে যে তথ্যগুলো যেমন মোবাইল ফোন নম্বর ও ই-মেইল তোমার থাকবে না, সেগুলো চাইলে কাল্পনিক একটা তথ্য দিয়ে দিতে পারো—

আবেদনকারীর নাম :.……………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………..

জাতীয়তা: .…………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………

ঠিকানা:.……………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………..

মোবাইল নং..………………………………………………………..ই-মেইল………………………………………………………………………………………………………….

পণ্যের বিবরণ:………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………….

……………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………..

……………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………..

 

 

 

 

 

 

 

 

স্বাক্ষর ও তারিখ :..………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………

ট্রেডমার্কের মূল আবেদন পত্র দেখতে হুবহু একরকম না হলেও এখানে নমুনা ফর্মে আমরা আবেদন গুরুত্বপূর্ণ অংশগুলো পূরণ করেছি। আমরা যখন নিজেরা একটি বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পদের জন্য ট্রেডমার্কের আবেদন করব তখন আনুষ্ঠানিকভাবে (অফিসিয়াল) ফর্মটি পূরণ করতে হবে।

যদি ইন্টারনেটের সংযোগ থাকে আমরা চাইলে http://www.dpdt.gov.bd/ ওয়েবসাইটে গিয়ে ট্রেডমার্কের আবেদন ফর্ম চাইলে ডাউনলোড করে রাখতে পারি।

আগামী সেশনের প্রস্তুতি

বাংলাদেশ বা বিশ্বে ট্রেডমার্কের ব্যক্তিগত ও বাণিজ্যিক অপব্যবহারের ফলে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন কোম্পানি আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। পত্রপত্রিকা বা অনলাইন সংবাদ মাধ্যম থেকে আমরা এ রকম কিছু ঘটনার তথ্য সংগ্রহ করি পরের সেশনের জন্য। পাশাপাশি এই ঘটনাগুলোর কোনটি বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পদের ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহারের ক্ষেত্রে হয়েছে ও কোনটি বাণিজ্যিক কাজে ব্যবহারের ক্ষেত্রে হয়েছে সেটিও ভাবি ।

 

 

সেশন ৩ - ট্রেডমার্কজনিত আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ নিয়ে প্রতিবেদন তৈরি

আমরা বাড়িতে বেশকিছু ঘটনা নিয়ে তথ্য অনুসন্ধান করেছি যেগুলো ট্রেডমার্ক সম্পর্কিত ছিল। এবারে আমরা এই বিষয়ে একটি প্রতিবেদন তৈরি করব।

প্রতিবেদন তৈরির জন্য এই কাজগুলো আমাদের করতে হবে— 

১. সবার আগে শিক্ষক আমাদের সবাইকে কয়েকটি দলে ভাগ করে দেবেন । 

২. নিজেদের দলের সকল সদস্য যে ঘটনাগুলোর তথ্য অনুসন্ধান করেছিলাম, সেগুলো নিয়ে একসঙ্গে বসে আলোচনা করব কোনো ঘটনাটি নিয়ে আমরা প্রতিবেদন তৈরি করব। 

৩. আমাদের একটি নির্দিষ্ট ঘটনা নির্বাচন করে নিতে হবে। তাই ঘটনা নির্বাচনের সময় নিচের প্রশ্নগুলোর উত্তর প্রকাশিত সংবাদে আছে কি না, যাচাই করব। একটি ঘটনা নিয়ে প্রকাশিত সংবাদে যদি এই বিষয়গুলো উপস্থিত থাকে, শুধু তাহলেই আমরা সেটি নিয়ে কাজ করতে পারব—

প্রাথমিক প্রশ্ন

আইনি ঘটনাটি বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পদ?

ঘটনার সঙ্গে জড়িত দুই পক্ষের ব্যাপারে তথ্য দেওয়া আছে?

পরবর্তী প্রশ্ন

ব্যক্তিগত নাকি বাণিজ্যিক কাজে ব্যবহার নিয়ে সমস্যা হয়েছে?

দুই পক্ষের বক্তব্যই সংবাদে আছে কি?

চূড়ান্ত প্রশ্ন

আদালতে কী রকম প্রমাণ উপস্থাপন করা হয়েছে?

চূড়ান্ত রায় প্রদান হয়েছে নাকি এখনও রায় প্রদান হয়নি?

৪. এভাবে আমরা দলগতভাবে একটি ঘটনা নিয়ে কাজ করার পরিকল্পনা চূড়ান্ত করলাম। কাজের সুবিধার্থে উপরে উল্লেখিত ছয়টি প্রশ্নের প্রাপ্ত উত্তর নিচে লিখে ফেলি—

 

 

 

 

 

 

 

 

৫. এবার আমরা আমাদের নির্বাচিত ঘটনার বিভিন্ন তথ্য নিয়ে নিজেদের দলে আলোচনা করব ও পুরো ঘটনা বিশ্লেষণ করব। বিশ্লেষণ করে আমরা কী রকম সিদ্ধান্তে এলাম ও আইনি সিদ্ধান্ত নিয়ে আমরা একমত কি না, বা আমাদের এক্ষেত্রে ভাবনাগুলো কী রকম সেটি নিয়ে একটি প্রতিবেদন তৈরি করে ফেলব।

আমাদের প্রতিবেদনের মূল অংশ নিচের ছকে লিখে ফেলি—

 

 

 

 

 

 

 

 

৬। এবারে দলগতভাবে আমাদের তৈরি করা প্রতিবেদন নিয়ে শিক্ষক ও অন্য শিক্ষার্থীদের সামনে উপস্থাপন করি।

আমরা যখন নিজেদের তৈরি করা সাংস্কৃতিক বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পদকে কাউকে বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহার করতে দেব, আমাদেরও খেয়াল রাখতে হবে আমরা কোনো নীতিমালা ভঙ্গ করছি কি না বা কোনো স্বত্বাধিকারীর অধিকার ক্ষুণ্ন করছি কি না। কারণ, এমন হলে অন্য কেউ একইভাবে আমাদের বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারবে।

 

 

সেশন ৪ - বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পদ ব্যবহারের নীতিমালা বানাই

রিতু সম্প্রতি একটি মোবাইল অ্যাপলিকেশন সফটওয়্যার তৈরি করেছে, যেটি দিয়ে নিজের বাসায় থাকা বিভিন্ন ইলেকট্রনিক ডিভাইস যেমন বাতি, পাখা ইত্যাদি নিয়ন্ত্রণ করা যাবে।

এই সফটওয়্যারটি নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে ট্রেডমার্কও করিয়েছে যেন এটিকে বাজারজাত করতে পারে। একদিন বাবা বললেন, 'তুমি যে সফটওয়্যার তৈরি করেছ, এটার যারা ব্যবহারকারী হবে তাদের জন্য কোনো নীতিমালা বানিয়েছ?'

এটা শুনে রিতু বেশ অবাক হয়ে বলল, ‘সফটওয়্যারটি কীভাবে চালাতে হবে সেটির নির্দেশনামালা তৈরি করেছি। কিন্তু ব্যবহারকারীর জন্য আবার কি নীতিমালা বানাব?'

তখন বাবা বললেন, “দেখো আমরা যখন কোনো সফটওয়্যার ইন্সটল করি, তখন প্রথমেই কিছু নীতিমালা আমাদের প্রদর্শন করে।

অর্থাৎ ঐ সফটওয়্যার ব্যবহারের ক্ষেত্রে কী কী নিয়ম মেনে চলতে হবে সেটা আমাদের জানিয়ে দেয়। সেই নিয়মগুলো মানতে আমরা সম্মতি জানালে তখনই কেবল সফটওয়্যারটি ব্যবহার করা যায়।

নইলে যে কেউ তোমার তৈরি সফটওয়্যার ইচ্ছেমতো ব্যবহার করা শুরু করবে বা সেটা পুনরায় বাজারজাত করে দিতে পারে। আর এটা শুধু সফটওয়্যার নয়, যেকোনো বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পদই ব্যক্তিগত ও বাণিজ্যিক কাজে ব্যবহারের নীতিমালা তৈরি করা উচিত। তাহলে সেই সম্পদ কেউ অপব্যবহার করার সুযোগ পাবে না।

সব শুনে রিতু বুঝল তাকে এখন নিজের সফটওয়্যারের জন্যই এ রকম ব্যবহারের নীতিমালা তৈরি করতে হবে।

উপরের গল্প থেকে আমরা যেটি বুঝলাম বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পদ যারা ব্যবহার করবে, তাদের ব্যবহারের ক্ষেত্রে কী কী বাধানিষেধ থাকবে তা স্বত্বাধিকারীকে তৈরি করে নিতে হবে।

যেমন, ধরি একটি ওয়েবসাইটে নির্দিষ্ট আইডি ও পাসওয়ার্ড দিয়ে লগইন করে বিভিন্ন সিনেমা দেখা যায়। এখন ওয়েবসাইট নির্মাতারা চান একজন তাদের ওয়েবসাইটে নিবন্ধন করলে শুধু একজনই যেন সকল কন্টেন্ট উপভোগ করেন।

অর্থাৎ একই অ্যাকাউন্ট দিয়ে যেন একাধিক মানুষ কন্টেন্ট উপভোগ না করেন। কেননা, এ রকম হলে তাদের আর্থিক ক্ষতি হবে, একই অ্যাকাউন্ট থেকে ১০০ জনও তাদের কন্টেন্ট দেখতে পারে। 

এক্ষেত্রে অনলাইন প্ল্যাটফর্মকে তাদের ব্যবহারকারীদের জন্য তৈরি নীতিমালায় যুক্ত করে দিতে হবে যে একটি অ্যাকাউন্ট থেকে কোনো অবস্থাতেই একাধিক ব্যবহারকারী কন্টেন্ট দেখতে পারবেন না। 

ঠিক একইভাবে যেকোনো বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পদের ক্ষেত্রেই ব্যবহারকারীদের জন্য এরকম নীতিমালা তৈরি করতে হয়। 

আমরা এর আগের সেশনে বেশকিছু ট্রেডমার্ক-সংক্রান্ত আইনি ঘটনা সম্পর্কে দলগত উপস্থাপনা করেছিলাম। 

সেখানে এ রকম বেশকিছু মামলা সম্পর্কে আমরা ধারণা পেয়েছি ও কোনো মামলায় কী কী সমস্যা ছিল সেটিও আমরা জেনেছি। এবারে আমরা নিচের কাজটি করে ফেলি-

১. বিভিন্ন মামলা সম্পর্কে যে ধারণা পেয়েছি, তার আলোকে আমরা কিছু নীতির কথা চিন্তা করি যেগুলো একটি বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পদ ব্যবহারের জন্য রাখা উচিত। 

২. দলের সবাই মিলে আলোচনা করার পরে এবার যে নীতিগুলো আমাদের রাখা উচিত মনে হয়, সেগুলো নিচের ছকে লিখে ফেলি। লেখার সময়ে কোনো নীতিগুলো ব্যক্তিগত ব্যবহারের জন্য আর কোনোগুলো বাণিজ্যিক ব্যবহারের জন্য সেটিও টিক চিহ্ন দিয়ে উল্লেখ করি।

ব্যক্তিগত সম্পদ ব্যবহারের জন্য প্রস্তাবিত নীতি

প্রস্তাবিত নীতি

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

ব্যক্তিগত ব্যবহার

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

বাণিজ্যিক ব্যবহার

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

৩. আমরা যে নীতিগুলো ভেবেছি, তার মধ্যে কিছু নিয়ম ব্যক্তিগত ব্যবহারের জন্য প্রয়োজন হবে। আবার একইভাবে কিছু নিয়ম বাণিজ্যিক ব্যবহারের সময়ে প্রয়োজন হবে। সেভাবেই আমরা চিহ্নিত করেছি। এবারে সবগুলো নিয়মগুলো সমন্বয় করে আমরা সামনে যে বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পদ নিয়ে কাজ করতে যাচ্ছি, সেটি ব্যবহারের ক্ষেত্রে আমরা নিজেরা কোনো নীতিমালা অনুসরণ করব, সেটি উল্লেখ করে একটি আর্টিকেল তৈরি করি। আর্টিকেলের প্রধান অংশ নিচে উল্লেখ করি—

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

সেশন ৫ - চল বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পদকে যথাযথ বাণিজ্যিক ব্যবহারের উপযোগী বানাই

অনুসন্ধানমূলক কাজ

আমরা তো বিভিন্ন রকম বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পদ সম্পর্কে আগেও জেনেছি। যদি নিজেদের এলাকা বা জেলার কথা ভাবি। এখানে কী কী বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পদ থাকতে পারে? একটি এলাকার নির্দিষ্ট কোনো খাবার, কোনো ঐতিহ্যবাহী বাড়ি বা স্থান, গান, শ্লোক, নাচ, শব্দ বা ভাষা কিংবা সেই এলাকার কোনো বাদ্যযন্ত্ৰ, স্থাপনা ইত্যাদি হতে পারে সেই এলাকার বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পদ। আমরা কি নিজেদের এলাকার এমন কোনো বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পদের কথা জানি যেটা হয়তো এখন আর বাকিদের কাছে সেভাবে পরিচিত নয় অথবা সেটির কোনো ট্রেডমার্ক করা নেই? আমরা নিজেরা এবার একইভাবে আমাদের নিজেদের এলাকার একটি বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পদ নিয়ে কাজ করতে যাচ্ছি-

১. প্রথমে আমরা আগের মতো প্রতিটি দল নিজেদের এলাকায় বা জেলায় এমন বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পদ খুঁজব।

২. শিক্ষকের অনুমতিক্রমে এই অনুসন্ধানের জন্য অনেক লম্বা সময় নেওয়া যেতে পারে।

৩. এক্ষেত্রে এলাকার বিভিন্ন মানুষের সাহায্য নেওয়া যেতে পারে। কারণ, তাদের কাছে এমন উপাদানের ব্যাপারে তথ্য থাকতে       পারে।

৪. এরপর আমাদের নির্বাচিত বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পদ সংগ্রহ করার পর বিস্তারিত কন্টেন্ট আমরা সংগ্রহ করব। কন্টেন্ট হিসেবে           এখানে লেখা, কোনো ছবি, ভিডিও ইত্যাদি কিছু হতে পারে।

৫. এবারে সেই কন্টেন্ট আমরা বাণিজ্যিক ব্যবহারের উপযোগী করে তুলব। বাণিজ্যিক ব্যবহারের উপযোগী করার জন্য সম্পদটিকে ট্রেডমার্ক নিবন্ধন করতে হবে। আমরা তো এর আগে জেনেছি কীভাবে বাণিজ্যিক ব্যবহারের উপযোগী বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পদের জন্য ট্রেডমার্ক নিবন্ধন করতে হয়। নির্দিষ্ট ওয়েবসাইটে গিয়ে সেই পদ্ধতি অনুসরণ করে আমরা ঐ বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পদের ট্রেডমার্ক নেবন্ধনের জন্য আবেদন করব।

৬. এক্ষেত্রে অবশ্যই বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পদের মূল স্বত্বাধিকারীকে প্রথমে বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পদ কী ও সেটির ট্রেডমার্ক করার গুরুত্ব বুঝিয়ে বলতে হবে। কাজেই তোমাদের দলকে মূল স্বত্বাধিকারীকে এ সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা দিতে হবে। যেন তিনি সম্মত হন তার বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পদকে ট্রেডমার্ক নিবন্ধন করার জন্য।

৭. এরপর নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ট্রেডমার্কের নিবন্ধনের আবেদন করে বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পদের স্বত্বাধিকারীকে তার পরবর্তী দায়িত্ব বুঝিয়ে দিতে হবে।

৮. এরপর ঐ বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পদ বাণিজ্যিক ব্যবহারের একটি নীতিমালা তৈরি করতে হবে। এই নীতিমালা তৈরিতেও মূল স্বত্বাধিকারীকে তোমরা সাহায্য করবে বইয়ে দেখানো নিয়ম অনুসরণ করে।

৯. তাহলে তার বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পদটিকে যথাযথ বাণিজ্যিক ব্যবহারের উপযোগী করতে তোমরা সহায়তা করতে পারবে।

নিশ্চয়ই পুরো কাজটি শেষ করার পর তোমার এলাকার সেই স্বত্বাধিকারী অনেক উপকৃত হবেন। পাশাপাশি তুমি নিজেও যখন একটি বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পদের স্বত্বাধিকারী হবে, তোমারও এই পূর্বের অভিজ্ঞতা কাজে লাগবে। দারুণ না? একজনের উপকার করতে গিয়ে তোমাদের দলের সবাই নিজেরাও চমৎকার একটি অভিজ্ঞতা অর্জন করলে ।

আমাদের পুরো কাজ করার সময়ে নিচের ছক অনুযায়ী আমরা বিভিন্ন সপ্তাহে বিভিন্ন কাজ করব-

সপ্তাহকাজ
১ম ও ২য় সপ্তাহবুদ্ধিবৃত্তিক সম্পদের অনুসন্ধান কেন্দ্র হবে।
৩য় সপ্তাহদলের সবাই মিলে সিদ্ধান্ত নেওয়া কোনো বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পদ নিয়ে কাজ করা হবে ।
৪র্থ সপ্তাহবুদ্ধিবৃত্তিক সম্পদকে কন্টেন্ট আকারে সংগ্রহ করা।
৫ম সপ্তাহবুদ্ধিবৃত্তিক সম্পদের মূল স্বত্বাধিকারীকে তার সম্পদের বাণিজ্যিক যথাযথ ব্যবহার সম্পর্কে ধারণা প্রদান।
৬ষ্ঠ সপ্তাহট্রেডমার্ক নিবন্ধনের জন্য আবেদন।
৭ম সপ্তাহবুদ্ধিবৃত্তিক সম্পদটির বাণিজ্যিক ব্যবহারের নীতিমালা তৈরি ।
৭ম সপ্তাহশ্রেণিকক্ষে নিজেদের পুরো কাজের অভিজ্ঞতা বিনিময় ।

দেখেছ কী সুন্দর একটি বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পদ নিয়ে এই শিখন অভিজ্ঞতায় আমরা কাজ করেছি? তোমাকে ও তোমার দলকে অভিনন্দন! একইভাবে তুমি নিজে যখন কোনো বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পদ তৈরি করবে সেটির ব্যক্তিগত ও বাণিজ্যিক ব্যবহারের জন্য প্রয়োজনীয় ধাপগুলো অনুসরণ করবে। তাহলে তোমার বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পদের কেউ অপব্যবহার করতে পারবে না।

Content added By