একাদশ- দ্বাদশ শ্রেণি - রসায়ন - রসায়ন - দ্বিতীয় পত্র | NCTB BOOK

UV-visible spectroscopy

সূচনাঃ তাড়িৎ চৌম্বকীয় রশ্মির 200nm হতে 400nm তরঙ্গ দৈর্ঘ্যের রশ্মিকে অতিবেগুনী (Ultraviolet) এবং 400nm হতে 750nm তরঙ্গ দৈর্ঘ্যের রশ্মিকে দৃশ্যমান অঞ্চল বলা হয় । কম আকর্ষণে আবদ্ধ ইলেকট্রনসমূহ যেমন নন-বন্ডিং ইলেকট্রন বা পাই-বন্ডিং ইলেকট্রন উত্তেজিত বা উচ্চ শক্তিস্তরে উন্নীত করার জন্য অতিবেগুনী-দৃশ্যমান অঞ্চলের তরঙ্গদৈর্ঘ্যের রশ্মির বিকিরণ যথেষ্ট । এই অঞ্চলে আলোকরশ্মি শোষণ করার জন্য অণুসমূহকে অবশ্যই কনজুগেটেড দ্বি-বন্ধন থাকতে হবে । অণুতে খুব বেশি পরিমাণে কনজুগেশন থাকলে অণুটি দৃশ্যমান অঞ্চলে রশ্মি শোষণ করবে ।

মূলনীতিঃ আণবিক অরবিটাল তত্ত্ব (molecular orbital theory) অনুযায়ী যখন কোন যৌগকে UV-visible বা অতিবেগুনী দৃশ্যমান রশ্মি দ্বারা উত্তেজিত করা হয় তখন ইলেকট্রন বন্ডিং অরবিটাল (bonding orbital) হতে অ্যান্টিবন্ডিং অরবিটালে (anti-bonding orbital) স্থানান্তরিত হয় । ইলেকট্রনের এ স্থানান্তরে ইলেকট্রনীয় বর্ণালীর সৃষ্টি হয় । 𝜋 বন্ধন যুক্ত যৌগ সমূহে রশ্মি শোষিত হলে ইলেকট্রন সর্বোচ্চ অধিকৃত আণবিক অরবিটাল (Highest occupied molecular orbit, HOMO) হতে উচ্চতর শক্তির নিম্নতর অনধিকৃত অরবিটালে (Lowest unoccupied molecular orbital, LUMO) তে প্রবেশ করে । এক্ষেত্রে সাধারণত 4টি ইলেকট্রনীয় স্থানান্তর দেখা যায় ।

 

 

এ স্থানান্তরের ক্রম হলো n → 𝜋* < 𝜋 → 𝜋* < n → 𝜎* < 𝜎 → 𝜎* । এ স্থানান্তরের ইলেকট্রন একটি নির্দিষ্ট তরঙ্গ দৈর্ঘ্যের রশ্মি শোষণ করে । UV-visible বর্ণালীর ক্ষেত্রে  𝜎 → 𝜎* স্থানান্তর কম হয় কারণ সিগমা বন্ধন নিউক্লিয়াস কর্তৃক অধিক আকৃষ্ট হয় ফলে 𝜎- বন্ধন ইলেকট্রন 190 nm হতে 800 nm তরঙ্গ দৈর্ঘ্যের রশ্মির দ্বারা উত্তেজিত হয় না ।

UV-visible রশ্মির কোন তরঙ্গ দৈর্ঘ্যের অণু কর্তৃক শোষিত হবে তা নির্ভর করে অণুর ইলেকট্রনীয় কাঠামোর উপর যে সব অণুর ইলেকট্রনের স্থানান্তরের জন্য অধিক শক্তির প্রয়োজন তারা কম তরঙ্গ দৈর্ঘ্যের রশ্মি শোষণ করে । কনজুগেটেড বা একান্তর দ্বি-বন্ধন যুক্তযৌগে 𝜋 → 𝜋* ইলেকট্রন স্থানান্তরের সময় একান্তরের জন্য রশ্মির শোষণ মাত্রা কম হয় । ফলে কোন জৈব যৌগে যত বেশি কনজুগেশন থাকে সেই যৌগের অধিশোষণে তত বেশি হয় এবং সেই যৌগ তত বেশি দৃশ্যমান বর্ণালির দিকে স্থানান্তরিত হয় ।

প্রয়োগঃ

১. UV-visible বৰ্ণালী প্রধানত কোন নমুনায় যৌগের ঘনমাত্রা নির্ণয়ে ব্যবহৃত হয় ।

২. যৌগে কার্যকরী গ্রুপের উপস্থিতি নির্ণয়ে ব্যবহৃত হয় ।

৩. জৈব ও অজৈব যৌগের পরিমাণগত বিশ্লেষণে ব্যবহৃত হয় ।

৪. জৈব যৌগের শনাক্তকরণ ও কাঠামোগত বিশ্লেষণে ব্যবহৃত হয় ।