একাদশ- দ্বাদশ শ্রেণি - জীববিজ্ঞান - জীববিজ্ঞান প্রথম পত্র | NCTB BOOK

জিনোম সিকোয়েন্সিং

একটি জীবকোষে অবস্থিত জিন সমষ্টিকে একত্রে জিনোম বলা হয়। একটি জীবের জিনোমকে ঐ জীবের ‘মাস্টার ব্লুপ্রিন্ট' বলা হয়। DNA অণুর অনুৈেদর্ঘ্যে ATGC বেসগুলো কোনো অনুক্রমে (কোনোটির পর কোনোটি) সজ্জিত থাকে তা হলো জিনোম সিকোয়েন্স, আর এই সিকোয়েন্সটি (সাজান পদ্ধতিটি) উদঘাটন করাই হলো জিনোম সিকোয়েন্সিং বা DNA সিকোয়েন্সিং। জিনোমসিকোয়েন্সিং-এর প্রবর্তক হলেন Dr. F. Sanger.

পাটের জীবনরহস্য উন্মোচন বা জিনোম সিকোয়েন্সিং : বাংলাদেশি বিজ্ঞানী ড. মাকসুদ আলম ও তাঁর সহযোগীরা তোষা পাটের(Corchorus olitorius) জিনোম সিকোয়েন্সিং তথা পাটের জীবনরহস্য উন্মোচন করেছেন। পাটের বেস পেয়ার ১২০ কোটি। এরা কোন অনুক্রমে সজ্জিত আছে তা জানা হয়েছে। বিজ্ঞানীদের ধারণা জিনোম সিকোয়েন্সিং জানার ফলে এখন উদ্ভাবন করা সম্ভব। হবে মিহি আঁশের পার্ট, শীতকালীন পাট, সহজে পচনযোগ্য পাট, পোকা প্রতিরোধক পাট, ওষুধী পাট, তুলার মতো শক্ত আঁশের পাট ইত্যাদি।

ফসল উদ্ভিদে রোগ সৃষ্টিকারী ভাইরাসের জিনোম সিকোয়েন্সিং : মুগডাল বাংলাদেশের একটি অন্যতম ডাল উৎপাদনকারী উদ্ভিদ। কিন্তু হলুদ মোজাইক ভাইরোসের আক্রমণে এই ফসলের উৎপাদন অধিকাংশ হ্রাস পায়। তাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ নূরুল ইসলাম ও গবেষণা সহযোগী দল বাংলাদেশের মুগের হলুদ রোগ উাদনকারী ভাইরাসের জিনোম সিকোয়েন্সিং করেন এবং RNAi পদ্ধতি ব্যবহার করে হলুদ মোজাইক ভাইরাস প্রতিরোধী জাত উদ্ভাবনের গবেষণা করছেন। তাঁর দল ICGEB-এর আর্থিক সহায়তায় টমোটোর পাতা কোকড়ানো রোগ সৃষ্টিকারী ToLCV ভাইরাসের জিনোম সিকোয়েন্সিং সম্পন্ন করেছেন।

জিনোম সিকোয়েন্সিং প্রয়োগঃ

১। যে কোনো প্রকৃতির জীব থেকে নিবেশষ কোনো জিনকে শনাক্ত করা এবং পরবর্তীতে পৃথক করা; যেমন- মানুষের ইনসুলিন উৎপাদনকারী জিন। এটি ১১ নং ক্রোমোসোমের খাটো বাহুর DNA-এর শীর্ষে অবস্থিত। 

২। উদ্ভিদের রোগপ্রতিরোধ বা প্রতিকূল পরিবেশে বেঁচে থাকার জন্য উপযোগী জিন অনুসন্ধান করা; যেমন- Bt toxin জিন CryIAC এবং লবণাক্ততা সহিষ্ণু জিন PDH. 45. 

৩। উদ্ভিদের মান উন্নয়নের জন্য উন্নত বৈশিষ্ট্য সম্পন্ন জিন অনুসন্ধান যেমন- গোল্ডেন রাইস এর বিটা-ক্যারোটিন জিন। 

৪। উদ্ভিদ বা অণুজীবের মৌলিক গবেষণা কার্যকমে প্রয়োগ; যেমন— ধান, পাট, ভূট্টা ইত্যাদি ফসলের জিনোম সিকোয়েন্সিং তথ্য । 

৫। মানব জিনোম সিকোয়েন্সিং দ্বারা মানব জিনোমের অনেক তথ্যই এখন উন্মোচিত হয়েছে, যেমন— ইনস্যুলিন জিন-এর প্রয়োগ।

Content added By
১ বিলিয়ন
১২০ কোটি
১ মিলিয়ন
৫০ কোটি
ড ফারুক হোসেন
ড মাক্সুদুল আলম
ড মাহফুজ রহমান
ড ফেরদৌসী কাদরী