একাদশ- দ্বাদশ শ্রেণি - জীববিজ্ঞান - জীববিজ্ঞান প্রথম পত্র | NCTB BOOK

ছত্রাকের জননঃ জননের ভিত্তিতে ছত্রাককে দুটি ভাগে ভাগ করা যায়, যথা-হলোকার্পিক (holocarpic) ও ইউকার্পিক (eucarpic) ছত্রাক। ছত্রাকের সমগ্র দেহ জনন অঙ্গে পরিণত হলে তাদেরকে হলোকর্পিক ছত্রাক বলে। যেমন-Synchytrium হ পরপক্ষে, অধিকাংশ ছত্রাকের সমগ্র দেহ জনন অঙ্গে পরিণত না হয়ে একাংশ জনন অঙ্গে পরিণত হয়। এবং অবশিষ্ট
অংশ অঙ্গজ দেহ হিসেবেই থেকে যায়, এদেরকে ইউকার্পিক ছত্রাক বলে, যেমন-Sapregnia।

ছত্রাকে তিন ধরনের জনন দেখা যায়- অঙ্গজ, অযৌন ও যৌন। নিচে এদের সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দেয়া হলো ।

১.অঙ্গজ জননঃ নিচেবর্ণিত পদ্ধতিতে ছত্রাকের অঙ্গজ জনন সম্পন্ন হয়।

ক.খণ্ডায়ন (Fragmentation): এ প্রক্রিয়ায় ছত্রাকের মাইসেলিয়াম খণ্ডিত হয়ে দুই বা ততোধিক অংশে পরিণত হয় এবং উপযুক্ত পরিবেশে প্রতিটি অংশ এক একটি নতুন মাইসেলিয়াম গঠন করে। যেমন- Penicillium,Rhizopus.

খ.মুকুলোদগম (Budding): এসময় মাতৃকোষের প্রাচীরের যেকোন স্থানে স্ফীত হয়ে মুকুল উৎপন্ন করে। নিউক্লিয়াসটি বিভক্ত হয়ে দুটি অপত্য নিউক্লিয়াস গঠন করে। কিছু সাইটোপ্লাজমসহ অপত্য নিউক্লিয়াস দুটির একটি মুকুলের মধ্যে স্থানান্তরিত হয়। মুকুলগুলো মাতৃদেহকোষ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে নতুন ছত্রাক গঠন করে Saccharomyces বা ঈস্ট ছত্রাকে এরূপ দেখা যায়।

গ.বিভাজনঃ দ্বিভাজন এককোষী ছত্রাকে দেখা যায়। এক্ষেত্রে অঙ্গজ কোষদেহটি সংকোচনের ফলে বা গ্রন্থপ্রাচীর গঠনের MAT মাধ্যমে দুটি অপত্য কোষে বিভক্ত হয়ে যায়। উদাহরণ- Saccharomyces

২.অযৌন জননঃ
একই প্রকার বা বিভিন্ন প্রকার বিশেষ ধরনের কোষ অর্থাৎ স্পোর-এর সাহায্যে ছত্রাকের অযৌন জনন সম্পন্ন হয়। স্পোরগুলো বিভিন্ন নামে পরিচিত হয়। যেমন-

ক.স্পোরাঞ্জিওস্পোরঃ অনেক ছত্রাক থলির মতো স্পোরাঞ্জিয়ামের মধ্যে স্পোর সৃষ্টির মাধ্যমে বংশ বৃদ্ধি করে। এরূপ স্পোরকে স্পোরাঞ্জিওম্পোর বলে স্পোরাঞ্জিওস্পোর দুই ধরনের-

•জুস্পোরঃ স্পোরাঞ্জিয়ামের মধ্যে ফ্ল্যাজেলাযুক্ত সচল স্পোর উৎপন্ন হলে এদেরকে জুম্পোর বলা হয় ছত্রাকে এ ধরনের জুস্পোর সৃষ্টি হয়। যেমন- Phythium. Saprolegnia.

•অ্যাপ্লানোস্পোরঃ স্পোরাঞ্জিয়ামের মধ্যে ফ্ল্যাজেলাবিহীন নিশ্চল স্পোর উৎপন্ন হলে এদেরকে (অ্যাপ্লানোস্পোর বলে) যেমন- Mucor Rhizopus, ইত্যাদি।

খ.কনিডিয়া (Conidia): (হাইফার অগ্রভাগে ব... MAT পার্শ্বে উৎপন্ন নগ্নম্পোরকে কনিডিয়া বলা হয় উন্নত জাতের ছত্রাকে এ ধরনের কনিডিয়া সৃষ্টি হয়। যেমন- Penicillum, Alternaria, Aspergillus ইত্যাদি।


৩.যৌন জননঃ যৌন জনন অন্যান্য জীবের মতো ছত্রাকের যৌন জননের সময় দুটি সুসঙ্গত (compatible) অর্থাৎ পরস্পরের সাথে মিলনে সক্ষম এমন দুটি হ্যাপ্লয়েড নিউক্লিয়াসের (n) মিলন এবং ঐরূপ মিলনের ফলে একটি ডিপ্লয়েড জাইগোট-নিউক্লিয়াসের (2n) উৎপত্তি ঘটে। সাধারণভাবে ছত্রাকের জন্য অঙ্গকে গ্যামেট্যাঞ্জিয়া (gametangia) বলে। যৌন জননে নিম্নলিখিত তিনটি স্বতন্ত্র দশা বা ধাপ দেখা যায়।

ক.প্লাজমোগ্যামিঃ প্রথমে দুটি গ্যামেটের সাইটোপ্লাজমের মিশ্রণ ঘটে এবং নিউক্লিয়াস দুটি কাছাকাছি উদ্ভূত কোষটিকে ডায়কেরিয়ন (n +n) বলে।

খ.ক্যারিওগ্যামিঃ অনুন্নত ছত্রাকে প্লাজমোগ্যামির পরপরই দুটি নিউক্লয়াসের মিলন বা ক্যারিওগ্যামি ঘটে এবং ডিপ্লয়েড (2n) জাইগোট সৃষ্টি হয়। কিছু উন্নত ছত্রাকে ডাইকেরিয়নের নিউক্লিয়াস দুটি বার বার বিভাজিত হয়ে ডায়কেরিয়টিক মাইসেলিয়াম (n +n) সৃষ্টি হয় এবং পরবর্তীতে সুবিধাজনক সময়ে ক্যারিওগ্যামি ঘটে।

গ.মিয়োসিসঃ ক্যারিওগ্যামির ফলে সৃষ্ট জাইগোটে সাথে সাথে বা কিছুকাল বিশ্রামের পর মিয়োসিস ঘটে এবং পুনরায় জীবন চক্রের হ্যাপ্লয়েড (n) অবস্থায় ফিরে আসে। ছত্রাকের যৌনজনন তিনটি প্রক্রিয়ায় ঘটতে পারে-

•আইসোগ্যামিঃ এক্ষেত্রে দুটি গ্যামেট আকার আকৃতিগতভাবে একই রকম; যেমন- ঈস্ট
Synchytrium ইত্যাদি।

•অ্যানআইসোগ্যামিঃ এক্ষেত্রে দুটি ভিন্ন আকার-আকৃতির সচল গ্যামেটের মিলন ঘটে। ছত্রাকে। অ্যানআইসোগ্যামি খুবই কম। উদাহরণ- Allomyces.

•উগ্যামিঃ এ ক্ষেত্রে দুটি গ্যামেট্যাঞ্জিয়া (অ্যান্থেরিডিয়াম এবং উগোনিয়াম) এর সংস্পর্শ ঘটে। নিষেক নালির মাধ্যমে শুক্রাণু উগোনিয়ামে প্রবেশ করে এবং ডিম্বাণুর সাথে মিলিত হয়ে জাইগোট সৃষ্টি করে ।

Content added By
যথাক্রমে প্লোটোগেমেটিক কপুলেশন ও স্পারমাটাইজেশন
যথাক্রমে স্পারমাটাইজেশন ও প্লোটোগেমেটিক কপুলেশন
যথাক্রমে গ্যামেটেনজিয়াল কপুলেশন ও কনজুগেশন
যথাক্রমে কনজুগেশন ও গ্যামেটেনজিয়াল কপুলেশন