একাদশ- দ্বাদশ শ্রেণি - জীববিজ্ঞান - জীববিজ্ঞান প্রথম পত্র | NCTB BOOK

এনজাইমের শ্রেণিবিন্যাস

উদ্ভিদ ও প্রাণিদেহে এনজাইমের সংখ্যা অনেক। অদ্যাবধি সহস্রাধিক এনজাইম শনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে। গঠন প্রকৃতি ও কী ধরনের বিক্রিয়াকে প্রভাবিত করে তার উপর ভিত্তি করে এনজাইমকে শ্রেণিবিন্যাস করা যায়।

ক. গঠন প্রকৃতির উপর ভিত্তি করে শ্রেণিবিন্যাস

সরল এনজাইম : যে এনজাইমের সম্পূর্ণ অংশই শুধু প্রোটিন দিয়ে গঠিত তাকে সরল এনজাইম বলা হয় যেমন-সুক্রেজ, পেপসিন ইত্যাদি।

যৌগিক এনজাইম: যে এনজাইমের প্রোটিন অংশের সাথে একটি অপ্রোটিন অংশ সংযুক্ত থাকে তাকে যৌগিক এনজাইম বলে এঁদেরকে হলো এনজাইম বলে। এদের দুটি অংশ থাকে- একটি প্রোটিন অংশ অপরটি অপ্রোটিন অংশ যেমন-FAD. NAD.

খ. কী ধরনের বিক্রিয়াকে প্রভাবিত করে তার উপর ভিত্তি করে শ্রেণিবিন্যাস

১. হাইড্রোলাইটিক এনজাইম বা হাইড্রোলেজ (Hydrolase): এ ধরনের এনজাইম সাবস্ট্রেট অণুর একটি বিশেষ বন্ধনীতে পানির আয়নকে (H+, OH−) সংযুক্ত করে। ফলে সাবস্ট্রেট অণুর আর্দ্রবিশ্লেষণ (hydrolysis) ঘটে । সুক্রেজ, এস্টারেজ, লাইপেজ, কার্বহাইড্রেজ, ফসফেটেজ ইত্যাদি হাইড্রোলাইটিক এনজাইমের প্রকৃষ্ট উদাহরণ।

২. অক্সিডোরিডাকটেজ (Oxido-reductase) : এ ধরনের এনজাইম কোন পদার্থের সাথে হাইড্রোজেন, অক্সিজেন কিংবা ইলেকট্রন যোগ করে অথবা কোন পদার্থ থেকে হাইড্রোজেন, অক্সিজেন কিংবা ইলেকট্রন বিতাড়িত করে (অক্সিজেন সংযোগ বা হাইড্রোজন বিয়োজন বা ইলেকট্রন অপসারণকে বলা হয় অক্সিডেশন (Oxidation) বা জারণ) আবার (হাইড্রোজেন সংযোগ বা অক্সিজেন বিয়োজন বা ইলেকট্রন যোগ হলো তাকে বলে রিডাকশন (reduction) বা বিজারণ। যেমন-সাইটোক্রোম অক্সিডেজ, ফসফোগ্লিসারাল্ডিহাইড ডিহাইড্রোজিনেজ ।এখানে NAD বিজারিত হয়ে (হাইড্রোজেন যুক্ত হয়ে) NADH + H+ তে পরিণত হয়েছে এবং ৩-ফসফোগ্লিসারাল্ডিহাইড হাইড্রোজেন হারিয়ে জারিত (oxidized) হয়েছে।

৩. ট্রান্সফারেজ (Transferase) : (যে এনজাইম কোন একটি সাবস্ট্রেট থেকে একটি গ্রুপকে (যেমন-NH2) বিচ্ছিন্ন করে অন্য একটি গ্রুপের সাথে সংযুক্ত করে তাকে ট্রান্সফারেজ এনজাইম বলা হয়।

৪. আইসোমারেজ (Isomerase) যে এনজাইমের কার্যকারিতায় কোন সাবস্ট্রেট থেকে তার আইসোমার উৎপন্ন হয় তাকে আইসোমারেজ এনজাইম বলে।

৫. লাইগেজ (Ligase) : এসব এনজাইম ATP-এর সহায়তায় দুই বা ততোধিক যৌগের মধ্যে বন্ধন সৃষ্টি করে নতুন যৌগ তৈরি করে। যেমন- অ্যাসিটাইল COA সিনথেটেজ, গ্লুটামিন সিনথেটেজ।

৬. লাইয়েজ (Lyase) : (এসব এনজাইম কোন অণুকে আর্দ্রবিশিষ্ট না করেই দুভাগে বিভক্ত হয়ে যায়। যেমন- ফিউমারেজ, কার্বোক্সিলেজ, অ্যালডোলেজ ইত্যাদি।

৭. কার্বক্সিলেজ (Carboxylase) :যে এনজাইম কোন সাবস্ট্রেট থেকে CO2 অণুকে বিচ্ছিন্ন করে অথবা অন্য কোন যৌগের সাথে CO2 অণুকে সংযুক্ত করে তাকে কার্বক্সিলেজ এনজাইম বলা হয়।

৮. এপিমারেজ (Epimerase) : (যে এনজাইমের কার্যকারিতায় কোন শর্করাজাতীয় সাবস্ট্রেটকে তার এপিমার-এ পরিণত করে তাকে এপিমারেজ এনজাইম বলা হয়।

Content added By
কো-এনজাইম
এনজাইম
কো-ফ্যাক্টর
প্রতিরোধক