নবম-দশম শ্রেণি (মাধ্যমিক) - গার্হস্থ্য বিজ্ঞান - NCTB BOOK
Please, contribute to add content into গৃহসম্পদের ব্যবস্থাপনা.
Content
ক) ভারী কাজগুলো আগে করলে
খ) হালকা কাজগুলো আগে করলে
গ) ভারী কাজের পর হালকা কাজ করলে
ঘ) হালকা কাজের পর ভারী কাজ করলে

গৃহ ব্যবস্থাপনায় অর্থকে বস্তুবাচক সম্পদ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। অর্থ বস্তুবাচক সম্পদগুলোর মধ্যে অন্যতম প্রধান। মানবজীবনে অর্থের গুরুত্ব অপরিসীম। মানুষের যে কোনো চাহিদা পূরণ করতে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন হয় অর্থের। অর্থের বিনিময়ে আমরা আমাদের প্রয়োজনীয় দ্রব্যসামগ্রী সেবা সংগ্রহ করি। অর্থকে সুষ্ঠু সঠিকভাবে ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে আমাদের অসীম চাহিদাগুলো সীমিত অর্থ দ্বারা পূরণ করা সম্ভব। অর্থ ব্যবস্থাপনা বলতে বোঝায় লক্ষ্য অর্জন বা চাহিদা পূরণ করতে অর্থকে কীভাবে ব্যবহার করতে হবে। গৃহ ব্যবস্থাপনার পদ্ধতিগুলো অর্থ ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। যেমন-চাহিদা পূরণ করে লক্ষ্য অর্জনের জন্য অর্থ ব্যবহারের পরিকল্পনা, পরিকল্পনাকে বাস্তবায়ন করা এবং সবশেষে মূল্যায়ন করা। পরিবার বিভিন্ন ভাবে আয়ের মাধ্যমে অর্থ উপার্জন করে থাকে। অন্যান্য সম্পদের মতো পরিবারের অর্থসম্পদও সীমিত। যেহেতু অর্থ একমাত্র বিনিময়ের মাধ্যম তাই অর্থ দিয়েই আমাদের সব চাহিদা পূরণের উপকরণগুলো সংগ্রহ করতে হয়। ভবিষ্যতের নিরাপত্তার জন্য আমরা অর্থ সঞ্চয় করতে পারি। মূল্যবান সম্পদকে সুপরিকল্পিতভাবে ব্যয় করতে যে কৌশল অবলম্বন করা হয় তা বাজেট নামে পরিচিত।

বাজেট

বাজেট হচ্ছে অর্থ ব্যয়ের পূর্বপরিকল্পনা। আরও স্পষ্টভাবে বলা যায়, নির্দিষ্ট সময়ে নির্দিষ্ট আয়ের ব্যয় সঞ্চয় করার পূর্বপরিকল্পনা হচ্ছে বাজেট। বাজেটে সম্ভাব্য আয়কে কোন কোন খাতে, কোন কোন সময়ে কী পরিমাণে ব্যয় করা হবে, তার লিখিত বিবরণ থাকে। সুপরিকল্পিতভাবে ব্যয় করলে মূল্যবান অর্থের অপচয় ঘটে না। অধিকন্তু আমাদের সব চাহিদা পূরণ হয়ে থাকে

বাজেটের প্রয়োজনীয়তা

বাজেট অর্থ ব্যয়ের একটি চমৎকার কৌশল। বাজেট সীমিত অর্থে আমাদের সকল চাহিদা পূরণ করতে সাহায্য করে। বাজেটের কয়েকটি উল্লেখযোগ্য প্রয়োজনীয়তা নিম্নে উল্লেখ করা হলো

  • বাজেট পরিবারের আয় ব্যয় সম্বন্ধে ধারণা দেয়।
  • পরিবারের অপচয় রোধ করে স্বচ্ছলতা আনয়নে সাহায্য করে।
  • ভবিষ্যতের জন্য সঞ্চয়ের ব্যবস্থা নিতে সাহায্য করে।
  • গুরুত্বপূর্ণ চাহিদাগুলো অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পূরণ করে
  • বাজেট পরিবারের সদস্যদের মিতব্যয়ী হতে সাহায্য করে।
  • বাজেট করে অর্থ ব্যয় করলে সময় শক্তির সাশ্রয় হয়।
  • বাজেট পরিবারের সদস্যদের সকল চাহিদা পূরণ করে তাদের সন্তুষ্টি দিতে পারে।

বাজেটের খাত

প্রকৃত বাজেট প্রস্তুত করার সময় কোন কোন খাতে অর্থ ব্যয় করতে হবে সেগুলো স্থির করতে হয়। পারিবারিক জীবন যাপনের যেসব ক্ষেত্রে ব্যয় করতে হয়, সেগুলোই বাজেটের খাত হিসেবে পরিচিত। গুরুত্ব অনুযায়ী খাতগুলো সাজিয়ে নিয়ে প্রতিটি খাতের মধ্যে কোন কোন বিষয় অন্তর্ভুক্ত করতে হবে তা নির্ধারণ করতে হবে। খাতগুলো সাজানো হয় পরিবারের প্রয়োজনের গুরুত্ব অনুসারে। জীবনধারণের প্রয়োজনে সাধারণত খাতগুলো নিম্নোক্তভাবে সাজানো থাকে-

খাদ্য

ক) শুকনা বাজার, যেমনচাল, আটা, ডাল, চিনি, চা, সেমাই, বিভিন্ন শুকনা মসলা ইত্যাদি। খ) কাঁচাবাজার, যেমন-মাছ, মাংস, ডিম, দুধ,

শাকসবজি, ফল ইত্যাদি।

বাসস্থান

ক) ভাড়া খ) বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানি, জ্বালানি খরচ ইত্যাদি ।

গ) নিজস্ব বাড়ির ট্যাক্স, মেরামত ও যত্নবাবদ ব্যয় ইত্যাদি।

ক) বস্ত্র ও পোশাক ক্রয় খ) পোশাক তৈরি ও মেরামত গ) বস্ত্র ধৌত ও ইস্ত্রি।

শিক্ষা

ক) স্কুল-কলেজের বেতন

খ) বই, খাতা, কলম, পেনসিল ইত্যাদি।

গ) গৃহশিক্ষকের বেতন।

চিকিৎসা

ক) চিকিৎসকের ফি খ) ওষুধ ও পথ্য

সদস্যদের ব্যক্তিগত কার্যাবলি

ক) ভাতা বা হাত খরচ খ) আমোদ-প্রমোদ ব্যয় ।

অন্যান্য খরচ

ক) মেহমানদারি খ) উপহার ও চাঁদা

গ) যাতায়াত

ঘ) খবরের কাগজ, ম্যাগাজিন ইত্যাদি ।

ঙ) গৃহকর্মীর বেতন।

সঞ্চয়

ক) ভবিষ্যৎ তহবিল

খ) ব্যাংক, ইনসিউরেন্স, প্রাইজবন্ড, সঞ্চয়পত্র ইত্যাদি।

কাজ – ‘প্রকৃত বাজেট সময় ও শক্তির সাশ্রয় করে- তোমার যুক্তিগুলো লিপিবদ্ধ কর। -

Content added || updated By

বাজেট তৈরির কতকগুলো নিয়ম আছে, যা অনুসরণ করে প্রকৃত বাজেট তৈরি করা যায়। প্রতিটি কাজ যেমন নিয়ম মাফিক না করলে কাজগুলো সঠিক ও সুন্দরভাবে করা সম্ভব হয় না, তেমনি বাজেট করার সময় নিয়ম অনুযায়ী না করলে বাজেট যথার্থ এবং কার্যকরী হবে না। বাজেট তৈরি করার নিয়মগুলো নিচে বর্ণিত হলো-

  • বাজেট সাধারণত মাসিক ভিত্তিতে করা হয়। তাই মাসের সম্ভাব্য মোট আয় নির্ধারণ করে নিতে হবে। আয়ের হিসাব করার সময় পরিবারের সব রকম উৎসের দিকে নজর দিতে হবে। যেহেতু অর্থ দিয়ে বাজেট করতে হয়, তাই পরিবারের মোট আর্থিক আয় নির্ণয় করতে হবে।
  • যে সময়ের বাজেট করা হবে সে সময়ে পরিবারের সদস্যদের প্রয়োজনীয় দ্রব্য ও সেবাকর্মের একটি তালিকা নির্ধারণ করতে হবে। প্রয়োজনীয় দ্রব্যগুলোকে প্রধান প্রধান খাতে শ্রেণিভুক্ত করে প্রত্যেক শ্রেণির অন্তর্ভুক্ত অন্যান্য দ্রব্যের নাম উল্লেখ করতে হবে।
  • তালিকাভুক্ত প্রতিটি দ্রব্যের মূল্য নির্ধারণ করার আগে সব জিনিসের বাজারদর সঠিকভাবে জানতে হবে। এরপর সবগুলোর মূল্য একত্রে বাজেটের অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। এক্ষেত্রে পরিবারের সদস্যদের মতামত নেওয়া ভালো। বিভিন্ন সদস্যদের কাছ থেকে দ্রব্যমূল্য সম্পর্কে বিভিন্ন ধরনের তথ্য পাওয়া যেতে পারে। ভালোভাবে না জেনে জিনিসের মূল্য নির্ধারণ করলে বাজেট বাস্তবায়নে অসুবিধার সম্মুখীন হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
  • আনুমানিক আয়ের সাথে ব্যয়ের একটা সমতা রক্ষা করতে হবে। মোট আয় জানার পর সম্ভাব্য ব্যয়ের টাকার পরিমাণের সঙ্গে হিসাব করে দেখতে হবে যেন আয় ও ব্যয়ের মধ্যে সমতা থাকে। ব্যয় যেন কখনোই আয়ের অংক থেকে বেশি না হয়। তবে পারিবারিক আয় বাড়িয়ে অথবা খরচের পরিমাণ কমিয়ে এ অবস্থার মোকাবিলা করা যায় ৷
  • কোন খাতে কতো ব্যয় করা যাবে তা নির্ধারণ করতে হবে। সাধারণত খাদ্য খাতে সবচেয়ে বেশি বরাদ্দ দিতে হয়। মধ্যবিত্ত পরিবারগুলোর বাজেটে খাদ্য খাতে শতকরা ৪০ থেকে ৬০ ভাগ পর্যন্ত বরাদ্দ দেওয়া হয়। পক্ষান্তরে নিম্নবিত্তের বাজেটে এ খাতে আয়ের শতকরা ৮০ ভাগ খরচ হতে পারে। আয় যত বাড়ে শতকরা হারে খাদ্য খাতে ব্যয়ও তত কমে যায়। সাধারণত সর্বনিম্ন বরাদ্দ দেওয়া হয়- সঞ্চয়, চিকিৎসা ইত্যাদি খাতে।
  • পরিশেষে বাজেটটিকে পরীক্ষা করে দেখতে হবে যেন তা বাস্তবায়ন করা যায়। কয়েকটি বিষয় বিবেচনায় রাখলে বাজেটকে বাস্তবমুখী করা যায়। যেমন- প্রত্যেক সদস্যের প্রয়োজনগুলোর দিকে খেয়াল রাখা, জরুরি অবস্থার মোকাবিলা করার জন্য কিছু বাড়তি অর্থ সব সময় হাতে রাখা, দীর্ঘমেয়াদি লক্ষ্যের দিকে খেয়াল রাখা ইত্যাদি।

 

একটি মাসিক বাজেটের নমুনা দেওয়া হলো- পরিবারের মাসিক মোট আয়- ৩০,০০০/- টাকা

সদস্য সংখ্যা-৪ জন।

খাত

১। খাদ্য

ক) শুকনা বাজার

5000/- 1000/-

মোট খরচ (টাকা)

শতকরা হার %

80%

৩০%

খ) কাঁচাবাজার

২। বাসস্থান

ক) ভাড়া

খ) বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানি, জ্বালানি খরচ ইত্যাদি।

৩। ক

ক) বস্ত্র ও পোশাক ক্রয়

খ) পোশাক তৈরি ও মেরামত গ) বস্ত্র ধৌত ও ইস্ত্রি।

৪ ৷ শিক্ষা

ক) স্কুল-কলেজের বেতন

খ) বই, খাতা, কলম, পেনসিল ইত্যাদি।

গ) গৃহশিক্ষকের বেতন

সম্ভাব্য খরচ (টাকা)

১২,০০০/-

1000/- 2000/-

$,000/-

1000/- 800/- 200/-

১,৬০০/-

«.00%

1000/- 500/- 2000/-

3500/-

২০১৮

11.67%

 

৫। চিকিৎসা

800/-

ক) চিকিৎসকের ফি

200/-

600/-

খ) ঔষধ ও পথ্য

2%

৬। সদস্যদের ব্যক্তিগত কার্যাবলি

৩০০/- 800/-

ক) ভাতা বা হাত খরচ

খ) আমোদ-প্রমোদ ব্যয় ।

900/-

৭। অন্যান্য খরচ

800/-

2.33%

ক) মেহমানদারি

800/-

200/-

খ) উপহার ও চাঁদা

২২০০/-

9.00%

গ) যাতায়াত

200/-

1000/-

ঘ) খবরের কাগজ, ম্যাগাজিন ইত্যাদি। ঙ) গৃহকর্মীর বেতন।

800/-

800/-

00,000/-

১.৩৩% ১০০%

৮। সঞ্চয়

800/-

00,000/-

১.৩৩% ১০০%

 

বিঃদ্রঃ বর্তমান সময়ের বাজার মূল্যের আলোকে বাজেটটি শিক্ষক শ্রেণিকক্ষে ব্যাখ্যা করবেন। মন্তব্য উল্লিখিত বাজেটটিতে আয় ও ব্যয়ের পরিমাণ সমান। এ রকম বাজেটকে সুষম বাজেট বলে। যে বাজেটে আয়ের চেয়ে ব্যয় বেশি হয়, তাকে বলে ঘাটতি বাজেট। এ ছাড়া বাজেটে যদি আয়ের চেয়ে ব্যয় কম হয় সেটি হচ্ছে উদ্বৃত্ত বাজেট। উদ্বৃত্ত বাজেট হলো সবচেয়ে ভালো বাজেট। ঘাটতি বাজেট কখনোই কাম্য নয় ৷ কারণ এ রকম বাজেটে ঋণের বোঝা বাড়ে ৷

কাজ – অভিভাবকের সহায়তায় তুমি তোমার পরিবারের মাসিক বাজেট তৈরি কর।

 

Content added By

পারিবারিক মানবীয় সম্পদগুলোর মধ্যে সময় অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ। সময় এমনই এক সম্পদ যা কখনোই থেমে থাকে না বা কারও জন্য অপেক্ষা করে না। সময় সবচেয়ে সীমিত সম্পদ যা কোনো অবস্থাতেই বাড়ানো বা কমানো যায় না। সময় কখনো সঞ্চয় করা যায় না। বরং কোনো না কোনো কাজে একে ব্যবহার করতে হয়। যে ব্যক্তি যত বেশি অর্থবহ কর্মসূচি দিয়ে যথাযথভাবে নিজেকে সময়ের সাথে সম্পৃক্ত করতে পারে জীবনে সেই তত বেশি সফলতা অর্জন করতে পারে। সময়কে যথাযথভাবে ব্যবহার করে মানুষ ব্যক্তিগতভাবে, সামাজিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারে।

 

সময়কে যথাযথভাবে ব্যয় করার জন্য প্রতিটি ব্যক্তিরই দৈনিক ২৪ ঘণ্টা সময়ের একটি পরিকল্পনা করা প্রয়োজন। কোনো দিনের শুরু থেকে আবার নতুন দিন শুরু হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত সময়ে কী কী কাজ করা প্রয়োজন, কখন করা প্রয়োজন এবং দৈনিক নির্ধারিত কাজের জন্য কতোটুকু সময় ব্যয় হবে ইত্যাদি বিবেচনা করে সময় তালিকা বা সময় পরিকল্পনা প্রণয়ন করা হয়। প্রত্যেক মানুষের জীবনে সময় যেমন তার একান্ত নিজস্ব সম্পদ সে রকম সময় তালিকাও প্রত্যেক ব্যক্তির পৃথক হয়ে থাকে। প্রত্যেক ব্যক্তির অভ্যাস, প্রয়োজন, পছন্দ, চাহিদা ইত্যাদির ভিত্তিতে সময় তালিকা তৈরি হয়।

যে কাজগুলো একসাথে করলে সময় বাঁচে, সেভাবে কাজের সমন্বয় করতে হবে

পারিবারিক কাজগুলোকে দৈনিক, সাপ্তাহিক, মাসিক হিসেবে ভাগ করতে হবে। যে সব কাজ

সাপ্তাহিক বা মাসিক, সেগুলোকে দৈনিক সময় তালিকা থেকে পৃথক রাখতে হবে

সময় তালিকায় কাজের সময়, বিশ্রাম, ঘুম ও অবসরের ব্যবস্থা থাকতে হবে

কঠিন কাজের পর হালকা কাজ দিতে হবে। এতে ক্লান্তি দূর হয় এবং পরবর্তী কাজে উৎসাহ পাওয়া যায়

সময় তালিকা নমনীয় হতে হবে। যাতে প্রয়োজনে কিছুটা রদবদল করা যায়

কাজ – সময় তালিকা অনুযায়ী কাজ করলে কী কী সুবিধা হয়, চার্টের মাধ্যমে দেখাও

Content added By

দৈনিক সময় তালিকা অনুসরণ করে কাজ করলে করণীয় সব কাজ সঠিক সময়ে সম্পন্ন হয়ে যায়। ফলে কাজে সফলতার আনন্দে নতুন উদ্যমে আরও কাজ করার ইচ্ছা বেড়ে যায়। ছাত্রজীবনে সময় তালিকা অনুসরণ করলে সফলতা লাভ করা যায়। প্রত্যেকের উচিত মূল্যবান সময় অপচয় না করে সময়ের কাজ সময়ে সম্পন্ন করা

 

একজন স্কুল শিক্ষার্থীর জন্য সময় তালিকার দুইটি নমুনা দেওয়া হলো। তবে ঋতুভেদে এতে সময়ের কিছু তারতম্য হতে পারে। কেননা শীতের দিনে রাত বড় দিন ছোট হয়। এ ছাড়া নামাজ/ধর্মীয় প্রার্থনার সময়ও ঋতুভেদে তফাৎ হয়। তাই ঋতু অনুযায়ী এ সময়গুলো নির্ধারণ করে নিতে হবে। এ ছাড়া বিশেষ প্রয়োজনে সময় তালিকায় কাজের কিছুটা পরিবর্তন আনা যায়। তবে তা আবার অন্য সময়ের কাজের সাথে খাপ খাওয়াতে হয়। ছাত্রজীবন থেকেই সময় তালিকা অনুযায়ী কাজ করার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে।

একজন স্কুল শিক্ষার্থীর জন্য একটি দৈনিক (স্কুল খোলার দিনে)

সময় তালিকার নমুনা

কাজের বিবরণ

সকালে ঘুম থেকে ওঠা

প্রাকৃতিক কাজ সম্পাদন

সময়ের ব্যাপ্তিকাল, থেকে পর্যন্ত

«.00-8.8¢

কাজের জন্য ধার্য সময়

১৫ মিনিট

দাঁত মাজা ও হাতমুখ ধোয়া

প্রাতঃকালীন নিজ ধর্মীয় কাজ করা

5.45-5.55

১০ মিনিট

নিজের বিছানা গোছানো

5.55-6.05

১০ মিনিট

স্কুলের রুটিন দেখে সেদিনকার পড়া ও বই গোছানো

4.00-9.00

9.00-9.00

১ ঘন্টা

নাশতা খাওয়া ও স্কুলের জন্য তৈরি হওয়া

9.30 - 2.00

2.00 - 2.20

২৫ মিনিট

যাওয়া-আসাসহ স্কুলে অবস্থান সময়

স্কুল থেকে ফেরার পর স্কুলের কাপড়

বদলানো ও স্বল্প বিশ্রাম গ্রহণ

৬ ঘণ্টা ৩০ মিনিট

২০ মিনিট

গোসল ও নামাজ/প্রার্থনা

2.20 - 2.35

১৫ মিনিট

 

কাজের বিবরণ

সময়ের ব্যাপ্তিকাল, থেকে- পর্যন্ত

কাজের জন্য ধার্য সময়

দুপুরের খাওয়া

2.35-2.50

১৫ মিনিট

বিশ্রাম গ্রহণ

2.50-8.00

১ ঘণ্টা ১০ মিনিট

স্কুল থেকে দেওয়া বাড়ির কাজ করা

8.00-0.00

১ ঘণ্টা

5.00-5.15

হাতমুখ ধোয়া ও বিকেলের নামাজ/প্রার্থনা

চুল আঁচড়ানো ও পরিপাটি হওয়া

১৫ মিনিট

২৫ মিনিট

5.15-5.80

0.80-4.80

১ ঘণ্টা

মা-বাবা ও ভাইবোনদের কাজে সাহায্য করা ও গল্প করা এবং সবার সাথে কিছু নিয়ে আলোচনা

হাতমুখ ধোয়া ও সন্ধ্যায় নামাজ / প্রার্থনা

4.80-9.00

২০ মিনিট

হালকা নাশতা পরিবেশনে মাকে সাহায্য করা

9.00-9.00

৩০ মিনিট

স্কুলের পড়া তৈরি করা

9.00-6.80

১ ঘণ্টা ১৫ মিনিট

টেলিভিশন দেখা

b.8-3.80

৫৫ মিনিট

১.৪০-১০.00

২০ মিনিট

রাতের খাবার খাওয়া এবং শোয়ার জন্য

বিছানা তৈরি করা

টেলিভিশনে খবর শোনা

১০.০০-১০.১৫

স্কুলের পড়ার বাকি অংশ শেষ করা

10.15 - 11.00

১৫ মিনিট

৪৫ মিনিট

১৫ মিনিট

১১.০০-১১.১৫

হাতমুখ ধোয়া এবং নামাজ/প্রার্থনা শেষ করে ঘুমাতে যাওয়া

ঘুম

11.15 - 5.30

৬ ঘণ্টা ১৫ মিনিট

মোট ২৪ ঘণ্টা

সময় তালিকা

একজন স্কুল শিক্ষার্থীর জন্য বন্ধের দিনের সময় তালিকার নমুনা

সময়ের ব্যাপ্তিকাল, থেকে-পর্যন্ত

কাজের জন্য ধার্য সময়

কাজের বিবরণ

সকালে ঘুম থেকে ওঠা

৫.৩০

5.30- 5.85

১৫ মি.

প্রাকৃতিক কাজ সম্পাদন, দাঁতমাজা ও হাতমুখ ধোয়া

প্রাতঃকালীন নিজ নিজ ধর্মীয় কাজ করা

5.45-5.55

১০ মি.

নিজের বিছানা গোছানো

১০ মি.

মাকে নাশতা তৈরির কাজে সাহায্য করা ও নাশতা খাওয়া

১ ঘণ্টা ১৫ মি.

9.20-b.00

৪৫ মি.

ভাইবোনদের লেখাপড়ায় সাহায্য করা

নিজের সাপ্তাহিক নোংরা কাপড় আলাদা করা ও ধোয়ার জন্য প্রস্তুত করা

১ ঘণ্টা

১ ঘণ্টা

মাকে ঘর গোছানো ও রান্নার কাজে সাহায্য করা

টেলিভিশন দেখা

10.05-11. ৩৫

১ ঘণ্টা ৩০ মি.

11.35-1.05

১ ঘণ্টা ৩০ মি.

৩০ মি. ১ ঘণ্টা

1.35-2.35

নখকাটা, চুল শ্যাম্পু করা, কাপড় ধোয়া ও গোসল করা

নিজে পরিপাটি হওয়া

দুপুরের খাবার খাওয়া, পরিবেশন করা ও টেবিল গোছানোর কাজে মাকে সাহায্য করা ও ধর্মীয় কাজ করা

মা-বাবা, ভাইবোনদের সাথে সময় কাটানো ও বিশ্রাম গ্রহণ

স্কুলের সাপ্তাহিক বাড়ির কাজ তৈরি করা

2.35-3.35

১ ঘণ্টা

২০১৮

3.35-8.35

১ ঘণ্টা

 

হাতমুখ ধুয়ে বিকেলের ধর্মীয় কাজ করা বাইরে বেড়াতে যাওয়া কেনাকাটা করা

8.00-8.00

8.50-6.10

১৫ মি. ১ ঘণ্টা ২০ মি.

হাতমুখ ধোয়া ও ধর্মীয় কাজ করা

২০ মি.

ভাইবোনদের লেখাপড়ায় সাহায্য করা নিজের স্কুলের পড়া তৈরি করা

১ ঘণ্টা ১৫ মি. ১ ঘণ্টা ১৫ মি.

টেলিভিশন দেখা

9.00-9.55

9.55-10. ১৫

৫৫ মি. ২০ মি.

রাতে খাবার খাওয়া ও শোয়ার জন্য বিছানা তৈরি করা

১০.১৫- ১১.00

১১.০০ - ১১.১৫

স্কুলের পড়ার বাকি কাজ শেষ করা

৪৫ মি.

১৫ মি.

হাতমুখ ধুয়ে নামাজ/প্রার্থনা শেষ করা ও ঘুমাতে যাওয়া

11.15 - 5.30

৬ ঘন্টা ১৫ মি.

মোট ২৪ ঘণ্টা

9.80-5.00

ঘুম

কাজ – গ্রীষ্মের ছুটির বন্ধে এক দিনের একটি সময় তালিকা তৈরি কর।

Content added || updated By

অর্থ ও সময়ের মতো শক্তি পরিবারের একটি অন্যতম মৌলিক সম্পদ। মানবীয় এ সম্পদের যথাযথ ব্যবহারের উপর পরিবারের সদস্যদের স্বাস্থ্য ও মানসিক পরিতৃপ্তি নির্ভর করে। অন্যান্য সম্পদের মতো শক্তির সদ্ব্যবহারের প্রতি সকলের যত্নবান হওয়া উচিত। চাহিদা পূরণ করে লক্ষ্য অর্জনের জন্য আমাদের অনেক কাজ করতে হয়। যে কোনো কাজ এমনভাবে করতে হবে যাতে সে কাজে কম শক্তি ব্যবহার হয়। অথবা একই পরিমাণ শক্তি ব্যবহার করে যেন অনেক কাজ করা যায়। তাহলেই আমাদের সীমিত শক্তি দিয়ে আমরা অনেক কাজ করতে পারব। শক্তিকে যথাযথভাবে ব্যবহার না করলে তা ক্ষয় হয়ে যায়। ফলে কাজে অনীহা, ক্লান্তি ও বিরক্তির সৃষ্টি হয়। উন্নত ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে শক্তি ব্যবহার করলে, এর অপচয় রোধ করা যায়। শক্তির যথাযথ ব্যবহারের জন্য কিছু বিষয় বিবেচনা করতে হয়। যেমন- একটি কর্মতালিকা অনুসরণ করে কাজ করতে হবে।

কোন কাজে কেমন শক্তি ব্যবহার করতে হয়, কীভাবে সহজে কাজটা করা যায় সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে।

বয়স, ব্যক্তিগত পছন্দ, আগ্রহ অনুযায়ী পরিবারের সদস্যদের মধ্যে কাজগুলো বণ্টন করে দিতে হবে।

কাজের সময় দুই হাত ব্যবহার করতে হয়। এ ছাড়া সঠিক দেহভঙ্গি বজায় রেখে কাজ করলে শক্তির অপচয় হয় না। যেমন- দাঁড়িয়ে ঘর মুছলে, বসে ঘর মোছার চেয়ে কম শক্তি ব্যয় হয়।

ভারী কাজের পর বিশ্রাম গ্রহণ বা হালকা কাজ করতে হয়।

বিভিন্ন রকম শ্রমলাঘব যন্ত্রপাতির ব্যবহার করে শক্তির খরচ কমানো যায়। যেমন- প্রেসারকুকার, ওয়াশিং মেশিন, ওভেন, বৈদ্যুতিক ইস্ত্রি ইত্যাদি। এ ছাড়া শক্তির সুষ্ঠু ব্যবহারে কিছু কৌশল অবলম্বন করে, সহজে বিভিন্ন কাজ সম্পন্ন করা যায় ৷ গৃহ ব্যবস্থাপনায় এ রকম কৌশলগুলো কাজ সহজকরণ পদ্ধতি হিসেবে পরিচিত। কাজ সহজকরণ পদ্ধতিতেগার্হস্থ্য বিজ্ঞান

শক্তির সুষ্ঠু ব্যবহারের প্রয়োজনীয় কৌশলগুলো নিম্নরূপ-

দেহের সঠিক অবস্থান ও সঠিক গতি রক্ষা করে কাজ করা শক্তির সুষ্ঠু ব্যবহারের জন্য কর্মকেন্দ্রের পরিসর এমন হওয়া উচিত, যাতে দেহের অবস্থান এবং দেহভঙ্গি ঠিক রেখে কাজ করা যায়। কাজের সরঞ্জামগুলো হাতের নাগালের মধ্যে থাকলে শক্তির সাশ্রয় হয়।

কাজের সঠিক স্থান ও সঠিক সরঞ্জামের ব্যবহার- কাজের জন্য নির্ধারিত স্থানে কাজ করলে, কম শক্তি খরচ করে কাজ করা যায়। যেমন-খাবার ঘরে খাওয়ার কাজ সম্পন্ন করা, ধোয়ার স্থানে ধোয়া ইত্যাদি ব্যবস্থাগুলো সুবিধাজনক। প্রয়োজনীয় সরঞ্জামগুলো কাজের স্থানে থাকলে অযথা হাঁটাহাঁটিতে শক্তির অপচয় হয় না। কাজের উপযোগী সঠিক সরঞ্জামও শক্তির সাশ্রয় করে। যেমন- ঘর মোছার জন্য কাপড়ের পরিবর্তে মপ ব্যবহার আরামদায়ক।

সঠিক পদ্ধতিতে কাজ করা- সব কাজের সুনির্দিষ্ট কিছু নিয়ম আছে, তা অনুসরণ করে কাজ করলে শক্তির সাশ্রয় হয়। যেমন-অনেক কাপড় আলাদা আলাদাভাবে না ধুয়ে সবগুলো একসাথে সাবান পানিতে ভিজিয়ে রেখে, একত্রে ধুয়ে শুকাতে দিলে কাজ সহজ হয় ও শক্তি বাঁচে।

ব্যবহৃত সামগ্রী পরিবর্তন করা- বিভিন্ন কাজে ব্যবহৃত সামগ্রীর পরিবর্তন করেও শক্তির সাশ্রয় করা যায় । যেমন-খাবার টেবিলে কাপড়ের টেবিল ক্লথ ব্যবহার না করে প্লাস্টিকের টেবিল ক্লথ ব্যবহার করলে শক্তির অপচয় কম হয়।

উৎপাদিত সামগ্রীর মান পরিবর্তন করা উৎপাদিত সামগ্রীর মান পরিবর্তন করেও শক্তি বাঁচানো যায়। যেমনসালাদ বানাতে শসা, টমেটো কুঁচি করে না কেটে স্লাইস করে কাটা যায়। এতে সময় ও শক্তির সাশ্রয় হয় ।

কাজ – দৈনন্দিন কাজে শক্তির সাশ্রয় করার জন্য তুমি কী কী পদক্ষেপ নিতে পার তা লিখে জানাও

Content added By