নবম-দশম শ্রেণি (মাধ্যমিক) - বাংলাদেশের ইতিহাস ও বিশ্বসভ্যতা - সামরিক শাসন ও স্বাধিকার আন্দোলন (১৯৫৮ - ১৯৬৯) | NCTB BOOK

ঐতিহাসিক আগরতলা মামলা থেকে শেখ মুজিবুর রহমানের মুক্তির পর ঊনসত্তরের গণআন্দোলন নুতন রূপ লাভ করে। ২৩ ফেব্রুয়ারি রেসকোর্স ময়দানে (সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের পক্ষ থেকে শেখ মুজিবকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। প্রায় ১০ লাখ ছাত্র-জনতার এই সংবর্ধনা সমাবেশে শেখ মুজিবুর রহমানকে আনুষ্ঠানিকভাবে ‘বঙ্গবন্ধু' উপাধিতে ভূষিত করা হয়। তদানীন্তন ডাকসুর ভিপি ছাত্রনেতা তোফায়েল আহমেদ এ প্রস্তাব উত্থাপন করেন । ঐ সংবর্ধনা সভায় বঙ্গবন্ধু ছাত্রদের ১১ দফা দাবির প্রতি সমর্থন ব্যক্ত করেন এবং ছয় দফা ও ১১ দফা বাস্তবায়নে প্রতিশ্রুতি দেন।

২৬শে ফেব্রুয়ারি আইয়ুব খানের সাথে বঙ্গবন্ধু গোলটেবিল বৈঠকে ৬ দফা ও ১১ দফার প্রশ্নে অটল থাকেন। এদিকে পশ্চিম পাকিস্তানেও আইয়ুববিরোধী আন্দোলন ব্যাপক আকার ধারণ করে। গোলটেবিল বৈঠকের আলোচনা বার বার ব্যর্থ হতে থাকে। পুরো দেশে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটে। মার্চ মাসে সেনাবাহিনীর গুলিতে ৯০ জন নিহত হয়। অবশেষে ১০ই মার্চের বৈঠকে আইয়ুব খান সংসদীয় পদ্ধতি প্রবর্তন ও প্রাপ্তবয়স্কের ভোটাধিকারের ভিত্তিতে নির্বাচনের কথা ঘোষণা করেন । ২২শে মার্চ আইয়ুব খান পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নর মোনায়েম খানকে অপসারণ করেন। তাতেও গণআন্দোলন থামানো যায়নি। ২৫শে মার্চ আইয়ুব খান সেনাপ্রধান জেনারেল ইয়াহিয়া খানের নিকট ক্ষমতা হস্তান্তর করেন। এভাবে পূর্ব পাকিস্তানে আইয়ুববিরোধী গণঅভ্যুত্থান সফলতা অর্জন করে। ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানে গ্রাম ও শহরের কৃষক ও শ্রমিকদের মাঝে শ্রেণি চেতনার উন্মেষ ঘটে। পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের মধ্যে স্বাধীন রাষ্ট্র গঠনের আকাঙ্খা বৃদ্ধি পায়।

Content added || updated By