নবম-দশম শ্রেণি (মাধ্যমিক) - পদার্থবিজ্ঞান (পুরোনো সংস্করণ) - আধুনিক পদার্থবিজ্ঞান ও ইলেকট্রনিকস(Modern Physics and Electronics) | NCTB BOOK

 উচ্চমাত্রার তেজস্ক্রিয়তা আমাদের শরীরে নানা সমস্যার সৃষ্টি করে। যখন তেজস্ক্রিয়তা নিয়ে গবেষণা শুরু হয় তখন বিজ্ঞানীরা সেটি ভালো করে জানতেন না বলে তারা নিজেরা তেজস্ক্রিয়তার সংস্পর্শে এসে রোগাক্রান্ত হয়েছিলেন। দীর্ঘদিন তেজস্ক্রিয় মৌল নিয়ে কাজ করার কারণে মেরি কুরি লিউকেমিয়াতে মারা যান। তেজস্ক্রিয়তা মানুষের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা কমিয়ে দেয়, এমনকি বংশ পরম্পরায় বিকলাঙ্গ শিশুর জন্ম দিতে পারে। 

আমাদের দৈনন্দিন জীবনে আমরা খুব বেশি তেজস্ক্রিয়তার মুখোমুখি হই না কিন্তু পৃথিবীর নতুন প্রযুক্তির কারণে এখন অনেকেই তেজস্ক্রিয়তার মুখোমুখি হতে শুরু করেছে। নিউক্লিয়ার শক্তি কেন্দ্রে নিউক্লিয়ার বিক্রিয়া করানো হয়, সেখানে ভয়ংকর রকম তেজস্ক্রিয়তা তৈরি হয়। অনেকগুলো বর্জ্য পদার্থের অর্ধায়ু অনেক বেশি এবং লক্ষ বছর পর্যন্ত সেগুলো তেজস্ক্রিয় থাকে। নিউক্লিয়ার শক্তি কেন্দ্রের দুর্ঘটনায় বাইরে তেজস্ক্রিয় পদার্থ ছড়িয়ে পড়ার উদাহরণও আছে। নিউক্লিয়ার শক্তি দিয়ে চালানো জাহাজ, সাবমেরিন দুর্ঘটনাতেও অনেক মানুষ তেজস্ক্রিয়তার মুখোমুখি হয়েছে। সবচেয়ে ভয়ংকর ব্যাপার ঘটেছিল যখন হিরোশিমা এবং নাগাসাকিতে নিউক্লিয়ার বোমা ফেলা হয়েছিল, তখন অসংখ্য মানুষ তেজস্ক্রিয়তার মুখোমুখি হয়েছিল। কাজেই তেজস্ক্রিয়তা নিয়ে নানা ধরনের গবেষণা শুরু হয়েছে এবং নিরাপদ তেজস্ক্রিয়তার মাত্রা ইত্যাদি নির্ধারণ করা শুরু হয়েছে। একই সাথে কোথাও তেজস্ক্রিয় পদার্থ থাকলে সেটি সম্পর্কে সাধারণ মানুষকে সতর্ক করানো শুরু হয়েছে । 

Content added || updated By