নবম-দশম শ্রেণি (মাধ্যমিক) - পদার্থবিজ্ঞান (পুরোনো সংস্করণ) - আলোর প্রতিসরণ (Refraction of Light) | NCTB BOOK

প্রতিসরণের সূত্র বোঝার জন্য যে বিষয়গুলো জানা প্রয়োজন ছিল সেগুলো জানা হয়েছে। প্রতিফলনের বেলায় আমরা আলোক রশ্মি যে বিন্দুতে পড়েছে সেই বিন্দু থেকে একটি লম্ব কল্পনা করে নিয়েছিলাম, এখানেও সেই একই বিষয়টি করতে হবে। 9.01 চিত্রটিতে লম্বের সাথে আপতিত রশ্মিটির কোণকে বলব আপতন কোণ, দ্বিতীয় মাধ্যমে লম্বের সাথে প্রতিসরিত রশ্মির কোণকে বলৰ প্রতিসরণ কোণ। 

চিত্র 9.01: প্রথম মাধ্যম থেকে দ্বিতীয় মাধ্যমে আলোর প্রতিসরণ। 

 

প্রতিসরণের প্রথম সুত্র: আপতন রশ্মি এবং লম্ব দিয়ে আমরা যে সমতলটি কল্পনা করে নিয়েছি প্রতিসরিত রশ্মি সেই একই সমতলে থাকবে। 

প্রতিসরণের দ্বিতীয় সূত্র: প্রথম মাধ্যমের প্রতিসরণাঙ্ক η1 দ্বিতীয় মাধ্যমের প্রতিসরণাঙ্ক η2, আপাতন কোণ θ1, এবং প্রতিসরিত কোণ θ2হলে 

                                            η1sinθ1=η2sinθ2

এই অতি সহজ সূত্রটি মনে রাখলে তুমি প্রতিসরণ-সংক্রান্ত সব সমস্যার সমাধান করে ফেলতে পারবে। 

যদি প্রথম মাধ্যমটি বাতাস হয় তাহলে η1= 1 ধরে লিখতে পারি

                                               η2=sinθ1sinθ2

যেহেতু η2 এর মান 1 থেকে বেশি তাইθ2<θ1 অর্থাৎ প্রতিসরণের পর আলোক রশ্মিটি লম্বের দিকে বেঁকে যাবে। η বেশি হলে আমরা অনেক সময় তাকে ঘন মাধ্যম বলি। মনে রাখতে হবে এখানে মাধ্যমের ভরের কারণে ঘন বলছি না। এটাকে ঘন বলতে বোঝানো হচ্ছে এর η বেশি। কাজেই প্রতিসরণের দ্বিতীয় সূত্র থেকে আমরা বলতে পারি আলো হালকা মাধ্যম থেকে ঘন মাধ্যমে যাবার সময় প্রতিসরিত রশ্মি লম্বের দিকে বেঁকে যাবে। আবার ঘন মাধ্যম থেকে হালকা মাধ্যমে যাবার সময় সেটি লম্ব থেকে দূরে সরে যাবে।(চিত্র 9.02)

প্রতিসরণ নিয়ে আলোচনা করা হচ্ছে বলে এখানে শুধু আপতন রশ্মি এবং প্রতিসরিত রশ্মি আঁকা হয়েছে কিন্তু সবাইকে মনে রাখতে হবে যখনই একটি আলোক রশ্মি এক মাধ্যম থেকে অন্য মাধ্যমে প্রবেশ করে তখন সব সময়ই খানিকটা আলো প্রতিফলিত হয়। দুটো মাধ্যমের মাঝে কতখানি প্রতিফলিত হবে এবং কতখানি প্রতিসরিত হবে সেটা নির্ভর করে আপতন কোণের ওপর। আপতন কোণ বাড়তে থাকলে সব সময়ই প্রতিফলন বাড়তে থাকে। 

Content added By
Content updated By