SATT ACADEMY

New to Satt Academy? Create an account


or

Log in with Google Account

তৃতীয় শ্রেণি (প্রাথমিক স্তর ২০২৪) - বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় - NCTB BOOK

জরুরি পরিস্থিতি মোকাবেলা

১ অগ্নিকাণ্ড

ছবি-১                                                                                                                                               ছবি-২

ক) ছবি দুটি পর্যবেক্ষণ করে নিচের প্রশ্নগুলোর উত্তর দিই-

১) ১নং ছবিতে কী দেখা যাচ্ছে? 

২) ফায়ার ব্রিগেডের লোকজন কী করছে? 

৩) আশপাশের লোকজন কী করছে? 

৪) ২ নং ছবিতে কী দেখা যাচ্ছে?

বাংলাদেশে নানা ধরনের দুর্যোগ ঘটে। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য তিনটি হলো অগ্নিকাণ্ড, বন্যা ও ভূমিকম্প। প্রাকৃতিক কারণ ছাড়াও মানবসৃষ্ট কারণে অনেক সময় দুর্যোগ ঘটে থাকে। দুর্যোগের কারণে জরুরি পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। অগ্নিকাণ্ড একটি ভয়াবহ দুর্যোগ। আমাদের বাংলাদেশে অনেক সময় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। ঘরবাড়ি, শহরের বস্তি, দোকানপাট, কল-কারখানা, গার্মেন্টস এবং যানবাহনে আগুন লেগে দুর্ঘটনা ঘটে। এর ফলে সম্পদের প্রচুর ক্ষতি হয়ে থাকে। অনেক মানুষ তার প্রয়োজনীয় শেষ সম্পদটুকু হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে যায়। অগ্নিকাণ্ডে মানুষ মারাও যায়। তাছাড়া পরিবেশেরও অনেক ক্ষতি হয়।

আগুন লাগার কারণগুলো জেনে নিই-

◊ অপ্রয়োজনে রান্নার চুলা জ্বালিয়ে রাখা 

◊ জ্বলন্ত সিগারেট, বিড়ি, ম্যাচের কাঠি ইত্যাদি নিভিয়ে যথাস্থানে না ফেলা 

◊ আগুন নিয়ে খেলা করা ◊ বাজি পোড়ানো 

◇ মশার কয়েল, মোমবাতি, কুপিবাতি ও খোলা কেরোসিনবাতি ব্যবহারে সতর্ক না থাকা 

◊ ত্রুটিপূর্ণ বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি 

◊ নিয়ম না মেনে বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি ব্যবহার করা 

◊ ত্রুটিপূর্ণ গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবহার করা

অগ্নিকাণ্ড প্রতিরোধে করণীয়- 

◊ রান্নার পর চুলা ভালোভাবে বন্ধ করা 

◊ জ্বলন্ত সিগারেট, বিড়ি, দিয়াশলাইয়ের কাঠি ইত্যাদি ভালোভাবে নিভিয়ে যথাস্থানে ফেলা 

◊ বৈদ্যুতিক ফিটিংসসমূহ নিয়মিত পরীক্ষা করা 

◊ বাসায়, কারখানায় এবং গাড়িতে ব্যবহৃত গ্যাস সিলিন্ডার নিয়মিত পরীক্ষা করা 

◊ বাড়িতে সার্বক্ষণিক অগ্নি নির্বাপণ সামগ্রী প্রস্তুত রাখা 

◇ আগুন নিয়ে খেলাধুলা না করা

আগুন লেগে গেলে করণীয়- 

◊ অগ্নিকাণ্ড থেকে প্রথমে নিজেকে রক্ষা করতে হবে। 

◊ বাড়িতে আগুন লেগে গেলে সাথে সাথে প্রতিবেশীদের সাহায্য চাইতে হবে।

◊ পরনের কাপড়ে আগুন লাগলে দৌড়াদৌড়ি না করে মাটিতে গড়াগড়ি দিতে হবে। দেহের কোনো অংশ পুড়ে গেলে সেখানে প্রচুর পানি ঢালতে হবে এবং যত তাড়াতাড়ি সম্ভব চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। 

◊ ফায়ার সার্ভিসকে টেলিফোন করে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা জানাতে হবে। 

◊ জরুরি সেবার জন্য ৯৯৯ নম্বরে টেলিফোন করতে হবে।

 খ) আমার নিজ বাড়িতে কখনো আগুন লেগে গেলে করণীয় কাজের আলোকে নিচের ছকটি পূরণ করি-

ক্রমিক নংনিজ বাড়িতে আগুন লেগে গেলে করণীয়
১. 
২. 
৩. 
৪. 

গ) আমার শরীরে বা পোশাকে কখনো আগুন লেগে গেলে করণীয় কাজের আলোকে নিচের ছকটি পূরণ করি-

ক্রমিক নংশরীরে বা পোশাকে কখনো আগুন লেগে গেলে করণীয়
১. 
২. 
৩. 
৪. 

ঘ) শ্রেণির সকলে মিলে অগ্নি নির্বাপণ মহড়া পরিচালনা করি- 

২) বন্যা

মমিন বাংলাদেশের একটি গ্রামে থাকে। সে তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী। টেলিভিশনে কয়েকদিন ধরে ভারি বৃষ্টি হতে পারে ঘোষণা করা হয়েছে। পরদিন থেকে টানা এক সপ্তাহ অবিরাম বৃষ্টি হতে থাকল। জমির আধাপাকা ধান, সবজির ক্ষেত, রাস্তাঘাট সবকিছু পানির তলায় ডুবে গেলো। পরিস্থিতি আরও খারাপ দেখে মমিনের বাবা তাড়াহুড়ো করে পরিবার নিয়ে গ্রামের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তিনতলা ভবনে আশ্রয় নিলেন। গ্রামের দক্ষিণ পাশের উঁচু বেড়িবাঁধে দুটি গরু রেখে আসলেন। বাকি গবাদিপশু এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিয়ে আসার আগেই গ্রামের উত্তরের বেড়িবাঁধ ভেঙে গেলো। প্রয়োজনীয় অনেক জিনিসপত্র বন্যার পানিতে ভেসে গেলো। গ্রামের আরও অনেক পরিবার সে বিদ্যালয় ভবনে আশ্রয় নিয়েছে। মমিনরা সেখানে আটকে থাকল। তাদের খাবার এবং পানীয় জলের অভাব দেখা দিলো। গবাদি পশুর খাবারও শেষ হয়ে গেলো। বন্যার দূষিত পানি পান করে বেশ কয়েকজন মানুষ ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হলো। আক্রান্তদের মধ্যে শিশুরাও ছিল। এছাড়া প্রয়োজনীয় ঔষধপত্রও ছিল না।

ক) উপরের কেস স্টাডিটি পড়ে নিচের প্রশ্নগুলোর উত্তর দিই-

(১) মমিনরা আশ্রয়কেন্দ্রে গেলো কেন? 

(২) তারা প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিয়ে যেতে পারল না কেন? 

(৩) মমিনদের কিছু গরু বন্যায় ভেসে গেলো কেন? 

(৪) আশ্রয়কেন্দ্রে খাবারের অভাব দেখা দিলো কেন? 

(৫) আশ্রয়কেন্দ্রে অনেকে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছিল কেন?

প্রতিবছর আমাদের দেশে অনেক এলাকায় ভয়াবহ বন্যা দেখা দেয়। বন্যা একটি প্রাকৃতিক দুর্যোগ। তাই একে সব সময় নিয়ন্ত্রণ করা যায় না। বন্যার ফলে মানবিক বিপর্যয় ঘটে এবং জরুরি পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। আমরা বন্যার ক্ষয়ক্ষতি কমানোর জন্য কিছু প্রস্তুতি নিতে পারি। বন্যার ভয়াবহতা অনুযায়ী প্রয়োজনীয় শুকনো খাবার, খাবার পানি, কাপড়চোপড় ও ঔষধপত্র নিয়ে আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে হবে। গবাদি পশুর প্রয়োজনীয় খাবারসহ বেড়িবাঁধ কিংবা কোনো উঁচু স্থানে রাখতে হবে। পড়ার বই-খাতা ও গুরুত্বপূর্ণ সামগ্রী প্লাস্টিক ব্যাগে ভরে বা নিরাপদে রাখতে হবে।

খ) বন্যার সময় আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে হলে আমার নিজের কী কী জিনিসপত্র সাথে নিব? এ জিনিসপত্র কীভাবে নিব, তা নিচের ছকে লিখি-

ক্রমিক নংজিনিসপত্রনেওয়ার উপায়
১.  
২.  
৩.   

গ) বন্যার সময় মা-বাবাকে কীভাবে সাহায্য করব, তার তালিকা করি-

ক্রমিক নংকাজ করার উপায়
১.  
২.  
৩.  

ঘ) আশ্রয়কেন্দ্রে কী কী করব, আর কী কী করব না, তার তালিকা করি-

ক্রমিক নংযেসব কাজ করবক্রমিক নংযেসব কাজ করব না
১. ১. 
২. ২. 
৩. ৩. 
৪. ৪. 
৫. ৫. 

৩ ভূমিকম্প

ছবি-১                                                                                                                                       ছবি- ২

ক) উপরের ছবি দুটি পর্যবেক্ষণ করে নিচের প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও-

(১) ১ নং ছবিতে কী দেখতে পাচ্ছ? 

(২) এগুলো কীসের ছবি? 

(৩) ২ নং ছবিতে কী দেখতে পাচ্ছ? 

(৪) ছাত্র-ছাত্রীরা কোথায় আশ্রয় নিচ্ছে? কেন?

ভূমিকম্প একটি ভয়াবহ প্রাকৃতিক দুর্যোগ। বাংলাদেশ ভূমিকম্পের ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। কোনো পূর্বাভাস ছাড়াই যে কোনো সময় ভূমিকম্প শুরু হয়। এটি সাধারণত ৩০-৪০ সেকেন্ড স্থায়ী হয়ে থাকে। কোথাও শক্তিশালী ভূমিকম্প হলে সেখানকার অনেক ঘরবাড়ি, দালানকোঠা, রাস্তাঘাট, বিদ্যুৎ, গ্যাস, টেলিফোন লাইন ইত্যাদি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ঘরবাড়ি ধসে পড়ে। ঘরবাড়ির নিচে চাপা পড়ে অনেক মানুষ আহত ও নিহত হয়। তাই ভূমিকম্প থেকে রক্ষা পাবার জন্য বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।

ভূমিকম্প শুরু হলে আতঙ্কিত হয়ে ছুটোছুটি করে ঘর থেকে বের হবার চেষ্টা করা উচিত নয়। এ সময় সিঁড়ি ও লিফট ব্যবহার করা যাবে না। বারান্দা বা ছাদ থেকে লাফ দেওয়া যাবে না। বরং এ সময় শান্ত থাকতে হবে। ভূমিকম্প শুরু হলে শক্ত টেবিল, খাট বা এ জাতীয় আসবাবপত্রের নিচে আশ্রয় নিয়ে নিজেকে রক্ষা করতে হবে। বিছানায় থাকলে বালিশ দিয়ে মাথা ঢেকে রাখতে হবে। পাকা দালানে থাকলে বিমের নিচে দাঁড়াতে হবে।

একটি ভূমিকম্পের কিছুক্ষণ পর সেখানে আবারও ভূমিকম্প হতে পারে। তাই প্রথমবারের ভূমিকম্প থেমে গেলে ঘর থেকে বের হয়ে খোলা জায়গায় আশ্রয় নিতে হবে। বাড়ির বাইরে থাকা অবস্থায় ভূমিকম্প হলে উঁচু ভবন, দেয়াল, গাছ, বিদ্যুতের খুঁটি, বৈদ্যুতিক লাইন থেকে দূরে খোলা স্থানে আশ্রয় নিতে হবে। ভাঙা দেওয়ালের নিচে চাপা পড়লে বেশি নড়াচড়া করা যাবে না। ভূমিকম্প থামলে কোনোভাবে আওয়াজ করে উদ্ধারকারীদের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করতে হবে।

খ) ভূমিকম্পে কী ধরনের ক্ষয়ক্ষতি হতে পারে, তার তালিকা করি-

১.

২.

৩.

৪.

৫.

গ) বাড়িতে ও বিদ্যালয়ে থাকাকালে ভূমিকম্প হলে কী করতে হবে এবং কী করা যাবে না তা নিচের ছকে লিখি-

ক্রমিক নংকী করতে হবেকী করা যাবে না
১.  
২.  
৩.  
৪.  

ঘ) ভূমিকম্প হলে কী করব শ্রেণিকক্ষে তার একটি মহড়া করি। 

Content added By