SATT ACADEMY

New to Satt Academy? Create an account


or
Log in with Google Account

নবম শ্রেণি (মাধ্যমিক ২০২৪) - বাংলা - Bangla - ব্যাকরণ মেনে লিখতে শিখি | NCTB BOOK
Please, contribute to add content into শব্দ.
Content

নির্দেশনা অনুযায়ী বিভিন্ন ধরনের শব্দের প্রয়োগ করো।

 

বিশেষ্য

লোকটি উদার। তাঁর _________________ আমি মুগ্ধ হলাম। 'উদার' শব্দটিকে দ্বিতীয় বাক্যে বিশেষ্য হিসেবে প্রয়োগ করো

তিনি দরিদ্র। কিন্তু ____________________ তাঁকে লোভী করেনি। ('দরিদ্র' শব্দটিকে দ্বিতীয় বাক্যে বিশেষ্য হিসেবে প্রয়োগ করো)

কত বিচিত্র ধরনের পাখি রয়েছে। শুধু পাখি নয়, এই ____________ প্রাণীজগতের সবখানেই লক্ষ করা  যায়। ('বিচিত্র' শব্দটিকে দ্বিতীয় বাক্যে বিশেষ্য হিসেবে প্রয়োগ করো)

 

সর্বনাম

বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করছেন। (এই বাক্যে কর্তা হিসেবে একটি সর্বনাম যোগ করো)

শিক্ষার্থীরা ক্লাসে নিজেদের দলে আলোচনা করছিল। শিক্ষক শিক্ষার্থীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করলেন। (দ্বিতীয় বাক্যে 'শিক্ষার্থীদের' বদলে সর্বনাম বসাও)

বরকত সাহেব সিলেটে বেড়াতে গেছেন। সিলেটে অনেক চা-বাগান আছে। (দ্বিতীয় বাক্যে স্থাননামের বদলে সর্বনাম বসাও)

 

বিশেষণ

মামা কুড়িতে করে ফল নিয়ে এসেছেন। ('ঝুড়ি' ও 'ফল' শব্দের আগে বিশেষণ যোগ করো)

লোকটি সাহায্যের জন্য হাত পাতল। ('লোকটি' শব্দের আগে একাধিক শব্দযুক্ত বিশেষণ যোগ করো)

তাঁর সরলতায় আমি মুগ্ধ হলাম। লোকটি আসলেই ____ । ('সরলতা' শব্দটিকে দ্বিতীয় বাক্যে বিশেষণ হিসেবে প্রয়োগ করো)

 

ক্রিয়া 

তিনি শোকে পাথর হয়ে এসেছেন। (ক্রিয়ার রূপ সংশোধন করো)

সে চেয়ার ছেড়ে ওঠে শিক্ষকের কাছে গেল। (অসমাপিকা ক্রিয়ার রূপ সংশোধন করো)

পাখি আকাশে উড়ে। (সমাপিকা ক্রিয়ার রূপ সংশোধন করো)

 

ক্রিয়াবিশেষণ

ছেলেটি হাঁটছে। (বাক্যটিতে ক্রিয়াবিশেষণ যোগ করো)

বৃষ্টি পড়ছে। (বাক্যটিতে ক্রিয়াবিশেষণ যোগ করো)

তিনি নদীর ধারে হাঁটতেন। (বাক্যটিতে কালবাচক ক্রিয়াবিশেষণ যোগ করো।)

 

অনুসর্গ

মানার _________ নীল আকাশ। (বাক্যে একটি অনুসর্গ বসাও।)

কার ___________ গেলে জানা যাবে? (বাক্যে একটি অনুসর্গ বসাও।)

মন ____________ লেখাপড়া করবে। (বাক্যে একটি অনুসর্গ বসাও।)

 

যোজক

কলা, পাউরুটি কিনে নিয়ে এসো। ('কমা'র বদলে যোজক ব্যবহার করো।)

তাকে আসতে বললাম। সে এলো না। (দ্বিতীয় বাক্যের শুরুতে যোজক যোগ করো।)

বসার সময় নেই। যেতে হচ্ছে। (দ্বিতীয় বাক্যের শুরুতে যোজক যোগ করো।)

 

আবেগ

তুমি তো দারুন লিখেছ (প্রশংসাসূচক আবেগ যোগ করো)

ছেলেটির কী কষ্ট। (করুণাসূচক আবেগ যোগ করো)

অবশ্যই আমি যাব। (সম্মতিসূচক একটি আবেগ যোগ করো।)

Content added By

নিচের বাক্যগুলোতে 'মহিষ' এবং 'টান' শব্দের সঙ্গে যুক্ত অতিরিক্ত শব্দাংশগুলো আলাদা করো।

শব্দ যখন বাক্যে ব্যবহৃত হয়, তখন তার সঙ্গে কিছু শব্দাংশ যুক্ত হয়। শব্দের সঙ্গে যুক্ত এসব শব্দাংশকে লগ্নক বলে।

লগ্নক বিভিন্ন ধরনের হয়ে থাকে, যথা- ১. শব্দবিভক্তি, ২. ক্রিয়াবিভক্তি, ৩. নির্দেশক, ৪. বচন এবং ৫. বলক।

১. শণবিভক্তি: বাক্যের মধ্যে এক শব্দের সঙ্গে আরেক শব্দের সম্পর্ক বোঝাতে কিছু শব্দাংশ যুক্ত হয়, সেগুলোকে শব্দবিভক্তি বলে। যেমন: কে, রে, র, এর, এ, -তে ইত্যাদি। শব্দবিভক্তির প্রয়োগ:

তিনি ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে বাজারে গেছেন।
বাড়ির পিছনে বড়ো ভাইয়ের হাঁসের খামার।
সিলেটে বৃষ্টি বেশি হয়, রাজশাহীতে কম হয়।

২. ক্রিয়াবিভক্তি: যেসব বিভক্তি ক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত থাকে, সেগুলোকে ক্রিয়াবিভক্তি বলে। ক্রিয়াবিভক্তিগুলো ক্রিয়ার কাল ও পক্ষ নির্দেশ করে। যেমন: এ, এন, এছিলে ইত্যাদি। ক্রিয়াবিভক্তির প্রয়োগ:

সে বই পড়ে

তিনি বই পড়েন

তুমি বই পড়েছিলে

৩. নির্দেশক: যেসব লগ্নক শব্দের সঙ্গে যুক্ত হয়ে নির্দিষ্টতা জ্ঞাপন করে, সেগুলোকে নির্দেশক বলে। যেমন: -টা, টি, খানা, খানি, টুকু, জন ইত্যাদি। নির্দেশকের প্রয়োগ:

পুরাতন বাড়িটা ভেঙে পড়ছে।
ঝড়ে পড়া আহত পাখিটি ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠল।
ব্যাপারখানা মন্দ নয়।
মুখখানি কেন ভার করে রেখেছ?
লোকজন একসঙ্গে বসে গল্প করছে।

৪. বচন: যেসব লগ্নক শব্দের সঙ্গে যুক্ত হয়ে একাধিক সংখ্যা বোঝায়, সেগুলোকে বচন বলে। যেমন: গুলো, -রা, গণদের, সব, বৃন্দ ইত্যাদি। বচনের প্রয়োগ:

বইগুলো সরিয়ে রাখো।
ছেলেরা বল খেলছে।
শিক্ষকগণ একজন একজন করে বক্তৃতা করছেন।
প্রধান অতিথি মেয়েদের হাতে বই তুলে দিলেন।
ভাইসব, আগামীকাল বিকাল তিনটায় জনসভা।
দর্শকবৃন্দ নাটকের শেষে করতালি দিলেন।

৫. বলক: যেসব লগ্নক শব্দের সঙ্গে যুক্ত হয়ে শব্দের উপরে বাড়তি জোর তৈরি করে, সেগুলোকে বলক বলে। বহুল ব্যবহৃত বলক:ও, ই। বলকের প্রয়োগ:

সে একটু আগে শরবত খেয়েছে, এখন কফিও যেতে চাচ্ছে।
শিক্ষাই জাতির মেরুদণ্ড।

Content added By

নিচে কাজী আবদুল ওদুদের (১৮৯৪-১৯৭০) একটি প্রবন্ধ দেওয়া হলো। এটি তাঁর 'শাশ্বত বঙ্গ' গ্রন্থ থেকে নেওয়া হয়েছে। কাজী আবদুল ওদুদ 'মুসলিম সাহিত্য সমাজে'র প্রতিষ্ঠাতাদের একজন। তিনি মূলত প্রাবন্ধিক। তাঁর উল্লেখযোগ্য গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে 'বাংলার জাগরণ', 'কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ', 'নজরুল প্রতিভা' ইত্যাদি। তাঁর একটি বিখ্যাত উপন্যাসের নাম 'নদীবক্ষে'।

এই প্রবন্ধ থেকে বিভিন্ন ধরনের লগ্নক শনাক্ত করো এবং প্রদত্ত ছকে লেখো।

সাহিত্য-জগৎ

কাজী আবদুল ওদুদ

সাহিত্য-জগৎ বলে একটা স্বতন্ত্র স্বয়ং-পূর্ণ জগৎ আছে কি? যাঁরা 'শিল্পের জন্য শিল্প'-বাদী তাঁরা সোৎসাহে বলে উঠবেন: নিশ্চয়ই। তাঁদের দলে কৃতী সাহিত্যিকের অভাব নেই, তবু তাঁদের দলে ভিড়তে স্বতই সংকোচ জাগে, বিশেষ করে এই যুগে। মানব-কল্যাণ জীবন-কল্যাণ তত্ত্ব সব শিরোধার্য করেও সাহিত্য-প্রচেষ্টার সামনে দাঁড়িয়ে না বলে যেন উপায় থাকে না যে, সাহিত্য-জগৎ একটা স্বত্য জগত। 

কথাটা মনে পড়ছে কয়েকজন তরুণ বন্ধুর সাহিত্য-প্রচেষ্টা দেখে। বোঝা যাচ্ছে, আন্তরিকতায় তাঁদের ত্রুটি নেই, বাস্তবিকই তাঁরা কিছু একটা করতে চাচ্ছেন বা হতে চাচ্ছেন, আর তাঁদের দৃষ্টিও সাহিত্যের জগতের দিকে। তবু মনে হচ্ছে, যে পথে তাঁরা অগ্রসর হচ্ছেন তা ঠিক সাহিত্যের পথ নয়।

সমসাময়িক রাজনৈতিক সমস্যা, নর-নারীর সমস্যা, সব বিষয়ে তাদের কৌতুহল যথেষ্ট তীব্র, কিন্তু মনে হচ্ছে সেই তীব্রতা এতখানি যে, সেই জন্যই সাহিত্যের সুর তাতে ঠিক লাগছে না। সাহিত্য সমস্ত সমস্যারই আলোচনার ক্ষেত্র হতে পারে, হয়েও এসেছে চিরকাল, এমনকি যখন হয়নি তখনই সাহিত্য স্বাদহীন পানসে হয়ে উঠেছে। কিন্তু সেই আলোচনার একটা বিশিষ্ট ধরন আছে-যেমন নাচের একটা বিশিষ্ট ধরন আছে, তার বাইরে গেলেই তা মাত্র লাফালাফি।

সাহিত্যের সেই ধর্মের একটি নাম মাত্রা-বোধ। সাহিত্য অনুভূতির প্রকাশক্ষেত্র-মাত্র নয়, অনুভূতির সুপ্রকাশ-ক্ষেত্র। সেই সুপ্রকাশের সঙ্গে কৌতূহল এবং স্থৈর্য গাম্ভীর্য এবং ব্যঙ্গ আশ্চর্যভাবে মিশ্রিত। এই সব পরস্পর-বিরোধিতার যেখানে মিলন ঘটেছে, সেখানেই সাহিত্যিক-শ্রী দেখা দিয়েছে। শুধু উৎসুক্য, শুধু গাম্ভীর্য মূল্যহীন নয় কখনো, কিন্তু যত মূল্যবানই হোক সাহিত্যিক-শ্রী থেকে বঞ্চিত।

মনে হতে পারে তাহলে তো সাহিত্যে 'শিল্পের জন্য শিল্প'-বাদীদের মতই সত্য। এক হিসেবে এ কথা মিথ্যা নয়, কিন্তু 'শিল্পের জন্য শিল্প'-বাদে এমন একটা স্বস্তিবোধ রয়েছে, যাকে স্বাভাবিক ভাবা কঠিন। গাছে যে ফুল হয় তা গাছের কান্ড, ডালপালা ও পাতা থেকে স্বতন্ত্র নিশ্চয়ই। কিন্তু স্বতন্ত্র হয়েও তা গাছের অংশ ভিন্ন আর কিছু নয়। সাহিত্যও তেমনি, হাসি-কান্না-সুখ-দুঃখ-বিকার-ব্যর্থতাময় যে জীবন তারই একটি প্রকাশ। সেই বিরাট জীবনের সঙ্গে তার অঙ্গাঙ্গী যোগ নষ্ট হলে, তা হয়ে পড়ে অদ্ভুত এবং অসার। যেমন সত্যিকার ফুলের সঙ্গে তুলনায় কাগজের ফুল অদ্ভুত এবং অসার।

সাহিত্য জীবনের সঙ্গে নিবিড়ভাবে যুক্ত। আবার তার থেকে এক হিসেবে স্বতন্ত্র। এ কথাটা পরস্পরবিরোধী মনে হতে পারে।

ব্যাপারটা বাস্তবিকই বড়ো জটিল। তবে কিছু বোঝা যায় যদি এই কথা মনে রাখা যায়: জীবন থেকে সাহিত্যের জন্ম হলেও তার সঙ্গে সাহিত্যের পার্থক্য এই যে, তা জীবনের মতো অস্থির, অপূর্ণাঙ্গ ও সতত পরিবর্তনশীল নয়। বরং, এই সতত পরিবর্তনশীল জীবনের বুকে সে যেন এক অচঞ্চল স্বপ্ন, তা যত অল্পক্ষণের জন্যেই হোক।

যে পূর্ণাঙ্গতা আমাদের জীবনে নেই, তারই সাধনা করি বা স্বপ্ন দেখি সাহিত্যে। এই পূর্ণাঙ্গতার জন্যেই অবশ্য স্বপ্নের পূর্ণাঙ্গতা, সাহিত্য-জগৎ বাস্তবিকই একটু স্বতন্ত্র জগৎ।

 

শব্দের অর্থ

 

Content added By
Promotion