On This Page
Please, contribute to add content into দ্বিতীয় পত্র (দশম শ্রেণি).
Content

আদিম মানব মানবী লজ্জা নিবারণের জন্য গাছের বাকল-পাতা আচ্ছাদন হিসেবে ব্যবহার করত। বহুপূর্বে শুধু লজ্জা নিবারণের জন্য বস্ত্রের প্রয়োজন হলেও কালের বিবর্তন ও সভ্যতার ক্রমবিকাশের সাথে সাথে মানুষের রুচি ও সৌন্দর্য বোধের কারণে যুগের সাথে তাল মিলিয়ে শরীরে বিভিন্ন অংশের প্রয়োজনে বস্ত্রের চাহিদা তথা বস্ত্রশিল্পের বিকাশ ঘটে । সভ্যতার প্রথম যুগে যে বস্ত্রগুলি দ্বারা পোশাক তৈরি হত, ক্রমে ক্রমে যে বস্তু গুলোর দেখা দিয়েছে প্রভূত পরিবর্তন, কাজেই বস্ত্রের চাহিদার সাথে মিল রেখে আস্তে আস্তে বিভিন্ন আঁশ অর্থাৎ ফাইবার সনাক্ত ও আবিষ্কৃত হয়েছে। আমাদের বস্ত্র প্রযুক্তিগণ যা বিভিন্ন শ্রেণিতে ভাগ করে বিভিন্ন গুণাগুণের কথা বিবেচনা করে মৌসুম ভিত্তিক পোশাক পরিচ্ছদ তৈরি করছে।

ফেব্রিক ম্যানুফ্যাকচারিং ইন্ডাস্ট্রিতে বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় কাপড় তৈরি হয়। যেমন- নিটেড, নন-ওভেন, ওভেন । এই তিনটি প্রক্রিয়ার মধ্যে ওভেন (Woven) কাপড় তৈরির জন্য তাঁতের সাহায্য নেওয়া প্রয়োজন । লুম বিভিন্ন প্রকারের রয়েছে। প্রধানত লুমকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছ। হস্তচালিত লুম ও শক্তিচালিত লুম। পূর্বে হস্তচালিত লুম এর বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে । এখন শক্তিচালিত অর্থাৎ পাওয়ারলুম সম্বন্ধে আলোচনা করা হলো ।

পাওয়ার লুমের সংজ্ঞা (Definition of Power loom) 
যে সমস্ত লুম কোন যান্ত্রিক বা বৈদ্যুতিক শক্তি দ্বারা চালিত হয় তাকে পাওয়ার লুম বলে। আমাদের দেশে হস্তচালিত লুমের পাশাপাশি শক্তিচালিত লুমের বেশ প্রচলন রয়েছে। ইন্ডাষ্ট্রিতে অধিকাংশ লুমই শক্তিচালিত। হস্তচালিত লুমের চেয়ে শক্তিচালিত লুমের গতি বেশি। এই গতির পাশাপাশি উৎপাদনও অনেক বেশি ।

শক্তিচালিত তাঁতের বৈশিষ্ট্য (Features of power loom ) 
০ শক্তিচালিত তাঁত সাধারণত লৌহ ও কাষ্ঠ নির্মিত । 
০ শক্তিচালিত তাঁতে গতি অর্থাৎ পড়েন প্রবেশের সংখ্যা অনেক বেশি। 
০ শক্তিচালিত তাঁতের উৎপাদন অনেক বেশি। 
০ প্রাইমারি ও সেকেন্ডারি গতির পাশাপাশি টারসিয়ারি গতি সংযোজিত হয়ে থাকে । 
০ শক্তিচালিত তাঁতে টারসিয়ারি গতি অটোস্টপ মোশন থাকাতে উৎপাদিত কাপড় ত্রুটিমুক্ত হয়। 
০ হস্তচালিত তাঁতের তুলনায় একসংগে ওয়াপ বিমে অনেক টানা সুতা ও ক্লথ বিমে অনেক টানা জড়ানো সম্ভব। 
০ বৈদ্যুতিক শক্তির সাহায্যে তাঁত চালাবার জন্য বৈদ্যুতিক মোটরের প্রয়োজন হয়। 
০ গতি বেশি থাকার কারণে অত্যধিক শব্দ হয় । 
০ অত্যধিক ঘর্ষণ হয়, ফলে খুচরা যন্ত্রাংশ বেশি ক্ষয় হয় । 
০ একজন তাঁতি একসংগে কয়েকটি তাঁত চালনা করতে পারে। 
০ ওয়েলিং (Oiling) ও গ্রিজিং (Greasing) এর প্রয়োজন হয়। 
০ উৎপাদন দক্ষতা হস্তচালিত তাঁতের তুলনায় অনেক বেশি ।

তাঁতের গতিসমূহ (Motions of Loom ) 
প্রতিটি মেশিনেরই নির্দিষ্ট কিছু গতি থাকে। এসব সুনির্দিষ্ট গতির কারণেই উইভিং মেশিনকে অন্যান্য মেশিন থেকে পার্থক্য করা হয় । উইভিং মেশিন বা তাঁতের গতি প্রধানত তিন প্রকার। যথা- 
১। প্রাথমিক গতি (Primary motion ) 
২। মাধ্যমিক গতি (Secondary motion ) 
৩। তৃতীয় পর্যায়ের গতি (Tertiary motion)

১। প্রাথমিক গতি (Primary motion )
প্রাথমিক গতি হলো যে কোন তাঁতের প্রথম ও প্রধান গতি। এটা বুনন কাজের এমন একটি গতি যার অনুপস্থিতিতে কাপড় বোনা সম্ভব নয়। যেমন- 
ক) ঝাঁপ তোলা (Shedding) 
খ) মাকু মাড়া বা ছোড়া (Picking) 
গ) গাঁতি মারা (Beating)

ক) ঝাঁপ তোলা (Shedding) - 
এ গতির সাহায্যে টানা সুতাকে উপরে ও নিচে দুইভাগে ভাগ করে দুইটি স্তর সৃষ্টি করা হয়। যাতে ঐ স্তর দুইটির মধ্য দিয়ে পড়েন সুতা অথবা পড়েন সুভাসহ মাকু চলাচল করতে পারে। টানা সুভার দুইস্তরের মধ্যবর্তী ফাঁককে সেড বলে । সেডিং দুই ধরনের হয়ে থাকে। যেমন- পজেটিভ শেডিং (Positive Shedding) ও নেগেটিভ সেডিং (Negetive Shedding) |

পজেটিভ সেডিং (Positive Shedding) - 
যে সেডিং এর সময় ঝাপগুলো কোন প্রকার অতিরিক্ত ম্যাকানিজমের সাহায্য ছাড়াই উপরে নিচে উঠানামা করে। ভাকে পজিটিভ শেডিং বলে। এ সেডিং-এ টানা সুতা দুইভাগ হয়ে এক ভাগ উপরে ওঠে এবং একভাগ নিচে নামে।

নেগেটিভ সেডিং (Negative Shedding) - 
এ সেডিং এর সময় ঝাঁপগুলো যান্ত্রিক উপায়ে উপরে উঠানো হয় । কিন্তু কিছু অতিরিক্ত ডিভাইজ বা উৎস যেমন- স্প্রিং, ওজন ইত্যাদির সাহায্যে নিচে নামানো হয় তাকে নেগেটিভ সেডিং বলে। এ সেডিং এ টানা সুতা দুইভাগ হয়ে এক ভাগ নিচ হতে উপরে উঠবে বা উপর হতে নিচে নামবে।

খ) মাকু মাড়া বা ছোড়া (Picking)- 
ডিজাইন অনুযায়ী টানা সুতার সাহায্যে সেড তৈরি হওয়ার পর মাকু বা অন্য কিছুর সাহায্যে সেড এর মধ্য দিয়ে ফেলে যাওয়ার পদ্ধতিকে পিকিং (Picking) বলে। পিকিং দুই প্রকার। যথা- পজেটিভ পিকিং (Positive Picking) ও নেগেটিভ পিকিং (Negative Picking)।

পজিটিভ পিকিং (Positive Picking ) - 
পিকিং কার্য সম্পাদনের সময় পিকিং আর্ম বা পিকার যে মেকানিজমের মাধ্যমে সেডের দিকে স্থানান্তরিত হয় যদি একই মেকানিজমের মাধ্যমে পূর্ববস্থায় ফিরে আসে তাকে পজিটিভ পিকিং বলে।

নেগেটিভ পিকিং (Negative Picking)- পিকিং আর্য বা পিকার যে মেকানিজমের মাধ্যমে সেডের দিকে ধাবিত হয় যদি অন্য কোন পদ্ধতি যেমন- স্প্রিং এর সাহায্যে পূর্ববস্থায় ফিরে আসে তাকে নেগেটিভ পিকিং বলে।

গ) গাঁতি মারা (Beating)- 
সেডের মধ্যে পড়েন সুতা ফেলে রাখার সংগে সংগে শানার সাহায্যে ধাক্কা দিয়ে ফেল অব দি ক্লথ এর সাথে মিশিয়ে ফেলাকে গাতি মারা বলে। কাপড় বুননের শেষ প্রান্তকে ফেল অব দি ক্লথ বলে। গাতি মারা দুইপ্রকার। যথা- একবার গাতি মারা (Single beat up) ও দুইবার গাতি মারা (Double beat-up )

একবার গাতি মারা (Single beat up) 
মাকু এক বাক্স থেকে অন্য বাক্সে যাওয়ার পর যদি একবার বিট আপ হয় তবে তাকে একবার গাতি মারা (Single beat up) বলে ।

দুইবার গাতি মারা (Double beat up)- 
মাকু এক বাক্স থেকে অন্য বাক্সে যাওয়ার পর যদি দুইবার বিট আপ হয় তবে তাকে দুইবার গাতি মারা (Double beat up) বলে ।

২। মাধ্যমিক গতি (Secondary motion ) - 
প্রাথমিক গভির পরই গুরুত্বপূর্ণ গতি হলো মাধ্যমিক গতি। ধারাবাহিক ও নিয়মিতভাবে একটি কাপড় তৈরিতে এর উপস্থিতি খুবই গুরুত্বপূর্ণ । এই মাধ্যমিক গতি আবার দুইভাগে বিভক্ত। যথা- কাপড় জড়ানো গতি (Take-up motion) ও টানা সুতা জড়ানো গতি (Let-off motion)

কাপড় জড়ানো গতি (Take-up motion ) - 
কাপড় বুননের পর যে গতির সাহায্যে তাঁতের ক্লথ বিম সুষম গতিতে জড়ানো হয় তাকে কাপড় জড়ানো গতি বলে । এ গতি আবার দুই প্রকার। যথা- পজিটিভ কাপড় জড়ানো গতি (Positive take-up motion) নেগেটিভ কাপড় জড়ানো গতি (Negetive take-up motion )

পজিটিভ কাপড় জড়ানো গতি (Positive take-up motion ) - 
যে টেক আপ মোশনের জন্য কাপড়ের প্রতিটি পড়েন সুতার মাঝে একটি নির্দিষ্ট ব্যবধান থাকে এবং প্রতি ইঞ্চিতে পড়েন সংখ্যা সমান হয় তাকে পজিটিভ টেক আপ মোশন বলে। এই মোশন কয়েকটি হুইল ও পিনিয়ন এর সমন্বয়ে গঠিত। এতে টেক আপ রোলার ধনাত্মকভাবে (Positive manner) উপযুক্ত ট্রেইন অফ হুইল (Train of wheels) বা অন্য কোন যান্ত্রিক উপায়ে চালিত হয় যাতে কাপড়ে প্রতি একক দৈর্ঘ্যে নির্দিষ্ট সংখ্যক পড়েন সংখ্যা নিশ্চিত হওয়া যায় ।

সাধারণত পজেটিভ টেক আপ দুই শ্রেণির। যথা- 
ক) ইন্টারমিটেন্ট টেক আপ মোশন (Inermitent take-up motion ) 
খ) কন্টিনিউয়াস টেক আপ মোশন (Continuous take-up motion).

এছাড়াও অন্য প্রকার টেক আপ মোশন যেমন- ভার্নিয়ার টেক আপ মোশন (Vernier take-up motion ) ইত্যাদি ।

৫ ঢাকা, ৬ চাকা, ৭ চাকা বিশিষ্ট টেক আপ মোশন আমাদের পরিচিত। মোটা কাপড়ের জন্য ৫ চাকা, মিহি কাপড়ের জন্য ৭ চাকা বিশিষ্ট মোশন ব্যবহার হয়।

নেগেটিভ কাপড় জড়ানো গতি (Negetive take-up motion ) - এই গতির ফলে শানা কাপড়কে ঢিলা করে দেয়। যখন বিট আপ হয় তখন শানা কাপড়কে ধাক্কা দেওয়ার ফলে কাপড় ঢিলা হয়। এই অবস্থায় ওজন লিভার, পল ও রেচেট হুইল কাপড়কে ক্লথ রোলারে জড়ায়। অধিকাংশ নেগেটিভ টেকআপ মোশনে পরিবর্তনশীল ঢাকার (Change wheel) প্রয়োজন হয় না। যে টেক আপ মোশনে প্রতিটি পড়েন সুতার মধ্যে সাধারণত নির্দিষ্ট ব্যবধান থাকে না এবং প্রতি ইঞ্চিতে পড়েনের সংখ্যা অসমান হয় তাকে নেগেটিভ কাপড় জড়ানো গতি (Negeive take-up motion) বলে। কিছু নেগেটিভ টেক আপ মোশন টানা সুতার টান সহযোগে কাজ করে। পক্ষান্তরে অন্যগুলো লুজ রিডের সাথে কাজ করে। মোটা পাড়ের সুতার ক্ষেত্রে অথবা যেখানে পড়েন সুতার ব্যাস অনিয়মিত অথবা প্রতি একক স্থানে পিক সংখ্যা অসমান এইরূপ ক্ষেত্রে নেগেটিভ টেক আপ মোশন ব্যবহার হয় ।

টানা সুতা জড়ানো গতি (Let off motion)- যে মোশনের সাহায্যে টানা বিম হতে প্রয়োজনীয় সুতাকে একটি নির্দিষ্ট হারে উইভিং এরিয়াতে ছেড়ে দেওয়া হয় এবং যার ফলে টানা সুতা ও কাপড়ের মধ্যে একটি সমটান বজায় রাখা হয় তাকে টানা সুতা জড়ানো গতি বলে । লেট অফ মোশন তিন প্রকার। যথা-

• পজিটিভ লেট অফ মোশন 
• সেমি পজিটিভ লেট অফ মোশন
• নেগেটিভ লেট অফ মোশন

৩। তৃতীয় পর্যায়ের গতি (Tertiary motion)- 
তাঁতের প্রাথমিক ও দ্বিতীয় পর্যায়ের গতি ছাড়াও আরও এক ধরনের গতি দেখা যায় যা তৃতীয় পর্যায়ের গতি নামে পরিচিত। প্রকৃতপক্ষে তৃতীয় পর্যায়ের গতি হলো প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ের গতির সমন্বিত রূপ। এ গতি বিভিন্ন প্রকারের হয়ে থাকে। যেমন- 
* ওয়ার্স স্টপ মোশন, 
* ওয়েফট স্টপ মোশন, 
* ব্রেক মোশন, 
* ওয়ার্স প্রোটেক্টর মোশন, 
* টেম্পল মোশন, 
* ওয়েফট মিক্সিং মোশন ইত্যাদি।

Content added || updated By

অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্ন 
১. পাওয়ার লুমের সংজ্ঞা দাও? 
২. সেডিং বলতে কী বুঝায়? 
৩. পিকিং এর সংজ্ঞা দাও? 
৪. বিটিং কি? 
৫. টেক আপ মোশন বলতে কি বুঝায়? 
৬. লেট অফ মোশন তাঁতের কোন দিকে থাকে? 
৭. প্রধানত তাঁতকে কত ভাগে ভাগ করা হয়, লেখ? 
৮. কোন তাঁতে উৎপাদন সবচেয়ে বেশি? 

সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন 
১. শক্তিচালিত তাঁতের বৈশিষ্ট্য লেখ?
২. পাওয়ার লুমের শ্রেণি বিন্যাস কর?
৩. তাঁতের গতি সমূহের শ্রেণি বিন্যাস কর?
৪. টেক আপ মোশনের শ্রেণি বিভাগ উল্লেখ কর?
৫. কয়েকটি টারসিয়ারি মোশনের নাম লেখ?
৬. কি কি প্রক্রিয়ায় কাপড় তৈরি করা হয়? 
৭. তাঁতে ওয়েলিং ও গ্রিজিং করা হয় কেন? 

রচনামূলক প্রশ্ন 
১। তাঁতের গতিসমূহের শ্রেণি বিভাগসহ ব্যাখ্যা কর?
২। টেক আপ মোশন ও লেট অফ মোশনের শ্রেণি বিভাগ কর এবং প্রত্যেক পদ্ধতি সম্বন্ধে আলোচনা কর?

Content added By

সেডিং এর মাধ্যমে টানা সুতাকে উপরে ও নিচে দুইভাগে ভাগ করে দুইটি স্তর সৃষ্টি করা হয় যাতে ঐ স্তর দুইটির মধ্যে দিয়ে পড়েন সুতা অথবা পড়েন সুভাসহ শাটেল চলাচল করতে পারে। সেডিং সাধারণত ট্যাপেট, ভবি ও জ্যাকার্ড ঘুমে দেখা যায়।

পাওয়ার লুমে শাটেল চলাচল ও পড়েন সুতা ছেড়ে রাখার জন্য টানা সুতার দুইস্তরের মধ্যবর্তী ফাঁকাকে শেড বলে । যে মেকানিজমের মাধ্যমে সেড বা সেডিং এর কার্য সমাধা হয় তাকে সেভিং মেকানিজম বলা হয় ।

সেডের প্রকারভেদ (Classification of shed)- সেডিং মেকানিজমের সাহায্যে টানা সুতাকে উপরে নিচে দুইটি স্তর তৈরি করা হয় যাতে ঐ স্তর দুইটির মধ্য দিয়ে মাকু পড়েন সুতাসহ চলাচল করতে পারে। টানার এ দুইস্তরের মধ্যবর্তী ফাঁককে শেড বলে। শেডের আকার বা আকৃতি নির্ভর করে মাকুর আকৃতি, সুভার প্রকৃতি, তাঁতের ধরন ইত্যাদির উপর ।

সুতার অবস্থান অনুযায়ী শেডকে নিম্নলিখিতভাবে ভাগ করা যায়।

ক্লোজ সেড (Close shed) 
এ ক্ষেত্রে সেড তৈরি হওয়ার শুরুতে এক সেট উপরে ও অপর শেষ নিচে চলে যায় এবং প্রতিটি পিক সন্নিবেশ হওয়ার পর টানা সুভা একই সমতলে ফিরে আসে।

বটম ক্লোজ সেদ্ধ (Bottom Close shed) 
এ প্রকার সো এ সেভিং এর সময় দু'পাটি টানা সুতা হতে এক পাটি উপরে উঠে যায় এবং A ও B লাইনের নিচের পাটি সব সময় স্থির থাকে। নিচের পাটির লেবেল স্থির রেখে অন্য পাটি সুতা শুধু নিচ হতে উপরে এবং উপর হতে নিচে নামে। যা চিত্রে দেখানো হলো।

সুবিধা 
টানা সুতা একবার টাইট ও একবার ঢিলা হওয়ার দরুণ কভার ক্লথ তৈরি করা যায় ।

অসুবিধা 
০ এটা পরিবর্তন হতে বেশি সময় লাগে এবং দ্রুতগতির জন্য উপযোগী নয় । 
০ টানা সুতার উপর খুব বড় এবং অসমান টান পড়ে । 
০ অধিক শক্তি ব্যয় হয় এবং ঘর্ষণজনিত ক্ষয় বেশি হয়।

ব্যবহার 
কোন কোন ট্যাপেট, সিঙ্গেল লিফট ডবি ও সিঙ্গেল লিফট জ্যাকার্ডে এই সেড ব্যবহার হয়।

সেন্টার ক্লোজ সেড (Centre close shed)
টানা দুইভাগে বিভক্ত হয়ে উপরের সেড সুতা উপরে উঠে ও নিচের সেড নিচে নেমে সেড তৈরি করলে তাকে সেন্টার ক্লজ সেড বলে । চিত্রে AA' রজ ওয়ার্প লাইন B দ্বারা টানার উপরের সুতা, C দ্বারা নিচের সেড সুতা এবং D ও E তীর চিহ্ন দ্বারা প্রতিটি সুতার উঠানামার দিক নির্দেশ করে।

অসুবিধা 
টানা সুতার অস্থিতিশীল গতির জন্য এটি বটম ক্লজ সেডের চেয়ে নিম্ন মানের।

সুবিধা- 
o যদিও এ প্রকার সেড এ প্রতিটি সুতা নড়াচড়া করে তবুও সুতার উপর টান কম পড়ে । 
০ সেড ওপেনিং টাইম বটম ক্রুজের সময়ের প্রায় অর্ধেক । 
০ মেশিনে বিদ্যুৎ খরচ কম ও টান কমহয়। 
o টান সমান হওয়ার কারণে টানা ছেড়ার সম্ভাবনা কম।

ব্যবহার- 
বিভিন্ন ধরনের ট্যাপেট লুম, সকল সিঙ্গেল লিফট্ জ্যাকার্ড তাঁতে এ ধরনের সেড ব্যবহার হয়।

ওপেন সেড (Open shed ) - 
টানার দুই সেটের সুভাই স্থির লাইন তৈরি করে এবং কোন প্রকার বিরতি ছাড়াই উপরের সেট সুতা নিচে এবং নিচের সেট সুতা উপরে উঠে সেড তৈরি করলে এরূপ সেডকে ওপেন শেড বলে। সুভার লাইনের এরূপ উপরে উঠা ও নিচে নামা পর্যায়ক্রমে হয়ে থাকে।

চিনো A ও B যারা টানার দুইটি স্থির লাইন, C ও D তীর চিহ্ন যারা উঠানামার গতি E যারা ফেন অব দি রু এবং F লিজ রড এর অবস্থান হতে ওপেন সেড দেখানো হলো।

অসুবিধা- 
• সেড লাইন ফিক্স করতে হলে লেভেলিং এ্যাপারেটাস এর সাহায্যে বাঁশগুলো একই সমতলে আনতে হয়। 
• অধিক ঝাঁপ ব্যবহার করলে সুতা ছেড়া বেড়ে যায় এবং সুতা দুর্বল হয়ে পড়ে। 
• টানা সুতা ছিড়ে গেলে জোড়া লাগাতে তাঁতির কষ্ট হয় ।

সুবিধা- 
০ টানায় টান অপেক্ষাকৃত কম । 
০ উচ্চ গতিতেই চলতে সক্ষম। 
০ উপরের সুতা নিচের সুভাকে উঠাতে সাহায্য করে যেহেতু এগুলো পর্যায়ক্রমে চলাচল করে। 
০ বিদ্যুৎ খরচ কম
০ তাঁত বস্ত্রের ক্ষয় কমিয়ে আনে।

ব্যবহার- 
অর্ডিনারি ট্যাপেট, Knowles Dobby এবং কিছু সংখ্যক জ্যাকার্ডে ব্যবহার হয় ।

সেমি ওপেন সেন (Semi open  shed)- 
এ পদ্ধতিতে ক্লোজ এবং ওপেন সেড একত্রে সংঘটিত হয়। এতে স্থির বটমের সুতাগুলো নির্দিষ্ট স্থানে থাকে। কিন্তু উপরের লাইনের সুতাগুলো অল্প নিচে নেমে আসে বা মাঝপথে আটকে যায় এবং পুনরায় উপরে উঠে। চিত্রে বটম লাইন A. স্থির থাকে কিন্তু উপর লাইনের সুতা B হয় বটম C অতিক্রম করবে, না হয় মাঝখানে C এ থেমে আবার উপরে উঠবে ।

ব্যবহার- 
অনেক ডাবল লিফট্ জ্যাকার্ড ও কিছু সংখ্যক ডাবল লিফট ডবিতে ব্যবহার হয়। ট্যাপেট তাঁতে সেমি ওপেন সেড ব্যবহার হয় না।

সুবিধা- 
০ দ্বিতীয় পিকে সব সুতাকে নিচে নামাতে হয় না। ফলে গতি বাড়ানো যায় । 
০ অভ্যন্তরীণ সুতার মধ্যে ঘর্ষণ কম হয় বলে প্রজেকটিং ফাইবার কম ওঠে এবং সুতা ছেড়ার সম্ভাবনা কিছু কম।

অসুবিধা- 
০ ওপেন সেডের মতো টানা সুতার অসম টান থাকে । 
● অযথা নড়াচড়া থেমে যায়।

সেডিং আবার দুই ধরনের হয়ে থাকে- 
১। পজেটিভ সেডিং (Positive Shedding) 
২। নেগেটিভ সেডিং (Negative Shedding) ।

পজেটিভ সেডিং (Positive Shedding)- 
যে সেডিং এর সময় ঝাঁপগুলো কোন প্রকার অতিরিক্ত ম্যাকানিজমের সাহায্য ছাড়াই উপরে নিচে উঠানামা করে। তাকে পজিটিভ সেডিং বলে। এ সেডিং-এ টানা সুতা দুইভাগ হয়ে এক ভাগ উপরে ওঠে এবং একভাগ নিচে নামে।

নেগেটিভ সেডিং (Negative Shedding) - 
যে সেডিং এর সময় ঝাঁপগুলো যান্ত্রিক উপায়ে উপরে উঠানো হয়। এবং কিছু অতিরিক্ত ডিভাইজ বা উৎস যেমন- স্প্রিং, ওজন ইত্যাদির সাহায্যে নিচে নামানো হয় তাকে নেগেটিভ সেডিং বলে। এ সেডিং-এ টানা সুতা দুইভাগ হয়ে এক ভাগ নিচ হতে উপরে উঠবে বা উপর হতে নিচে নামবে ।

উপরোক্ত শ্রেণি বিন্যাস ছাড়াও সেডিং মেকানিজম ৩ প্রকার 
০ ট্যাপেট সেডিং (Tappet shedding) 
০ ডবি সেডিং (Dobby shedding) 
০ জ্যাকার্ড সেডিং (Jacquard shedding

ট্যাপেট সেডিং (Tappet shedding) 
ট্যাপেট এক প্রকার ধাতব পদার্থের তৈরি এবং এটা অন্য বস্তুর সাহায্যে কোন নির্দিষ্ট বস্তুর উপর গতির সৃষ্টি করে । ট্যাপেট সাধারণত ঝাঁপ (Heald) এর উঠানামার জন্য ব্যবহার হয়। পাওয়ার লুমে সাধারণত রড, রোলার অথবা শ্যাফটের উপর ট্যাপেট স্থাপন করা হয় । এই শ্যাফটকে বটম শ্যাফট বা কাউন্টার শ্যাফট বলা হয় ।

ধাতব পদার্থের তৈরি বস্তুবিশেষ যা ঘূর্ণায়মান এন্টি ফ্রিকশন বৌল এর মাধ্যমে জোরে আঘাত করে অন্য বস্তুতে অসম গতির সৃষ্টি করে তাকে ট্যাপেট বলে । ট্যাপেটকে ক্যাম ও ওয়াইপারও বলা হয় ।

যে লুমে এই ট্যাপেট ব্যবহার করে টানা সুতাকে দুই স্তরে ভাগ করে সেডিং এর সৃষ্টি করে সে লুমকে ট্যাপেট লুম বলা হয়।

ট্রেডেলের সাথে যুক্ত এন্ট্রি ফ্রিকশন বৌলকে ট্যাপেটের সাহায্যে সজোরে আঘাত করে ঝাপকে নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে সেড তৈরী করে শাটেল যাতায়াতের ব্যবস্থা করাকে ট্যাপেট সেডিং বলে। ট্যাপেট সেডিং এর জন্য দুইটি থেকে সর্বোচ্চ বারটি ঝাঁপ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব তবে ব্যবহারিক ক্ষেত্রে আটটির বেশি ঝাঁপ ব্যবহার করা হয় না ।

ট্যাপেট সেডিং ম্যাকানিজমের বর্ণনা- 
প্লেইন উইভের ক্ষেত্রে টানা সুতাকে দুইভাগে বিভক্ত করে জোড় সংখ্যক টানা সুতাকে এক সারি ঝাঁপে এবং বেজোড় সংখ্যক টানা সুতাকে অন্য সারির ঝাঁপের ভিতর দিয়ে নেওয়া হয়। ঝাঁপের উপরের প্রান্তকর্ড ও স্ট্যাপ (Strap) এর সাহায্যে টপ রোলারের সাথে যুক্ত এবং ঝাঁপের নিচের প্রাপ্তকর্ড ও রডের সাহায্যে ট্রেডেলের এক পাশের সাথে যুক্ত। ট্রেভেল দুইটির মাঝে দুইটি অ্যান্টিফ্রিকশন রোলার বা বউল আছে এবং ট্রেডেলের অপর প্রাস্তফালক্রাম (Fulcrum ) করা। অ্যান্টিফিকশন রোলার বা বউল দুইটির সংস্পর্শে আছে দুইটি ট্যাপেট। ট্যাপেট দুইটি বটম শ্যাফট থেকে গতি পায় এবং সর্বদা বিপরীত দিকে থাকে ।

কার্যপ্রণালি 
বটম শ্যাফট ঘূর্ণনের ফলে ট্যাপেট দুইটিও ঘুরতে থাকে। ট্যাপেট দুইটি পরস্পর বিপরীতভাবে বসানো থাকায় একটির নাক যখন উপরে থাকবে অপরটির নাক তখন নিচে থাকবে। যে ট্যাপেটের নাক নিচের দিকে থাকবে সে ট্যাপেটটি অ্যান্টি ফ্রিকশন বৌলকে নিচের দিকে চাপ দিবে ফলে ঐ বউলের ট্রেডেল লিভারটি নিচে নামবে এবং রড ও কর্ডের সাহায্যে এর সাথে যুক্ত ঝাঁপটিও নিচে নামবে। যেহেতু ঝাঁপের অপর প্রান্তটপ রোলারের সাথে যুক্ত আছে । সেহেতু এক সারি ঝাঁপ নিচে নামলে অপর সারির ঝাঁপ উপরে উঠবে । এরূপ এক সারি ঝাঁপ উপরে এবং অপর সারি ঝাঁপ নিচে থাকায় একটা সেড তৈরি হয়।

একটা সেড হবার পর দ্বিতীয় সেড হওয়ার জন্য একই নিয়মে নিচের ঝাঁপ উপরে এবং উপরের ঝাঁপ নিচে নামবে। এভাবে পর্যায়ক্রমে এক সারি ঝাঁপ উপরে এবং অন্য সারি ঝাঁপ নিচে উঠানামার মাধ্যমে ঝাঁপগুলির টানা সুতার মাঝে সেড তৈরি হতে থাকে।

ডবি সেডিং (Dobby shedding) -
ডবি একটি সেডিং ডিভাইস যা তাঁতের উপরে এক প্রান্তে স্থাপন করা হয়। যার সাহায্যে ট্যাপেটের তুলনায় অধিক হিল্ড শ্যাফটকে উঠানামা করিয়ে মাঝারি ধরনের ডিজাইন তৈরি করা সম্ভব হয়। ট্যাপেট লুমে যে ধরনের ডিজাইন করা সম্ভব হয় না আবার জ্যাকার্ড লুমেরও প্রয়োজন নেই ঐ সমস্ত ডিজাইনের কাপড় প্রস্তুত করার জন্য ডবি লুমের প্রয়োজন হয়।

হস্তচালিত লুমে ডবি ব্যবহার হয়। এক্ষেত্রে ডৰি দুই প্রকারের হয়। একটি কাঠের তৈরি ও অন্যটি লোহার তৈরি । কাঠের তৈরি বর্তমানে ব্যবহার হয় না বললেই চলে যা দেশি ডবি নামে পরিচিত। আর লোহার তৈরি ডবিকে বিলাতি ডবি বলে । বর্তমানে আমাদের দেশেই এই বিলাতি ডবি তৈরি হচ্ছে।

ডবির সুবিধা ট্যাপেট ও জ্যাকার্ডের মাঝামাঝি যখন ট্যাপেটের সাহায্যে হিল্ড শ্যাফটকে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয় না অর্থাৎ ১২টির উপরে ঝাঁপ লাগে সে ক্ষেত্রে ডবি সেডিং এর সাহায্যে কাপড় তৈরি করা হয় । ডবির সাহায্যে সর্বোচ্চ ৪৮×৪৮ সুতার রিপিটের ডিজাইন করা সম্ভব। তবে ব্যবহারিক ক্ষেত্রে ১৬×১৬, ২০×২০, ২৪×২৪, ও ৩৬×৬ রিপিটের ডিজাইন করা হয়। বাণিজ্যিকভাবে ২০×২০ ও ২৪x২৪ ক্যাপাসিটির ভবি অধিক ব্যবহার হয় ।

ডবির ব্যবহার (Uses of Dobby)- 
০ কটন ইন্ডাস্ট্রিতে সাধারণত ২৪ শ্যাফটের ডবি ব্যবহার হয়। কোন কোন ক্ষেত্রে ১৬ কিংবা ২০ শ্যাফটের ডবি ব্যবহার হয়ে থাকে। 
০ যে সমস্ত বন্ধ শিল্পে ৩৬ শ্যাফটের ডবি আছে তার প্রায় অর্ধেক অংশ সিল্ক ও উলের প্যাটার্ন ডিজাইনের জন্য ব্যবহার হয় । 
o বড় ধরনের টুইল, সাটিন যা ট্যাপেটের সাহায্যে করা সম্ভব হয় না সে সব ডিজাইন ডবির সাহায্যে করা হয়। 
o বিভিন্ন ধরনের অলংকৃত বড় প্যাটার্ন তৈরিতেও ডবি ব্যবহার হয় ।

জ্যাকার্ড সেডিং (Jacquard shedding) 
জ্যাকার্ড একটি সেডিং ডিভাইজ যা লুমের উপরে বসানো থাকে। জ্যাকার্ড এর সাহায্যে হিল্ড শ্যাফট ছাড়া হার্নেস কর্ড, হুক এবং নিডেলের মাধ্যমে অধিক টানা সুতা উঠানামা করিয়ে সেড গঠন করা হয়। ১৮০০ খ্রিষ্টাব্দে জনৈক ফরাসি নাগরিক উইলিয়াম জ্যাকার্ড এই ডিভাইসটি আবিষ্কার করেন বলে তার নামানুসারে ডিভাইসটির নামকরণ জ্যাকার্ড করা হয়েছে। মূলত উক্ত ডিভাইসটি সিঙ্গেল লিফট্ জ্যাকার্ড ছিল কিন্তু কিছুটা আধুনিক সংস্করণ করে ডাবল লিফট করা হয়। বর্তমানে আধুনিক কম্পিউটারাইজড ডাবল লিফট ডাবল সিলিন্ডার জ্যাকার্ড প্রচুর পরিমাণে ব্যবহার হচ্ছে। যে সকল ডিজাইন ডবির সাহায্যে করা সম্ভব হয় না সে সব ডিজাইনের ক্ষেত্রে জ্যাকার্ড ব্যবহার করা হয়। সাধারণত বড় ও জটিল ডিজাইনের ক্ষেত্রে জ্যাকার্ড সেডিং ডিভাইস ব্যবহার করা হয়। ডবির ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ৪৮টি বা ব্যবহারিক ক্ষেত্রে ৩৬টি ঝাঁপ ব্যবহার করা সম্ভব। কিন্তু জ্যাকার্ড এর ক্ষেত্রে ঝাঁপ ব্যবহার না করে টানা সুতাকে হার্নেসের মাধ্যমে উঠানামা করে সেড তৈরি করা সম্ভব। এক্ষেত্রে রিপিটে প্রায় ২০০০ পর্যন্ত টানা সুতা জ্যাকার্ড এর মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। কিন্তু কর্ডের সংখ্যা বেশি হলে এবং জায়গার সঙ্কুলান ও চালনা অসুবিধার জন্য ব্যবহারিক ক্ষেত্রে আরও কম রিপিটের টানা সুতাকে নিয়ন্ত্রণ করা হয়।

জ্যাকার্ডের ব্যবহার (Uses of Jacquard) 
০ খুব বড় ডিজাইন- যা ডবি দ্বারা সম্ভব নয়, এরূপ ক্ষেত্রে জ্যাকার্ড ব্যবহার হয় । 
o হস্তচালিত তাঁতে বিভিন্ন ডিজাইনের কাপড় তৈরির জন্য শুধু কাপড়ের পাড়ের ক্ষেত্রে জ্যাকার্ড ব্যবহার করা হয়। 
o বিভিন্ন ধরনের বড় প্যাটার্ন কাপড়ে ফুটিয়ে তুলতে জ্যাকার্ড ব্যবহার করা হয়।

Content added || updated By

অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্ন 
১. সেডিং মেকানিজম কাকে বলে? 
২. বটম ক্লোজ সেড বলতে কী বুঝায়? 
৩. সেন্টার ক্লজ সেড এর চিত্র অংকন করে দেখাও?
৪. ওপেন সেড এর সংজ্ঞা দাও?
৫. সেমি ওপেন সেড এর ব্যবহার লেখ।?
৬. ডবি সেডিং বলতে কী বুঝায়? 
৭. ডবি লুমে সর্বোচ্চ কয়টি ঝাঁপ ব্যবহার করা যায়? 
৮. সেডিংয়ে মূল কাজ কী? 
৯. মাকুর কাজ কী? 
১০. ক্লোজ সেড এর সংজ্ঞা দাও?

সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন 
১. সেড এর শ্রেণি বিভাগ ছক আকারে দেখাও?
২. ওপেন সেড এর সুবিধা ও অসুবিধা সমূহ লেখ?
৩. ডবির ব্যবহার লেখ?
৪. জ্যাকার্ডের ব্যবহার লেখ?
৫. দুইটি সেডিং মেকানিজমের নাম লেখ?

রচনামূলক প্রশ্ন 
১. সেড এর শ্রেণিবিভাগসহ প্রত্যেক প্রকার সেড-এর বর্ণনা দাও?
২. ট্যাপেট সেডিং মেকানিজম চিত্রসহ বর্ণনা কর?
৩. শক্তিচালিত তাঁত ও হস্তচালিত তাঁতের মধ্যে পার্থক্য লেখ?
৪. ডবি ও জ্যাকার্ড সেডিং মেকানিজমের সুবিধা ও অসুবিধাগুলো লেখ?

Content added By

পিকিং বা পিকিং- মোশন লুমের গতির প্রাইমারি দ্বিতীয় পর্যায়ের গতি। টানা সুতা দুইভাগে বিভক্ত হয়ে শাটল চলাচলের রাস্তা তৈরি করার জন্য সেড গঠনের মাধ্যমে পড়েন সুতাকে কাপড়ের প্রস্থ বরাবর এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত পর্যন্ত নিয়ে যাবার পর পড়েন সুতাকে ফেল অব দ্যা ক্লথের পৃষ্ঠে বিটিং মোশন লাগিয়ে দিয়ে কাপড় তৈরি করায় সাহায্য করে।

আধুনিক লুমসমূহে কোন শাটল ব্যবহার করা হয় না। কিন্তু কনভেনশনাল ও অটোমেটিক লুমে পড়েন সুতা এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে নেওয়ার জন্য শাটেল ব্যবহার করা হয়। পিকিং কার্য সমাধা করার জন্য শাটল, পিকার, পিকিং আর্ম ইত্যাদির সাহায্য নেওয়া হয়।

পিকিং এর সংজ্ঞা (Definition of Picking)- 
ট্যাপেট, ডবি, জ্যাকার্ড বা অন্য কোন পদ্ধতিতে ঝাপকে উঠানো নামানোর মাধ্যমে টানা সুতার সেড তৈরি করে মাকু বা অন্য কোন মাধ্যমে পড়েন সুতাকে সেডের মধ্য দিয়ে তাঁতের একপ্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে নেওয়াকে পিকিং বা মাকু মাড়া বলে ।

পিকিং এর শ্রেণি বিভাগ (Classification of Picking ) - 
পিকিং ম্যাকানিজম প্রধানত দুই প্রকার । 
১। ট্যাপেট এন্ড কোন পিকিং ম্যাকানিজম 
২। বৌল এন্ড শো পিকিং ম্যাকানিজম

১। ট্যাপেট এন্ড কোন পিকিং ম্যাকানিজম- 
এটা দুই প্রকার । 
ক) কোন আন্ডার পিকিং ম্যাকানিজম । 
খ) কোন ওভার পিকিং ম্যাকানিজম।

২। বৌল এন্ড শো পিকিং ম্যাকানিজম- 
এটা দুই প্রকার । 
ক) সাইড শ্যাফট পিকিং ম্যাকানিজম। 
খ) সাইড লিভার পিকিং ম্যাকানিজম ।

পিকিং ম্যাকানিজমের কাজ- 
১. মাকু বা পড়েন বহনকারী অংশকে সঠিক দূরত্বে চালনা করা। 
২. মাকু বা পড়েন বহনকারী অন্য বস্তুকে পূর্ব নির্ধারিত এবং সম গতিতে নিক্ষেপ করা । 
৩. সেডিং ম্যাকানিজম দ্বারা গঠিত ওপেন সেডের মধ্য দিয়ে পড়েন সুতাসহ মাকু এক মাকু বাক্স হতে অন্য মাকু বাক্সে যাতায়াতের জন্য মাকুকে নিক্ষেপ করা।

ওভার পিকিং ও আন্ডার পিকিং এর সংজ্ঞা- 
পিকিং এ্যারেঞ্জমেন্ট (Picking arrangement) মাকু বক্সের লেভেলের উপর থেকে যে পিকিং সম্পন্ন হয় তাকে ওভার পিকিং বলে । হালকা কাপড় তৈরিতে ও দ্রুত গতি সম্পন্ন তাতে ওভার পিকিং ম্যাকানিজম ব্যবহার করা হয় ।

এ পদ্ধতিতে পিকার সরাসরি পিকিং স্টিক এর সাথে যুক্ত থাকে না। একটা চামড়ার ফালি বা বেক্ট দ্বারা গিকারটি পিকিং আর্ম বা স্টিক এর সাথে বাঁধা থাকে।

পিকিং এ্যারেঞ্জমেন্ট অর্থাৎ পিকিং স্টিক পিকার প্রভৃতি মাকু বক্সের নিচে থেকে যে পিকিং সম্পন্ন হয় তাকে আভার পিকিং বলে । এখানে পিকারটি সরাসরি পিকিং স্টিকের সাথে বাঁধা থাকে। মধ্যম ও ভারী কাপড় যেমন- সিঙ্ক বুননে এ ধরনের পিকিং ব্যবহার করা হয়।

ওভার পিকিং এর বর্ণনা- 
ওভার পিকিং ম্যাকানিজমে একটি আর্টিক্যাল পিকিং শ্যাফট থাকে যার নিচের অংশে একটি পিকিং কোন সংযুক্ত থাকে। পিকিং কোণের সংস্পর্শে পিকিং টেগেট থাকে। এ পিকিং টেপেটটি বটম শ্যাফটের উপর বসানো থাকে। ভার্টিক্যাল পিকিং শ্যাফটের উপরের অংশে বিয়ারিং এর মাধ্যমে পিকিং স্টিক বা আর্ম এর সাথে যুক্ত থাকে । পিকিং স্টিকের সাথে পিকিং ট্রাক সংযুক্ত থাকে এবং পিকিং ট্রাপের সাথে পিকার সংযুক্ত থাকে।

কার্যাবলী
বৈদ্যুতিক মটর থেকে বেন্টের মাধ্যমে ক্র্যাংক বা মেশিন বা ড্রাইভিং শ্যাফট গতি পায়। ক্র্যাংক শ্যাফট থেকে স্পার হইলের সাহায্যে বটস শ্যাফট গতি পায়। ফলে বটম শ্যাফটও ঘুরতে থাকে।

বটম শ্যাফটে ট্যাপেট যুক্ত থাকায় সেটিও ঘুরতে থাকে। টেপেট ঘুরতে ঘুরতে এর নোজ Nose) যখন আর্টিকা পিকিং শ্যাফটের সাথে যুক্ত কোশের সংস্পর্শে এসে সজোরে আগাত করে তখন পিকিং স্টিক ও পিকিং সৌগ এবং শিকারের মাধ্যমে মাকুকে সজোরে আদাত করে। ফলে মাকু রেইস বোর্ডের (Race board) উপর নিয়ে দ্রুত সেডে প্রবেশ করে সাল বক্সের একপ্রাপ্ত থেকে অন্য প্রান্তে যায় এভাবে একটি পিকিং কাজ সম্পন্ন হয়। ভাঁজের উত্তর পার্শ্বে এই ধরনের ম্যাকানিজমের ব্যবস্থা থাকে ফলে এভাবে মাকু বাক্সের ডান পাশ থেকে বাম পাশ এবং বাম পাশ থেকে ডান পাশে চলাচলের মাধ্যমে পিকিং কার্য অবিরত চলতে থাকে।

কোন আক্তার পিকিং ম্যাকানিজমের বর্ণনা 
এ ধরনের পিকিং এ বটম শ্যাফটের মধ্যে পিকিং টেপেট বসানো থাকে। সাইফ শ্যাফটের সাথে একটি কোন (Cone) যুক্ত থাকে। সাইড শ্যাফটের দুইদিকে দুইটি বিয়ারিং বা ব্রাকেট থাকে। সাইড শ্যাফটের উপরের প্রাপ্ত পিকিং স্ট্র্যাপ (Picking Strap) এর সাহায্যে পিকিং স্টিকের সাথে যুক্ত থাকে। পিকিং স্টিকের নিচের অংশ আটকানো (Pivot) থাকে। পিকিং সিটকের উপরের দিকে স্পিন্ডেলের উপরে পিকানা থাকে। এ শিকারের কেন্দ্রে যাকে রাখা হয়।

কার্য প্রণালী
যেটির থেকে প্রাপ্ত যোশনের সাহায্যে বটম প্যাফট ঘুরে। ফলে এ বটম শ্যাফটে বসানো টেপেটও ঘুরতে থাকে। টেপেটের মৌজ যখন সাইড শ্যাফটের সাথে যুক্ত কোন এর সংস্পর্শে আসে তখন সেটি চাপ নিয়ে কোনকে নিচের দিকে নামার। ফলে সাইড শ্যাফট এর যে প্রাপ্ত পিকিং ট্যাপ যারা পিকিং স্ট্রিকের সাথে যুক্ত তা সামনের দিকে গতি পায়, ফলে পিকিং স্টিক সামনের দিকে মোশন পায় এবং স্পিকারকে আঘাত করে। পিকার মাকুকে আঘাত করে ফলে মাকু পড়েন সুতাসহ দ্রুত রেইস বোর্ড এর উপর দিয়ে সেড এ প্রবেশ করে এবং পিকিং কার্য সম্পন্ন করে। তাঁতের উভয় পার্শ্বে এই রূপ ম্যাকানিজম সংযুক্ত আছে ফলে এভাবে অবিরত পিকিং ক্রিয়া চলতে থাকে ।

Content added By

অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্ন প্রশ্নমালা 
১. পিকিং বলতে কী বুঝায়? 
২. ওভার পিকিং মোশন কাকে বলে? 
৩. আন্ডার পিকিং মোশনের সংজ্ঞা দাও?
৪. ওভার পিকিং মোশন কোন ধরনের তাঁতে ব্যবহার করা হয়? 
৫. কি ধরনের লুমের ক্ষেত্রে আন্ডার পিকিং মোশন ব্যবহার করা হয়? 

সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন 
১. পিকিং এর শ্রেণি বিভাগ কর?
২. পিকিং মেকানিজমের কাজ কী? 

রচনামূলক প্রশ্ন 
১. চিত্রসহ আন্ডার পিকিং মোশনের বর্ণনা দাও?
২. চিত্রসহ ওভার পিকিং মোশনের বর্ণনা দাও?
৩. ওভার পিকিং ও আন্ডার পিকিং মোশনের মধ্যে পার্থক্য লেখ?

Content added || updated By

বিটিং আপ গতি লুমের প্রাইমারি গতির দ্বিতীয় পর্যায়ের গতি। শাটেল বা অন্য কোন মাধ্যমে পড়েন সুতা সেডের মধ্যে ফেলে যাওয়ার পর স্রে-সহ রিড পড়েন সুতাকে সজোরে ধাক্কা দিয়ে কাপড়ের শেষ প্রান্তে অর্থাৎ ফেল অব দ্যা ক্লথের পৃষ্ঠে মিশিয়ে দেয় যা কাপড় তৈরির কারণ হয়। এরকম গতিই বিট আপ গতি। বিট আপ কার্যে প্লে ক্র্যাংক আর্ম, ক্র্যাংক, রিড ইত্যাদি অংশ গ্রহণ করে।

বিটিং আপ এর সংজ্ঞা- 
যে গতির ফলে শেডের মধ্যে ফেলে যাওয়া পড়েন সুতাকে শানার সাহায্যে সজোরে ধাক্কা দিয়ে কাপড়ের শেষ প্রান্তের (Fell of the cloth) সাথে মিশিয়ে দেয় সে গতিকে বিটিং আপ (Beating up) বলে।

বিটিং আপ এর উদ্দেশ্য (Objectives of Beating up) - 
০ সেড়ে ফেলে যাওয়া পড়েন সুতাকে শানার সাহায্যে ধাক্কা দিয়ে কাপড়ের শেষ প্রান্ত (Fell of the cloth) এর সাথে মিলিয়ে দেয়। 
০ নির্দিষ্ট পরিমাণ পিকস্ পার ইঞ্চি (Picks per inch, PPI) পাওয়ার জন্য কাপড়ের সুতায় সম দূরত্ব বজায় রাখা। 
০ মাকুকে রেইজ বোর্ডের মধ্য দিয়ে চলাচলে সহায়তা করা ।

বিটিং আগ এর বর্ণনা
মটরপুলি থেকে বেল্টের (Belt) মাধ্যমে ক্র্যাংক শ্যাফট বা লুম পুলি শক্তি পায়। ক্র্যাংক শ্যাফট পুলিটি ক্র্যাংক শ্যাফট এর প্রাপ্তের সাথে সংযুক্ত থাকে। শ্লে ক্যাপ (Slay cap) বা রিড ক্যাপটি (Reed cap) স্লে সোর্ড (Slay sword) এর উপরের প্রান্তের সাথে আটকানো থাকে। তাঁতের দুই প্রান্তে দুইটি স্লে সোর্ড আছে যার নিম্ন প্রান্ত রকিং শ্যাফটের সাথে ফালক্রাম (Fulcrum) করা থাকে। ক্র্যাংক ও স্নে টি ক্র্যাংক আর্ম দ্বারা যুক্ত থাকে ।

কার্যপ্রণালি
মটর পুলির ঘুর্ণনের ফলে ক্র্যাংক শ্যাফট পুলি ঘোরে। ক্র্যাংক শ্যাফট্ পুলিটি যেহেতু ক্র্যাংক শ্যাফট এর এক প্রান্তের সাথে যুক্ত আছে। সুতরাং ক্র্যাংক শ্যাফটটিও ঘুরবে। ক্র্যাংক শ্যাফট ঘুরকে ঘুরতে ক্র্যাংক যখন সম্মুখ অবস্থানে আসবে তখন ক্র্যাংক আর্ম এর মাধ্যমে স্পে (Slay) সেডে ফেলে যাওয়া পড়েন সুতাকে ধাক্কা দিয়ে কাপড়ের শেষ প্রান্তে মিলিয়ে দেয়। আবার ক্র্যাংক সম্মুখ অবস্থান থেকে সরে আসার সাথে সাথে লেও পিছনের দিকে ফিরে আসতে থাকে। এভাবে সে সম্মুখ ও পিছনের গতির মাধ্যমে বিটিং আপ প্রক্রিয়ায় চলতে থাকে ।

বিট আপ এর শ্রেণি বিভাগ- 
বিট আপ সাধারণত দুই প্রকার। যথা 
১। সিঙ্গেল বিট আপ 
২। ডাবল বিট আপ 

১। সিঙ্গেল বিট আপ- 
শাটল এক বক্স থেকে অন্য বক্সে যাওয়ার পর যদি সে একবার বিট আপ করে তবে তাকে সিঙ্গেল বিট আপ বলে। 

২। ডাবল বিট আপ- 
শাটল এক বক্স থেকে অন্য বক্সে যাওয়ার পর পড়েন সুতা ফেল অব দ্যা ক্লথে লাগানোর জন্য যদি শে দুইবার বিট আপ দেয় তবে তাকে ডাবল বিট আপ বলে ।

Content added || updated By

অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্ন 
১. বিটিং বলতে কী বোঝায় ? 
২. বিটিং আপ-এ তাঁতের কোন কোন সক্রিয় থাকে ? 
৩. বিটিং আপ গতি লুমের কোন পর্যায়ের গতি ? 
৪. ডাবল বিট আপের সংজ্ঞা দাও । 

সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন 
১. বিটিং আপ এর উদ্দেশ্য লেখ। 
২. বিটিং আপ এর শ্রেণি বিভাগ কর । 

রচনামূলক প্রশ্ন 
১. চিত্র সহ বিটিং আপ পদ্ধতির বর্ণনা দাও।

Content added || updated By

টেক-আপ গতি পাওয়ার লুমের সেকেন্ডারি মোশনের প্রথম মোশন। গতিসমূহের কার্যাবলি অর্থাৎ সেডিং, পিকিং, বিটিং সম্পন্ন হওয়ার পর লেট অফ মোশনের সাথে সামঞ্জস্য রেখে টেক আপ মোশনের মাধ্যমে উৎপাদিত কাপড় ক্লথ রোলারে জড়াতে থাকে। টেক আপ কার্যে ক্লথ রোলার, ইমারি রোলার, সেভেন হুইল / ফাইভ হুইল টেক আপ মোশনে অংশ গ্রহণ করে ।

টেক আপ গতির সংজ্ঞা (Definition of Take-up motion ) - 
তাঁতের প্রাথমিক গতিসমূহের কার্যাবলি অর্থাৎ সেডিং, পিকিং, বিটিং সম্পন্ন হওয়ার পর লেট অফ মোশনের সাথে সামঞ্জস্য রেখে যে গতির মাধ্যমে উৎপন্ন কাপড় বা সর্বশেষ পিককে নিয়মিতভাবে ক্লথ রোলারে (Cloth roller) জড়ানো হয় সে গতিকে কাপড় গুটানো গতি বা টেক আপ (Take-up) মোশন বলে । এ গতি কাপড়ের প্রতি একক দৈর্ঘ্য অর্থাৎ ইঞ্চি প্রতি পিকসঠিক রাখে এবং কাপড়ে সুষম টেক্সচার (Proper exure) আনয়ন করে । ইঞ্চি প্রতি টানা ও পড়েনের উপর কাপড়ের টেক্সচার অনেকাংশে নির্ভর করে ।

টেক আপ গতির উদ্দেশ্য (Objectives of Take-up motion ) - 
০ বুননকৃত কাপড়কে টেনে নির্দিষ্ট হারে ক্লথ রোলারে জড়ানো । 
০ সমপিক স্পেসিং (Spacing) বা সমপিক ডেনসিটি (Density) নিশ্চিত করা। 
০ কাপড়ের সর্বত্র পড়েন সুতার একক দৈর্ঘ্যের ওজন সমান রাখা । 
০ কাপড়ের গুণগত মান ও বুনন দক্ষতা বৃদ্ধি করা।

টেক আপ মোশনের প্রকারভেদ (Classification of Take-up motion ) - 
টেক আপ মোশন প্রধাণত দুই প্রকার । 

১। পজিটিভ টেক আপ মোশন (Positive Take up motion ) 
যে টেক আপ মোশন ট্রেইন অব গিয়ার (train of Gear) এর মাধ্যমে কাপড়ের ক্লথ রোলারে জড়ায় তাকে পজিটিভ টেক আপ মোশন বলে । এছাড়াও আরও দুই প্রকার টেক আপ মোশন আছে। যথা- 

ক) প্রাচীন টেক আপ মোশন (Old Take-up motion ) - 
প্রাচীন কালে অর্থাৎ তাঁত আবিষ্কারের প্রথম দিকে কাপড় গুটানো গতির কাজ হাতের সাহায্যে করা হতো। এতে কোন গিয়ার বা চাকার সহায়তা নেওয়া হতো না । 

খ) সেমি পজিটিভ টেক আপ মোশন (Semi positive Take-up motion ) - 
যে টেক আপ মোশন পুরোপুরি পজিটিভের মাধ্যমে হয় না তাকে সেমি পজিটিভ টেক আপ মোশন বলে । 

২। নেগেটিভ টেক আপ মোশন (Negative Take-up motion ) - 
ওজন বা স্প্রিং (Spring) এর মাধ্যমে কাপড়ের ক্লথ রোলারে জড়ানোর প্রক্রিয়াকে নেগেটিভ টেক আপ মোশন বলে । পজিটিভ টেকআপ মোশনের শ্রেণি বিভাগ (Classification of positive take-up motion )

সেভেন হুইল টেক আগ মোশনের বর্ণনা- 
টেক আপ মোশনের এ গতি সাতটি হুইল যারা চলিত হয় বলে এ মোশনকে সেভেন হুইল টেক আপ মোশন বলে। চিত্রে A র‍্যাচেট হুইল B স্ট্যান্ডার্ড হুইল, C চেইঞ্জ হুইল, D সুইং পিনিয়ন, E স্টাড হুইল, F স্টাড পিনিয়ন, G ইমারি রোলার হুইল অথবা বিম হুইল ।
স্লে বিট আপের জন্য যখন সামনের দিকে অগ্রসর হয় তখন পুশিং পল M প্ররোজন অনুযায়ী র‍্যাচেট হুইলের এক দাঁতকে ঘুরায় এবং পুলিং পল N র্যাচেট হুইলকে ধরে রাখে যাতে এগিয়ে যাওয়া র্যাচেট হুইলটি পিছনের দিকে চলে যেতে না পারে। র‍্যাচেট হুইলের ঘূর্ণনের ফলে একই শ্যাফটে অবস্থিত স্ট্যান্ডার্ড হুইলও ঘুরবে। এভাবে স্ট্যান্ডার্ড হুইলের সংস্পর্শে থাকা চেইঞ্জ হুইল, সুইং পিনিয়ন, স্টাড হুইল, সবশেষে ইমারি হুইল বা বিম হুইল ও ঘুরবে। ফলে ইমারি রোলার উৎপাদিত কাপড়কে আস্তে আস্তে ক্লথ বিমে জড়াতে সাহায্য করবে।

র‍্যাচেট হুইল একবার পূর্ণ ঘুর্ণনের ফলে কাপড়ে যতগুলো পিক সম্পন্ন হয় এবং ঐ সময়ে ক্লথ রোলারে যতটুকু কাপড় জড়ায় তাদের অনুপাতকে পিকস্ পার ইঞ্চি বা পিপিআই বলে ।

হুইল টেক আপ মোশনের লুম কন্সট্যান্ট ১ হয় । 

সেভেন হুইল টেক আপ মোশনের বিভিন্ন হুইলের দাঁতসংখ্যা আদর্শ মান ধরে নিম্নলিখিতভাবে লুম কন্সট্যান্ট বের করা সম্ভব।

সেভেন হুইল টেক আপ মোশনের লুম কন্সট্যান্ট আদর্শ মান - ১ । যার কারণে চেইঞ্জ হুইলের দাঁত সংখ্যার সমান ইঞ্চি প্রতি পিক সংখ্যা হয় ।

ফাইভ হুইল টেক আপ মোশন (Five wheel Take up motion ) 
টেক আপ মোশনের গতি ৫টি হুইল দ্বারা চালিত হয় বলে এ ধরনের টেক আপ মোশনকে ফাইভ হুইল টেক আপ মোশন নামকরণ করা হয়েছে । চিত্রে ৫টি হুইল সহ টেক আপ মোশন দেখানো হলো।

A একটি র‍্যাচেট হুইল, B চেইঞ্জ পিনিয়ন, C স্টাড হুইল, D স্টাড পিনিয়ন, E বিম হুইল এবং F পিন রোলার বা কুথ রোলার।

র‍্যাচেট হুইল A কে র‍্যাচেট পল M দ্বারা প্রতি এক একটি পিকের জন্য এক একটি দাঁত ধাক্কা দিয়ে এগিয়ে দেয় । N অপর একটি পল র‍্যাচেট হুইলকে ধরে রাখে যাতে ধাক্কা মারা পলটির মাধ্যমে এক দাঁত এগিয়ে আসা র‌্যাচেট হুইলকে পিছনের দিকে সরে যেতে বাধা প্রদান করে। এজন্য M কে পুশিং পল এবং N কে পুলিং পল বলে।

Content added By

অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্ন 
১. টেক আপ মোশন বলতে কী বুঝায় ? 
২. সেভেন হুইল টেক আপ মোশনের লুম কন্সট্যান্ট ১ হওয়ার সুবিধা কী ? 
৩. সেমি পজিটিভ টেক আপ মোশনের সংজ্ঞা দাও । 
৪. লুম কনট্রাকশন ফ্যাকটর এর সহিত কত যোগ করতে হয় ? 

সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন 
১. টেক আপ মোশনের উদ্দেশ্য কী ? 
২. টেক আপ মোশনের শ্রেণি বিভাগ কর। 
৩. পজিটিভ টেক আপ মোশনের শ্রেণি বিভাগ ছক আকারে 
৪. টি পি আই (TPI) এর সূত্রটি লেখ। 

রচনামূলক প্রশ্ন 
১. চিত্রসহ সেভেন হুইল টেক আপ মোশনের বর্ণনা দাও। 
২. চিত্রসহ ফাইভ হুইল টেক আপ মোশনের বর্ণনা দাও। 
৩. ফাইভ হুইল ও সেভেন হুইল টেক আপ মোশনের মধ্যে পার্থক্য লেখ। 
৪. কাপড় বুননের ক্ষেত্রে ফাইভ হুইল এবং সেভেন হুইল টেকআপ মোশন তাঁতের সুবিধা ও অসুবিধাগুলো তুলনামূলক বর্ণনা কর ।

Content added || updated By

লেট অফ মোশন লুমের সেকেন্ডারি মোশনের দ্বিতীয় মোশন। টেক আপ মোশন ও লেট অফ মোশন একই গতিতে কাজ করে। অর্থাৎ টানা বিম থেকে টানা সুতা ছাড়া ও ক্লথ রোলারে উৎপাদিত কাপড় জড়ানো একই গতিতে হতে থাকে। লেট অপ ও টেক অপ উভয় গতির সাথে সামঞ্জস্য রয়েছে। নতুবা লেট অফ এর চেয়ে টেক আপ বেশি হলে টানা সুতা ছেড়ার হার বেড়ে যাবে এবং টেক আপ কম হলে পিক ডেনসিটি এলোমেলো হয়ে যাবে। কাজেই উভয় গতির মধ্যে সামঞ্জস্য বিদ্যমান ।

লেট অফ মোশনের সংজ্ঞা (Definition of let off motion)- 
যে মোশনের সাহায্যে টানা সুতার বিম হতে প্রয়োজনীয় সুতাকে একটি নির্দিষ্ট হারে বুনন এলাকাতে ছেড়ে দেওয়া হয় এবং যার ফলে টানা সুতা এবং কাপড়ের মধ্যে একটি সম টেনশন বজায় থাকে, তাকে সুতা ছাড় দেওয়া গতি বা লেট অফ মোশন বলে।

লেট অফ মোশনের উদ্দেশ্য (Objectives of let off motion)- 
লেট অফ মোশনের নিম্নলিখিত উদ্দেশ্য বিদ্যমান 
০ পরিচ্ছন্ন সেড গঠনের জন্য টানা সুতার উপর প্রয়োজনীয় টেনশন প্রয়োগ করা। 
o বুননের সময় টানা সুতার বিম থেকে যে পরিমাণ টানা সুতা সরবরাহ করে তা নিয়ন্ত্রণ করা। 
০ কাপড়ের একক স্পেসে সমান সংখ্যক পিকের জন্য টেক আপ মোশনের সাহায্যকারী হিসেবে কাজ করা । 
০ কাপড় প্রস্তুতিতে টানা ও ফিলিং (Filling) এর মধ্যকার সঠিক টেনশন রক্ষা করা । 
০ কাপড় প্রস্তুত করতে টানা ও ফিলিং এর মধ্যে যে জায়গা দরকার তা প্রদান করা। 
০ ক্লথ রোলারে যে পরিমাণ কাপড় জড়ায় সে পরিমাণ টানা সুতা লেট অফ মোশন ছাড় দেওয়া।

লেট অফ মোশনের প্রয়োজনীয়তা (Requirements of Let off motion)- 
নিম্নলিখিত কারণে লেট অফ মোশনের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে- 
o টানা সুতার টান (tension) যাতে স্থির থাকে তার ব্যবস্থা করা । 
০ বুনন অঞ্চল (Weaving area) এ টানা সুতার দৈর্ঘ্য পরিবর্তন করার ব্যবস্থা থাকতে হবে যাতে প্রয়োজনে সুতার দৈর্ঘ্য বাড়ানো ও কমানো যায় । 
o টানা সুতার দৈর্ঘ্যের পরিবর্তনকে কাজে লাগিয়ে টানা সুতার টেনশন ঠিক (Adjust করা । 
o টানা ও পড়েনের টেনশন বা টানের অনুপাত সঠিক রাখতে হবে। অন্যথায় কাপড়ের উপর ক্রিম্প লেভেল (Crimp level) সঠিক হবে না।

লেট অফ মোশনের প্রকারভেদ (Classification of let off motion ) - 
লেট অফ মোশন তিন প্রকারের। যথা- 
১) পজিটিভ লেট অফ মোশন (Positive let of motion ) 
২) সেমি পজিটিভ লেট অফ মোশন (Semi Positive let of motion ) 
৩) নেগেটিভ লেট অফ মোশন (Negative let of motion )

নেগেটিভ লেট অফ মোশনের বর্ণনা- 
এ পদ্ধতিতে ওয়ার্প বা উইভারস বিষ থেকে টানা সুতা ছাড়ার জন্য বিম রাফেলে একটি চেইন (D) পেচানো হয়। চেইনের এক প্রান্তে একটি নির্দিষ্ট ওজন (A) যুক্ত থাকে এবং অপর প্রাপ্ত ওজন লিভার (B) এর সাথে বাঁধা থাকে । ওজন লিভারটি লুম ফ্রেমের সাথে (C) বিন্দুতে ফালক্রাম করা থাকে। টানা সুতাকে ব্যাক রেস্ট (G) এর উপর দিয়ে অতিক্রম করানো হয় এবং টেকআপ রোলার (J) এর সাহায্যে ক্লথ বিম (K) এ জড়ানো হয় ।

কার্যপ্রণালি
তাঁতের বুনন কাজ চলার সাথে সাথে ওয়ার্ল্ড বিমের সুতা কমতে থাকে এবং বিমের ব্যাস হ্রাস পায়। বুননের শুরুতে ওয়ার্স বিম যখন টানা সুতায় পূর্ণ থাকে তখন বিষের ওজন বেশি থাকে। বেশি ওজনের বিষকে ঘুরতে বেশি ওয়েট লাগবে। এমতাবস্থায় ওজনকে ওজন লিভারে যে প্রান্তে ফালক্রাম আছে তার বিপরীত প্রান্তে রাখা হয় এবং বিম থেকে নির্দিষ্ট টেনশনে সুতা ছাড়া হয় । কিন্তু ওয়াপ বিমের ব্যাস কমার সাথে সাথে ব্যাক রেস্টের সাথে টানা সুতার কোন (Angle) কমে যায় এবং টেক আগে পেঁচানোর পরিমাণ বেড়ে যায়। ফলে ব্যাক রেস্টের সাথে টানা সুতার ধর্ষণের কো-ইফিসিয়েন্ট ফ্রিকশন (Co-efficient Friction) বেড়ে যায় এবং সুতার টানা বা টেনশন বৃদ্ধি পায় । এক্ষেত্রে ওজনকে ওজন লিভারের ফালক্রাম প্রান্তের দিকে সরিয়ে দিয়ে টানা সুতার টেনশন কমানো হয় এবং ওয়ার্শ বিমের পরিধির গতি ঠিক থাকে । বুনন কাজ চলন্ত অবস্থায় সাধারণত ১০ থেকে ১৫ মিনিট পর পর ওজনকে ফালক্রামের দিকে সরিয়ে সুতার টেনশন নিয়ন্ত্রণ করা হয়।

এভাবে লেট অফ মোশন টি টেকআপ মোশনের সাথে সামঞ্জস্য রেখে টানা সুতা ছাড়তে হয় ।

পজিটিভ লেট অফ মোশন ও নেগেটিভ লেট অফ মোশন এর পার্থক্য

Content added By

অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্ন 
১. লেট অফ এর সংজ্ঞা দাও। 
২. লেট অফ মোশনের সাথে কোন মোশনের সামঞ্জস্য রয়েছে ? 
৩. তাঁতে সুতার টেনশন ঠিক রাখার জন্য কোন মোশন ব্যবহার হয় ? 
৪. লেটঅফ এর চেয়ে টেকআপ বেশি হলে কি অসুবিধা হবে ? 
৫. টেকআপ কম হলে কি অসুবিধা হবে ? 

সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন 
১. লেট অফ মোশনের উদ্দেশ্য লেখ। 
২. লেট অফ মোশনের প্রয়োজীয়তা কী? 
৩. লেট অফ মোশনের শ্রেণিবিভাগ কর । 
৪. টানা ও পড়েন সুতার টেনশন বা টানার অনুপাত সঠিক রাখলে সুবিধা কী? 
৫. ওয়ার্স বা টানা সুতার টেনশন কি নিয়ন্ত্রণ করা যায়? 

রচনামূলক প্রশ্ন 
১. চিত্রসহ নেগেটিভ লেট অফ মোশনের বর্ণনা দাও। 
২. পজিটিভ ও নেগেটিভ লেট অফ মোশনের মধ্যে পার্থক্যগুলো লেখ। 
৩. পজিটিভ ও নেগেটিভ অফ মোশনের সুবিধা ও অসুবিধাগুলো তোমার নিজের ভাষায় লেখ ।

Content added By

কাঙ্ক্ষিত মানসম্পন্ন কাপড় তৈরির জন্য প্রাথমিক ও মাধ্যমিক গতির সাথে সাথে আরও কিছু অতিরিক্ত গতি পাওয়ার লুমে ব্যবহার করা হয়। যেমন- ওয়ার্প স্টপ মোশন, ওয়েফট স্টপ মোশন, ওয়ার্ল্ড প্রটেকটর মোশন, ব্রেক মোশন, টেম্পল মোশন ইত্যাদি। এ সমস্ত গতিই আনুষঙ্গিক গতি । প্রকৃতপক্ষে আনুষঙ্গিক গতি প্রাথমিক ও মাধ্যমিক গতির সমন্বিত রূপ। এ সমন্বিত গতিকে লুমের সাহায্যকারী গতিও বলে ।

লুমের উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি, কাঙ্ক্ষিত গুণ সম্পন্ন ও ত্রুটিমুক্ত কাপড় তৈরির লক্ষ্যে লুমের প্রয়োজনীয় গতি সমূহের পাশাপাশি অতিরিক্ত যে সমস্ত গতি পাওয়ার লুমে ব্যবহার করা হয় তাই আনুষঙ্গিক গতি বা টারশিয়ারি মোশন ।

পাওয়ার লুমে আনুষঙ্গিক গতির প্রয়োজনীয়তা- 
০ আনুষঙ্গিক গতি থাকার কারণে লুমের উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি পায় । 
০ উৎপাদিত কাপড় ত্রুটিমুক্ত করা । 
০ উৎপাদিত কাপড় মানসম্পন্ন করা। 
০ একজন তাঁতিকে একসংগে অধিক তাঁত চালনায় সক্ষম করা। 
০ উৎপাদন খরচ কমানো। 
o অপচয় রোধ করা। 
০ চেক ক্রস ওভার ইফেক্ট, পড়েন মিক্সিং, ইত্যাদির জন্য আনুষঙ্গিক গতির প্রয়োজন রয়েছে। 
০ তাঁত চলা অবস্থায় হঠাৎ কোন ক্ষতি থেকে তাঁত ও সুতাকে রক্ষা করা। 
০ প্রয়োজনে তাঁতকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে বন্ধ করা।

আনুষঙ্গিক গতি/ টারশিয়ারি মোশন এর শ্রেণিবিভাগ-

ওয়ার্স স্টপ গতির সংজ্ঞা- 
তাঁত চলাকালীন সময়ে হঠাৎ কোন কারণে টানা সুতা ছিড়ে যেতে পারে। টানা ছেড়া সুতাটি কাপড়ের মধ্যে ঢুকে গেলে কাপড় ত্রুটিযুক্ত হবে। কাজেই যে মোশনের সাহায্যে টানা সুতা ছিড়ে যাওয়ার সাথে সাথে তাঁত বন্ধ হয়ে যায় তাকে ওয়ার্প স্টপ মোশন বলে।

ওয়েফট স্টপ গতির সংজ্ঞা-
তাঁত চালু অবস্থায় শাটল এক বক্স হতে অন্য বক্সে চলার সময় যদি কোন কারণে পড়েন সুতা ছিড়ে যায় বা শেষ হয়ে যায়, তবে যে মোশনের সাহায্যে কাপড়ের পড়েন না থাকার ত্রুটি থেকে মুক্ত রাখার জন্য তাঁত তাৎক্ষণাৎ বন্ধ করে দেয় তাকে ওয়েফট স্টপ মোশন বলে ।

মেকানিক্যাল ওয়ার্গ স্টপ মোশনের বর্ণনা- 
মেকানিক্যাল ওয়ার্প স্টপ মোশনে একটি স্লাইড, স্লাইড বার, স্লাইড মুভমেন্ট ডিভাইস ও নক আপ ডিভাইস নিয়ে গঠিত। স্লাইডটি স্লাইড বারের মধ্যস্থ ফাঁকা স্থানে স্থাপন করা হয় । বাইরের অংশটি অর্থাৎ স্লাইড বার অনড় থাকে, অর্থাৎ নড়াচড়া করে না এবং মধ্যের অংশটি অর্থাৎ স্লাইডটি নড়াচড়া করতে থাকে । বারের ঠিক উপরের টানা সুতার শীট থাকে। যার প্রতিটি সুতায় একটি করে ড্রপার বসানো থাকে । স্লাইড বারের সাথে ফালক্রাম লিভার সংযুক্ত যা ক্র্যাংক লিভারের সাথে যুক্ত ক্যাম লিভারটি এ্যাক্সসেনট্রিক ড্রাইভের মাধ্যমে উপরে নিচে মুভমেন্ট দেয় যার ফলে সেন্টার বারটি অর্থাৎ স্লাইডটি সামনে পিছনে কাপতে থাকে। ফালক্রাম লিভার ও ক্যাম লিভারের নিচের অংশে রিলিজ ক্যাচ ট্রিপ লিভার আছে যার এক প্রাপ্ত ক্যাম লিভারের নিচে স্প্রিং এর সাথে যুক্ত ও অপর প্রান্ত লিফটিং ক্যাচকে ঠেলে সরিয়ে রাখে যাতে ক্যাম লিভারের এক্সসেনট্রিক গতির কারণে নক অফ স্লাইডে টান না পড়ে ও লুম বন্ধ হয়ে না যায় ।

যখন টানা সুতা ছিড়ে যায় তখন টানা সুতার সাথে ঝুলন্ত ড্রপারটি স্লাইডের উপরে পড়ে এবং বাইরের ও ভিতরের উভয় স্লাইড খাজ কাটা থাকার কারণে ভিতরের স্লাইড বা বারের মুভমেন্ট বন্ধ করে দেয়। ফলে ফালক্রাম লিভার রিলিজ ক্যাচ ট্রিপ লিভারকে যুক্ত করে ও লিফটিং ক্যাচের সাথে নক অফ লিভার যুক্ত থাকার কারণে লুম তৎক্ষণাৎ বন্ধ হয়ে যায়।

লুজ রিড ওয়ার্স প্রোটেক্টর মোশন এর বর্ণনা- 
এই মেকানিজমের মূল নীতি হলো মাকু যখন সেডে আটকা পড়বে তখন বিট আপের সময় মাকুর চাপে রিড থেকে পিছনে স্থানচ্যুত হবে। রিড পিছনের দিকে স্থানচ্যুতির ফলে নক অফ ডিভাইজ কাজ করবে এবং তাঁত বন্ধ হবে। রিডের উপরের অংশ রিড ক্যাপের মধ্যে স্থাপন করা হয় এবং নিচের অংশ রিড কেইজের সাহায্যে রেইস বোর্ডের সাথে খানিকটা দৃঢ়ভাবে আটকানো থাকে। রেইস বোর্ড ও রিড কেসের রিড কাপড়ের গ্রন্থ বরাবর বিস্তৃত থাকে । কয়েকটি ব্রাকেটের সাহায্যে রিড কেইসটি স্লের সাথে দৃঢ়ভাবে আটকানো হয়। রিড কেইসটি স্টপ রঙের সাথে যুক্ত থাকে । স্টপ রডের উপর তাঁতের প্রস্থ অনুসারে ২,৩, বা ৪টি গ্রুপ থাকে। ক্রেস্ট বিমের সাথে ব্রাকেটের সাহায্যে প্রতিটি ফ্রকের সামনে একটি হিটার শক্তভাবে আটকানো আছে। তাঁত স্বাভাবিক চলাকালীন সময়ে তিনটি ডিভাইজের সাহায্যে রিডকে দৃঢ়ভাবে রেইস বোর্ডের সাথে আটাকানো হয় ।

কার্যপ্রণালি- 
স্লে যখন সামনের দিকে অগ্রসর হয় তখন ফ্রগ হিটারের নিচ দিয়ে চলে আসে। ফলে পড়েন সুতাকে উত্তমরূপে বিট আপের জন্য রিড দৃঢ়ভাবে রিড কেসের চাপে রেইস বোর্ডের সাথে লেগে থাকে। প্লে পেছনের দিকে অগ্রসর হলে বউল চ্যাপ্টা বাঁকা স্প্রিং এর উপর চড়ে বসে এবং মাকু এক বক্স থেকে অন্য বক্সে বাওয়ার সময় নির্বিঘ্নে যেতে সক্ষম হয়।

হালকা প্যাচানো স্প্রিং সর্বদা রিড কেসকে চাপের মধ্যে রাখে। স্টপ রড ফিঙ্গার যেহেতু স্টপ রডের সাথে লাগানো আছে কাজেই এই রড ফিঙ্গারের মুখোমুখি থাকা হাতলের সাথে শক্ত করে আটকানো। মাকু যখন টানা সেডের মধ্যে আটকা পড়ে যাবে তখন রিড সামনের দিকে অগ্রসর হলে মাকু রিডকে পিছনের দিকে ধাক্কা দিবে ফলে রিড পিছনের দিকে সরে যাবে ও রিড কেসের মাধ্যমে স্টপ রডকেও পিছনে যেতে বাধ্য করবে। স্টপ রড সব কয়টি ফ্রগকে ধাক্কা দিবে এবং স্টপ রড ফিঙ্গার উপরে উঠবে। ম্লে সামনে দিকে অগ্রসর হওয়ার সময় গ্রুপগুলি প্রতিটি হিটারের উপর চড়ে বসবে এবং স্টপ রড ফিঙ্গার স্টারটিং হ্যান্ডেলকে ধাক্কা দিবে ফলে তাঁত বন্ধ হবে।

ফাস্ট রিড ওয়ার্স প্রোটেক্টর মোশনের বর্ণনা 
ফাস্ট রিড ওয়ার্প প্রোটেক্টর মোশন ভারী কাপড়ের জন্য ব্যবহার হয়। কারণ এটি অনড় রিড নীতিতে কাজ করে । একটি স্টপ রড ম্লে এর নিচে কাজ করে যার দুইটি ফিঙ্গার আছে। প্রতিটি মাকু বক্সের পাশে একটি ফিঙ্গার আছে। এই ফিঙ্গারগুলো নাটের সাহায্যে সুয়েল স্প্রিং এর বিপরীতে লাগানো। মাকু বক্সের প্রতি পার্শ্বে একটি করে স্টপ রড ও দু'টি স্থায়ী ড্যাগার রয়েছে। তাঁতের পাশের ফ্রেমে স্থাপিত স্লাইডিং ফ্রগের মুখোমুখি ড্যাগারটি থাকে। স্লাইডিং ফ্রগ স্টারটিং হ্যান্ডেলের সাথে যুক্ত।

কার্যপ্রণালি- 
মাকু যখন যে কোন এক পাশে প্রবেশ করে তখন সুয়েলকে ধাক্কা দেয় ফলে ড্যাগার সাথে সাথে ফ্রগের উপর উঠে এবং তাঁত চলতে থাকে । যদি কোন কারণে মাকু বক্সে মাকু পৌঁছতে না পারে তখন সুয়েল পর্যাপ্ত পরিমাণে চাপ দিয়ে ড্যাগারকে ফ্রগের উপরে উঠাতে পারবে না। ফলে ড্যাগারের সাথে ফ্রগের ধাক্কা লাগবে এবং ফ্রগ পিছনে সরে এসে স্টার্টিং হ্যান্ডেলকে ধাক্কা দিবে এবং লুম বন্ধ হয়ে যাবে। লুম তৎক্ষণাৎ বন্ধ করার জন্য ব্রেক মোশন কাজ করে। ফলে কাপড়ের কোন ক্ষতি হয় না।

সাইড ওয়েফট ফর্ক মোশনের বর্ণনা- (Side weft fork motion) 
সাইড ওয়েফট কর্ক মোশন প্লে এর এক প্রান্তে থাকে। এটি গ্রিড এর মধ্যে আসা যাওয়া করে । ওয়েফট কর্ক সাপোর্টের এক প্রান্তে ফর্ক ও অপরটি নক অফ লিভারের কাছাকাছি থাকে। একটি গ্রে হাউন্ড টেইল লিভার যার এক প্রাপ্ত বটম শ্যাফটের সাথে সংযুক্ত ক্যামের উপরে স্পর্শ করে থাকে ও অপর প্রান্তে হ্যামার রয়েছে যা কর্কের প্রাপ্ত ক্যাচ করার জন্য প্রস্তুত থাকে।

বটম শ্যাফটের ঘূর্ণনের লিভারটি দুলতে থাকে ও হ্যামারটি সামনে পিছনে চলতে থাকে। যখন কর্ক (Fork) পড়েন সুতা স্পর্শ করে তখন পড়েন সুতার টানে ফর্কটি নিচে চলে যায় ও অপর প্রাপ্ত হ্যামার থেকে মুক্ত থাকে। কিন্তু কোন কারণে পড়েন সুতা অনুপস্থিত থাকলে ফর্কটি গ্রেটের মধ্যে প্রবেশ করে। এবং ফর্কের পেছনের অংশ হ্যামারকে ক্যাচ করে । যেহেতু হ্যামার লিভার দুলতে থাকে কাজেই হ্যামারের টানে ওয়েট ফর্ক সাপোর্ট নক অফ লিভারকে ধাক্কা দেয় ও লুম বন্ধ করে দেয় ।

টেম্পল গতির সংজ্ঞা
কাপড় বুননের সময় পড়েন বরাবরে কাপড় যথেষ্ট পরিমাণে সংকুচিত হয়ে যায়। যে মোশনের সাহায্যে কাপড় বুননের পর প্রয়োজনীয় পরিমাণ বহর ধরে রাখার ব্যবস্থা করা হয় তাকে টেম্পল বলে ।

টেম্পল ব্যবহারের উদ্দেশ্য 
০ কাপড়ের ফেল অফ দি ক্লথে বহর এবং শানার টানা সুতার বহর সমান রাখা। 
০ কাপড়ের টানা ও পড়েনের বুননের কারণে যে পরিমাণ খেপে আসে তা রোধ করা। 
০ বিট আগের কারণে যেন পড়েন সুতা ছিড়ে না যায় তার ব্যবস্থা করা । 
০ মাকু ঝাঁপের ভিতর দিয়ে অতিক্রম করার সময় যেন পাড়ে অতিরিক্ত টান না পড়ে ।

টেম্পলের প্রকারভেদ- 
১. ফুল ওয়াইডথ টেম্পল (Full width temple) 
২. রোলার টেম্পল (Roller temple) 
৩. রিং টেম্পল (Ring temple) 
৪. স্টার টেম্পল (Star temple)

১) ফুল উইডথ টেম্পল (Full width temple) - 
এটি একটি অর্ধ বৃত্তাকার লোহার তৈরি যা কাপড়ের নিচ দিয়ে পুরোপুরি কাপড়ের প্রান্ত পর্যন্ত বিস্তৃত থাকে । এটি ক্লথ ফেল এবং ব্রেস্ট বিম বা ফ্রন্ট রেস্টের মাঝখানে খোলা অংশটির উপরের দিকে স্থাপন করা হয় এবং দুই পাশে দুইটি রোলার টেম্পলের মধ্যে স্থাপন করা হয় যার উপর ক্যাপ (Cap) বল্ট (Bolt) দিয়ে আটকানো থাকে । 

২) রোলার টেম্পল (Roller temple) - 
রোলার টেম্পল লোহার কেইজ এ একটি দণ্ডের (Rod) উপর স্থাপন করা থাকে। এটি কাপড়ের পাড়ের উপরে স্থাপিত হয়ে বিশেষ উদ্দেশ্য সাধন করে থাকে। রড দুইটির দুই প্রাপ্ত কাপড়ের নিচে মাঝামাঝি স্থানে ব্রেস্ট বিম এ বল্টে আটকানো থাকে, রোলার টেম্পল এক জোড়া কিংবা তিনটি করে থাকতে পারে। এই টেম্পলের সারা গায়ে খুব সরু স্টিলের পিন থাকে এবং এই পিনগুলি মোচড়ানো ভাবে সাজানো। টেম্পলের উপরে কেইজ লাগানো থাকে, যা কাপড়ের গুণাগুণের উপর ভিত্তি করে ঠিক করা হয়। 

৩) রিং টেম্পল (Ring temple) - 
এই ধরনের টেম্পল সমান্তরালভাবে সাজানো কতগুলি রিং একটি রোলারের মধ্যে ঘুর্ণায়মান অবস্থায় স্থাপন করে তৈরি করা হয় । প্রতিটি রিং এ এক সারি সরু খাট পিন থাকে, কতগুলি ওয়াসারের দ্বারা রিংগুলি পরস্পর পরস্পরের থেকে আলাদা থাকে, ওয়াসারগুলির এক পাশে সমান এবং অন্য পাশে বক্রাকৃতি থাকে। এটি শুধু কাপড়ের পাড় ব্যাপী বিস্তৃত থাকে । 

৪) স্টার টেম্পল ( Star temple) 
এই ধরনের টেম্পল এক বা দুই ধাতব রিং সমন্বয়ে গঠিত। রিং সমূহ ব্যাসে প্রায় ২" হয়। সমান ঘূর্ণায়মান চাকতিতে টেম্পলের ব্রাকেট স্থাপিত থাকে। এর মধ্যে খুব সরু পিন থাকে যা কাপড়ের পাড়কে সহজেই ধারণ করতে সক্ষম । কোন কোন ক্ষেত্রে জোড়া চাকতি ব্যবহার করা হয়।

Content added By

অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্ন 
১. আনুষঙ্গিক গতিসমূহ কী কী ? 
২. টারসিয়ারি মোশন কাকে বলে ? 
৩. ওয়ার্প স্টপ মোশনের সংজ্ঞা দাও । 
৪. টেম্পল গতি কী কাজে ব্যবহার হয় ? 
৫. কয়েকটি টেম্পলের নাম লেখ। 
৬. টেম্পল ও ব্রেক মোশন তাঁতের কোন গতি দ্বারা নিয়ন্ত্রণ করা হয় । 

সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন 
১. পাওয়ার লুমে আনুষঙ্গিক গতির প্রয়োজনীয়তা লেখ। 
২. আনুষঙ্গিক গতির শ্রেণি বিভাগ কর। 
৩. টেম্পল ব্যবহারের উদ্দেশ্য লেখ। 
৪. তাঁত চলা অবস্থায় হঠাৎ কোন ক্ষতি হতে তাঁত ও সুতাকে রক্ষা করার জন্য কি করতে আলোচনা কর। 
৫. মাকু যখন সেডে আটকা পড়বে তখন কোন গতি তাঁতকে বন্ধ করবে? 

রচনামূলক প্রশ্ন 
১. টেম্পলের শ্রেণি বিভাগ সহ প্রত্যেক প্রকার বর্ণনা দাও। 
২. চিত্রসহ মেকানিক্যাল ওয়ার্প স্টপ মোশনের বর্ণনা দাও। 
৩. চিত্রসহ সাইড ওয়েফট ফর্ক মোশনের বর্ণনা দাও।

Content added By

তন্ত্র হতে বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় সুতা প্রস্তুত করা হয়। সুতা বয়ন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে টানা ও পড়েন সুতার পরস্পর বন্ধনী (Inerlacement) দিয়ে লুপের সাহায্যে জমাট বাধিয়ে মানুষের পরিধেয় ও প্রয়োজনীয় ব্যবহারের জন্য যে সকল দ্রব্য উৎপাদন করা হয় তাকে বস্ত্র বা কাপড় বলে।

বিভিন্ন প্রকার কাপড়ের বৈশিষ্ট্য 
কাপড়ের সাধারণ বৈশিষ্ট্য
০ বস্ত্রের নির্দিষ্ট দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ থাকতে হবে। 
০ বস্ত্রের গঠন প্রকৃতি বিভিন্ন রকম হতে হবে । 
০ পরিধানে আরামদায়ক হতে হবে । 
০ টেকসই ও স্থায়িত্ব গুণ সম্পন্ন হতে হবে । 
০ বস্ত্র উজ্জ্বল ও মসৃণ হতে হবে। 
০ বস্ত্রের শক্তি থাকতে হবে। 
০ বস্ত্ৰ অবশ্যই তাপ সহনশীল হতে হবে। 
০ বস্ত্রের জলীয় বাষ্প ধারণ ক্ষমতা থাকতে হবে।

হালকা সাধাসিধে কটন কাপড়ের বৈশিষ্ট্য 
এই শ্রেণির কাপড়ের গুণাগুণ হলো এটা স্পর্শে অনুভবে বা ব্যবহারে আরাম দায়ক। টানা ও পড়েন সমভাবে বিস্তৃত, পরিচ্ছন্ন পাড়, দাগহীন, এবং কভার ভালো । এ জাতীয় কাপড় হলো মসলিন ছাপানো কাপড় এবং অনুরূপ অন্যান্য শ্রেণির কাপড়কে হালকা প্লেইন ক্লথ (Ligh plain cloth ) বলে ।

ক) গ্রীষ্মের পরিধেয় কাপড় হিসেবে আমাদের দেশের মসলিন ব্যবহার হয়। এদের বুনন প্রতি ইঞ্চিতে ৩২ হতে ১০০ নম্বরের, ৪০ হতে ৯২টি টানা এবং ৩৬ হতে ১০০ নম্বরের, ৪৪ হতে ৮৪টি পড়েন সুতা থাকে । 

খ) ছাপানো প্লেইন কাপড় মসলিন হতে ভারী। এদের বুনন টানায় ৩৬ নম্বরের ৬৮টি এবং পড়েনে ৪২ নম্বরের ৬২ টি সুতা প্রতি ইঞ্চিতে। এছাড়া টানা ও পড়েনের প্রতি ইঞ্চিতে যথাক্রমে ৭২ ও ৬২ টি সুতা, সুতার নম্বর টানায় ৩৬১ এবং পড়েনে ৪২ ।

মধ্যমানের সাধাসিধে কটন কাপড়ের বৈশিষ্ট্য- 
হালকা সাধাসিধে কাপড়ের চেয়ে মধ্যমানের কটন কাপড় ভারী কিন্তু তুলনামূলকভাবে ভারী কাপড় হতে হালকা। এই কাপড়ের উদাহরণ হলো- Long cloth, Casement cloth, Madapolam ও Cheshire prinings ইত্যাদি।

ক) লং-ক্লথ (Long cloth) মিহি প্রকৃতির লংক্রণ প্রতি ইঞ্চিতে টানা ও পড়েনে যথাক্রমে ৭২ ও ৭০ টি সুতা যাদের নম্বর ৩৬১ এবং পড়েনে ৩৮° । মোটা প্রকৃতির লংক্লথ কাপড় প্রতি ইঞ্চিতে ৫৬টি টানা ও ৭২টি পড়েন নিয়ে গঠিত যাদের নম্বর যথাক্রমে ২৮১ এবং পড়েনে ১৮৪ । 

খ) কেইসমেন্ট ক্লং (Casement cloth) প্রতি ইঞ্চিতে ৫২টি টানা ও ৬৮টি পড়েন নিয়ে গঠিত যাদের নম্বর যথাক্রমে ৩২° এবং পড়েনে ১৬৪ ।

মধ্যমানের ভারী সাধাসিধে কাপড়ের বৈশিষ্ট্য- 
এটা মধ্যমানের কাপড় হতে ভারী কিন্তু ভারী কাপড়ের তুলনায় হালকা। এই শ্রেণির মধ্যম ভারী (Medium heavy) কাপড়ে প্রতি ইঞ্চিতে ৬০টি টানা ও পড়েন নিয়ে গঠিত যাদের সুতার কাউন্ট যথাক্রমে ১৮৪ এবং পড়েনে ৩২ ।

ভারী সাধাসিধে কটন কাপড়ের বৈশিষ্ট্য- 
হরেক রকমের ভারী প্লেইন ক্লথ (Heavy plain cloth ) আছে যেমন- Canvas, Duck cloth, Sail cloth এবং কম্বলের কাপড় ইত্যাদি। উদাহরণস্বরূপ ডাক ক্লথ (Duck cloth) এ টানা ও পড়েন উভয় ক্ষেত্রে ৩/১৪ কাউন্টের সুতা ও প্রতি ইঞ্চিতে ৪০টি টানা ও পড়েন সুতা ব্যবহার করে তৈরি করা হয় । এই কাপড় তৈরি করতে এবং সুভার ব্যাস, টানা ও পড়েন সংখ্যা, বিবেচনায় আনতে হবে। তাঁতের গঠন মজবুত, ভারী ও খুব দৃঢ় থাকে।

মিহি সাধাসিধে কটন কাপড়ের বৈশিষ্ট্য- 
উন্নত মানের সুতায় এই কাপড় তৈরি হয় বিশেষ করে ইজিপশিয়ান কটন ৬০ হতে ১০০ কাউন্ট ব্যবহার করা হয়। ফাইন লন (Fine lawn) এই শ্রেণির একটি উদাহরণ। টানায় ৯০ এবং পড়েনে ১০০ নম্বর, টানা ও পড়েনে প্রতি ইঞ্চিতে যথাক্রমে ১২৮ ও ১১২টি সুতা ব্যবহার করা হয়। কিছু কিছু ক্ষেত্রে টানায় ৬০ এবং পড়েনে ৫০৪ নম্বরের, টানা ও পড়েন উভয় ক্ষেত্রে প্রতি ইঞ্চিতে ৭৬টি সুতা থাকে। ইজিপশিয়ান টানা ও পড়েন যথাক্রমে ৬২ এবং ৩৪ । এ ছাড়া এক প্রকার মলমল (Mulmul) কাপড় তৈরি করা হয় যার প্রতি ইঞ্চিতে টানায় ৭২টি ও পড়েনে ৬০টি ।

তাঁত বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণসমূহ (Causes of loom knocking off) - 
নিম্নলিখিত বিষয়গুলোই তাঁত বন্ধ হয়ে যাওয়ার প্রধান কারণ 
১. ময়লাযুক্ত স্পিন্ডল (Spindle) বা টাকু তাঁত দ্রুত গতিতে চলার সময় এর স্পিন্ডল নোংরা ও উত্তপ্ত হয়ে যায় । যদি সেই স্পিন্ডল পরিষ্কার ও পিচ্ছিল করা না হয় তবে তাঁত বন্ধ হয়ে যেতে পারে । 
২. খারাপ পিকার (Picker) সর্বদা একই পিকার ব্যবহার করার ফলে এর ছিদ্র কিছুটা মোটা হয়ে পড়ে এবং একই জায়গায় পুন পুন আঘাত হওয়ায় এর নিচের অংশের আকার বিনষ্ট হয়ে যায় । কাজেই এটি আর পূর্ণ শক্তি পায় না বলে তাঁত বন্ধ হয়ে যেতে পারে। 
৩. প্রথম পিক (Pick) এ যদি মাকুর শক্তি বেশি হয় তবে এটি মাকু বাক্সের শেষ প্রান্তে আঘাত করে কিছুটা পেছনে সরে পড়ে। ফলে পরবর্তীতে পূর্ণ শক্তি পায় না বলে তাঁত বন্ধ হয়ে যেতে পারে ।
৪. প্রথম পিকে (Pick) মাকুর শক্তি কম হলে এটি মাকু বাক্সের শেষ প্রান্তে পৌঁছাতে পারে না। ফলে পরবর্তী পিক এ তাঁত বন্ধ হয়ে যেতে পারে। 
৫. ত্রুটিযুক্ত কপ (Cop) বা নলি (Pirn) কোনো কোনো সময় মাকুর শক্তি কমিয়ে দেয়। এতে তাঁত বন্ধ হয়ে যেতে পারে। 
৬. নির্ধারিত মুহূর্তের পূর্বে বা পরে মাকু ছোড়া হলে । 
৭. বিভিন্ন আকার ও ওজনের মাকু ব্যবহার করা হলে। 
৮. স্পার পিনিয়ন (Spur pinion) সিথিল হয়ে পড়লে । 
৯. ঢিলা অথবা শক্ত মারটিঙ্গল স্ট্যাপ অথবা চেক স্ট্র্যাপ (Maringle Strap or check strap ) ব্যবহার করলে। 
১০. মাকু বাক্সের ফাঁক কম বা বেশি হলে। 
১১. ক্ষয়যুক্ত সুয়েল (Swell) ব্যবহার করলে। 
১২. ফিংগার ঢিলা অবস্থায় থাকলে । 
১৩. বোস (Boss) সিথিল অবস্থায় থাকলে । 
১৪. চক্র (Circle) সিথিল অবস্থায় থাকলে । 
১৫. কোন (Cone) অথবা কোন স্টাড (Cone stud) সিথিল হয়ে পড়লে । 
১৬. ক্ষয়যুক্ত সিথিল অবস্থায় পিকিং পয়েন্ট (Picking point) ব্যবহার করলে । 
১৭. পিকিং স্ট্র্যাপ (Picking strap) টাইট বা ঢিলা হলে । 
১৮. পিকিং স্ট্যাপ (Picking strap) এর এক অংশ ছিড়ে গেলে । 
১৯. পিকিং আর্ম (Picking Arm) এর গতি সঠিকভাবে নিয়ন্ত্রণ না হলে। 
২০.পিকিং আর্ম (Picking arm) সিথিল হয়ে পড়লে এটি মাকুকে পূর্ণভাবে আঘাত করতে পারে না, ফলে তাঁত বন্ধ হয়ে যেতে পারে।

তাঁত হতে মাকু বের হয়ে যাওয়ার কারণসমূহ (Causes of Shuttle flying out )
 নিম্নলিখিত কয়েকটি কারণের জন্য তাঁত হতে মাকু বাইরে ছুটে যেতে পারে। যার ফলে তাঁতির জীবন বিপন্ন হতে পারে। 
১. শানা ও মাত্তু বাক্স একই সমতল অবস্থায় না থাকলে । 
২. শানার শলাগুলো একই পর্যায়ভুক্ত না থাকলে । 
৩. সেডের (Shed) নিম্ন পাটি, দক্তির (Slay) উপর সমতলে পতিত না থাকলে । 
৪. ক্ষয়যুক্ত পিকার (Picker) ব্যবহার করলে। 
৫. টানা সুতা একটি অপরটির সাথে জড়িত হয়ে পড়লে । 
৬. দক্তির পৃষ্ঠদেশ অসমান থাকলে । 
৭. ত্রুটিযুক্ত ও অনিয়মিত মাকু ছোড়া হলে। 
৮. ত্রুটিযুক্ত কপ (Cop) ব্যবহার করলে।

তাঁত হতে মাকু বের হয়ে যাওয়ার কারণসমূহ (Causes of Shuttle flying out ) 
নিম্নলিখিত কয়েকটি কারণের জন্য তাঁত হতে মাকু বাইরে ছুটে যেতে পারে। যার ফলে তাঁতির জীবন বিপন্ন হতে পারে। 
১. শানা ও মাত্তু বাক্স একই সমতল অবস্থায় না থাকলে । 
২. শানার শলাগুলো একই পর্যায়ভুক্ত না থাকলে । 
৩. সেডের (Shed) নিম্ন পাটি, দক্তির (Slay) উপর সমতলে পতিত না থাকলে । 
৪. ক্ষয়যুক্ত পিকার (Picker) ব্যবহার করলে। 
৫. টানা সুতা একটি অপরটির সাথে জড়িত হয়ে পড়লে । 
৬. দক্তির পৃষ্ঠদেশ অসমান থাকলে । 
৭. ত্রুটিযুক্ত ও অনিয়মিত মাকু ছোড়া হলে। 
৮. ত্রুটিযুক্ত কপ (Cop) ব্যবহার করলে।
৯. সেড তৈরি হওয়ার পূর্বে পিক (Pick) করা হলে । 
১০. কম প্রশস্ত কাপড় অধিক অধিক প্রশস্ত তাঁতে বুনা হলে। 
১১. রিড স্পেস (Reed Space) হতে রিড ছোট হলে । 
১২. পিকিং স্ট্র্যাপ (Picking strap) যথাস্থানে সন্নিবেশিত না হলে 
১৩. টানা সুতা ঢিলা অবস্থায় থাকলে । 
১৪. মাকুর সম্মুখ ভাগ পিছনের ভাগ অপেক্ষা সামান্য উঁচু না হলে । 
১৫. হালকা মাকু ব্যবহার করলে। 
১৬. তাঁত (Loom) সমতলে বসানো না হলে। 
১৭. পিকিং করার সময় পিকার মাকুর একপ্রান্তে অধিক চাপ দিলে । 
১৮. সেড বেশি বা কম হলে। 
১৯. কাপড় বুনার সময় তাঁত নড়াচড়া করলে ।

টানা সুতা ছিড়ে যাওয়ার কারণসমূহ (Causes of warp breakage) 
নিম্নলিখিত কারণসমূহের জন্য টানা সুতা ছিড়ে যেতে পারে। 
১. সঠিকভাবে সেড (Shed) গঠিত না হলে। 
২. টানা সুতার মাড় ঠিকমতো না হলে । 
৩. শানার শলাগুলো মরিচাযুক্ত ও ধারালো না হলে । 
৪. সেড এর নিম্ন পাটি দক্তির উপর সমভাবে পতিত না হলে। 
৫. সেড ঠিকভাবে গঠিত না থাকলে। 
৬. টানার কোন সুতা জড়ানো অবস্থায় থাকলে । 
৭. টানা সুতায় কোন প্রকার গিট (Knot) থাকলে। 
৮. টানার ছিড়া সুতা সময়মতো জোড়া না দিলে । 
৯. পরিমানের চেয়ে সেড বেশি বড় হলে । 
১০. কাপড় বুনার সময় শানা কর্তৃক পড়েন সুতা টেনে কাপড়ের সাথে সংযুক্ত করার সময় দক্তিটি নড়াচড়া করলে। 
১১. টানা সুতায় পাক কম থাকলে । 
১২. তাঁত ঠিকমতো বসানো না হলে। 
১৩. বিমে সুতা জড়ানোর সময় টানা সুতা সমান টান অবস্থায় না থাকলে। 
১৪. লেট অফ মোশন (Let off motion) ঠিকমতো পরিচালিত না হলে । 
১৫. টানা সুতার শক্তি কম থাকলে ।

কাপড়ের পাড় খারাপ হওয়ার কারণসমূহ (Causes of Bad selvedge) 
নিম্নলিখিত কারণসমূহের জন্য কাপড়ের পাড় (Selvedge) খারাপ হতে পারে ।
১. পড়েন সুতায় বেশি টান পড়লে । 
২. কাপড় বুননের সময় কাপড়কে রিড (Reed) এবং প্রস্থ (Width) এর সাথে সমান বিস্তৃত না হলে । 
৩. পাড়ে সুতা কম শক্ত বা নরম হলে। 
৪. পাড়ের সুতা ঝাঁপ (Heald shaft) অথবা রিড-এ সঠিকভাবে ভরা না হলে । 
৫. পাড়ের সুতা কম বা পাতলা থাকলে । 
৬. পাড়ের সুতা বেশি লুজ (Loose) অথবা অতিরিক্ত টাইট (tight) থাকলে। 
৭. উইভারস বিম হুইল বেঁকে গেলে । 
৮. রিড (Reed) শক্ত ভাবে আটকানো না থাকলে । 
৯. পড়েন সুতা মাকু বাক্সে আটকে গেলে। 
১০. টানা ও পড়েন সুতার সাথে সামঞ্জস্য না থাকলে । 
১১. সেডের গঠন সঠিক না হলে অর্থাৎ সেড গঠন অসমান হলে । 
১২. বিমে সুতা ঠিকমতো জড়ানো না থাকলে । 
১৩. পড়েন সুতায় য়ার্ন থাকলে ।

মাকু সেডে আটকে যাওয়ার কারণ (Causes of shuttle trapped in the shed) 
চলন্ত তাঁতের সেডে মাকু নিম্নলিখিত কারণে আটকে যেতে পারে। যেমন- 
১. দেরিতে পিক দেওয়ার জন্য। 
২. টাইমিং ভুল হলে অথবা অতি ধীরে মাকু বাক্সে শাটল চলাচল করলে। 
৩. পিক দেওয়ার সময় মাকু বাক্স স্থির অবস্থায় না থাকলে । 
৪. স্টপ রড ফিঙ্গার (Stop rod finger) পিছলে পিছনে আসলে 
৫. সাটেল চেকিং (Shuttle checking) এ ভুল থাকলে । 
৬. গাইড পেট (Guide plate) ঢিলা থাকলে। 
৭. সুয়েল স্প্রিং (Swell spring) ভেঙ্গে গেলে । 
৮. মাকু উল্টে গেলে। 
৯. টানা সুতা ছিড়ে গেলে । 
১০. ঝাঁপ এর উঠানামা অনিয়মিত হলে । 
১১. টানা সুতা ছিড়ে জড়িয়ে গেলে । 
১২. রিড খুব জোরে পড়েন সুতাকে ধাক্কা দিয়ে টানা সুতাকে ছিঁড়ে ফেললে । 
১৩. টেপেট লুমের ক্ষেত্রে টেপেট ঠিকমতো তৈরি না হলে । 
১৪. পিক অসম্পন্ন হলে। 
১৫. ক্লথ বিমে সুতার টান কম হলে ।

স্বয়ংক্রিয় তাঁতে বয়নের উপযোগী কাপড়ের নাম 
নিম্নে কয়েকটি কাপড়ের বাণিজ্যিক নাম দেওয়া হলো- 
১. ডেনিম 
২. ড্রিল 
৩. জিন 
৪. গ্যাবার্ডিন 
৫. স্ট্রাইপ কাপড় 
৬. চেক কাপড় ইত্যাদি।

স্বয়ংক্রিয় তাঁতের নিম্নলিখিত বৈশিষ্ট্য রয়েছে- 
০ এতে স্বয়ংক্রিয়ভাবে পড়েন পরিবর্তনের ব্যবস্থা রয়েছে। 
০ ওয়ার্প স্টপ মোশন রয়েছে। 
O ওয়েফট স্টপ মোশন রয়েছে। 
০ পজিটিভ ও স্বয়ংক্রিয় লেট অফ মোশন রয়েছে। 
O তাঁতের গতি তুলনামূলক কম। 
০ উৎপাদন দক্ষতা বেশি । 
০ উৎপাদন খরচ কম । 
O একজন তাঁতি একসংগে অধিক সংখ্যক তাঁত চালনা করতে পারেন ।

উপরোক্ত মোশনগুলো থাকার কারণে কাপড় ত্রুটিমুক্ত হয়। তাঁত বন্ধ না করে পড়েন পবির্তন করা সম্ভব বলে পড়েনে বিভিন্ন রং এর সুতা ব্যবহার করা, স্ট্রাইপ, চেক কাপড় তৈরি করা সম্ভব। উন্নতমানের কাপড় অর্থাৎ রপ্তানি উপযোগী কাপড় তৈরি করা সম্ভব হয়।

কাপড়ের বিভিন্ন ত্রুটি, তার কারণ ও প্রতিকার

ক) টানা বরাবর ত্রুটি (Warp way defects) 
১. ওয়ার্প স্টিচিং (Warp stiching ) 
২. লং ফুট (Long float) 
৩. টানা বাদ পড়া (Missing warp ) 
৪. দ্বৈত টানা (Double warp) 
৫. রিড মার্ক (Reed mark) 
৬. টানা সুতার গিট (Knot in the warp) 
৭. টাইট ওয়ার্স (Tight warp) 
৮. টিলা ওয়ার্স (Slack warp )
৯. ওয়ার্প স্ট্রিক (Warp streak ) 
১০. পাড় প্রভাব (Selvedge effect ) 
১১. ঢেউ খেলানো পাড় (Curly or wavy selvedge) 
১২. কর্ডেড পাড় (Corded selvedge ) 
১৩. পাড়ে ভাঙ্গা পড়েন (Weft breaks) 
১৪. লুপ বিশিষ্ট পাড় (Loop in the selvedge) 
১৫. টেম্পলের দাগ (Temple marks)

খ) পড়েন বরাবর ত্রুটি (Weft way defects)- 
১. মিস পিক বা ব্রোকেন পিক (Miss pick or broken pick) 
২. ব্রোকেন প্যাটার্ন (Broken patern 
৩. থিক এন্ড থিন প্রেস (Thick and Thin place ) 
৪. শাটেল মার্ক (Shuttle mark) 
৫. ওয়েফট কার্ল (Weft Curls ) 
৬. তির্যক পড়েন (Weft sew) 
৭. টাইট পড়েন (Tight weft) 
৮. ব্যাক ল্যাশিং বা ল্যাশিং ইন (Back lashing or lashing in) 
৯. স্টার্টিং মার্ক (Starting mark) 
১০. ক্র্যাকস (Cracks) 
১১. টিয়ার ড্রপ (Tear drops ) 
১২. গোট (Goat) 
১৩. ব্লাক পিকস (Black picks ) 
১৪. ফিঙ্গার মার্কস (Finger marks) 
১৫. বো ইফেক্ট (Bow effects) 
১৬. নট ইন দ্যা ওয়েফট (Knot in the weft) 
১৭. ক্যাচ নট (Catch knot)

গ) টানা ও পড়েন উভয় বরাবর ত্রুটি- 
১. ক্লাউডি বা অসমান কাপড় (Cloudy or uneven cloth ) 
২. তেলের দাগ (Oil or grease spot) 
৩. হোলস ইন দ্যা ক্লথ (Holes in the cloths) 
৪. ওয়েভি রুথ (Wavy cloth ) 
৫. রাস্ট ইন ফ্যাব্রিক (Rust in Fabric ) 
৬. ডার্টি ক্লথ (Diry cloth ) 
৭. হেয়ারি ফেব্রিক (Hairy fabric) 
৮. অমসৃণ কাপড় (Rough surface) 

ঘ) নিটিং এর ত্রুটিসমূহ - 
১. ব্রোকেন এন্ড বা হোলস (Broken ends or holes ) 
২. ড্রপ স্টিচ (Drop stich) 
৩. ক্লথ ফল আউট (Cloth fall out) 
8. স্লাগিং (Slagging) 
৫. টাক বা ডাবল স্টিচ (Tuck or double stitch) 
৬. বাঞ্চিং আপ (Bunching up 
৭. ভার্টিক্যাল স্ট্রাইপ (Vertical stripes) 
৮. আনুভূমিক স্ট্রাইপ (Horizontal stripes) 
৯. কালার ফ্রাই (Color fly) 
১০. ডিসটরটেট স্টিচ (Distortet stitch) 

ত্রুটিসমূহের কারণ ও প্রতিকার- 
ওয়ার্প স্টিচিং (Warp stitching)- 
টানা ও পড়েন সুতার মধ্যে বন্ধনী না থাকা। 

কারণসমূহ -
০ এক সেডের সুতা অন্য সেড়ে চলে যাওয়া ।
০ ডবির ক্ষেত্রে পেপ ভাঙ্গা থাকলে । 
০ টানা সুতা ঢিলা থাকলে । 
০ জ্যাকার্ডের ক্ষেত্রে হার্নেস কর্ডের দৈর্ঘ্য অসমান হলে ।

প্রতিকারসমূহ
• ড্রাফটিং বা ড্রইং ইন করার সময় সাবধানে করতে হবে যাতে এক সেডের সুতা অন্য সেড়ে চলে না যায় । 
• ভাঙ্গা পেগ পরিবর্তন করে নতুন পেগ লাগাতে হবে ।
• টানা সুতা ঢিলা থাকলে তা টাইট করতে হবে ।  
• জ্যাকার্ডের ক্ষেত্রে হার্নেস কর্ডের দৈর্ঘ্য সমান রাখতে হবে। 

লং ফুট (Long float) - 
টানা সুতা পড়েন সুতার সাথে বন্ধনীতে অংশগ্রহণ না করে কাপড়ের উপর বা নিচের পৃষ্ঠদেশে লম্বালম্বি ভেসে থাকে । 

কারণসমূহ- 
০ হুমে ট্যাপেট ঠিকমতো বাঁধা না হলে । 
০ ডবির পেগ প্লান সঠিক না থাকলে অথবা পেগ ভাঙ্গা থাকলে। 
০ জ্যাকার্ডের ক্ষেত্রে কার্ড কাটিং এ ত্রুটি থাকলে । 

প্রতিকারসমূহ- 
o লুমে ট্যাপেট সঠিকভাবে বাঁধতে হবে। 
• ডবি লুমের পেগ প্লান সঠিক করতে হবে এবং ভাঙ্গা পেগ পরিবর্তন করতে হবে। 
০ কার্ড কাটিং এ কোন ভুল করা চলবে না । ভুল কার্ডটি পরিবর্তন করে সঠিক ছিদ্রযুক্ত কার্ড লাগাতে হবে। 

টানা বাদ পড়া (Missing warp)- 
কাপড় তৈরিতে কোন একটি টানা সুতা বাদ পাড়া । 

কারণসমূহ - 
০ ডেন্টিং এ ভুল হলে । 
• টানা বিমে টানা সুতা ছেড়া থাকলে। 
০ ওয়ার্প স্টপ মোশন সঠিকভাবে কাজ না করলে। 

প্রতিকারসমূহ - 
০ ডেন্টিং সঠিক করতে হবে। 
০ টানা বিমে টানা সুতা ছেড়া থাকলে তা জোড়া দিয়ে উৎপাদন করতে হবে। 
০ ওয়ার্স স্টপ মোশন সঠিকভাবে কাজ করছে কিনা তা পরীক্ষা করে সঠিক রাখতে হবে। 

দ্বৈত টানা (Double warp)- 
কাপড়ের একই স্থানে একটির স্থলে দুইটি টানা সুতা থাকা ।

কারণসমূহ- 
• একটি মেইল আই এর ভিতর দিয়ে দুইটি টানা সুতা অতিক্রম করলে। 

প্রতিকার সমূহ- 
o ড্রইং ইন সাবধানতার সাথে করতে হবে। একটি মেইল আই এর মধ্যে দিয়ে একটি টানা সুতা অতিক্রম করাতে হবে। 

রিড মার্ক (Reed mark) - 
কাপড়ের টানা বরাবরে দৃশ্যমান কোন দাগের সৃষ্টি হওয়াকে রিড মার্ক বলে । 

কারণসমূহ - 
• চিকন সুতা দ্বারা কাপড় তৈরির সময় পাতলা রিড ব্যবহার করলে । 
• রিডের ফাঁকের মধ্যে খুব বেশি অথবা কম সংখ্যক সুতা থাকলে । 

প্রতিকারসমূহ 
০ সঠিক রিড ব্যবহার করতে হবে। 
০ রিডের ফাঁকের মধ্যে প্রয়োজনানুযায়ী সুতা ব্যবহার করতে হবে । 

টানা সুতার গিট (Knot in the warp)- 
টানা সুতায় লম্বা গিট থাকলে এ ধরনের ত্রুটি দেখা যায়। 

কারণসমূহ- 
০ ওয়ার্সিং- এর সময় শ্রমিকের অবহেলার কারণে টানা সুতায় লম্বা গিট দেওয়া হয় । 

প্রতিকারসমূহ- 
• টানা সুতায় গিট প্রদান করার সময় সতর্ক থাকতে হবে। 

টাইট ওয়ার্প (tight warp)- 
টানা সুতায় অত্যধিক টেনশন থাকলে এ ধরনের ত্রুটি দেখা যায়। 

কারণসমূহ- 
o ত্রুটিযুক্ত ওয়াপিং এর কারণে টানা সুতায় অত্যধিক টেনশনে ওয়াপিং করা হলে । 

প্রতিকারসমূহ - 
০ ওয়াপিং-এর সময় সতর্ক থাকতে হবে যাতে কোন টানা সুতায় অতিরিক্ত টেনশন প্রদান করা না হয় । 

ঢিলা ওয়ার্স (Slack warp) - 
বিমে দুই একটি টানা সুতা ঢিলা বা লুজ অবস্থায় থাকলে এ ধরনের ত্রুটি দেখা যায় ।

কারণসমূহ 
০ ওয়ার্কিং-এর ত্রুটির কারণে দুই একটি সুতা ঢিলা থাকে । 
০ ড্রপার পিনে টানা সুতা ক্রস হলে। 

প্রতিকার সমূহ- 
০ ওয়ার্সিং করার সময় সতর্ক থাকতে হবে। 
০ ড্রপার পিনে টানা সুতা ক্রস করা যাবে না । 

ওয়ার্শ স্ট্রিক (Warp streak ) - 
এ ধরনের ত্রুটির জন্য কাপড় ডোরা কাটা দেখা যায় । 

কারণসমূহ- 
০ অসম সুতা ও ওয়ার্গ-এর প্রস্তুতি ভুল হলে । 

প্রতিকারসমূহ- 
সুষম সুতা ব্যবহার করতে হবে এবং ওয়ার্প প্রিপারেশনে সতর্ক থাকতে হবে। 

পাড় প্রভাব (Selvedge effect ) 
ঢেউ খেলানো পাড় (Curly or wavy selvedge) 
কাপড়ের পাড় সোজা না হয়ে ঢেউ খেলানো হয় । 

কারণসমূহ 
০ কাপড়ের জমিন ও পাড়ের সুতায় টান অসমান হলে । 
০ খুব বেশি রিড স্পেসের লুমে কম বহরের কাপড় তৈরি করলে । 
০ টেম্পল খুব শক্ত হলে । 

প্রতিকারসমূহ 
০ কাপড়ের জমিন ও পাড়ের সুতার টান বা টেনশন সমান রাখতে হবে। 
০ বেশি রিড স্পেসের লুমে কম বহরের কাপড় তৈরি করা যাবে না। 
০ টেম্পল লুজ রাখতে হবে । কর্ডেড পায় (Corded selvedge) 

কারণসমূহ 
০ কাপড়ের পাড়ে ডেন্টিং অসমান হলে । 
o বেশি চওড়া লুমে কম গ্রন্থের কাপড় বুনন করলে।

প্রতিকারসমূহ
০ পাড়ে ডেন্টিং সুষম করতে হবে।
o বেশি চওড়া লুমে কম গ্রন্থের কাপড় প্রস্তুত করা ঠিক নয়। 

পাড়ে ভাঙ্গা পড়েন (Weft breaks) 
কাপড়ের পাড়ের মধ্যে পড়েন সুতা কাটা থাকে । 

কারণসমূহ 
০ টেম্পল ত্রুটিযুক্ত হলে এবং টেম্পলের সেটিং সঠিক না হলে। 
০ পড়েন সুতার ঘনত্ব অত্যধিক হওয়ায় সঠিক পিনিং না হলে। 

প্রতিকারসমূহ 
০ টেম্পলকে ত্রুটিমুক্ত করতে হবে এবং সঠিক সেটিং করতে হবে 
০ পড়েন সুতার ঘনত্ব কমাতে হবে । 

লুপ বিশিষ্ট পাড় (Loop in the selvedge) 
উৎপাদিত কাপড়ের পাড়ে লুপ তৈরি হওয়াকে লুপ বিশিষ্ট পাড় বলে। 

কারণসমূহ 
০ পার্নে সুতা জড়ানোর সময় সঠিক টেম্পল না হলে । 
০ শাটেল বক্সে যেন প্রতিক্ষেপণের কারণে। 

প্রতিকারসমূহ 
o পার্নে সুতা জড়ানোর সময় সঠিক টেম্পল রাখতে হবে। 
০ শাটেল বক্সে শাটেল যাতে প্রতিক্ষেপণ না করে তার ব্যবস্থা করতে হবে।

টেম্পলের দাগ (Temple marks) 
কাপড়ের পাড়ে ছোট ছোট ছিদ্র ধারাবাহিকভাবে দেখা যায়। । 

কারণসমূহ 
০ পাতলা কাপড়ের ক্ষেত্রে মোটা টেম্পল ব্যবহার করলে। 
০ টেম্পলের মধ্যে জ্যাম থাকলে । 

প্রতিকারসমূহ 
০ সঠিক কাপড়ের জন্য সঠিক টেম্পল ব্যবহার করতে হবে। 
০ টেম্পলের মধ্যে জ্যাম ঢিলা করতে হবে।

খ) পড়েন বরাবর ত্রুটি (Weft way defects) 
১) মিস পিক বা ব্রোকেন পিক (Miss pick or broken pick) 
কাপড়ের প্রস্থ বরাবর পড়েন সুতা অনুপস্থিত থাকলে । 

কারণসমূহ 
০ পড়েন সুতা ছিড়ে গেলে বা পার্নের সুতা শেষ হয়ে গেলে ওয়েফট স্টপ মোশন যদি কাজ না করে । 
০ মাঝপথে শাটেলের সুতা শেষ হয়ে গেলে । 

প্রতিকারসমূহ 
০ ওয়েফট স্টপ মোশন যেন সঠিকভাবে কাজ করে তার ব্যবস্থা করতে হবে। 
০ শাটেলের সুতা শেষ হয়ে যাওয়ার পূর্বেই সুতাযুক্ত পরিবর্তন করে নিতে হবে। 

২) ব্রোকেন প্যাটার্ন (Broken patern) 
কাপড়ের মধ্যে তৈরিকৃত প্যাটার্ন সম্পূর্ণ না হলে । 

কারণ 
লিফটিং যদি ত্রুটিযুক্ত হয় । 

প্রতিকার 
সঠিক লিফটিং- এর ব্যবস্থা করতে হবে। 

৩) থিক এন্ড জ্বিন প্লেস ( Thick and thin place ) 
কাপড়ের কোথাও ঘন আবার কোথাও পাতলা হওয়া। এ ত্রুটিকে বার ইফেক্টও বলে।

কারণ 
লেট-অফ ও টেক-আপ এর কোন সমন্বয় না থাকলে। 

প্রতিকার 
লেট অফ ও টেক আপ এর সাথে সমন্বয় করতে হবে। 

৪) শাটেল মার্ক (Shuttle mark) 
কাপড়ের মাঝে টানা সুতার উপর পড়েন সুতার সমান্তরালে কিছু দাগ পাওয়া যায় যাকে শাটল মার্ক বলে । 

কারণ 
শাটেল যাওয়ার সময় টানা সুতার উপর ঘর্ষণের ফলে এ দাগ সৃষ্টি হয় । 

প্রতিকার 
০ শাটেল বক্সের সেটিং সঠিক করতে হবে। 
০ টানা সুতার উপর টান সঠিক রাখতে হবে। 

৫) ওয়েফট কার্ল (Weft Curls) 
কাপড়ের মধ্যে পড়েন সুতা কোকড়ানো থাকা।

কারণ 
o শাটেল বক্স এবং কাপড়ের মধ্যে দূরত্ব বেশি হলে । 
০ পড়েন সুতায় অতিরিক্ত পাক থাকলে । 

প্রতিকার 
০ শাটেল বক্স এবং কাপড়ের মধ্যে দূরত্ব কমাতে হবে । 
০ পড়েন সুতায় অতিরিক্ত পাক প্রদান থেকে বিরত থাকতে হবে। 

৬) তির্যক পড়েন (Weft sew ) 
টুইল কাপড়ে পড়েন সুভা স্বাভাবিক অবস্থায় না থেকে তির্যক অবস্থায় থাকলে । 

কারণ- 
o টানা সুতার টান বেশি হলে । 
০ পড়েন সুতায় অতিরিক্ত পাক থাকলে । 

প্রতিকার- 
০ টানা সুতার টান কমাতে হবে। 
০ পড়েন সুতায় অতিরিক্ত পাক কমাতে হবে। 

৭) টাইট পড়েন (Tight weft)- 
কাপড়ের মধ্যে পড়েন সুতা অতিরিক্ত সোজা থাকলে । 

কারণ- 
পান অথবা কপ যদি শক্ত হয়। প্রতিকার পার্ন অথবা কপ স্বাভাবিক টেনশনে জড়াতে হবে। 

৮) ব্যাক ল্যাশিং বা ল্যাশিং ইন (Back lashing or lashing in ) - 
কাপড়ের পাড় থেকে পড়েন সুতা বের হয়ে থাকা। 

কারণ- 
পার্ন পরির্তিত মেকানিজমের ক্ষেত্রে এ রকম হতে পারে। 

প্রতিকার- 
ইন্সপেকশনের সময় উৎপাদিত কাপড় থেকে বের হয়ে থাকা পড়েন সুতা কেটে ফেলতে হবে । 

৯) স্টার্টিং মার্ক (Starting mark) - 
তাঁত বা লুম উৎপাদন করার সাথে সাথে উৎপাদিত কাপড়ের স্থানে পিকস এর ঘনত্ব বেশি থাকা। এই অংশকে স্টার্টিং মার্ক বলে ।

১০) ক্র্যাকস (Cracks) - 
উৎপাদিত কাপড়ের ফাঁকা স্থানকে ক্র্যাক বলে । 

কারণ- 
লেট-অফ ও টেক-আপ মেকানিজমে ত্রুটি থাকলে । 

প্রতিকার- 
লেট-অফ ও টেক-আপ মেকানিজমে ত্রুটি মেরামত করতে হবে। 

১১) টিয়ার ড্রপ (Tear drops) - 
টানা সুতা একটি আর একটির উপর উঠে গেলে টিয়ার ড্রপের সৃষ্টি হয়। 

কারণ- 
ত্রুটিপূর্ণ সাইজিং-এর জন্য । 

প্রতিকার- 
যথাযথভাবে সাইজিং করতে হবে। 

১২) গোট (Goat)- 
বাইরের কোন ময়লা আবর্জনা উইভিং-এর সময় সুতার সেডের মধ্যে ঢুকে গেলে এ ধরনের ত্রুটি দেখা দেয় । 

১৩) ব্লাক পিকস (Black picks ) - 
পার্নের সুতায় তেল বা কালির দাগ থাকলে এ ধরনের ত্রুটি দেখা যায়। 

গ) টানা ও পড়েন উভয় বরাবর ত্রুটি- 
১। ক্লাউডি বা অসমান কাপড় (Cloudy or uneven cloth ) - 
কাপড়ের মধ্যে বিভিন্ন প্রকার ত্রুটিযুক্ত টানা ও পড়েন সুতা ব্যবহার করার কারণে এ ধরনের ত্রুটি হয় । 

কারণ- 
o ত্রুটিযুক্ত টানা ও পড়েন সুতা ব্যবহার করলে। । 
০ টেক আপ ও লেট অফ অসমভাবে হলে 

প্রতিকার- 
০ ত্রুটিমুক্ত টানা ও পড়েন সুতা ব্যবহার করতে হবে। 
০ টেক-আপ ও লেট-অফ সুষমভাবে হতে হবে। 

২। তৈলের দাগ (Oil or grease spot) - 
তাঁতির ও শ্রমিকের অসতর্কতার কারণে কাপড়ের মধ্যে তৈল বা গ্রিজ ও অন্যান্য ময়লার দাগ পড়ে ।

৩। কাপড়ের মধ্যে ছিদ্র (Holes in the cloths) - 
মাঝে মাঝে কাপড়ের মধ্যে ছোট ছোট ছিদ্র বা কাটা দাগ দেখা যায়। এটি টেম্পলের জন্যও হতে পারে। অথবা কোন যন্ত্রাংশের সাথে লেগে ছিদ্র হতে পারে। 

৪। ওয়েভি ক্লথ (Wavy cloth ) - 
টানা সুতায় টান অসমান হলে এ ধরনের ত্রুটি দেখা যায়। 

৫। রাস্ট ইন ফ্যাব্রিক (Rust in Fabric)- 
ব্যবহার কাপড় বা সুতা যদি দীর্ঘ সময় ধরে ধাতব পদার্থের সংস্পর্শে থাকে, তাহলে এতে মরিচা পড়ে যা কাপড় তৈরি করার পর পরিলক্ষিত হয়। 

৬। ডার্টি ক্লথ (Dirty cloth ) - 
অপরেটরের অসতর্কতার কারণে বা লুমের রক্ষণাবেক্ষণ ঠিকমতো না হলে কাপড়ের পৃষ্ঠে বিভিন্ন ধরনের ময়লা জমে কাপড় নোংরা হয়। 

৭। হেয়ারি ফেব্রিক (Hairy fabric) - 
কাপড় উইভিং করার সময় ব্যবহার সুভাগুলোতে যদি খুব দ্রুত ঘর্ষণ হয় তবে তারা আঁশযুক্ত হয়ে থাকে। ডেপথ অব শেড কম হওয়ার কারণে এ ধরনের ত্রুটি দেখা যায়। 
৮। অমসৃণ কাপড় (Rough surface) 
কতগুলো কাপড় আছে যাদের বৈশিষ্ট্য অমসৃণ। এগুলো ইচ্ছাকৃতভাবে তৈরি করা হয়। যেমন- হানিকম্ব, হুকাব্যাক, ইত্যাদি । যখন কাপড় তৈরি করার সময় টানা সুতার টান অসমান বা কমবেশি হয় তাহলে এ ধরনের ত্রুটি দেখা যায়।

Content added || updated By

অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন
১. কাপড়ের সংজ্ঞা দাও । 
২. কাপড়ের দুইটি বাণিজ্যিক নাম লেখ । 
৩. কাপড়ের যে কোনো দুইটি ত্রুটি লেখ। 
৪. পড়েন বরাবর কাপড়ের যে কোন দুইটি ত্রুটির নাম লেখ । 
৫. রিড মার্ক ত্রুটি কী? 

সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন 
১. কাপড়ের সাধারণ বৈশিষ্ট্য লেখ। 
২. মধ্যম মানের কাপড়ের বৈশিষ্ট্য লেখ। 
৩. কাপড়ের পাড় খারাপ হওয়ার কারসমূহ লেখ। 
৪. মাকু সেডে আটকে যাওয়ার কারণসমূহ লেখ । 
৫. কাপড়ের কয়েকটি বাণিজ্যিক নাম লেখ । 
৬. কাপড়ের যে কোন ৪টি ত্রুটির নাম লেখ । 
৭. নিটিং কাপড়ের যে কোন ৪টি ত্রুটির নাম লেখ । 

রচনামূলক প্রশ্ন 
১. তাঁত বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণসমূহ লেখ । 
২. তাঁত হতে মাকু বের হয়ে যাওয়ার কারণসমূহ লেখ । 
৩. কাপড়ের ১০টি ত্রুটির নাম, কারণ ও প্রতিকার লেখ। 
৪. টানা ও সুতা ছেড়ার কারণসমূহ লেখ । 
৫. টানা ও পড়েন উভয় বরাবর ত্রুটিগুলোর নাম, কারণ ও তার প্রতিকার লেখ।

Content added || updated By

প্লেইন উইভ (Plain weave) 
সবচেয়ে সহজ ও সরল উইভ বা ডিজাইন । যে কোন সংখ্যক টানা সুতায় পর্যায়ক্রমে জোড় ও বেজোড় সংখ্যক সুতাকে উপরে উঠিয়ে ও নিচে নামিয়ে প্লেইন উইভ তৈরি করা সম্ভব । এই ডিজাইনের ক্ষেত্রে সবচেয়ে সূক্ষ্ণ টানা ও পড়েন সুতার প্রয়োজন হয় । মাত্র দুইটি টানা সুতা ও দুইটি পড়েন সুতার মাধ্যমে একটি রিপিট গঠিত হয় । প্লেইন উইভের ক্ষুদ্রতম ডিজাইন হলো ২x২ ।

প্লেইন উইভের ডেরিভেটিসসমূহ (Derivatives of Plain weave) 
প্লেইন উইভের ডেরিভেটিসসমূহ নিম্নরূপ 
১. ওয়ার্প রিব (Warp rib ) 
২. ওয়েফট রিব (Weft rib ) 
৩. ম্যাট (Matt) 
8. রেপ (Repp ) 
৫. ইমিটেশন রেপ (Immitation repp) 

১. ওয়ার্প রিব (Warp rib ) 
ওয়ার্প এ মিহি সুতা এবং ওয়েফট এ মোটা সুতা অথবা একই সেডের মধ্যে দুই বা দুই এর অধিক পিক ব্যবহার করে পড়েন বরাবর রিব প্রদর্শন করাই হলো ওয়ার্প রিব ক্লথ । এখানে কাপড়ের একক দৈর্ঘ্যে পড়েন সুতার সংখ্যার চেয়ে টানা সুতার সংখ্যা বেশি থাকে ।

 ওয়ার্প রিব এর বৈশিষ্ট্য (Characteristics of Warp rib ) 
০ এটি একটি প্লেইন ক্লথ এবং ড্রাফটিং লিফটিং প্লান হুবহু প্লেইন উইভ এর ন্যায়। 
০ ওয়ার্প-এ মিহি সুতা ও ওয়েফট-এ মোটা সুতা থাকে । 
o দুই বা দুইয়ের অধিক পড়েন সুতা একটি পড়েন সুতার মতো ব্যবহার হয় । 
o সাধারণত একটি পড়েনের দিকে রিব প্রদর্শন করে । 
০ ইঞ্চি প্রতি টানার সুতার সংখ্যা পড়েন সুতার সংখ্যার চেয়ে বেশি। 
o টানা ও পড়েন এ একই কাউন্টের সুতা ব্যবহার করা যায়। যদি একক পরিসরে এই টানার সংখ্যা পড়েনের সংখ্যার তুলনায় বেশি হয় । 
o সাধারণত ওয়ার্প ফেইস কন্সট্রাকশন নির্দেশ করে। 

ওয়ার্প রিব দুই প্রকার। যথা- 
ক) রেগুলার ওয়ার্প রিব 
খ) ইরেগুলার ওয়ার্প রিব

ক) রেগুলার ওয়ার্প রিব
প্রতি পিকে সমান সংখ্যক পড়েন সুতা প্রবেশ করিয়ে যে আনুভূমিক রিব গঠন করা হয় তাকে রেগুলার ওয়ার্স রিব বলে। রিবগুলো একই আকারের হয়ে থাকে।

ব্যবহার
পপলিনস, পলিনেটস এবং বিভিন্ন প্রকার গ্রস গ্রেইন ক্লথ । 

২. ওয়েফট রিব (Weft rib ) 
পড়েনে মিহি সুতা এবং টানায় মোটা সুতা অথবা একাধিক টানা সুতা একত্রে একটি টানা সুতা হিসেবে সুভার সাথে বন্ধনীতে অংশ গ্রহণ করে উলম্বভাবে রিব প্রদর্শন করে, তাকে ওয়েফ রিব বলে । এখানে কাপড়ের একক দৈর্ঘ্যের পড়েন সুতার সংখ্যার চেয়ে টানা সুতার সংখ্যা কম থাকে ।

ওয়েফট রিব এর বৈশিষ্ট্য (Characteristics of Weft rib ) 
০ এটি একটি প্লেইন ক্লথ এবং ড্রাফটিং প্লান হুবহু পেইন উইন্ডের ন্যায় । 
০ পড়েনে মিহি সুতা এবং টানায় মোটা সুতা থাকে । 
০ দুই বা দুই এর অধিক টানা সুতা একটি টানা সুতার মতো ব্যবহার করে । 
০ সাধারণত এটি টানার দিকে রিব প্রদর্শন করে । 
০ ইঞ্চি প্রতি পড়েন সুতার সংখ্যা টানা সুতার সংখ্যার চেয়ে বেশি। 
০ পড়েন ও টানায় একই কাউন্টের সুতা ব্যবহার করা যায়, যদি প্রতি ইঞ্চিতে পিকস এর সংখ্যা ইঞ্চি প্রতি টানা সুতার সংখ্যার চেয়ে বেশি থাকে। 
০ এটি সাধারণত ওয়েফট ফেইস রিব প্রদর্শণ করে।

ওয়েফট রিব দুই প্রকার। যথা- 
ক) রেগুলার ওয়েফট রিব। 
খ) ইরেগুলার ওয়েফট রিব। 

ক) রেগুলার ওয়েট রিব 
সমান সংখ্যক টানা সুতাকে একটি সুতা হিসেবে ব্যবহার করে যে উলম্ব রিব গঠন করা হয় তাকে রেগুলার ওয়েফট রিব বলে। রিবগুলো একই আকারের হয়ে থাকে।


রিব কাপড়ের ব্যবহার 
০ ফনিসিং ক্লথ 
০ ফ্লোর ম্যাট 
০ কম্বল ইত্যাদি । 
০ কখনও কখনও বিভিন্ন ধরনের পোশাক হিসেবে ব্যবহার করা হয়। 

৩। ম্যাট / হপস্যাক উইভ (Matt / Hopsack weave) 
টানা ও পড়েনকে উভয় দিকে প্রসারিত করে প্লেইন উইভের ন্যায় ম্যাট উইভ গঠন করা হয়। দুই বা তার অধিক টানা সুতা ওয়েফট রিবের একটি সুতা হিসেবে কাজ করে এবং অনুরূপ দুই বা ততোধিক পড়েন সুতা ওয়ার্স রিবের ন্যায় একটি সুতা হিসেবে কাজ করে প্লেইন উইভ গঠন করে । এটিই ম্যাট উইভ। এক কথায় বলা যায়, ওয়ার্স ও ওয়েফট রিবের মিশ্রণই ম্যাট উইভ। 

ম্যাট উইভের বৈশিষ্ট্য (Characteristics of Matt weave) 
০ এটি একটি প্লেইন ক্লথ, ড্রাফটিং, লিফটিং ও হুবহু প্লেইন উইভের ন্যায় । 
০ অনুভূমিক ও উল্লম্ব উভয় দিকেই দুই বা ততোধিক টানা ও পড়েন সুতা একই রকম কাজ করলে ম্যাট উইভ প্রস্তুত হয়। 
o ম্যাট এর অপর নাম Basket, Hopsack, Dice, Duck 
০ সবচেয়ে ছোট ম্যাট ২x২। এটি খুবই মজবুত। সবচেয়ে ছোট ডিজাইন ৪X৪। 
০ এটি ওয়ার্প ও ওয়েফট রিবের মিশ্রণ । 
০ পৃষ্ঠদেশ খুবই মসৃন এবং দৃঢ়, এটিই এর প্রধান বৈশিষ্ট্য।

ম্যাট উইভের শ্রেণি বিভাগ (Classification of Matt weave) 
ম্যাট উইভকে চারভাগে ভাগ করা যায়। যথা- 
ক) রেগুলার ম্যাট (Regular matt) 
খ) ইরেগুলার ম্যাট (Irregular matt) 
গ) স্টিচড ম্যাট (Stiched matt) 
ঘ) ফ্যান্সি ম্যাট (Fancy matt) অথবা ভ্যারিগেটেড ম্যাট (Variegated matt) 

ক) রেগুলার ম্যাট (Regular matt) 
সমান সংখ্যক টানা ও পড়েন সুতা দ্বারা এবং টানা ও পড়েনে একই কাউন্টের সুতা দ্বারা প্রস্তুতকৃত উইভ যার উভয় পার্শ্বে একই রকম ডিজাইন পরিলক্ষিত হয় তাই রেগুলার ম্যাট। এক কথায় বলা যায়- রেগুলার ওয়ার্স রিব ও ওয়েট রিব এর মিশ্রণের ফলে রেগুলার ম্যাট গঠিত হয় ।

খ) ইরেগুলার ম্যাট (Irregular matt) 
যে ম্যাট উইভে টানা ও পড়েন ভাসা ভিন্ন ভিন্ন হয়ে থাকে তাদেরকে ইরেগুলার ম্যাট বলে। অর্থাৎ ইরেগুলার ওয়ার্প ও ওয়েফট রিব দ্বারা ইরেগুলার ম্যাট উইভ গঠিত হয় । উদাহরণ

ফ্যান্সি ম্যাট (Fancy matt) অথবা ড্যারিগেটেড ফ্যাট (Variegated matt) এর বৈশিষ্ট্য 
০ টানা ও পড়েন অসম গ্রুপের সুতা দ্বারা যে ম্যাট গঠিত হয় উহা ভ্যারিগেটেড ম্যাট। 
০ এটি ওয়ার্প এর দিকে অথবা ওয়েফট এর দিকে অথবা উভয় দিকেই হতে পারে। 
০ কমপক্ষে চারটি ঝাঁপ ব্যবহার হয় । 

ব্যবহার 
ফার্নিসিং রুখ হিসেবে বিছানার চাদর, টেবিল ক্লথ, পর্দা ইত্যাদিতে ব্যবহার হয়। 

৪। রেপ (Repp) 
ক্লথ দুই সেট টানা সুতা মোটা ও মিহি এবং দুই সেট পড়েন সুতা মোটা ও মিহি ব্যবহার করে যে উইভ তৈরি করা হয়। তাকে রেপ ক্লথ বলে । যখন মোটা সুতার সেট উপরে উঠে পড়েনে মোটা সুতা ও মিহি সুতার সেট উপরে উঠলে পড়েনে মিহি সুতা ব্যবহার করে কাপড় বুনানো হয়। টানার দুই সেট সুতার জন্য দুইটি বিম ব্যবহার করা হয়। মোটা সুতার বিমটি টিলা ও মিহি সুতার বিমটি টান টান অবস্থায় রাখা হয়। ফলে মোটা সুতার জন্য কাপড়ে একটি রিবের সৃষ্টি হয় । 

রেপ (Repp) ক্লথ এর বৈশিষ্ট্য 
০ এটি একটি প্লেইন ক্লথ। এর ড্রাফটিং ও লিফটিং প্লেইন উইভ এর ন্যায়। 
০ এই ধরনের কাপড় বুননের জন্য দুই ধরনের বিম এর প্রয়োজন হয়। এর একটিতে মোটা সুতা এবং অপরটিতে মিহি সুতা থাকে । মিহি সুতার বিমটি টাইট (tight) ও মোটা সুতার বিমটি ঢিলা (Loose) অবস্থায় থাকে। 
০ ঝাঁপের মেইল আইতে সুতা পরানোর সময় মোটা-মিহি, মোটা-মিহি অর্থাৎ মোটা সুতাসহ একটি ঝাঁপে ও মিহি সুতাসমূহ একটি ঝাঁপে এভাবে ড্রাফটিং করা হয়ে থাকে । 
০ কাপড় বুননের সময় সেডে মোটা সুতার ঝাঁপটি উপরে থাকলে পড়েন এ মোটা সুতা ও মিহি সুতার বিমটি উপরে থাকলে পড়েনে মোটা সুতা ব্যবহার করা হয় । 
০ এই কাপড় বুননের সময় মালটিপল সাটল বক্স ব্যবহার করা প্রয়োজন ।

Content added By

অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন 
১. ওয়ার্স রিব এর সজ্ঞা দাও । 
২.প্লেইন উইভের সংজ্ঞা দাও ? 
৩.ওয়ার্প রিব কত প্রকার ও কি কি ? 
৪.একটি দুই আপ দুই ডাউন রেগুলার ওয়ার্স রিব ডিজাইন অংকন কর। 
৫.ম্যাট উইভের সংজ্ঞা দাও । 
৬. ফেন্সি ম্যাট কি ? 
৭. ফেন্সি ম্যাটের ব্যবহার লেখ। 

সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন 
১. প্লেইন উইভের ডেরিভেটিভস সমূহের নাম লেখ । 
২. ওয়ার্প রিবের বৈশিষ্ট্য লেখ। 
৩. ওয়েফট রিবের বৈশিষ্ট্য লেখ। 
৪. ম্যাট উইভের বৈশিষ্ট্য লেখ। 
৫. ম্যাট উইভের শ্রেণি বিভাগ দেখাও। 
৬. একটি                                  (৪) রেগুলার ম্যাট ডিজাইন অংকন কর । 
৭. রেপ ক্লথের ক্রস সেকশন দেখাও । 
৮. রেপের ব্যবহার লেখ। 

রচনামূলক প্রশ্ন 
১. যে কোন একটি ম্যাট ডিজাইন অংকন করে তার ড্রাফটিং লিফটিং দেখাও । 
২. ওয়ার্স রিব ও ওয়েফট রিবের পার্থক্য লেখ ।

Content added || updated By

ডবির সাহায্যে কাপড়ের ডিজাইন 
ডবির সাহায্যে কাপড়ের উপর ডিজাইন তৈরির জন্য প্রথমে পেগিং প্লান করতে হবে। ল্যাগ এর ছিদ্রে পেগগুলো সাজানোই পেগিং প্লান। পেগিং প্লান করার জন্য প্রথমেই জানতে হবে ডবিটি ডানহাতি না বাহাতি ডানহাতি বা বাহাতি ডবির উপর নির্ভর করে পেগগুলো সাজাতে হবে ।

পেঁগ প্রান প্রস্তুতকরণ
যখন কোন ডবি লুমের স্ট্যাটিং হ্যান্ডেল সুমের ডান পার্শ্বে থাকে তখন রাইট হ্যান্ডেল অর্থাৎ ডান হাতি ডবি বলে । আবার যখন ডবি লুমের স্ট্যাটিং হ্যান্ডেল লুমের বাম পার্শ্বে থাকে তখন উক্ত সুমকে লেফট হ্যান্ডেড বা বাহাতি ডবি বলে।

রাইট হ্যান্ডেড ডবির সিলিন্ডার ঘড়ির কাটার দিকে ঘুরে অন্য দিকে লেফট হ্যান্ডেড ডবির সিলিন্ডার ঘড়ির কাটার বিপরীত দিকে ঘুরে।

রাইট হ্যান্ডেড ডবিতে শেড তৈরি করতে প্রথম পিক বটম হুক দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়, অন্যদিকে লেফট হ্যান্ড ডবিতে টপ হুক দ্বারা শেড তৈরি করা হয়। আটটি তল বিশিষ্ট সিলিন্ডারের জন্য প্যাটার্ন চেইন বা লেটিস তৈরি করতে অবশ্যই আটটি ল্যাগের প্রয়োজন হয়। প্রতিটি ল্যাপ দুইটি পিক নির্দেশ করে। এসব ছিদ্রগুলোতে ডিজাইন অনুযায়ী বা পেগ প্লান অনুযায়ী পেগ বসাতে হবে ।

জ্যাকার্ডের সাহায্যে কাপড়ে বিভিন্ন ডিজাইন 
গ্রাফ পেপারে অংকিত বড় প্যাটার্ন ডিজাইন থেকে প্রথমে প্যাটার্ন কার্ড কাটা হয়। অতপর প্রতিটি কার্ডকে একত্রে একটি প্রান্তহীন ফিতার মতো বেঁধে চেইন আকারে পরিণত করা হয়। অতপর কার্ড চেইনকে জ্যাকার্ড মেকানিজমের সিলিন্ডারের উপর সাজিয়ে রাখা হয়। প্যাটার্ন কার্ডের ছিদ্র অনুযায়ী নিডেল হুককে নির্বাচন করে ও হুকগুলো টানা সুতাকে উপরে তুলে সেড গঠন করে।

জ্যাকার্ডের সাহায্যে কাপড়ে ডিজাইন প্রস্তুতকরণ 
নিডেল, নিডেল বোর্ড, স্প্রিং বক্স, হুক, নাইফ, কার্ড সিলিন্ডার, প্যাটার্ন কার্ড, নেককর্ড, হার্নেস কর্ড, কম্বার বোর্ড, মেইল আই, লিঙ্গ ইত্যাদি নিয়ে গঠিত জ্যাকার্ড ম্যাকানিজম সিঙ্গেল লিফট সিঙ্গেল সিলিন্ডার জ্যাকার্ড ম্যাকানিজমে টানা সুতার দুইটি রিপিটের জন্য ৪০০ টি নিডেল ও ৪০০টি হুক থাকে । প্রথমে প্যাটার্ন অনুযায়ী কার্ড কাটিং মেশিন দ্বারা প্যাটার্ন কার্ডে পাঞ্চ করে ছিদ্র করা হয় এবং কার্ডগুলোকে একত্রে বেঁধে প্রাস্তুহীন চেইনে পরিণত করা হয়। অতপর কার্ড চেইনকে কার্ড সিলিন্ডারের মাধ্যমে নিডেলের সামনে স্থাপন করা হয় । কার্ডের ছিদ্রগুলো ডিজাইনের ওয়ার্স আপ নির্দেশ করে। ছিদ্র অনুযায়ী কার্ডগুলো নিডেল নির্বাচন করে নিডেলের ক্র্যাংকে হুক নির্বাচন করে এবং নাইকের মাধ্যমে উপরে উঠে ও সেড গঠন করে। সেড গঠন হওয়ার পর পিক হয় এবং পড়েন সুতা সেড-এর মধ্যে প্রবেশ করে নির্দিষ্ট ডিজাইনের কাপড় তৈরি করে।

টুইল (Twill) 
যে উইভে কাপড়ের উপরিভাগে টানা বা পড়েন ভাসা (Float) অথবা সম বা অসম কোনাকুনি শিররেখা লাইন (Diagonal line) দৃষ্ট হয় এটিই টুইল উইভ (Twill weave) | টুইল উইডের প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো কাপড়ের উপর কোনাকুনি রেখার দৃষ্টিগোচর হওয়া। এই কোনাকুনি রেখা ডান থেকে বামে ও বাম থেকে ডানে চলতে থাকে। ডিজাইন অনুযায়ী কাপড়ের উপরের পার্শ্বে অর্থাৎ ব্যাক সাইডেও এই কোনাকুনি রেখা দৃষ্ট হয়, তবে ডিজাইন হুবহু ফুটে উঠে না । এই ডিজাইনের প্রস্তুতকৃত কাপড় খুব ওজন বিশিষ্ট ও বেশ খাপি হয় অর্থাৎ দৃঢ় হয় । অধিকাংশ স্যুটিং ও প্যান্টের কাপড় টুইল উইভ দ্বারা তৈরি করা হয়ে থাকে। টুইলের বিভিন্ন ডিজাইন অনুযায়ী মাঝে মাঝে টুইল রেখার দিক পরিবর্তন করে ইচ্ছেমতো হেরিং বোন, জিগজ্যাগ ইত্যাদি ডিজাইনের কাপড় প্রস্তুত করা হয় । টুইল উইভ হলো দ্বিতীয় প্রাথমিক বেসিক উইভ ।

টুইল উইভের বৈশিষ্ট্য 
০ এ জাতীয় কাপড়ের উপরিভাগে টানা ও পড়েন ভাসা অথবা টানা ও পড়েন সম বা অসম ভাসা কতগুলো কোনাকুনি শিররেখা দৃষ্ট হয় । এটিই টুইল কাপড়ের প্রধান বৈশিষ্ট্য । 
০ টুইল রেখা ক্রমাগত ডান থেকে বামে ব বাম থেকে ডানে প্রবাহিত হয় । 
০ তিন বা ততোধিক ঝাঁপে টুইল প্রস্তুত করা হয়। 
০ টুইলের ক্ষুদ্রতম ডিজাইন ৩×৩ 
০ টুইল উইভের ক্ষেত্রে প্রধানত স্ট্রেইট ড্রাফট ব্যবহার হয়। 
০ টুইল উইভ তৈরি করতে কমপক্ষে ৩টি টানা সুতা ও তিনটি পড়েন সুতার প্রয়োজন হয় । 
০ টুইল উইভ নিম্নলিখিত বৈশিষ্ট্যের জন্য বেশি ব্যবহার হয়। 
ক) অলংকৃত করণের জন্য । 
খ) বেশি ওজনের জন্য । 
o কোন কোন ক্ষেত্রে টুইল লাইন ডান অথবা বাম থেকে গতি পরিবর্তন করে নির্দিষ্ট নিয়মে Sinistrally এবং Dextrally উভয় দিকে প্রসারিত হয়। 
০ টুইল উইভ দ্বারা প্রস্তুতকৃত কাপড়ের ব্যবহার বহুবিধ।

টুইল উইভের শ্রেণি বিভাগ 
১। টুইল রেখার দিকের উপর নির্ভর করে টুইল উইভকে দুই ভাগে ভাগ করা যায় যথা- 
ক) S টুইল (S-Twill) 
খ) Z টুইল (Z-Twill)। 

২। টুইল রেখার প্রকৃতির উপর নির্ভর করে টুইল উইভকে চার ভাগে ভাগ করা যায় যথা- 
ক) ওয়ার্স টুইল (Warp Twill) 
খ) ওয়েফট টুইল (Weft Twill) 
গ) এক্সপ্যান্ডেড টুইল (Expanded Twill) 
ঘ) মাল্টিপল টুইল (Muliple Twill)

২। টুইল ডিজাইনের সুতার ভাসার উপর নির্ভর করে টুইল উইভকে তিন ভাগে ভাগ করা যায়। যথা- 
ক) ওয়ার্প ফেসড টুইল (Warp faced Twill) 
খ) ওয়েফট ফেইসড টুইল (Wef faced Twill) 
গ) ডাবল ফেইসড টুইল (Double faced Twill)

টুইল উইভের ডেরিভেটিভসমূহ (Derivatives of Twill weave)-
টুইল উইভের ডেরিভেটিভসমূহ নিম্নে বর্ণনা করা হলো- 
০ জিগজ্যাগ, ওয়েভ, পয়েন্টেড টুইল (Zigzag. Waved Pointed Twill) 
০ হেরিংবোন টুইল (Heringbone Twill) | 
০ ডায়মন্ড ডিজাইন (Diamond Design) 
০ ডায়াপার ডিজাইন (Diaper design)। 
০ ব্রোকেন টুইল (Broken Twill)। 
০ স্টেপড টুইল (Sepped Twill)। 
০ ট্রান্সপোজড অথবা রি-অ্যারেঞ্জ টুইল (Transposed or Re-arrange Twill)। 
০ ইলংগেটেড টুইল (Elongaed Twill)। 
০ শেডেড টুইল (Shaded Twill)। 
০ কার্ভড টুইল (Curved Twill)। 
০ কম্বাইন্ড টুইল (Combined Twill) । 
০ ডায়াগোনাল টুইল (Diagonal Twill)।

টুইল কাপড়ের মান- 
০ কাপড়ের মূল্য অনেক বেশি। 
০ কাপড়ের শক্তি তুলনামূলক অনেক বেশি । 
০ কাপড়টি খুব খাপি ও অত্যাধিক টেকসই হয় । 
০ কাপড় অত্যাধিক ভারী ও শক্ত হয়। 
০ টুইল কাপড় ভুলনামূলক মসৃণ । 
০ ইঞ্চি প্রতি টানা ও পড়েন সুতা বেশি থাকার কারণে উৎপাদন খরচ অনেক বেশি । 
০ বর্তমান বিশ্বে চাহিদা অনেক বেশি । 
০ একদিকে রঙিন ও অন্য দিকে সাদা সুতা দ্বারা টুইল কাপড়ে বৈচিত্র আনা যায়। 
০ টানায় নীল ও পড়েনে সাদা সুতা দ্বারা ডেনিম কাপড় বুনন করা যায় । 
০ টুইল ডিজাইন দ্বারা বিভিন্ন ধরনের টাওয়েল বা গামছাও তৈরি করা যায় ।
০ টুইল ডিজাইন দ্বারা গ্যাবার্ডিন বা গ্যাবার্ডিন ফ্লানেলও তৈরি করা হয়। 
০ কখনও কখনও উৎপাদিত কাপড়ের উভয় পার্শ্ব ব্যবহার করা চলে । 
০ টুইল কাপড় খুব দৃঢ় হয় । 
০ টুইস্ট এর ধরন এবং টুইল লাইনের দিকের উপর টুইল কাপড়ের বৈচিত্র্য অনেকাংশে নির্ভর করে । 

টুইল উইভের ব্যবহার- 
০ শাটিং, স্যুটিং। 
০ ফার্নিসিং। 
০ বিছানার চাদর। 
০ গ্যাবার্ডিন জাতীয় কাপড় । 
০ বিভিন্ন পোশাকের ইন্টারলাইনিং 
০ ডেনিম, ড্রিল ক্লথ, মিলিটারি বা চৌকিদারি পোশাক । ইত্যাদি । 

জিগজ্যাগ টুইলের সংজ্ঞা 
যে কোন ক্রমাগত টুইল এর টুইল রেখার দিক একটি সুবিধাজনক সময়ে অর্থাৎ নির্দিষ্ট সংখ্যক সুভার পর দিক পরিবর্তন করে আঁকাবাঁকা বা ঢেউখেলানো প্রকৃতির যে টুইল গঠিত হয় তাকে আঁকাবাঁকা টুইল বা জিগজ্যাগ টুইল (Zigzag Twill) বলে । 
জিগজ্যাগ টুইল S-টুইল ও Z- টুইলের সংমিশ্রণে তৈরি হয় । 

জিগজ্যাগ টুইলের বৈশিষ্ট্য 
০ এটি ক্রমাগত টুইলের (Coninuous Twill) একটি পরিবর্তিত রূপ । 
০ টুইল রেখার গতি পরিবর্তন করে জিগজ্যাগ টুইল গঠিত হয়। 
০ টুইল রেখার গতি আনুভূমিক ভাবে পরিবর্তিত হলে এটি আনুভূমিক জিগজ্যাগ টুইল এবং উল্লম্বভাবে পরিবর্তিত হলে তা ভার্টিক্যাল জিগজ্যাগ টুইল তৈরি করে ।
০ আনুভূমিক জিগজ্যাগ টুইলে টানা সুতা পড়েনের দ্বিগুণ এবং ভার্টিক্যাল জিগজ্যাগ টুইলে টানা সুতা পড়েনের অর্ধেক হয়। OS- টুইল ও Z - টুইলের সংমিশ্রণে এই টুইল তৈরি হয় । 
০ ড্রাফটিং আনুভূমিক জিগজ্যাগ টুইলের বেলায় পয়েন্টেড এবং ভার্টিক্যাল টুইলের বেলায় স্ট্রেইট । 

জিগজ্যাগ টুইলের শ্রেণি বিভাগ 
দিক পরিবর্তনের উপর নির্ভর করে জিগজ্যাগ টুইলকে দুইভাগে ভাগ করা যায়। যেমন- 
ক) আনুভূমিক জিগজ্যাগ টুইল (Horizontal Zigzag Twill) | 
খ) ভার্টিক্যাল জিগজ্যাগ টুইল (Vertical Zigzag Twill) | 

ক) আনুভূমিক জিগজ্যাগ টুইল (Horizontal Zigzag Twill) 
রিপিটে টানা সুতা পড়েনের দ্বিগুণ নিয়ে গঠিত টুইল এর লাইন এর গতি পরিবর্তন করে আনুভূমিকভাবে যে আঁকাবাঁকা টুইল গঠন করা হয় তাকে আনুভূমিক জিগজ্যাগ টুইল বলে। আনুভূমিক জিগজ্যাগ টুইল অংকন আনুভূমিক জিগজ্যাগ টুইলের গঠন প্রণালি 
০ এই টুইল ডিজাইনে পড়েনে যতগুলো সুতা থাকবে, টানায় তার দ্বিগুণ সংখ্যক সুতা নিয়ে আনুভূমিক দিক দ্বিগুণ করতে হবে। 
o সাধারণত মূল টুইলের রিপিট শেষ হলেই আনুভূমিক দিকে টুইলের দিক পরিবর্তন শুরু হয়। মূল টুইলের রিপিট সাধারণত পড়েন-এ যতগুলো সুতা থাকে ঠিক ততগুলো টানা সুতা নিয়ে ক্রমাগত মুল টুইল এর ডিজাইন তৈরি করা হয় । 
০ অতপর ক্রমাগত টুইল-এর টুইল রেখা বার লাইনে উপনীত হওয়ার পর পুনরায় দিক পরিবর্তন করে নিচের দিকে মুখ করে টুইল লাইন ফিরে আসে। 
০ টুইল লাইন ফিরে আসার মুহূর্তে একটি পয়েন্ট সৃষ্টি করে। 
০ ড্রাফটিং পয়েন্টেড হয়ে থাকে।


জিগজ্যাগ টুইলের ব্যবহার- 
সাটিং, স্যুটিং ও অন্যান্য পোশাক তৈরিতে ব্যবহার হয়। 

ব্রোকেন টুইল (Broken Twill) 
যে কোন ক্রমাগত টুইল রেখার গতি নিয়মিত বা অনিয়মিতভাবে বিভাজিত করে অর্থাৎ রেগুলার বা ইরেগুলার বিরতিতে ভেঙ্গে ভেঙ্গে যে টুইল গঠিত হয় তাকে ব্রোকেন টুইল বলে । এক কথায় ক্রমাগত টুইল রেখা নির্দিষ্ট ধাপে ভেঙ্গে ব্রোকেন টুইল গঠিত হয়। 

ব্রোকেন টুইলের বৈশিষ্ট্য (Characteristics of broken Twill)- 
০ নিয়মিত টুইল নিয়মিত বা অনিয়মিত ভাবে ভেঙ্গে ব্রোকেন টুইল গঠন করে । 
০ ক্রমাগত টুইল লম্বালম্বিভাবে ভেঙ্গে ওয়ার্গের দিকে স্ট্রাইপ গঠিত হয় এবং আড়াআড়িভাবে ভেঙ্গে ওয়েফটের দিকে স্ট্রাইপ গঠিত হয়। 
০ পড়েন বরাবর সুতাগুলো সাজিয়ে ব্রোকেন টুইল গঠন করলে ড্রাফটিং স্ট্রেইট হবে এবং টানা বারাবর সুতাগুলো সাজিয়ে ব্রোকেন টুইল গঠন করলে ড্রাফটিং ব্রোকেন হয় । 
০ ক্রমাগত টুইল-এর রিপিটকে ৩ অথবা ৪ ভাগে ভাগ করেও ব্রোকেন টুইল গঠন করা হয় । 
০ দুই ভাগ করে ব্রোকেন টুইল গঠন করা যায় । 
০ ড্রাফটিং সাধারণত স্ট্রেইট অথবা ব্রোকেন হয়। 

ব্রোকেন টুইলের গঠন প্রণালি- 
ব্রোকেন টুইলের গঠনের বিভিন্ন দিকে রয়েছে। যেমন- 
০ টানা ও পড়েন যত সুতার রিপিট নিয়ে ব্রোকেন টুইল গঠন করা হবে, অনুরূপ সুতা নিয়ে প্রথমে একটি মূল টুইল অর্থাৎ একটি ক্রমাগত টুইল গঠন করা হয়। 
০ গঠনকৃত ক্রমাগত টুইলের রিপিটকে সমান দুইভাবে অর্থাৎ টানা সুতাগুলোকে অর্ধেক করে ভাগ করে প্রথম ভাগের টানা সুতাগুলোর ক্রম ঠিক রেখে দ্বিতীয় ভাগের সুতাগুলোকে একটি নির্দিষ্ট নিয়মে ভেঙ্গে ফেলতে হবে। 
০ মনে করা যাক, ৮x৮ ঘরে ক্রমাগত টুইল গঠন করা হয়েছে। এর প্রথম চারটি টানা সুতা (১, ২, ৩, ৪ ) ঠিক রেখে দ্বিতীয় চারটি টানা সুতাকে ভেঙ্গে ৮, ৭, ৬, ৫ ক্রমে সাজিয়ে ক্রমাগত টুইলের রিপিটের সমান ব্রোকেন টুইল গঠন করা হয়।

Content added || updated By

অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন 
১. টুইল উইভ বলতে কি বুঝায় ? 
২. টুইল উইভের প্রধান বৈশিষ্ট্য কী ? 
৩. টুইলের ক্ষুদ্রতম ডিজাইন কত হবে ? 
৪. ওয়ার্প টুইল কী ? 
৫. জিগজ্যাগ টুইলের সংজ্ঞা দাও । 
৬. জিগজ্যাগ টুইলের শ্রেণি বিভাগ কর। 
৭. জিগজ্যাগ টুইলের ব্যবহার লেখ। 
৮. ব্রোকেন টুইল কাকে বলে ? 
৯. এস-টুইল বলতে কি বুঝায় ? 

সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন 
১. টুইল উইভের বৈশিষ্ট্য কী ? লেখ । 
২. টুইল উইভের ডেরিভেটিভস এর নাম লেখ । 
৩. টুইল উইভের ব্যবহার লেখ। 
৪. সুতার ভাসার উপর নির্ভর করে টুইল ডিজাইনকে কতভাগে ভাগ করা যায় ও কি কি? 

রচনামূলক প্রশ্ন 
১. ১০×১০ ঘরে যে কোন একটি ওয়ার্স ফেইস টুইল অংকন করে তার ড্রাফটিং দেখাও । 
২. ভার্টিক্যাল জিগজ্যাগ টুইলের গঠন প্রণালিসহ ডিজাইন অংকন কর । 
৩. ৮x৮ ঘরে ব্রোকেন টুইল ডিজাইন অংকন করে এর ড্রাফটিং দেখাও ।

Content added By

ভ্যাট ডাই পানিতে দ্রবণীয়। ভ্যাটিং না করে টেক্সটাইল সামগ্রী প্রয়োগ করা যায় না। এ ডাইকে রিডিউসিং এজেন্ট দ্বারা প্রক্রিয়াকরণের ফলে লিউকো কম্পাউন্ডে পরিণত হয়। এটি অ্যালকালির উপস্থিতিতে পানিতে দ্রবণীয় । ভ্যাট ডাই-এর লিউকো কম্পাউন্ডে পরিণত হওয়াকে ভ্যাটিং বলে।

নীল বা ইন্ডিগো (Indigo) ভারত উপমাহদেশের ব্যবহার প্রাচীন রং। প্রাচীনকালে প্রকৃতি থেকে প্রাপ্ত এ ইন্ডিগো রং কে বিশেষভাবে নির্মিত কাঠের পাত্র বিশেষে অগ্যানিক ম্যাটার দ্বারা ফার্মেন্টেশন করে ও রিডিউসিং করে দ্রবণীয় করা হতো। কাঠের এ পাত্রটি ভ্যাট নামে পরিচিত ছিল। কাঠের এ পাত্রটিতে ভ্যাটিং করা হতো বলে এ ডাইকে ভ্যাট ডাই নামকরণ করা হয়েছে। ইন্ডিগো এর মতো অন্য যে সকল ডাইকে দ্রবণীয় করে রংকরণ করা হতো তাদেরকে ভ্যাট ডাই বলা হয় এবং দ্রবণীয় ডাইং করার পদ্ধতিকে ভ্যাটিং বলা হয় ।

ভ্যাট ডাই-এর শ্রেণি বিভাগ (Classification of Vat Dye ) 
ক) অ্যালকালি ব্যবহারের উপর ভিত্তি করে ভ্যাট ডাইকে দুই ভাগে ভাগ করা যায়। যথা- 
১। শক্তিশালী অ্যালকালি ভ্যাট ডাই (Strong alkali vat dye ) 
২। দুর্বল অ্যালকালি ভ্যাট ডাই (Weak alkali vat dye ) 

১। শক্তিশালী অ্যালকালি ভ্যাট ডাই (Strong alkali Vat dye ) 
বেশি কালার শেড পেতে হলে ডাই বাথ (Dye bath) এ অধিক ঘনত্ব বিশিষ্ট অ্যালকালি (NaOH) ব্যবহার করা হয়। 

২। দুর্বল অ্যালকালি ভ্যাট ডাই (Weak alkali Vat dye ) 
মাঝামাঝি শেডের জন্য ডাই বাথ (Dye bath) এ এর দ্রবণ এর জন্য অল্প পরিমাণ অ্যালকালি (NaOH) ব্যবহার করা হয় । ভালো ডাইং এর জন্য দুর্বল অ্যালকালি ডাই ব্যবহার করা হয়। রাসয়নিক গঠনের উপর ভিত্তি করে ভ্যাট ডাইকে দুইভাগে ভাগ করা হয় । যথা- 

১। ইন্ডিগয়েডস্ (Indigoids) 
২। অ্যানথ্রাকুইনোনয়েড (Anhraquiononoids) 

ইন্ডিগয়েডসকে আবার দুই ভাগে ভাগ করা যায় । 
ক) ইন্ডিগোটিন (Indigotin) 
খ) থায়ো ইন্ডিগোটিন (Thio indigotin ) 

ক) ইন্ডিগোটিন (Indigotin) 
ইন্ডিগোটিন (Indigotin) এ ক্রোমোফোর (Chromophor) গ্রুপ আছে। এটি পানি, অ্যালকোহল এবং লঘু এসিডে অদ্রবণীয়, কিন্তু গরম গ্লাসিয়াল অ্যাসিটিক এসিডে দ্রবণীয় । এটি ক্লোরোফরম (Chloroform), অ্যামাইল অ্যালকোহল (Alchohole) এবং ফেনল ( Fenol) এ সামান্য দ্রবণীয়। কিন্তু এর জন্য সবচেয়ে ভালো জৈব দ্রাবক হলো অ্যানিলিন বা পাইরিডিন। 

খ) থায়ো ইন্ডিগোটিন (Thio indigotin) 
এই প্রকার ভ্যাট ডাই-এর ও ক্রোমোফোর গ্রুপ আছে এবং এরা ইন্ডিগোটিন এর ডেরিভেটিস। ইন্ডিগোটিন-এর একটা বা উভয় (-NH-) দ্বারা প্রতিস্থাপিত হয়ে এই ডেরিভেটিভ উৎপন্ন হয়েছে । ভ্যাট ডাই-এর গুণাবলি ভ্যাট ডাই-এর গুণাবলি নিম্নে আলোচনা করা হলো। 
০ ভ্যাট ডাই পানিতে অদ্রবণীয় এবং এটি সরাসরি টেক্সটাইল দ্রব্যে প্রয়োগ করা যায় না । 
০ এটি বিজারিত অবস্থায় দ্রবণীয় হয়। সাধারণত সোডিয়াম হাইড্রোসালফাইড বা হাইড্রোস এবং সোডিয়াম হাইড্রোক্সাইড দ্বারা বিজারিত করা হয়। 
০ এ ডাই দ্বারা মূলত সেলুলোজিক ফাইবার ডাই করা হয়। প্রোটিন ফাইবার ডাই-এর জন্য p!" নিয়ন্ত্রণ করতে হয়। 
০ এ ডাই-এর ওয়েট ফাস্টনেস (Wet Fastness) ও লাইট ফাস্টনেস (Light Fastness) খুবই ভালো । 
o এর দ্বারা বিভিন্ন রং এর শেড পাওয়া যায় । 
o রং-এর বিকাশ সাধনের জন্য অক্সিডেশন প্রয়োজন। 
০ এই ডাই-এর দাম অপেক্ষাকৃত বেশি । এ ডাই অত্যন্ত উজ্জ্বল ও পাকা । 
০ এ তৈরি করা অত্যন্ত জটিল । এ ডাই-এর রাবিং ফাস্টনেস (Rubbing Fastness) ভালো নয় ।

ভ্যাটিং (Vating) 
যে পদ্ধতিতে অদ্রবণীয় ভ্যাট ডাইকে বিভিন্নভাবে প্রবর্ণীয় আকারে রূপান্তর করা হয় তাকে ভ্যাটিং (Vating) বলে । ভ্যাট ডাই পানিতে অদ্রবণীয়। একে দ্রবীভূত করার জন্য ডাইগুলোকে প্রথমে বিজারিত করে লিউকো যৌগে (Leuco compound) পরিণত করা হয়, যা পরবর্তীতে অ্যালকালি (NaOH) সহযোগে পানিতে দ্রবণীয় হয় । এ ডাইকে রিডিউসিং এজেন্ট বা হাইড্রোস (Na2S2O4) দ্বারা ট্রিটমেন্ট করলে লিউকো কম্পাউন্ডে পরিণত হয়, যা অ্যালকালি-এর উপস্থিতিতে পানিতে দ্রবণীয় অর্থাৎ অদ্রবণীয় ভ্যাট ডাইকে সোডিয়াম সল্ট অব লিউকো কম্পাউন্ডে (দ্রবণীয়) পরিণত করাকেই ভ্যাটিং বলে যা সেলুলোজের সাথে বিক্রিয়া করে এবং ডাইং-এর পর দ্রব্যকে বাতাসে অনাবৃত রাখলে ডাই অক্সিডাইজ হয়ে ফাইবারের মধ্যে পুনর্বার অদ্রবণীয় কালারে পরিণত করে ।

ডাইং প্রণালি-
এ পানিতে অদ্রবণীয় । একে পানিতে দ্রবণীয় করার জন্য লিউকো কম্পাউন্ডে পরিণত করতে হবে। বাজারে দুই ধরনের ভ্যাট কালার পাওয়া যায়- তরল ও পাউডার জাতীয়। তরল অবস্থায় হলে তাকে সরাসরি লিউকো কম্পাউন্ডে পরিণত করা যায়। আর পাউডার জাতীয় হলে রেসিপি অনুযায়ী টি আর ওয়েল এর সাথে পরিমাণমতো পানি মেশাতে হবে। এ অবস্থায় দ্রবণটি ভালোভাবে নাড়তে হবে। ফলে একটি পেস্ট তৈরি হবে। এরপর এর সাথে পরিমাণ মতো সোডিয়াম হাইড্রোসালফাইড, কস্টিক সোডা এবং লবণ যোগ করলেই লিউকো কম্পাউন্ডে পরিণত হয়। ফলে ভ্যাট ডাই পানিতে দ্রবীভূত হয় এবং কাপড়ের রং শোষণ করতে পারে। এ অবস্থায় প্রবণ কিছুক্ষণ স্থির রাখা হয়। যদি তলানি না পড়ে তবে বুঝতে হবে লিউকো কম্পাউন্ড সঠিকভাবে তৈরি হয়নি। সেক্ষেত্রে লিউকো কম্পাউন্ড ভালোভাবে তৈরি করতে হবে । অতপর দ্রবণকে ডাই বাথে আনা হয় যেখানে পূর্ব হতে কাপড় রাখা থাকে। উক্ত ডাই বাধে অবশিষ্ট পানিসহ দ্রবণকে ভালোভাবে মিশ্রণ করা হয় এবং ঢাকনা বন্ধ করা হয় যেন বাতাস ঢুকতে না পারে। অতপর ৬০° সে. তাপমাত্রায় ৪৫ মিনিট হতে ৬০ মিনিট নাড়াচাড়া করা হয় । পরে কাপড়কে বাথ থেকে তুলে নিংড়ানো হয় এবং এসিটিক এসিড দ্রবণ দ্বারা ধৌত করলে অ্যালকালি দূর করা যায় । তারপর ঠান্ডা পরিষ্কার পানিতে ধৌত করে বাতাসে ছড়িয়ে দেওয়া হয় । ফলে রং বাতাসের অক্সিজেনের সাথে বিক্রিয়ায় অদ্রবণীয় হয়ে যায় এবং পূর্বের অবস্থায় ফিরে আসে। রং স্থায়ী হয়ে যায়। এই প্রক্রিয়াকে অক্সিডেশন করা হয় ।

ভ্যাট ডাই-এর আফটার ট্রিটমেন্ট (After treatment of Vat dye) ডাই বাথ হতে দ্রব্যকে উঠিয়ে ভালোভাবে স্কুইজ করে ১০ থেকে ১৫ মিনিট বাতাসে ঝুলিয়ে রাখলেই তা অক্সিডাইজড হয়ে দ্রব্যে রং ফুটে উঠে । অতপর দ্রব্যকে ১% সাবান, ২% সোডা দ্বারা ৭০° সে. তাপমাত্রায় ৩০ মিনিট ট্রিটমেন্ট করলে আফটার ট্রিটমেন্ট ক্রিয়া সম্পন্ন হয় । এতে কাপড়ের গায়ের আলগা বা আনফিক্স রং উঠে যায় এবং ডাই-এর স্থায়িত্ব বৃদ্ধি পায়। পরে কাপড়কে শুকানো হয় । 

ভ্যাট ডাই-এর স্ট্রিপিং (Striping of vat dye ) 
টেক্সটাইল দ্রব্যের দ্বারা লিউকো ভ্যাট ডাই-এর অসম শোষণের কারণে ত্রুটিপূর্ণ ডাইং হয় । একটি পাত্রে সামান্য পরিমাণ লেভেলিং এজেন্ট, সোডিয়াম হাইড্রোক্সাইড, সোডিয়াম হাইড্রোসালফাইড মিশিয়ে ঐ বাধে কাপড়কে পুন ভ্যাটিং (Re-vating) করে এ সমস্যা দূর করা যায়। লেভেলিং এজেন্টের পরিমাণ বাড়ালে স্ট্রিপিং বাড়ে । এ পদ্ধতিতে আংশিক স্ট্রিপিং সংঘটিত হয়। কাঙ্ক্ষিত শেড পাওয়ার জন্য নুতন বাথে পরিমাণমতো লিউকো ভ্যাট ডাই দ্বারা পুনরায় ডাইং এর প্রয়োজন হয়। সম্পূর্ণ স্ট্রিপিং এর প্রয়োজন হলে ৫ গ্রাম/লিটার সোডিয়াম হাইড্রোসালফাইড এবং ১৬ গ্রাম/লিটার কস্টিক সোডা দ্বারা ৪৫ মিনিট ৯০° সে. তাপমাত্রায় ট্রিটমেন্ট করলে ডাই সম্পূর্ণরূপে কাপড় থেকে উঠে যায় ।

Content added By

অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন 
১. ভ্যাট ডাই-এর সংজ্ঞা দাও । 
২. ভ্যাটিং কাকে বলে ? 
৩. ভারতীয় উপমহাদেশে প্রথম ব্যবহার ভ্যাট ডাই-এর নাম লেখ । 
৪. ভ্যাট ডাই-এর দুইটি বাণিজ্যিক নাম লেখ । 
৫. ভ্যাট ডাই-এর আফটার ট্রিটমেন্ট লেখ। 

সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন 
১. ভ্যাট ডাই-এর শ্রেণিবিভাগ কর। 
২. ভ্যাট ডাই-এর গুণাবলি লেখ। 
৩. ভ্যাট ডাই-এর দুইটি বাণিজ্যিক নাম লেখ । 
৪. ভ্যাট ডাই-এর আফটার ট্রিটমেন্ট লেখ । 

রচনামূলক প্রশ্ন 
১. ভ্যাট ডাই দ্বারা কটন কাপড় রং করার পদ্ধতি বর্ণনা কর ।

Content added By

একটি নমুনা কাপড় থেকে ঠিক অনুরূপ একটি কাপড় তৈরি করার জন্য এর যাবতীয় গুণাগুণ পঙ্খানুপুঙ্খরূপে বিশ্লেষণ করে জেনে নেওয়াকে বস্ত্র বিশ্লেষণ বলে। এক কথায় বস্ত্র বিশ্লেষণ বলতে একটি নির্দিষ্ট কাপড়ের যাবতীয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলি জেনে নেওয়াকে বুঝায় । কিছু কিছু ক্ষেত্রে অপরাধমূলক কার্যকলাপের সংগে সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলি জেনে নেওয়ার জন্যও বস্ত্র বিশ্লেষণের প্রয়োজন হয় । 

বস্ত্র বিশ্লেষণ এর উদ্দেশ্য (Objects of cloth analysis ) 
o সরবরাহকৃত নমুনা কাপড় থেকে ঠিক অনুরূপ একটি কাপড় তৈরি করা। 
০ কাপড়ের যাবতীয় গুণাগুণ জেনে নেওয়া । 
০ কাপড়ের বৈশিষ্ট্যসমূহ যেমন- টানা, পড়েন, সুতার কাউন্ট, ফাইবারের ধরন ইত্যাদি জেনে নেওয়া । 
০ অপরাধমূলক কার্যকলাপের সংগে সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলিও চিহ্নিত করার জন্য । 

বস্ত্র বিশ্লেষণ এর প্রয়োজনীয়তা ( Importance of cloth analysis ) 
একটি কাপড় থেকে হুবহু অন্য একটি কাপড় তৈরি করার জন্য পূর্ববর্তী কাপড়টি বিশ্লেষনের প্রয়োজন রয়েছে। পূর্ববর্তী কাপড় অর্থাৎ নমুনা কাপড়টি কিসের তৈরি অর্থাৎ কোন আঁশের তৈরি, কত কাউন্টের সুতা দ্বারা তৈরি, টানা ও পড়েন সুতা মোটা, চিকন অথবা প্লাই (Ply) কিনা, ডিজাইন কি রকম ইত্যাদি যাবতীয় বিষয় জানার জন্য বস্ত্র বিশ্লেষণের প্রয়োজন রয়েছে। 
o হুবহু একটি কাপড়ের অনুরূপ কাপড় তৈরির জন্য বস্ত্র বিশ্লেষণের প্রয়োজন রয়েছে । 
০ কাপড়ের যাবতীয় বৈশিষ্ট্য জেনে নিয়ে তৈরিকৃত কাপড়ের গুণাগুণের সাথে মিলানোর জন্য বস্ত্র বিশ্লেষণের প্রয়োজন । 
০ আমদানি রপ্তানির ক্ষেত্রে কাপড়ের প্রকার জেনে নিয়ে সরকারি শর্তসমূহের সাথে মিলিয়ে শুল্ক আদায়ের জন্য বস্ত্র বিশ্লেষণের মাধ্যমে শনাক্তকরণের জন্য এর প্রয়োজন । 

বস্ত্র বিশ্লেষণ এর প্রয়োজনীয় বিষয়াবলি 
একটি কাপড় বিশ্লেষণের জন্য নমুনা হতে নিম্নলিখিত বিষয়াবলি জেনে নেওয়া প্রয়োজন । 
০ কাপড়ের কোন দিক উপর বা সদর অর্থাৎ ফেইস সাইড (Face side) 
০ কাপড়ের কোন বরাবর টানা ও কোন বরাবর পড়েন। 
o কাপড়ের ইঞ্চি প্রতি টানা ও পড়েন সংখ্যা নির্ণয় । 
o নমুনা কাপড়ের টানা ও পড়েন সুতার কাউন্ট নির্ণয় । 
০ কাপড়ের উইভ স্ট্রাকচার অথবা ডিজাইন নির্ণয় করা । 
০ ডিজাইন নির্ণয় করার পর রিপিটের আকার নির্ণয় । 
০ ডিজাইন রিপিটের আকার নির্ণয়ের পর ড্রাফটিং ও লিফটিং প্লান নির্ণয় করা ।
০ টানা ও পড়েন সুতার রকম অর্থাৎ টানা সুতা ও পড়েন সুতা কোন আঁশের তৈরি তা নির্ণয় করা। 
o টানা ও পড়েন সুতার আলাদা আলাদা পাকের (twist) সংখ্যা নির্ণয় করা। 
০ রিড কাউন্ট ও হিল্ড কাউন্ট বের করা। 
০ কাপড়ের নির্দিষ্ট ইউনিটের ওজন বের করা। 
০ সুতার কোন আলাদা প্যাটার্ন থাকলে তা বের করা । 
o টানা বা পড়েন সুতা ব্লেন্ডেড হলে তা কোন সুতা কতটুকু অর্থাৎ শতকরা কত তা নির্ণয় করা। 
০ টানা বা পড়েন আলাদা আলাদা কতটুকু সুতার প্রয়োজন তা নির্ণয় করা 
০ কাপড়টি তৈরি করতে কি ধরনের তাঁতের প্রয়োজন তা নির্ণয় করা। 
০ কাপড় ও সুতার বাণিজ্যিক নাম যদি থাকে তা নির্ণয় করা। 
০ কাপড়টি ফিনিসড অথবা আনফিনিসড তা বের করা । 
o রঙিন সুতার বেলায় কি রং-এর সুতা তা বের করা । 
০ যদি সম্ভব হয় তবে কাপড়ের বহর ও দৈর্ঘ্য বের করা।

কাপড়ের উপর ও নিচের দিক নির্ণয় (Determinaion of Face and back side of the cloth)- 
কাপড়ের উপরের দিক নির্ণয় করলেই অপর পার্শ্ব নিচের দিকটি অর্থাৎ ব্যাক সাইড হবে। কাপড়ের ফেইস সাইড নির্ণয়ের জন্য নিচের বিষয়গুলি বিবেচনায় আনতে হবে। যেমন-
১. ব্যাক সাইডের তুলনায় কাপড়ের ফেইস সাইড অর্থাৎ উপরের দিক চকচকে দেখায়। 
২. সাধারণত কাপড়ের যে দিক ভালো দেখায় সেই দিককে উপরের দিক হিসেবে বিবেচনা করতে হয়। 
৩. কাপড়ের উপরের পার্শ্ব খুবই মসৃণ । 
৪. কাপড়ের উপরের পার্শ্বে হেয়ারিনেস (Hairiness) কম। 
৫. কাপড়ের উপরের পার্শ্বে ডিজাইন পরিষ্কারভাবে ফুটে উঠে। 
৬. সাধারণত গ্রে কাপড়ের জন্য ব্যাক সাইডের সুতাগুলি কিছুটা চ্যাপ্টা দেখায়। 
৭. টুইল কাপড়ের ক্ষেত্রে টুইল রেখার ভাসা ফেইস সাইডে স্পষ্ট দেখায়। 
৮. মূল ডিজাইনটি কাপড়ের উপরের পার্শ্বে ভেসে উঠে। 
৯. গ্রে কাপড়ের জন্য ফেইস সাইডে কাপড়ের আলগা সুতা বেশি থাকে । 

কাপড়ের টানা ও পড়েন নির্ণয় (Determinaion of Warp and Weft of the cloth) 
নিম্নলিখিত বিভিন্ন বিষয়গুলি বিবেচনা করে কাপড়ের টানা ও পড়েন নির্ণয় করা হয় । 
১. নমুনা কাপড়ে যদি পাড় (Selvedge) থাকে তবে পাড় বরাবর সুতাগুলি টানা সুতা । 
২. টানা ও পড়েন সুতার মধ্যে টানা সুতায় পাক (Twist) বেশি থাকে । 
৩. কাপড়ের টানা ও পড়েন সুতার মধ্যে টানা সুতায় ক্রিম কম থাকে। 
৪. পড়েন সুতায় Z- টুইস্ট দেওয়া হয়। কাজেই Z- টুইস্টযুক্ত সুতার দিকই পড়েন।
৫. সাধারণত টানা দিকে ইঞ্চি প্রতি সুতার সংখ্যা বেশি থাকে। কাজেই কাপড়ে ইঞ্চি প্রতি বেশি সংখ্যার দিকই টানার দিক। 
৬. টানা সুতার শক্তি বেশি থাকে । কাজেই তুলনামূলক বেশি শক্তিযুক্ত সুতার দিকই টানা সুতার দিক 
৭. তুলনামূলক টানা দিকে চিকন সুতা ব্যবহার হয়। 
৮. সাধারণত বয়নের পূর্বে টানা সুতায় মাড় প্রদান করা হয়ে থাকে। কাজেই মাড়যুক্ত সুতার দিকই টানা সুতা । 
৯. টানা সুতায় হেয়ারিনেস (Hairiness) বেশি থাকে । 
১০. যদি কাপড়ের এক দিকে প্লাই (Ply) সুতা ও অন্য দিকে সিঙ্গেল সুতা পাওয়া যায় তবে প্লাই সুতার দিক টানা সুতা। 
১১. স্ট্রাইপ কাপড়ের ক্ষেত্রে সাধারণত স্ট্রাইপের দিক টানার দিক হিসেবে বিবেচনা করা হয় । 
১২. টেরি টাওয়েল ও কাপেটের ক্ষেত্রে পাইলের দিক টানার দিক হিসেবে বিবেচনা করা হয়। 
১৩. চেক কাপড়ের ক্ষেত্রে পড়েনের দিকে জোড় সংখ্যক সুতা থাকে। তবে টানার দিকে জোড় অথবা বিজোড় উভয়ই থাকতে পারে। 
১৪. যদি কাপড়ে বিভিন্ন কাউন্টের সংমিশ্রণ থাকে তবে টানার দিকে বিভিন্ন কাউন্টের সুতার ব্যবহার হয় । 
১৫. ইউনিয়ন কাপড়ের ক্ষেত্রে একদিকে কটন সুতা ও অন্যদিকে অন্য কাউন্টের সুতার ব্যবহার করা হয়। কটন সুতার দিকই টানা সুতা। 
১৬. চেক কাপড়ে সাধারণত টানা দিকই বেশি রং-এর সুতা ব্যবহার করা হয় । 
১৭. শানার দাগ (Reed mark) টানার দিকে থাকে । 
১৮. উপরোক্ত বিষয়গুলি ছাড়াও অভিজ্ঞ মাস্টারগণ তাঁদের অভিজ্ঞতালব্ধ জ্ঞান দ্বারা টানা ও পড়েন সুতার দিক সহজেই নির্বাচন করতে পারেন । 

ইঞ্চি প্রতি টানা ও পড়েনের সংখ্যা নির্ণয়- 
(Determinaion of Ends and Picks per inch) 
টানা ও পড়েনের দিক শনাক্তকরণের পর কাপড়টি টেবিলের উপর সমানভাবে রেখে এর উপর কাউন্টিং গ্লাস রেখে নিডেলের সাহায্যে একটি একটি করে টানা ও পড়েন সূতা গুণে ইঞ্চি প্রতি টানা ও পড়েন সুতার সংখ্যা স্থির করা হয়। 

কাউন্টিং গ্লাস (Couning Glass) হলো তিনটি বর্গাকার অংশ বিশেষ যা ভাঁজ করে রাখা যায়। বর্গাকার অংশের এক পার্শ্বে একটি ম্যাগনিফাইং গ্লাস থাকে, যা দ্বারা সহজেই প্রত্যেকটি সুতা বড় ও স্পষ্ট দেখা যায় এবং বিপরীত পার্শ্বে অন্য বর্গাকার অংশে ১ × ১ দাগ কাটা আছে যার সাহায্যে সহজেই ১ তে কতটি টানা সুতা ও কতটি পড়েন সুতা আছে তা নিডেলের সাহায্যে গুণে বের করা সম্ভব। কাউন্টিং গ্লাসের মাধ্যমে খুব সহজেই ইঞ্চি প্রতি টানা ও পড়েন সুতা সনাক্ত করা যায় । 

কাপড়ের ডিজাইন ও রিপিট নির্ণয় (Determinaion of Design and Repeat from the fabric)- 
প্রথমে উপরোক্ত পদ্ধতিতে টানা ও পড়েন সনাক্ত করতে হবে। পরে টানা ও পড়েনের দিক সনাক্ত করলে সহজেই টানা ও পড়েন সুতা সনাক্ত করা যাবে। ডিজাইন করতে হলে টানা ও পড়েন সুতা সনাক্ত করা খুবই জরুরি। কাপড়ের ডিজাইন ও রিপিট নির্ণয়ের জন্য নিম্নলিখিত ইকুইপমেন্টস (Equipments) এর প্রয়োজন । 
o ছক কাগজ বা গ্রাফ পেপার ।
০ কাউন্টিং গ্লাস (Counting glass ) 
০ পেনসিল Pencils) 
০ নিয়ন্ত্রণ (Needle ) 

প্রথমে ছক কাগজে ডিজাইন করার জন্য কাগজের নিচে ও বাম দিকের একটি ঘর দ্বারা শুরু করতে হবে। অতপর নমুনা কাপড়কে কাঁচি দ্বারা সুন্দরভাবে কেটে টেবিলের উপর এমনভাবে বিছিয়ে রাখতে হবে যেন কোথাও কুঁচকে না থাকে । অতপর কাপড়টির উপর কাউন্টিং গ্লাসটি রাখতে হবে। পূর্ব থেকে কাপড়টির টানা ও পড়েন সনাক্ত করা থাকে। টানা ও পড়েন থেকে আস্তে আস্তে সুতা খুলেও ছক কাগজে ডিজাইন অংকন করা যায় । আবার কাউন্টিং গ্লাস বসিয়ে নিভিল দ্বারা একটি একটি করে সুতা সনাক্ত করে পেনসিলের মাধ্যমে ছক কাগজের বাম পার্শ্বের নিচ থেকে ডিজাইনটি আস্তে আস্তে অংকন করতে হবে। কাউন্টিং গ্লাসের মাধ্যমে কাপড়টির উপর তাকালে টানা ও পড়েন সুতাগুলো মোটা দেখায় ও কোন সুতার সাথে কোন সুতার বন্ধনী সৃষ্টি হলো তা সহজে সনাক্ত করা যায়। লক্ষ্য রাখতে হবে কাপড়টির সদর দিক (Face side) যেন উপরে থাকে। আস্তে আস্তে টানা ও পড়েন সুতার বন্ধনী ছক কাগজে অংকন করতে করতে ডিজাইনটি একটি আকারে চলে আসবে। অর্থাৎ ডিজাইনটি ছক কাগজে ফুটে উঠবে । তখন উপরোক্ত প্রক্রিয়া বন্ধ করে রিপিট সাইজ চিহ্নিত করতে হবে।

রিপিট সাইজ চিহ্নিত করার জন্য প্রথমে ডিজাইনটির সেট মিলাতে হবে। ডিজাইনটির মধ্যে টানা ও পড়েন সুতার সেট সনাক্ত করে প্রথমে আনুমানিক রিপিট চিহ্নিত করতে হবে। অতপর উক্ত রিপিট থেকে টানা ও পড়েন সুতার সেট নিয়ে উপরে বা ডান পার্শ্বের টানা ও পড়েন সুতার সেটের সাথে মিলিয়ে দেখতে হবে। যদি উপরের ও ডানের উভয় সেটের সাথে রিপিটটা মিলে যায় তবে উক্ত রিপিট সাইজটি ডিজাইনের প্রকৃত রিপিট হবে ।

ছক কাগজে এই অংকিত ডিজাইনকে উইভ প্লান বলা হয়। রিপিট চিহ্ন দ্বারা ডিজাইনের রিপিটকে দেখানো হবে। এখন অংকনের নিয়মানুযায়ী রিপিট থেকে ড্রাফটিং প্লান ও লিফটিং প্লান অংকন করতে হবে যেন সহজেই উক্ত ডিজাইন থেকে কাপড়টি প্রস্তুত করা সম্ভব হয় ।

কাপড় হতে টানা ও পড়েন সুতার কাউন্ট নির্ণয় (Determinaion and Calculaion of the count of Warp & weft yarn) 
নমুনা টুকরা কাপড় হতে সুতার কাউন্ট নির্ণয়ের জন্য সাধারণত যে ইকুইপমেন্টস এর সাহায্য নেওয়া হয় তা বিজলিস ইয়ার্ন ব্যালেন্স (Beesleys yarn balance) ও টেমপ্লেট (Template)। পূর্ব বর্ণিত নিয়মে প্রথমে কাপড়ের টানা ও পড়েনের দিক নির্ণয় ও টানা ও পড়েন সনাক্ত করার পর টুকরা নমুনা কাপড় হতে একটি একটি করে টানা সুতা ও পড়েন সুতা আলাদা আলাদা করে রাখা হয়। সুতাগুলো সাবধানে খোলা হয় যাতে সুতার উপর কোন টান না পড়ে। সামান্য টানে সুতার দৈর্ঘ্য বেড়ে যেতে পারে তাতে সঠিক ফলাফল পাওয়া যাবে না। নিম্নে নমুনা কাপড় হতে সুতার ছোট ছোট টুকরা সংগ্রহ করে সুতার কাউন্ট নির্ণয় করা হয়। সুতার কাউন্ট পদ্ধতিটির বর্ণনা করা হলো।

টেমপ্লেট (Template) 
যখন নমুনা কাপড় থেকে সুতার ছোট ছোট টুকরা সংগ্রহ করে কাউন্ট বের করার প্রয়োজন হয় তখন টেমপ্লেটের প্রয়োজন হয় । কাপড়ের টুকরা থেকে সুতাকে নির্দিষ্ট মাপে কাটার জন্য যে যন্ত্র ব্যবহার করা হয় তাকে টেমপ্লেট বলে। টেমপ্লেট একটি ধাতুর তৈরি পাত বিশেষ যার ৩টি বাহু ও আটটি প্রাপ্ত রয়েছে এবং কোন পার্শ্বে কোন ধরনের ফাইবারের তৈরি সুতা কাটতে হবে তা পাতের পৃষ্ঠে লিপিবদ্ধ করা হয়েছে। ঐ মাপে সুতা কেটে বিজলিস ইয়ার্ণ ব্যালেন্স এর মাধ্যমে সুতার কাউন্ট সরাসরি বের করা যায় ।

বিজলিস ইয়ার্ন ব্যালেন্স (Beesleys yarn balance) 
একটি কাষ্ঠ ও ধাতু নির্মিত স্ট্যান্ডের উপর এক পাশে দা আকৃতির একটি স্কেল খাড়াভাবে এবং অন্য পাশে একটি দণ্ড বসানো থাকে । দণ্ডের উপরের অংশে একটি বিম আড়াআড়িভাবে বসানো থাকে যার এক মাথায় সুতা ঝুলানোর হুক এবং অন্য মাথায় নির্দেশক থাকে। বিমটি দণ্ডটির মাথায় এমনভাবে বসানো থাকে যেন তা এদিক ওদিক দুলতে পারে।

পরীক্ষার শুরুতে নির্দেশকটি স্কেলের গায়ে ডেটাম লাইনের সাথে লেভেল করা হয়। যে সুতার কাউন্ট নির্ণয় করতে হবে সে ধরনের সুতার একটি আদর্শ ওজন বিমের মাঝামাঝি খাঁজে বসিয়ে দেওয়া হয়। ফলে নির্দেশকটি ডেটাম লাইনের নিচে পড়ে যায়। টানা ও পড়েন সুতা যা আলাদাভাবে রাখা আছে তা টেমপ্লেটের চিহ্নিত দিক দ্বারা টানা সুতা টুকরা টুকরা করে কেটে বিমের হুকে একটা একটা করে ঝুলিয়ে দেওয়া হয় যতক্ষণ না নির্দেশকটি ডেটাম লাইনে চলে আসে । এখন সুতাগুলি গুণে যতগুলি সুতা হলো সুতার কাউন্ট তত । অনুরূপভাবে পড়েন সুতারও কাউন্ট বের করা হয়।

Content added By

অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন 
১. কাপড় বিশ্লেষণ বলতে কী বুঝায় ? 
২. কাপড়ের ডিজাইন ও রিপিট নির্ণয়ের জন্য কি কি ইকুইপমেন্ট প্রয়োজন ? 
৩. টেমপেট কী ? 

সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন 
১. বস্ত্র বিশ্লেষণের উদ্দেশ্য লেখ । 
২. বস্ত্র বিশ্লেষণের প্রয়োজনীয়তা কি লেখ ? 

রচনামূলক প্রশ্ন 
১. বস্ত্র বিশ্লেষণের জন্য প্রয়োজনীয় বিষয়াবলির বিবরণ দাও । 
২. কাপড়ের উপর ও নিচের দিক কিভাবে নির্ণয় করবে ব্যাখ্যা কর । 
৩. কাপড়ের টানা ও পড়েন কিভাবে সনাক্ত করবে বিস্তারিত লেখ ।
৪. নমুনা কাপড় হতে টানা ও পড়েন সুতার কাউন্ট নির্ণয় পদ্ধতি বর্ণনা কর ।

Content added By
Please, contribute to add content into ব্যবহারিক.
Content

ভূমিকা- 
শক্তিচালিত তাঁত ও হস্তচালিত তাঁত সম্বন্ধে ভালোভাবে জানতে হলে প্রথমে তার প্রধান প্রধান যন্ত্রপাতি ও তাঁত চালনা সংক্রান্ত ব্যবহার্য্য অন্যান্য যন্ত্রপাতি সম্পর্কে ভালো জ্ঞান রাখতে হবে এবং প্রত্যেকটি যন্ত্রের নামসহ প্রতিটি অংশের নাম জানতে হবে। কাপড় তৈরিতে তাঁত যন্ত্র ব্যবহার হয় কাজেই তাঁত সম্পর্কে ভালো জ্ঞান অর্জন করতে হবে। 

সংজ্ঞা- কাপড় : ফাইবার থেকে বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় সুতা প্রস্তুত করার পর উক্ত সুতা দ্বারা টানা ও পড়েন সুতায় পরস্পর বন্ধনী দিয়ে লুপের সাহায্যে এবং আঁশ জমাট বাঁধিয়ে মানুষের পরিধেয় ও প্রয়োজনীয় ব্যবহারের জন্য যে সকল দ্রব্য উৎপন্ন করা হয় তাকে বস্ত্র বা কাপড় বলে । 

তাঁত : যে যন্ত্রে দুই বা ততোধিক সারির সুতা লম্বালম্বি ও আড়াআড়ি ভাবে স্থাপন করে বুনন কার্য সম্পন্ন করা হয় তাকে তাঁত বলে। তাঁত দুই প্রকার- 
০ শক্তিচালিত তাঁত 
০ হস্তচালিত তাঁত 

তাঁতযন্ত্রের সাথে বিভিন্ন যন্ত্রের পরিচিতি- 
নিম্নে তাঁতে যন্ত্রের বিভিন্ন অংশের তালিকা দেওয়া হলো- 
০ সাটেল (Shuttle) 
o পিকার (Picker) 
০ শাটেল বক্স (Shuttle box ) 
o বক্স সয়েল (Box swell ) 
0 ঝাঁপ (Heald) 
o শানা (Reed) 
০ টেম্পল (Temple) 
০ ক্র্যাংক শ্যাফট (Crank shaft) O(Slay) 
০ ট্যাপেট (Tappet) ইত্যাদি । 

সতর্কতা 
তাঁত যন্ত্রের সকল অংশের সাথে পরিচিতি থাকা ভালো। এতে তাঁতির তাঁত চালনা ও ত্রুটিমুক্ত কাপড় প্রস্তুত করা সম্ভব। 

উপসংহার / মন্তব্য

Content added By

ভূমিকা 
নির্দিষ্ট নামের যন্ত্র অর্থাৎ তাঁত যন্ত্রের বিভিন্ন অংশের নাম অবগত ও সনাক্তকরণ করতে হবে। তাঁত যন্ত্রের সামনে ও পেছনে বিম রেখে এক প্রস্থ টানা সুতাকে টান টান অবস্থায় রেখে এর মধ্য দিয়ে পড়েন সুতাকে সুবিন্যস্ত ভাবে বন্ধনী সৃষ্টি করাই বয়নের মূলনীতি।

উপসংহার / মন্তব্য

Content added By

ভূমিকা 
সনাক্তকৃত যন্ত্রটি কাপড় প্রস্তুতকরণ যন্ত্র। কাপড় প্রস্তুত করতে ২ সারি সুতার প্রয়োজন। একসারি টানা সুতা ও অন্য সারি পড়েন সুতা। উৎপাদিত কাপড় ওভেন ফ্যাব্রিক্স কাজেই যন্ত্রটি একটি তাঁত। 

সংজ্ঞা 
তাঁত যে যন্ত্রে দুই বা ততোধিক সারি সুতা লম্বালম্বি ও আড়াআড়ি ভাবে স্থাপন করে বুনন কার্য সম্পাদন করা হয় তাকে তাঁত বলে । 

উপসংহার / মন্তব্য

Content added By

সংজ্ঞা 
রক্ষণাবেক্ষণ : কোন যন্ত্র বা মেশিন-পত্রকে যদি নিয়মতান্ত্রিকভাবে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে প্রয়োজনীয় অংশে তেল, গ্রিজ ইত্যাদি প্রয়োগসহ সার্বিক যত্ন নেওয়া অর্থাৎ শিল্প কারখানায় বা প্লান্টের মেশিন পত্র, সরঞ্জামাদি কাঁচামাল ও উৎপাদিত পণ্যের প্রস্তুতকরণের নির্দেশ মোতাবেক পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখা ও সার্বিক যত্ন নেওয়ার যথোপোযুক্ত প্রক্রিয়াই হচ্ছে রক্ষণাবেক্ষণ । 

পরিষ্কারকরণ : পরিষ্কারকরণ রক্ষণাবেক্ষণের একটি অংশ। উৎপাদন কাজে নিয়োজিত মেশিনারি অপারেটরের কাজ শেষে অথবা প্রস্তুতকারকের নির্দেশ মোতাবেক একটি নির্দিষ্ট সময় পর পর পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখা। “উৎপাদনমুখী কর্মকাণ্ডে ব্যবহার্য মেশিন / যন্ত্রপাতি ইত্যাদির সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করতে কাজের পূর্বে ও পরে ধুলা, ময়লা, আবর্জনা, দূর করার প্রক্রিয়াই হচ্ছে পরিষ্কারকরণ। ক্লিনিং অর্থাৎ পরিষ্কারকরণ একটি অপরিহার্য বিষয় । তাঁত চালনার পাশাপাশি ক্লিনিং করা হলে তাঁতির সর্বোচ্চ দক্ষতায় তাঁত চালনা করতে পাবরে। 

তাঁত যন্ত্র পরিষ্কারকরণ পদ্ধতি 
উৎপাদন কার্যে নিয়োজিত তাঁত যন্ত্রটির বিভিন্ন অংশে পড়ে থাকা ধুলা বালি, ময়লা ইত্যাদি বাতাসের প্রবাহ, ব্রাস, ন্যাকরা, প্রভৃতি দ্বারা পরিষ্কার করে পুনরায় তাঁত যন্ত্রটি চালু করতে হবে । 

উপসংহার / মন্তব্য

Content added By

সংজ্ঞা 
ক) দূর্ঘটনা যে ঘটনা প্রবাহ দ্বারা কর্মের স্বাভাবিক প্রক্রিয়া ও ধারাবাহিকতা ব্যহত হয় তাকে দুর্ঘটনা বলে । দুর্ঘটনা হলো হটাৎ একটি অপরিকল্পিত, অনিয়ন্ত্রিত, অপ্রত্যাশিত ঘটে যাওয়া ঘটনা, যার দ্বারা জান ও মালের ক্ষয়ক্ষতি হয় । 

খ) নিরাপত্তা : কোন শিল্প প্রতিষ্ঠানের চলমান সকল কাজ-কর্মে যাতে কোন প্রকার অনাকাঙ্ক্ষিত বা অবাঞ্ছিত ঘটনার উদ্ভব না হতে পারে তার জন্য পরিকল্পিত ভাবে কর্মী, যন্ত্রপাতি, মেশিন ও কর্মশালায় বিভিন্ন স্বীকৃতি বিধি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয় এবং এর যথাযথ প্রয়োগের মাধ্যমে কর্মস্থলে সম্ভাব্য দুর্ঘটনা প্রতিহত করাকে নিরাপত্তা বলে ।

নির্দিষ্ট যন্ত্রপাতির জন্য নির্দিষ্ট সতর্কতা 
* প্রথমেই কাজের ধরন অনুযায়ী উপযুক্ত মানের বা উপযুক্ত মাপের যন্ত্রপাতি নির্বাচন করতে হবে। 
* যেখানে ব্যবহার করবে যিনি তার ভালো জ্ঞান বা অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। 
* আঘাত করা বা যন্ত্র দ্বারা চাপ দেওয়ার পূর্বে নির্দিষ্ট করতে হবে যে কতটুকু আঘাত বা চাপ প্রয়োগ করতে হবে । 
* ঠিক কোন স্থানে যন্ত্রপাতি বা টুলস ফিট করবে তা নিশ্চিত করতে হবে। 
* সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে তবে যন্ত্রপাতি ব্যবহার করা সহজ হবে । 

মন্তব্য / উপসংহার 
রক্ষণাবেক্ষণ কাজে ব্যবহার যন্ত্রপাতি যথাযথভাবে ব্যবহার না করলে মারাত্মক দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে। কাজেই এ বিষয়ে রক্ষণাবেক্ষণের কাজে নিয়োজিত কর্মকর্তা/কর্মচারীদের সতর্ক থাকা প্রয়োজন ।

Content added By

ভূমিকা 
সাধারণত পাওয়ার লুম বৈদ্যুতিক শক্তির সাহায্যে চলে। এটি সাধারণত লোহা ও কাঠ দ্বারা তৈরি এবং হস্তচালিত তাঁতের চেয়ে এর উৎপাদন ক্ষমতা অনেক বেশি। বিভিন্ন অতিরিক্ত মোশন সংযোজন করার কারণে পাওয়ার লুমকে অটোমেটিক লুমে স্থানান্তর করা সম্ভব । ফলে উৎপাদন দক্ষতা অনেক বেড়ে যায় পাশাপাশি উৎপাদিত কাপড় ত্রুটিমুক্ত থাকে। 

৪। সংজ্ঞা 
পাওয়ার লুম যে সমস্ত লুম কোন যান্ত্রিক বা বৈদ্যুতিক শক্তি দ্বারা চালিত হয় তাকে পাওয়ার লুম বলে। আমাদের দেশে হস্তচালিত লুমের পাশাপাশি শক্তিচালিত লুমের বেশ প্রচলন রয়েছে। ইন্ডাস্ট্রিতে অধিকাংশ হুমই শক্তিচালিত। হস্তচালিত লুমের চেয়ে শক্তিচালিত লুমের গতি বেশি। এই গতির পাশাপাশি উৎপাদনও অনেক বেশি । 

পাওয়ার লুমের বিভিন্ন যন্ত্রাংশ 
০ মটর 
০ সালে 
০ পিকার
০ সাটেল বক্স 
০ হিল্ড শ্যাফট 
০ রিড 
০ স্লে
০ ট্যাপেট 
০ ওয়ার্প বিম 

পাওয়ার লুমে ব্যবহৃত মোশন 
০ ওয়ার্প স্টপ মোশন 
০ ওয়েফট স্টপ মোশন 
০ টেম্পল মোশন 
০ ব্রেক মোশন 
০ প্রোটেক্টর মোশন 
০ ওয়েফট মিক্সিং মোশন ইত্যাদি । 

উপসংহার / মন্তব্য

Content added By

ভূমিকা 
প্রতিটি মেশিনেরই নির্দিষ্ট কিছু গতি থাকে। যার কারণে মেশিনটি চলতে ও উৎপাদন দিতে থাকে। তেমনটি একটি তাঁতেরও নির্দিষ্ট গতি আছে, যার ফলে তাঁত গতিপ্রাপ্ত হয় ও কাপড় উৎপাদন করতে থাকে। হ্যান্ড লুম ও পাওয়ার লুমের সুনির্দিষ্ট কিছু গতির কারণে উইভিং ইন্ডাস্ট্রিতে অন্যান্য মেশিন হতে তাঁতের পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়। 

তাঁতের গতিসমূহের শ্রেণিবিভাগ

বিভিন্ন মোশনের সংজ্ঞা 
ক) সেডিং : যে গতির সাহায্যে টানা সুতাকে উপরে ও নিচে দুইভাগে ভাগ করে দুইটি স্তর সৃষ্টি করা হয় যাতে ঐ স্তর দুইটির মধ্য দিয়ে পড়েন সুতাসহ সাটেল চলাচল করতে পারে। সে গতিকে সেডিং বলে। টানা সুতার দুইস্তরের মধ্যবর্তী ফাঁককে সেড বলে। 

খ) পিকিং : ডিজাইন অনুযায়ী টানা সুতার সাহায্যে সেড তৈরি হওয়ার পর সাটেল বা অন্য কিছুর মাধ্যমে সেড এর মধ্য দিয়ে পড়েন সুতা ফেলে যাওয়ার পদ্ধতিকে পিকিং বলে। 

গ) বিটিং: আপ সেডের মধ্যে পড়েন সুতা ফেলে রাখার সংগে সংগে রিড-এর সাহায্যে ধাক্কা দিয়ে পড়েন সুতা ফেলে অফ দ্যা রুথ এর সাথে মিশিয়ে ফেলাকে বিটিং আপ বলে । 

ঘ) টেক আপ মোশন : কাপড় বুননের পর যে গতির সাহায্যে লেট অফ মোশনের সাথে সামঞ্জস্য রেখে তাঁতের ক্লথ বিমে জড়ানোর পদ্ধতিকে টেক আপ মোশন বলে । 

ঙ) লেট অফ মোশন: টেক আপ মোশনের সাথে সামঞ্জস্য রেখে যে মোশনের সাহায্যে টানা বিম হতে প্রয়োজনীয় সুতাকে নির্দিষ্ট হারে তাঁতে ছেড়ে দেওয়া হয় তাকে লেট অফ মোশন বলে । 

উপসংহার / মন্তব্য

Content added By

ভূমিকা 
ড্রাফটের মাধ্যমে ঝাঁপের সংখ্যা নির্ণয় করা হয় এবং ডেন্টিং-এর মাধ্যমে রিডের ফাঁকের মধ্য দিয়ে কোন সুতা বা কতটি সুতা টানা হবে তা নির্দিষ্ট করা হয়। কাপড় বুননের সময় ঝাঁপগুলো উপরে ও নিচে উঠানামা করে । টানা সুতা ঝাঁপের ব চক্ষুর মধ্য দিয়ে টানা হয় অর্থাৎ ড্রাফটিং করা হয়। ড্রাফটের মাধ্যমে কি ধরনের ডিজাইন তৈরি হবে তা নির্দিষ্ট করা হয়। ঝাঁপের হিল্ড আই বা ব চক্ষুর মধ্য দিয়ে টানা প্রবেশ করানোর পর রিডের ডেন্ট স্প্লিটের মধ্য দিয়ে নির্দিষ্ট নিয়মে ডেন্টিং করা হয় । 

সংজ্ঞা ড্রাফটিং : উইভারস বিমের টানা সুতাগুলো একটি ডিজাইন অনুযায়ী ড্রইং হুকের মাধ্যমে ব চক্ষুর মধ্য দিয়ে টানাকে ড্রাফটিং বা ড্রইং ইন বলে । 

ডেন্টিং : যে পদ্ধতিতে শানা বা রিডের প্রতিটি ডেন্ট-এর মধ্য দিয়ে টানা সুতাকে ডিজাইন অনুযায়ী ড্রইং হুকের সাহায্যে টেনে নেওয়া হয় তাকে ডেন্টিং বা শানা গাঁথা বলে । ড্রাফটিং ও ডেন্টিং-এর ব্যবহার 

উপসংহার / মন্তব্য

Content added By

ভূমিকা 
পাওয়ার লুম অত্যন্ত মজবুত ও দ্রুতগতি সম্পন্ন। কাজেই পাওয়ার লুমে অধিক কাপড় একত্রে বুনন সম্ভব । এ লুম সাধারণত লোহা দিয়ে নির্মাণ, ভারী ও মজবুত। বিদ্যুৎ-এর ব্যবহার দ্বারা পাওয়ার লুম চালনা করা হয়। বলে এ লুমকে বিদ্যুৎ চালিত লুমও বলা হয় । 

বিম স্থাপন পদ্ধতি- 
বিম তৈরি করা সম্পন্ন হলে সমস্ত টানা সুতাগুলি টেনে বের করে একটি একটি করে বিমের সুতা ডিজাইন অনুযায়ী হিল্ড শ্যাফটের 'ব' চক্ষুর মধ্য দিয়ে ড্রইং হুকের সাহায্যে টেনে গাঁথতে হয় অর্থাৎ ড্রাফটিং করতে হয় । ড্রাফটিং সমাপ্ত হলে পুনরায় রিডের ফাঁকের মধ্য দিয়ে গেঁথে আনতে হয়। তাঁতে বিম স্থাপন করার জন্য তাঁতের পিছনে ফ্রেমের দুই পার্শ্বে খাচ কাটা অথবা দুইটি করে ব্রাকেট থাকে। এই খাঁচ কাটা বা ব্রাকেটের উপর বিম স্থাপন করা হয়। 

উপসংহার / মন্তব্য-

Content added By

ভূমিকা 
একটি কাপড় থেকে হুবহু অনুরূপ একটি কাপড় তৈরির জন্য পূর্ববর্তী অর্থাৎ নমুনা কাপড়টি বিশ্লেষণের প্রয়োজন রয়েছে । নমুনা কাপড়টি কোন ফাইবারের তৈরি কাপড়ের ডিজাইন, টানা ও পড়েন সুতার সংখ্যা টানা ও পড়েন সুতার কাউন্ট ইত্যাদি যাবতীয় বিষয় জানার জন্য বস্ত্র বিশ্লেষণের প্রয়োজন । 

সংজ্ঞা বস্ত্র বিশ্লেষণ : 
একটি নমুনা কাপড় থেকে ঠিক অনুরূপ একটি কাপড় তৈরি করার জন্য যে পদ্ধতিতে নমুনা কাপড়ের যাবতীয় গুণাগুণ ও বৈশিষ্ট্য পুঙ্খানুপুঙ্খরূপে বিশ্লেষণ করে জেনে নেওয়া হয়, তাকে বস্ত্র বিশ্লেষণ বলে । 

বস্ত্র বিশ্লেষণের প্রয়োজনীয়তা 
০ হুবহু একটি কাপড়ের অনুরূপ কাপড় তৈরির জন্য বস্ত্র বিশ্লেষণের প্রয়োজন রয়েছে। 
০ কাপড়ের যাবতীয় বৈশিষ্ট্য জেনে নিয়ে তৈরিকৃত কাপড়ের ও গুণাগুণের সাথে মিলানোর জন্য বস্ত্ৰ বিশ্লেষণের প্রয়োজন । 
০ আমদানি রপ্তানির ক্ষেত্রে কাপড়ের প্রকার জেনে নিয়ে সরকারি শর্তসমূহের সাথে মিলিয়ে শুল্ক আদায়ের জন্য বস্ত্র বিশ্লেষণের প্রয়োজন। 
০ টেক্সটাইল সংক্রান্ত কোন অপরাধ সংঘটিত হলে তা বস্ত্র বিশ্লেষণের মাধ্যমে সনাক্তকরণের প্রয়োজন। 

উপসংহার / মন্তব্য

Content added || updated By

ভূমিকা 
হস্তচালিত কাপড় বুননে একজন তাঁতির দক্ষতাই প্রধান ভূমিকা পালন করে থাকে । তাঁতির দক্ষতার উপরই ত্রুটিযুক্ত কাপড় উৎপাদন করা সম্ভব হয়। 

কাপড়ের বিভিন্ন ত্রুটি 
কাপড়ের ত্রুটিসমূহের নাম নিম্নে দেওয়া হলো- 
ক) টানা বরাবর ত্রুটি (Warp way defects) 
১. ওয়ার্প স্টিচিং (Warp stiching ) 
২. লং ফুট (Long float) 
৩. টানা বাদ পড়া (Missing warp) 
৪. দ্বৈত টানা (Double warp) 
৫. রিড মার্ক (Reed mark)
৬. টানা সুতার গিট ( Knot in the warp) 
৭. টাইট ওয়ার্স (Tight warp) 
৮. ঢিলা ওয়ার্স (Slack warp) 
৯. ওয়ার্প স্ট্রিক (Warp streak ) 
১০. পাড় প্রভাব (Selvedge effect) 
১১. ঢেউ খেলানো পাড় (Curly or wavy selvedge) 
১২. কর্ডেড পাড় (Corded selvedge) 
১৩. পাড়ে ভাঙ্গা পড়েন (Weft breaks) 
১৪. লুপ বিশিষ্ট পাড় (Loop in the selvedge) 
১৫. টেম্পলের দাগ (temple marks) 

খ) পড়েন বরাবর ত্রুটি (Weft way defects)
১. মিস পিক বা ব্রোকেন পিক (Miss pick or broken pick ) 
2. ব্রোকেন প্যাটার্ন (Broken patern 
৩. থিক এন্ড থিন প্লেস ( Thick and thin place ) 
৪. শাটেল মার্ক (Shuttle mark) 
৫. ওয়েফট কার্ল (Weft Curls ) 
৬. তির্যক পড়েন (Weft sew) 
৭. টাইট পড়েন (Tight weft) 
৮. ব্যাক ল্যাশিং বা ল্যাশিং ইন (Back lashing or lashing in ) 
৯. স্টার্টিং মার্ক (Starting mark)
১০. ক্র্যাকস (Cracks) 
১১. টিয়ার ড্রপ (Tear drops ) 
১২. গোট (Goat) 
১৩. ব্লাক পিকস (Black picks ) 
১৪. ফিঙ্গার মার্কস (Finger marks) 
১৫. বো ইফেক্ট (Bow effects) 
১৬. নট ইন দ্যা ওয়েফট (Knot in the weft) 
১৭. ক্যাচ নট (Catch knot) 

গ) টানা ও পড়ের উভয় বরাবর ত্রুটি 
১. ক্লাউডি বা অসমান কাপড় (Cloudy or uneven cloth ) 
২. তেলের দাগ (Oil or grease spot)
৩. হোলস ইন দ্যা ক্লথ (Holes in the cloths) 
৪. ওয়েডি ক্লথ (Wavy cloth ) 
৫. রাস্ট ইন ফ্যাব্রিক (Rust in fabric ) 
৬. ডার্টি ক্লথ (Dirty cloth ) 
৭. হেয়ারি ফ্যাব্রিক (Hairy fabric) 
৮. অমসৃণ কাপড় (Rough surface) 

ঘ) নিটিং-এর ত্রুটিসমূহ 
১. ব্রোকেন এস্ত বা হোলস (Broken ends or holes ) 
২. ড্রপ স্টিচ (Drop stitch) 
৩. ক্লথ ফল আউট (Cloth fall out) 
৪. স্লাগিং (Slagging) 
৫. টাক বা ডাবল স্টিচ (Tuck or double stitch) 
৬. বাঞ্চিং আপ (Bunching up ) 
৭. ভার্টিক্যাল স্ট্রাইপ (Vertical stripes) 
৮. আনুভূমিক স্ট্রাইপ (Horizontal stripes ) 
৯. কালার ফ্লাই ( Color fly ) 
১০. ডিসটরটেট স্টিচ (Distortet stitch) 

সতর্কতা
o হস্তচালিত তাঁতে ত্রুটিমুক্ত কাপড় বোনার জন্য একজন তাঁতির মনোযোগী হওয়া প্রয়োজন । 
o ত্রুটিমুক্ত ভালো কাপড়ের জন্য তাঁতির দক্ষতাই প্রধান ভূমিকা পালন করে থাকে । 

উপসংহার / মন্তব্য

Content added || updated By

ভূমিকা 
কাপড় বিশ্লেষণের জন্য যাবতীয় বিষয় জেনে নিয়ে হুবহু অনুরূপ কাপড় তৈরি করা সম্ভব। কাজেই নমুনা কাপড় বিশ্লেষণ করে সমস্ত তথ্য জেনে নেওয়া প্রয়োজন। 

কাপড় বিশ্লেষণের জন্য প্রয়োজনীয় বিষয় - 
একটি কাপড় বিশ্লেষণের জন্য নমুনা হতে নিম্নলিখিত বিষয়সমূহ জেনে নেওয়া প্রয়োজন । 
০ কাপড়ের কোন দিক উপর বা সদর অর্থাৎ ফেইস সাইড (Face side) 
o কাপড়ের কোন বরাবর টানা ও কোন বরাবর পড়েন। 
০ কাপড়ের ইঞ্চি প্রতি টানা ও পড়েন সংখ্যা নির্ণয় ।
০ নমুনা কাপড়ের টানা ও পড়েন সুতার কাউন্ট নির্ণয় । 
০ কাপড়ের উইভ স্ট্রাকচার অথবা ডিজাইন নির্ণয় করা । 
০ ডিজাইন নির্ণয় করার পর রিপিটের আকার নির্ণয়। 
০ ডিজাইন রিপিটের আকার নির্ণয়ের পর ড্রাফটিং ও লিফটিং প্লান নির্ণয় করা । 
০ টানা ও পড়েন সুভায় রকম অর্থাৎ টানা সুতা ও পড়েন সুতা কোন আঁশের তৈরি তা নির্ণয় করা। 
০ টানা ও পড়েন সুতার আলাদা আলাদা পাকের (Twist) সংখ্যা নির্ণয় করা । 
০ রিড কাউন্ট ও হিল্ড কাউন্ট বের করা। 
০ কাপড়ের নির্দিষ্ট ইউনিটের ওজন বের করা। 
০ সুভার কোন আলাদা প্যাটার্ন থাকলে তা বের করা । 
o টানা বা পড়েন সুতা ব্লেন্ডেড হলে তা কোন সুতা কতটুকু অর্থাৎ শতকরা কত তা নির্ণয় করা । টানা বা পড়েন আলাদা আলাদা কতটুকু সুতার প্রয়োজন তা নির্ণয় করা। 
০ কাপড়টি তৈরি করতে কি ধরনের তাঁতের প্রয়োজন তা নির্ণয় করা । 
০ কাপড় ও সুতার বাণিজ্যিক নাম যদি থাকে তা নির্ণয় করা। 
০ কাপড়টি ফিনিসড অথবা আনফিনিসড তা বের করা । 
o রঙিন সুতার বেলায় কি রং এর সুতা তা বের করা । 
০ যদি সম্ভব হয় তবে কাপড়ের বহর ও দৈর্ঘ্য বের করা। 

সতর্কতা 
o নমুনা কাপড় থেকে হুবহু কাপড় তৈরির জন্য অতি সতর্কতার সাথে কাপড় বিশ্লেষণ করা প্রয়োজন । 
০ কাপড় বিশ্লেষণের ফাইবার শণাক্তকরণের জন্য কেমিক্যালস হিসেবে এসিড ব্যবহারের সময় থাকতে হবে।

উপসংহার / মন্তব্য

Content added || updated By

ভূমিকা- 
কাপড়ের রিপিট ও ডিজাইন নির্ণয় করার পূর্বে কাপড়ের টানা ও পড়েন এর দিক, টানা ও পড়েন সুতা, ইঞ্চি প্রতি টানা ও পড়েন সুতা, ইত্যাদি শনাক্ত করা খুবই জরুরি। কাউন্টিং গ্লাসের সাহায্যে কাপড়ের এক অংশ থেকে টানা সুতা কোনটি উপরে অথবা কোনটি নিচে এভাবে সনাক্ত করে ডিজাইনটি তৈরি করতে হবে। ডিজাইন তৈরি করার পর ডিজাইনটির রিপিট বের করতে হবে। 

প্রয়োজনীয় ইকুইপমেন্ট- 
কাপড়ের ডিজাইন ও রিপিট নির্ণয়ের জন্য নিম্নলিখিত ইকুইপমেন্ট প্রয়োজন । 
০ ছক কাগজ বা গ্রাফ পেপার । 
০ কাউন্টিং গ্লাস
০ পেনসিল 
০ নিডল । 

কাপড়ের ডিজাইন ও রিপিট নির্ণয়ের পদ্ধতি- 
প্রথমে ছক কাগজে ডিজাইন করার জন্য কাগজে নিচে ও বাম দিকের একটি ঘর দ্বারা শুরু করতে হবে। অতপর নমুনা কাপড়কে কাঁচি দ্বারা সুন্দরভাবে কেটে টেবিলের উপর এমনভাবে বিছিয়ে রাখতে হবে যেন কোথাও কুঁচকে না থাকে । অতপর কাপড়টির উপর কাউন্টিং গ্লাসটি রাখতে হবে। 

পূর্ব থেকে কাপড়টির টানা ও পড়েন সনাক্ত করা থাকে। টানা ও পড়েন থেকে আস্তে আস্তে সুতা খুলেও ছক কাগজে ডিজাইন অংকন করা যায়। আবার কাউন্টিং গ্লাস বসিয়ে নিডল দ্বারা একটি একটি করে সুতা সনাক্ত করে পেনসিলের মাধ্যমে ছক কাগজের বাম পাশের নিচ থেকে ডিজাইনটি আস্তে আস্তে অংকন করতে হবে। কাউন্টিং গ্লাসের মাধ্যমে কাপড়টির উপর তাকালে টানা ও পড়েন সুতাগুলো মোটা দেখায় ও কোন সুতার সাথে কোন সুতার বন্ধনী সৃষ্টি হলো তা সহজে শনাক্ত করা যায়। লক্ষ্য রাখতে হবে কাপড়টির সদর দিক (Face side) যেন উপরে থাকে। আস্তে আস্তে টানা ও পড়েন সুতার বন্ধনী ছক কাগজে অংকন করতে করতে ডিজাইনটি একটি আকারে চলে আসবে । অর্থাৎ ডিজাইনটি ছক কাগজে ফুটে উঠবে । তখন উপরোক্ত প্রক্রিয়া বন্ধ করে রিপিট সাইজ চিহ্নিত করতে হবে । 

রিপিট সাইজ চিহ্নিত করার জন্য প্রথমে ডিজাইনটির সেট মিলাতে হবে। ডিজাইনটির মধ্যে টানা ও পড়েন সুতার সেট শনাক্ত করে প্রথমে আনুমানিক রিপিট চিহ্নিত করতে হবে । অতপর উক্ত রিপিট থেকে টানা ও পড়েন সুতার সেট নিয়ে উপরে বা ডান পার্শ্বের টানা ও পড়েন সুতার সেটের সাথে মিলিয়ে দেখতে হবে। যদি উপরের ও ডানের উভয় সেটের সাথে রিপিটটা মিলে যায় তবে উক্ত রিপিট সাইজটি ডিজাইনের প্রকৃত রিপিট হবে। 

অংকিত ডিজাইনকে উইভ প্লান বলা হয় । রিপিট চিহ্ন দ্বারা ডিজাইনের রিপিটকে দেখানো হবে । এখন নিয়মানুযায়ী রিপিট থেকে ড্রাফটিং প্লান ও লিফটিং প্লান অংকন করতে হবে যাতে সহজেই উক্ত ডিজাইন থেকে কাপড়টি প্রস্তুত করা সম্ভব হয়।

উপসংহার / মন্তব্য

Content added || updated By

ভূমিকা 
ডিবি একটি সেডিং ডিভাইস যা তাঁতের উপরে যে কোন এক প্রান্তে বসানো থাকে। ডবির মাধ্যমে ট্যাপেট সেডিং ও জ্যাকার্ড সেডিং-এর মাঝামাঝি রিপিটের ডিজাইন তৈরি করা সম্ভব। অর্থাৎ ট্যাপেট সেডিং-এর চেয়ে বেশি এবং জ্যাকার্ড সেডিং-এর চেয়ে কম সংখ্যক টানা সুতা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। 

ডবি সেডিং-
এ সাধারণত ৬ থেকে ৪৮টি ঝাঁপ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব । সংজ্ঞা ডবি : যখন কোন ডিজাইনের প্রয়োজনীয় সংখ্যক ঝাঁপ উঠানামা করানো বা ডিজাইনের রিপিটে পিক সংখ্যা নিয়ন্ত্রণ করা ট্যাপেটের ক্ষমতার বাহিরে চলে যায় তখন যে ডিভাইসের মাধ্যমে উক্ত ডিজাইনের কাপড় বুনন করা হয় ডাকে ডবি বলে। 

ডবির ব্যবহার 
০ কটন ইন্ডারিতে সাধারণত ২৪ শ্যাফটের ডবি ব্যবহার করা হয়। কোন কোন ক্ষেত্রে ১৬ থেকে ২০ শ্যাফটের ডবি ব্যবহার হয়। 
০ যে সমস্ত শিল্পে ৩৬ শ্যাফটের ডবি ব্যবহার করা হয় তার প্রায় অর্ধেক অংশই পজিটিভ অ্যাকশন দেয় এবং ব্যতিক্রমধর্মী হ্যাভি সেডিং দেয়।
o বড় ধরনের যে সব টুইল, সাটিন ট্যাপেটের সাহায্যে করা সম্ভব হয় না সে সব ডিজাইন ডবির সাহায্যে করা হয় । কেননা এতে অতিরিক্ত কোন খরচ হয় না। 
o বিভিন্ন ধরনের প্যাটার্ন তৈরিতে ডবি ব্যবহার করা হয়। 

উপসংহার / মন্তব্য

Content added || updated By

ভূমিকা 
ডবির সাহায্যে কাপড়ের উপর ডিজাইন তৈরির জন্য প্রথমে পেগিং প্লান করতে হবে। ল্যাগ এর ছিদ্রে পেগগুলো সাজানোই পেগিং প্লান। পেগিং প্লান করার জন্য প্রথমেই জানতে হবে ডবিটি ডানহাতি না বা হাতি। ডানহাতি বা বাহাতি ডবির উপর নির্ভর করে পেগগুলো সাজাতে হবে । 

সংজ্ঞা 
ক) ডবি : যখন কোন ডিজাইনের প্রয়োজনীয় সংখ্যক ঝাঁপ উঠানামা করানো বা ডিজাইনের রিপিটে পিক সংখ্যা নিয়ন্ত্রণ করা ট্যাপেটের ক্ষমতার বাইরে চলে যায় এবং তা জ্যাকার্ড দ্বারা উৎপাদন করাও লাভজনক নয় তখন যে ডিভাইসের মাধ্যমে উক্ত ডিজাইনের কাপড় বুনন করা হয়, তাকে ডবি বলে। 

খ) ডিজাইন : কাপড় তৈরি করার পূর্বে একটি নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে চলা হয় । তা সাধারণত কাগজে প্রতিফলন করা হয় এবং পরবর্তীতে উক্ত কাগজ থেকে নিয়মানুযায়ী কাপড় প্রস্তুত করা হয় । কাজেই কাপড় প্রস্তুত সংক্রান্ত বুনন কাপড়ে প্রতিফলন করাকেই ডিজাইন বলে। 

৫। পেগ প্লান প্রস্তুতকরণ 
যখন কোন ডবি লুমের স্ট্যাটিং (Starting) হ্যান্ডেল লুমের ডান পাশে থাকে তখন তাকে রাইট হ্যান্ডেল অর্থাৎ ডান হাতি ডবি বলে। আবার যখন ডবি লুমের স্ট্যাটিং হ্যান্ডেল জুমের বাম পাশে থাকে তখন উক্ত লুমকে লেফট হ্যান্ডেড বা বাহাতি ডুবি বলে । রাইট হ্যান্ডেড ডবির সিলিন্ডার ঘড়ির কাটার দিকে ঘুরে অন্য দিকে লেফট হ্যান্ডেড ডবির সিলিন্ডার ঘড়ির কাটার বিপরীত দিকে ঘুরে । রাইট হ্যান্ডেড ডবিতে সেড তৈরি করতে প্রথম পিক বটম হুক দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়, অন্যদিকে লেফট হ্যান্ড ডবিতে টপ হুক দ্বারা সেড তৈরি করা হয়। আটটি তল বিশিষ্ট সিলিন্ডারের জন্য প্যাটার্ন চেইন বা লেটিস তৈরি করতে অবশ্যই ৮টি ল্যাগের প্রয়োজন হয়। প্রতিটি ল্যাগ দুইটি পিক নির্দেশ করে। এসব ছিদ্রে ডিজাইন অনুযায়ী বা পেগ প্লান অনুযায়ী পেগ বসাতে হবে। 

সর্তকতা
• পেগ প্লান করার সময় সাবধান হতে হবে । ল্যাগে পেগ বসাতে ভুল করলে ডিজাইন পরিবর্তন হয়ে যাবে । 

উপসংহার / মন্তব্য

Content added By

ভূমিকা
ডবি ডিজাইনের মাধ্যমে ঝাঁপ নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা ট্যাপেট ও জ্যাকার্ডের মাঝামাঝি। তাত্ত্বিকভাবে ৬ থেকে ৪৮ ঝাঁপের ডবির কথা শোনা গেলেও ব্যবহারিকভাবে ১৬×১৬, ২০×২০, ২৪×২৪ বা সর্বোচ্চ ৩৬×৩৬ ডৰিব দেখতে পাওয়া যায় । 

ডবির ব্যবহার 
০ কটন শিল্পে সাধারণত ২৪ শ্যাফটের ডবি ব্যবহার করা হয়। কোন কোন ক্ষেত্রে ১৬ থেকে ২০ শ্যাফটের ডবি ব্যবহার হয়। 
০ যে সমস্ত শিল্পে ৩৬ শ্যাফটের ডবি ব্যবহার হয় তার প্রায় অর্ধেক অংশই পজিটিভ অ্যাকশন দেয়। 
o বড় ধরনের যে সব টুইল সার্টিন ট্যাপেটের সাহায্যে করা সম্ভব নয় সে সব ডিজাইন ডবির সাহায্যে করা হয় । কেননা এতে অতিরিক্ত কোন খরচ পড়ে না । 
০ বিভিন্ন ধরনের প্যাটার্ন তৈরিতে ডবি ব্যবহার করা হয়। 

উপসংহার / মন্তব্য

Content added By

ভূমিকা 
জ্যাকার্ড একটি শেডিং ডিভাইস যা লুমের উপরে বসানো থাকে। জ্যাকার্ড লুমে কোন ঝাঁপ অর্থাৎ হিল্ড শ্যাফট ব্যবহার করা হয় না । হার্নেস, কর্ড, হুক এবং নিডেলের মাধ্যমে অধিক সংখ্যক টানা সুতা উঠানামা করিয়ে শে গঠন করা হয়। 

জ্যাকার্ডের কার্যক্ষেত্র 
• বেশি ক্যাপাসিটির ডিজাইন করার জন্য আমরা জ্যাকার্ড লুমকে ব্যবহার করি। যে সমস্ত ডিজাইন ট্যাপেট ডবির সাহায্যে করা সম্ভব হয় না সে সমস্ত ডিজাইন তৈরির জন্য জ্যাকার্ড শেডিং ব্যবহার করা হয় । 
• জ্যাকার্ড সাধারণত বড় ও জটিল ডিজাইন তৈরির ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয় । 
• জ্যাকার্ডে প্রতিটি টানা সুতাকে আলাদাভাবে হুকের সাহায্যে নিয়ন্ত্রণ করা হয়। 
• জ্যাকার্ডের মাধ্যমে তৈরিকৃত ডিজাইন তাত্ত্বিকভাবে সীমাবদ্ধ নয়। সাধারণত জ্যাকার্ডের প্রতি রিপিটে ১০০ থেকে ২০০০ পর্যন্ত টানা সুতা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। 

উপসংহার / মন্তব্য

Content added By

ভূমিকা 
গ্রাফ পেপারে অংকিত বড় প্যাটার্ন থেকে প্রথমে প্যাটার্ন কার্ড কাটা হয়। অতপর প্রতিটি কার্ডকে একত্রে একটি প্রাস্তহীন ফিতার মতো বেঁধে চেইন আকারে পরিণত করা হয়। অতপর কার্ড চেইনকে জ্যাকার্ড মেকানিজমের সিলিন্ডারের উপর সাজিয়ে রাখা হয়। প্যাটার্ন কার্ডের ছিদ্র অনুযায়ী নিডেল হুককে নির্বাচন করে ও হুকগুলো টানা সুতাকে উপরে তুলে সেড গঠন করে ।

সংজ্ঞা 
(ক) জ্যাকার্ড : যে ডিজাইন ট্যাপেট অথবা ডবি ম্যাকানিজমের মাধ্যমে তৈরি করা সম্ভব হয় না। সে সমস্ত ট্যাপেট ডিজাইনের মাধ্যমে ফুটিয়ে তোলা হয় তাকে জ্যাকার্ড বলে । 

(খ) টেক্সটাইল ডিজাইন : টেক্সটাইল সংক্রান্ত বুনন যা কাগজে অথবা কাপড়ে প্রতিফলন করণকেই টেক্সটাইল ডিজাইন বলা হয়। 

জ্যাকার্ডের সাহায্যে কাপড়ে ডিজাইন প্রস্তুতকরণ 
নিডেল, নিডেল বোর্ড, স্প্রিং বক্স, হুক, নাইফ, কার্ড সিলিন্ডার, প্যাটার্ন কার্ড, নেককর্ড, হার্নেস কর্ড, কম্বার বোর্ড, মেইল আই, লিঙ্গ ইত্যাদি নিয়ে গঠিত জ্যাকার্ড ম্যাকানিজম সিঙ্গেল লিফট সিঙ্গেল সিলিন্ডার জ্যাকার্ড ম্যাকানিজমে টানা সুতার ২টি রিপিটের জন্য ৪০০ টি নিডেল ও ৪০০টি হুক থাকে। 

প্রথমে প্যাটার্ন অনুযায়ী কার্ড কাটিং মেশিন দ্বারা প্যাটার্ন কার্ডে পাঞ্চ করে ছিদ্র করা হয় এবং কার্ডগুলোকে একত্রে বেঁধে প্রান্তহীন চেইনে পরিণত করা হয়। অতপর কার্ড চেইনকে কার্ড সিলিন্ডারের মাধ্যমে নিডেলের সামনে স্থাপন করা হয় । কার্ডের ছিদ্রগুলো ডিজাইনের ওয়ার্স আপ নির্দেশ করে। ছিদ্র অনুযায়ী কার্ডগুলো নিডেল নির্বাচন করে নিডেলের ক্র্যাংকে হুক নির্বাচন করে এবং নাইফের মাধ্যমে উপরে উঠে ও সেড গঠন করে। সেড গঠন হওয়ার পর পিক হয় এবং পড়েন সুতা সেড এর মধ্যে প্রবেশ করে নির্দিষ্ট ডিজাইনের কাপড় তৈরি করে । 

সতর্কতা 
কার্ড কাটিং মেশিনের মাধ্যমে কার্ড পাঞ্চিং করার সময় কোন ভুল ছিদ্র করলে কাপড়ে উৎপাদিত ডিজাইনও ভুল হবে। 

উপসংহার / মন্তব্য

Content added By

ভূমিকা 
বেশি ক্যাপাসিটির ডিজাইন তৈরি করার জন্য মূলত জ্যাকার্ড মেকানিজম ব্যবহার হয়। জ্যাকার্ড লুমে ডিজাইন প্রস্তুত করার জন্য রিপিটের আকার তাত্ত্বিকভাবে সীমাবদ্ধ নয়। সাধারণত জ্যাকার্ডের সাহায্যে প্রতি রিপিটে ১০০ থেকে ২০০০ পর্যন্ত টানা সুতা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। 

জ্যাকার্ডের ব্যবহার 
০ জ্যাকার্ড মেকানিজমে কোন ঝাঁপ ব্যবহার করা হয় না। 
০ জ্যাকার্ড মেকানিজমের মাধ্যমে যে কোন সময় একটি অথবা সব কটি সুতা উপরে উঠানো বা নিচে নামানো সম্ভব । 
o জ্যাকার্ড সাধারণত বড় ও জটিল ডিজাইন তৈরির জন্য ব্যবহার হয়। 
০ গ্রাফ পেপারে অংকিত ডিজাইন যদি ২০০০×২০০০ রিপিটেরও হয় তবুও জ্যাকার্ডের মাধ্যমে কাপড়ে উক্ত ডিজাইন উঠানো সম্ভব । 
০ হ্যান্ড লুমে প্রধানত শাড়ির পাড় তৈরির ক্ষেত্রে জ্যাকার্ড মেকানিজম ব্যবহার হয় ।

উপসংহার / মন্তব্য

Content added By

ভূমিকা 
নীল বা ইন্ডিগো ভারত উপমাহাদেশের ব্যবহার প্রাচীন রং। প্রাচীন কাল থেকেই প্রকৃতি থেকে প্রাপ্ত এ ইন্ডিগো ডাইকে বিশেষভাবে নির্মিত কাঠের পাত্র বিশেষে অর্গানিক ম্যাটার দ্বারা চোলাইকারণ করার পর রিডিউসড করে দ্রবণ করা হতো । কাঠের এ পাত্রটি ভ্যাট নামে পরিচিত। এখান থেকে এ ডাই কে ভ্যাট ডাই হিসেব নামকরণ করা হয়েছে। 

সংজ্ঞা 
ভ্যাট ডাই : যে ডাই কে ভ্যাট নামক পাত্রে সোডিয়াম হাইড্রোসালফাইড বা হাড্রোস নামক রিডিউসিং এজেন্ট এবং কস্টিক সোডা দ্রবণে ক্রিয়া করিয়ে দ্রবণীয় করতে হয় । সেই শ্রেণির ডাইকে ভ্যাট ডাই বলে । 

ভ্যাট ডাই-এর পরিচিতি 
০ ভ্যাট ডাই পানিতে দ্রবণীয়। 
০ ভ্যাট ডাই এ অনেক ধরনের কালারিং ম্যাটার লাগে। 
০ এটি দ্বারা সাধারণত সেলুলোজিক রং করা হয় । 
০ তবে প্রোটিন ফাইবার রং করার ক্ষেত্রে বেশি ব্যবহার হয় । 
০ কার্বনিক গ্রুপ (>C = O) থাকার কারণে ভ্যাট ডাই অদ্রবণীয় । 

উপসংহার / মন্তব্য

Content added By

ভূমিকা 
ভ্যাট ডাই পানিতে অদ্রবণীয়। ডাইকে দ্রবীভূত করার জন্য ডাইগুলোকে প্রথমে বিজারিত করে লিউকো যৌগে পরিণত করা হয়। যা পরবর্তীতে অ্যালকালি সহযোগে পানিতে দ্রবণীয় হয়। এ ডাই কে রিডিউসিং এজেন্ট দ্বারা ট্রিটমেন্ট করলে লিউকো কম্পাউন্ডে পরিণত হয়। যা অ্যালকালির উপস্থিতিতে পানিতে দ্রবণীয় অর্থাৎ ভ্যাট ডাই (অদ্রবণীয়) সোডিয়াম সল্ট অব লিউকো কম্পাউন্ডে (দ্রবণীয়) পরিণত করাকেই ভ্যাটিং বলে। 

ভ্যাট ডাই-এর ব্যবহার 
০ কটন ফেব্রিক ডাইং এর জন্য । 
০ কটন ফেব্রিক প্রিন্টিং এর জন্য । 
০ উল এবং সিল্ক ভ্যাট ডাই দ্বারা রং করা হয় । 
০ এ ডাই দ্বারা সাধারণত সেলুলোজিক ফাইবার ডাই করা হয় । 
০ প্রোটিন ফাইবার ডাই-এর জন্য pH নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে । 

উপসংহার / মন্তব্য

Content added By

ভূমিকা 
যেহেতু ভ্যাট ডাই পানিতে অদ্রবণীয় কাজেই তা সরাসরি টেক্সটাইল দ্রব্যে প্রয়োগ করা যায় না। ভ্যাট ডাই বিজারিত অবস্থায় দ্রবণীয় হয়। সাধারণত সোডিয়াম হাইড্রোসালফাইড এবং সোডিয়াম হাইড্রোক্লোরাইড দ্বারা বিজারিত করা হয়। সাধারণত সেলুলোজিক ফাইবার এ ডাই দ্বারা রং করা হয়। তবে প্রোটিন ফাইবারও এ ডাই দ্বারা রং করা যায় ।

ডাইং প্রণালি 
এ ডাই পানিতে অদ্রবণীয়। একে পানিতে দ্রবণীয় করার জন্য লিউকো কম্পাউন্ডে পরিণত করতে হবে । বাজারে দুই ধরনের ভ্যাট কালার পাওয়া যায়- তরল ও পাউডার জাতীয়। তরল অবস্থায় হলে তাকে সরাসরি লিউকো কম্পাউন্ডে পরিণত করা যায়। আর পাউডার জাতীয় হলে রেসিপি অনুযায়ী টি আর ওয়েল এর সাথে পরিমাণ মতো পানি মেশাতে হবে । এ অবস্থার দ্রবণটি ভালোভাবে নাড়তে হবে। ফলে একটি পেস্ট তৈরি হবে। এর পর এর সাথে পরিমাণ মতো সোডিয়াম হাইড্রোসালফাইড, কস্টিক সোডা এবং লবণ যোগ করলেই লিউকো কম্পাউন্ডে পরিণত হয়। ফলে ভ্যাট ডাই পানিতে দ্রবীভূত হয় এবং কাপড় রং শোষণ করতে পারে। এ অবস্থায় দ্রবণ কিছুক্ষণ স্থির রাখা হয়। যদি তলানি না পড়ে । তবে বুঝতে হবে লিউকো কম্পাউণ্ড সঠিকভাবে তৈরি হয়নি। সেক্ষেত্রে লিউকো কম্পাউন্ড ভালোভাবে তৈরি করতে হবে। অতপর দ্রবণকে ডাই বাঘে আনা হয়। বাথে পূর্ব হতে কাপড় রাখা থাকে। উক্ত ডাই বাঘে অবশিষ্ট পানিসহ দ্রবণকে ভালোভাবে মিশ্রিত করা হয় এবং ঢাকনা বন্ধ করা হয়। যাতে বাতাস ঢুকতে না পারে। অতপর ৬০ সে. তাপমাত্রায় ৪৫ মিনিট হতে ৬০ মিনিট নাড়াচাড়া করা হয়। পড়ে কাপড়কে বাথ থেকে তুলে নিংড়ানো হয় এবং এসিটিক এসিড দ্রবণ দ্বারা ধৌত করলে অ্যালকালি দূর করা যায় । তারপর ঠান্ডা পরিষ্কার পানিতে ধৌত করে বাতাসে ছড়িয়ে দেওয়া হয়। ফলে রং বাতাসের অক্সিজেনের সাথে বিক্রিয়ায় অদ্রবণীয় হয়ে যায় এবং পূর্বের অবস্থায় ফিরে আসে এবং রং স্থায়ী হয়ে যায়। একে অক্সিডেশন বলা হয় ।

উপসংহার/সম্ভাব্য


Content added By

Promotion