SATT ACADEMY

New to Satt Academy? Create an account


or

Log in with Google Account

এসএসসি(ভোকেশনাল) - পেশেন্ট কেয়ার টেকনিক-১ - প্রথম পত্র (নবম শ্রেণি) | NCTB BOOK

কর্মক্ষেত্রে কর্মচারী এবং নিয়োগকর্তা উভয়ের জন্যই পেশাগত নিরাপত্তা এবং স্বাস্থ্য হচ্ছে রোগীর সেবাদানের একটি মূল ভিত্তি। স্বাস্থ্যকর কাজের পরিবেশ, সহিংসতা এবং হয়রানি থেকে মুক্ত থাকতে কর্মক্ষেত্রে যেসব ক্ষতিকর ও ঝুঁকির উপাদান রয়েছে সেগুলো অপসারণ, হ্রাস বা প্রতিস্থাপন করাই হল একটি নিরাপদ ও স্বাস্থ্যকর পরিবেশের পূর্ব শর্ত। এটি নিশ্চিতকরণের মাধ্যমে রোগীর সেবায় নিয়োজিত স্বাস্থ্যকর্মীরা শারীরিক ও মানসিক নিরাপত্তা নিয়ে তাদের কাজগুলো সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে পারবে। বহির্বিশ্বের অন্যান্য দেশের মত বাংলাদেশেও কর্মক্ষেত্রে স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে শ্রম আইন প্রণয়ন করা হয়েছে। এটি আইন ও বিধি আকারে বাংলাদেশ শ্রম আইন নামে ২০০৬ সালে প্রণয়ন করে পরবর্তীতে যথাক্রমে ২০০৮, ২০০৯, ২০১০ ও ২০১৩ সালে বাংলাদেশ সংশোধিত শ্রম আইন হিসেবে জারি করা হয়েছে। পেশাগত এইসব স্বাস্থ্য ঝুঁকি সম্পর্কে শিক্ষার্থীরা তাদের পর্যাপ্ত জ্ঞান, দক্ষতা কাজে লাগিয়ে ভবিষ্যতে রোগী ও কর্মক্ষেত্রে অর্গিত কাজগুলো সাফল্যের সাচ্ছে চালিয়ে যেতে পারবে।

 

এ অধ্যায় পাঠ শেষে আমরা -

  • কর্মক্ষেত্রে সতর্কতামূলক বিভিন্ন ব্যবস্থা সম্পর্কে বলতে পারবো ।
  • পেশাগত স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা কী তা বর্ণনা করতে পারবো।
  • OSH নীতি এবং পদ্ধতি ব্যাখ্যা করতে পারবো।
  • ব্যক্তিগত সুরক্ষা অনুশীলনের দক্ষতা অর্জন করতে পারবো।
  • কর্মস্থলে হ্যাজার্ড বা আগন সনাক্ত করতে পারবো।
  • সুরক্ষা লক্ষণ ও চিহ্নসমূহ সনাক্ত করতে পারবো।
  • নসোকোমিয়াল ইনফেকশন বর্ণনা করতে পারবো।
  • দুর্ঘটনায় সাড়া দেওয়া ও রিপোর্টিং করতে পারবো।
  • হাসপাতলে ব্যবহৃত বর্জ্যের বিন/ পাত্রের সাংকেতিক চিহ্ন ও কালার কোড সম্পর্কে বর্ণনা করতে পারবো।

উল্লিখিত শিখনফল অর্জনের লক্ষ্যে এই অধ্যায়ে আমরা বিভিন্ন আইটেমের জব (কাজ) সম্পন্ন করব। এই জবের মাধ্যমে আমরা অগ্নিনির্বাপন যন্ত্র ব্যবহার করে আগুন নেভানো এবং কর্মক্ষেত্রে ধোঁয়া থেকে শিক্ষার্থীদের নিরাপদ স্থানে আশ্রয়গ্রহণ কৌশল অর্জন এবং কর্মক্ষেত্রের নিয়ম অনুসারে ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জাম (পিপিই) ব্যবহার পদ্ধতি নিশ্চিত করতে পারবো। জবগুলো সম্পন্ন করার পূর্বে প্রয়োজনীয় ভাষিক বিষয়সমূহ জানবো ।

 

১.১ কর্মক্ষেত্রে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা

কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তা সতর্কতামূলক ব্যবস্থা বলতে সাধারণ কিছু কর্যক্রমকে বোঝায় যার মধ্যে রয়েছে গ্লাভস পরা, চোখের সুরক্ষা পরা, ভালো সরঞ্জাম ব্যবহার করা, কোনো কিছু ছিটকে পড়লে তা পরিষ্কার করা, প্রাথমিক চিকিৎসা কিট ব্যবহার করতে পারা ইত্যাদি। তবে মনে রাখতে হবে যে, এগুলো জানার মধ্যেই শুধু সতর্কতামূলক ব্যবস্থাগুলো সীমাবদ্ধ নয়। এর সাথে আরও কিছু বিষয় জড়িত।

 

১.১.১ কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তার সুবিধা

যখন এক দল কর্মীবাহিনী সত্যিকার অর্থে কাজে নিবেদিত হয় এবং একটি নিরাপদ কাজের পরিবেশ তৈরির লক্ষে একত্রিত হয়, তখন এটি কর্মক্ষেত্রে বিভিন্ন রকমের আঘাত হ্রাস এবং অসুস্থতা নিরসনে অবদান রাখা এবং অগণিত সুবিধা প্রদান করে থাকে।

 

১.১.২ কর্মক্ষেত্রে সতর্কতাকূলক ব্যবস্থায় করণীয়

একটি নিরাপদ কাজের পরিবেশ তৈরিতে সাহায্য করার জন্য সমস্ত কর্মচারীদের দ্বারা অনুসরণ করা যেতে পারে এমন কিছু নিরাপত্তামুলক করণীয় রয়েছে। যদিও নিম্নের বিষয়গুলোই একমাত্র করণীয় নয়, বরং সেবাদানকারীরা যাতে তাদের কর্মক্ষেত্রে কম ঝুঁকিতে কাজ করতে পারে তার মধ্যে এগুলোই মূল মৌলিক আদর্শগুলোর অন্যতম। যেমন :

১। সর্বদা অনিরাপদ অবস্থার রিপোর্ট করা : কখনও কখনও, কর্মীরা নিজের বা অন্য কেউ সমস্যায় পড়ার তরে তাদের ঊর্ধ্বতনদের সাথে নির্দিষ্ট ঝুঁকির বিষয় এবং বিপদগুলো জানাতে দ্বিধা বোধ করতে পারে। এটি নিরাপদ কাজের পরিবেশের জন্য অনুকূল নয়। কারণ এটি কর্মক্ষেত্রে দুর্ঘটনা বা আঘাতের সম্ভাবনা বাড়িয়ে তুলতে পারে। তাই কর্মীকে অন্যান্য সহকর্মীদের এবং নিজেদের রক্ষায় সাহায্য করার জন্য অবিলম্বে ঝুঁকির বিষয়গুলো রিপোর্ট করতে হবে। একবার এই সমস্যা চিহ্নিত হয়ে গেলে, দ্রুত এবং কার্যকরভাবে পরবর্তী ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করবে।

২। ওয়ার্কস্টেশন বা কর্মক্ষেত্র পরিষ্কার রাখা: সেবাদানকারীরা তাদের ওয়ার্কস্টেশনের কাছাকাছি অপ্রয়োজনীয় জিনিস থাকলে অথবা ওয়ার্কস্টেশনে কোনো কিছু পড়ে থাকলে তা অবশ্যই সর্বদা পরিস্কার করবে এবং অন্যান্য সহকর্মীদের সাথে মিলে কাজ করা লাগলে সেই এলাকাটিকে পুঙ্গানুপুষ্পভাবে স্যানিটাইজ করতে হবে।

৩। প্রতিরক্ষামূলক সা (পিপি) পরিধান করা: কাজের সময় কর্মীদের সর্বদা প্রয়োজনীয় ব্যক্তিগত সুরক্ষামূলক সরঞ্জাম (পিপিই) পরা অতি গুরুত্বপূর্ণ। প্রায়শই কর্মীরা নির্দিষ্ট গিপিছ পরতে ভুলে যান, যেমন প্রতিরক্ষামূলক গগলস, হেয়ার নেট ইত্যাদি। কারণ তারা মনে করে যে এটি ছাড়াই তারা দ্রুত কাজটি শেষ করতে পারবে। কর্মীদের নিরাপদ রাখতে এবং তাদের আঘাত বা অনুস্থতা থেকে রক্ষা করার জন্য ব্যক্তিগত সুরক্ষামুলক সরঞ্জামগুলো দেওয়া হয়, তাই সর্বদা তাদের কাজের জন্য নির্ধারিত সুরক্ষা সরঞ্জাম (PPE) যথাযথভাবে পরে নিতে হবে।

৪। কাজের ফাঁকে বিরতি নেয়াঃ কর্মস্থলে দায়বদ্ধতার এবং অতিরিক্ত কাজ করার কারণে কর্মীরা ক্লান্ত হয়ে পড়ে। তাই কিছু কিছু কাজ শেষ করার আগে কর্মীদের বিশ্রাম নিয়ে পূর্ণ উদ্যমে কাজে ফেরার জন্য মাঝে মাঝে বিরতি নেয়া উচিত। কাজ করতে করতে ক্লান্ত হলে কর্মীরা একটি ঝুঁকির মধ্যে পড়েন এবং হাতের কাজটিতে পুরোপুরি মনোযোগ দিতে পারে না, এর ফলে যে কোনো দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।

৫। ধারাবাহিক পদক্ষেপগুলো এড়িয়ে না যাওয়া: কখনও কখনও কর্মীরা একটি কাজ সম্পূর্ণ করার জন্য তাড়াহুড়ো শুরু করে । এতে তাদের কাজের ধারাবাহিকতার বিচ্যুতি ঘটে। এসময় দ্রুত কাজটি সম্পন্ন করার জন্য সঠিক উপায়ে কিছু সরঞ্জাম ব্যবহার ভুলে যেতে পারে। এটি যে কোনো মূল্যে এড়ানো উচিত। 

৬। নতুন কর্ম পদ্ধতির সম্পর্কে ওয়াকিবহাল (Up-to-Date) থাকা: কর্মক্ষেত্রে কোনো নতুন পদ্ধতি বা নতুন সরঞ্জামাদি যুক্ত হলে কর্মীদের সেই ব্যাপারে সর্বদা সচেতন এবং ওয়াকিবহাল থাকতে হবে। সম্ভাব্য দুর্ঘটনা এড়াতে কর্মীদের কী করা দরকার সে সম্পর্কে যথাযথ প্রশিক্ষণ এবং শিক্ষা প্রদান করা আবশ্যক। কোনো প্রশ্ন বা কিছু জানার থাকলে সুপারভাইজারকে জিজ্ঞাসা করে নিতে হবে।

৭। সঠিক দেহ ভঙ্গি (Body Posture) বজায় রাখা: সঠিক দেহ ভঙ্গি বজায় রেখে কাজগুলো সম্পাদন করা কর্মীর জন্য গুরুত্বপূর্ণ। ভারি জিনিস তোলা, এমনকি কম্পিউটারে বসে কাজ করার ক্ষেত্রে এই নিরাপত্তার উপদেশগুলো মেনে চলা উচিত। সঠিক দেহ ভঙ্গি বজায় রেখে কাজ করলে ঘাড়, পিঠ বা কাঁধে ব্যথাসহ সম্ভাব্য দীর্ঘমেয়াদী ক্ষতি এড়ানো সম্ভব হয়। 

৮। নতুন কর্মীদের নির্দেশনা প্রদান করা: প্রতিষ্ঠানের অভিজ্ঞ ব্যক্তিগণের উচিত নতুন কর্মীদের সঠিক নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থার নির্দেশনা দেওয়া। উক্ত সংস্থার নিরাপত্তা নিয়ম এবং এর মানদণ্ড সম্পর্কে অবহিত করলে কর্মস্থলের নিরাপত্তার ভীত আরো শক্তিশালী হয়ে উঠবে।

 

১.২ পেশাগত স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা

১.২.১ পেশাগত স্বাস্থ্য (Occupational Health)

পেশাগত স্বাস্থ্য হল কাজের একটি ক্ষেত্র যেখানে সকল পেশার কর্মীদের শারীরিক, মানসিক এবং সামাজিক সুস্থতার উন্নয়ন ও মান বজায় রাখা নিয়ে আলোচনা করে। পেশাগত স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা (OSH) হল জনস্বাস্থ্যের একটি শাখা যেখানে কর্মীদের অসুস্থতার প্রবনতা এবং ঝুঁকি নিয়ে আলোচনা করে এবং সেগুলো প্রতিরোধ করার জন্য বিভিন্ন কৌশল বাস্তবায়ন করা হয়।

 

১.২.২ স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা সম্পর্কিত সাধারণ বিধান

বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০১৯ (২ নং আইন): পেশাগত স্বাস্থ্য রক্ষা ব্যবস্থা, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, নিরাপদ কর্ম পরিবেশ, নিরাপত্তা ও কল্যাণমূলক ব্যবস্থা: বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০১৯ দ্রষ্টব্য।

 

১.২.৩ পেশাগত স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তার গুরুত্ব

বেশিরভাগ কর্মী কর্মক্ষেত্রে দিনে কমপক্ষে আট ঘন্টা ব্যয় করে, তা হোক কোনো হাসপাতালে রোগীর কাছে, অফিসে কিংবা কারখানায়। তাই কাজের পরিবেশ নিরাপদ এবং স্বাস্থ্যকর হওয়া উচিত। সারা বিশ্বে প্রতিদিন কর্মীরা প্রচুর স্বাস্থ্য ঝুঁকির সম্মুখীন হয়, যেমন: ধুলা, গ্যাস, প্রকট শব্দ, কম্পন; চরম তাপমাত্রা ইত্যাদি। অকুপেশনাল হেলথ অ্যান্ড সেফটি (OSH) বা পেশাগত স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা প্রাথমিকভাবে কর্মক্ষেত্রে দুর্ঘটনা, আঘাত এবং ক্ষতিকারক পদার্থের সংস্পর্শ থেকে কর্মীদের রক্ষা করার উপর আলোকপাত করে। যদিও দুর্ঘটনা যেকোনো সময় ঘটতে পারে, তবুও নিয়োগকর্তার দায়িত্ব নিশ্চিত করা উচিত যেন দুর্ঘটনার ঝুঁকি কমাতে পদক্ষেপ নেয় এবং নিরাপদ কাজের পরিবেশ বজায় রাখা। প্রত্যেকটি প্রতিষ্ঠানে পেশাগত স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তার বিষয়টিকে অগ্রাধিকার দেওয়া হলে কিছু মূল সুবিধা পাওয়া যায়। যেমন:

১। এটি কর্মক্ষেত্রে আঘাত এবং অসুস্থতা হ্রাস করে 

২। এটি কর্মীদের উৎপাদনশীলতা উন্নত করে 

৩। এটি কর্মীদের অনেকদিন একই জায়গায় ধরে রাখতে সাহায্য করে 

৪। এটি আষাতের খরচ এবং শ্রমিকদের ক্ষতিপুরণ হ্রাস করে

 

১.৩ স্বাস্থ্য সচেতনতার গুরুত্ব 

স্বাস্থ্য, স্বাস্থ্যসেবা এবং এর পরিষেবা, স্বাস্থ্যের প্রয়োজনীয়তা, রোগ এবং প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা সম্পর্কে সাধারণ ধারণা এবং জ্ঞানকে স্বাস্থ্য সচেতনতা বলে। স্বাস্থ্য সচেতনতা হল রোগ প্রতিরোধ, দ্রুত সনাক্তকরণ, সঠিক চিকিৎসা ও থেরাপীর জন্য অপরিহার্য এবং কার্যকর স্বাস্থ্য সেবার মূল চাবিকাঠি। একটি রোগ এবং এর লক্ষণগুলো সম্পর্কে সচেতন হওয়ার মাধ্যমে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা, হেলথ ক্ষীনিং করা, স্বাস্থ্য পরীক্ষাসহ চেক-আপের বিষয়গুলোকে প্রাধান্য দেয়। আমাদের দেশে রোগ সম্পর্কে সচেতনতার অভাৰ বা স্ক্রীনিং এবং সঠিক সময়ে চিকিৎসা গ্রহণে অবহেলা সুস্বাস্থ্যের জন্য একটি গুরুতর ৰাধা।

 

১.৪ স্বাস্থ্য ও সেইফটি (OSH) নীতি এবং পদ্ধতি

স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা নীতিমালা একই সূত্রে গাঁথা হলেও এর প্রকৃতি এবং কার্যক্রম অনেকটা ভিন্ন। তাই এই স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা নীতিমালাটি দুইটি পর্বে উপস্থাপন করা হল: 

ক) প্রথম পর্ব- স্বাস্থ্য নীতিমালা; এবং খ) দ্বিতীয় পর্ব-নিরাপত্তা নীতিমালা ।

 

১.৪.১ স্বাস্থ্য নীতিমালা

বাংলাদেশ শ্রম আইন-২০০৬ (সংশোষিত-২০১৩ইং) এর ধারা ৫১ থেকে ৬০ ঘষ্টব্য।

১.৪.২ নিরাপত্তা নীতিমালা

নিরাপদ কর্মস্থল নিশ্চিত করার লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠানে অবস্থিত যন্ত্রপাতি এবং কর্মীদের ব্যক্তিগত নিরাপত্তার ব্যাপারটি অগ্রাধিকারযোগ্য বিষয়, এ ব্যাপারে নিম্নবর্ণিত বিষয়গুলো করণীয় বলে গণ্য করতে হবে। যেমন- 

১। অগ্নিকান্ড থেকে নিরাপত্তা: অগ্নিকাণ্ড থেকে নিরাপত্তার জন্য প্রতিটি কারখানায় স্বয়ং সম্পূর্ণ নীতিমালা প্রণয়ন করা আছে যা সংশ্লিষ্ট সবাইকে অবহিত করতে হবে। 

২। বিভাগ অনুযায়ী আত্মরক্ষামূলক সরঞ্জামাদি (PPE)- এর ব্যবহার যেমন: কেমিক্যাল বিভাগ এর জন্য রাবার এপ্রোগ, হ্যান্ড গ্লাভস, কেমিক্যাল মাস্ক, গ্লাভস ও গামবুট। 

৩। বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি: সমস্ত বৈদ্যুতিক সংযোগ নিরাপদভাবে করতে হবে। কোথাও কোনো খোলা তার, ইনসুলিশন টেপযুক্ত তার থাকবে না। 

৪। বৈদ্যুতিক বিপদ সম্পর্কে সতর্কতা 

৫। বিভিন্ন স্টোর: প্রতিদিন কাজ শুরুর পূর্বে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করতে হবে। 

৬। ভবন, যন্ত্রপাতি ও অন্যান্য কাঠামোর নিরাপত্তা 

৭। চলমান পাতিতে বা উহার নিকট কাজ করা (বিধি-৫৭) 

৮। বিপজ্জনক যন্ত্রগাভির কাজে তরুণ ব্যক্তিদের নিয়োগ

 

১.৫ ব্যক্তিগত সুরক্ষার অনুশীলন

সকল স্বাস্থ্যকর্মীদের সংক্রমণ প্রতিরোধ এবং নিয়ন্ত্রণের জন্য যথাযথ কৌশল ও জ্ঞান থাকা অপরিহার্য। কারণ এই সুরক্ষার মাধ্যমে শুধু নিজেকে নয় এর পাশাপাশি রোগী, সহকর্মী এবং সাধারণ জনগণকে সংক্রমণের হাত থেকে রক্ষা করা যায়।

 

১.৫.১ পারসনাল প্রটেক্টিভ ইকুইপমেন্ট বা পি পি ই (PPE)

অকুপেশনাল সেফটি অ্যান্ড হেলথ এর ভাষায় ব্যক্তিগত সুরক্ষামূলক সরঞ্জাম বলতে সংক্রামক পদার্থের বিরুদ্ধে সুরক্ষার জন্য একজন কর্মী দ্বারা পরিধান করা বিশেষ পোশাক বা সরঞ্জাম" কে বুঝায়। সরঞ্জামটি কেবল সেবা কর্মীদেরই সুস্থ রাখা না, এটি রোগীদের সংক্রমণের কবল থেকেও রক্ষা করে। PPE পরিধানকারী এবং একটি দূষিত পরিবেশের মধ্যে এটি একটি প্রতিরক্ষামূলক বাধা তৈরি করে এবং রোগের বিস্তার রোধ করে। এই বাধার ফলে বিভিন্ন ভাইরাস এবং ব্যাকটেরিয়াকে নাক, চোখ এবং মুখের পাশাপাশি ত্বকে অবস্থিত শ্ৰেহ্মা ঝিল্লিকে সংক্রমিত করতে বাধা দেয়। PPE সাধারণত হাসপাতাল, ক্লিনিক, ডাক্তারী অফিস এবং গবেষণাগারে ব্যবহৃত হয়।

 

১.৫.২ স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য কতিপয় সাধারণ ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জাম

স্বাস্থ্যসেবা পেশাদাররা বিভিন্ন ধরনের প্রতিরক্ষামূলক পিয়ার ব্যবহার করেন। এর মধ্যে রয়েছে সাক্ষ, গ্রাস, চোখের সুরক্ষা এবং পোশাক যেমন গাউন, হেড কভারিং এবং জুতার কভার। 

ক। মাস্ক: মাস্ক ব্যাকটেরিয়া এবং ভাইরাস থেকে নাক ও মুখকে রক্ষা করে। বিভিন্ন ধরনের মাস্ক পাওয়া যায় যেমন কাপড়, N৯৫ এবং সার্জিক্যাল মাস্ক যা বিভিন্ন স্তরের সুরক্ষা প্রদান করে থাকে ।

খ। গ্লাভস: দুষিত পৃষ্ঠ বা সংক্রামক রোগীদের থেকে স্বাস্থ্যকর্মীদের রক্ষা করার জন্য গ্লাভস গুরুত্বপূর্ণ সুরক্ষা সরঞ্জাম। তাছাড়া, গ্লাভস পরা কর্মীরা রোগীদের ক্ষতকে সংক্রমিত হওয়া থেকে রক্ষা করে। সামগ্রিকভাবে, গ্লাভস রোগী অবৎকর্মা উভয়ের জন্য একটি প্রতিরক্ষামুলক বাধা প্রদান করে। 

গ। চোখের সুরক্ষা: এটা পরতে হয় তখন, যখন পরিবেশে রক্ত বা অন্যান্য শারীরিক তরলের সংস্পর্শে আসার সম্ভাবনা থাকে। কোভিত-১৯ ভাইরাসে সংক্রমিত রোগীদের যত্ন নেওয়া স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য চোখের সুরক্ষা গুরুত্বপূর্ণ কারণ ভাইরাসটি চোখের মধ্যে থাকা যে কোনোও শ্লেষ্মা ঝিল্লির মাধ্যমে শরীরে প্রবেশ করতে পারে। 

ঘ। প্রতিরক্ষামুলক পোশাক: গাউন, ফেইস শিল্ড এবং জুতার কতার ত্বক এবং পোশাককে শারীরিক তরলের সংস্পর্শ থেকে রক্ষা করে ।

 

১.৬ কর্মস্থলে আপদ (হ্যাজার্ড) সনাক্তকরণ

১.৬.১ আপদ বা হ্যাজার্ড:

মধুৰ সহজভাবে বলা যায় যে, যার মাধ্যমে জীবন, স্বাস্থ্য, সম্পদ বা পরিবেশের ক্ষতি হবার সম্ভাবনা থাকে সেটিই হল আপদ । যেমন: আগুন, বিদ্যুৎ, এসিড ইত্যাদি আমাদের উপকারে ব্যবহার হলেও হঠাৎ করে জীবন, স্বাস্থ্য, সম্পদ বা পরিবেশের ক্ষতি করে বসতে পারে। তাই এদেরকে আপদ বা হ্যাজার্ড বলা হয়। অতএব হ্যাজার্ড হলো, যখন কোনো কিছু বা কোনো বিষয় কোনো ব্যক্তির স্বাস্থ্যের ক্ষতি করে বা ক্ষতির কারণ হয়। কোনো বিষয় কোনো সম্পদের/পরিবেশের ক্ষতি করে বা ক্ষতির কারণ হয়। উভয় আপদই ঘটতে পারে।

 

১.৬.২ কর্মক্ষেত্রে প্রধান প্রধান আপদ

কর্মক্ষেত্রসহ সকল জায়গায় মোটামোটিভাবে ৭ প্রকার আপদ লক্ষ করা যায়। যথা:

ক) বস্তুগত বা ফিজিক্যাল আপদ - বিভিন্ন প্রাকৃতিক ও মনুষ্য সৃষ্ট ক্ষয় বস্তু যেমন: ইট, পাথর, বালি, পেরেক, লৌহ খন্ডসহ যে কোনো কিছুই দুর্ঘটনার কারণ হতে পারে। তাই এগুলোকে বস্তুগত বা ফিজিক্যাল আপদ বলে। 

খ) রাসায়নিক আপদ- যেকোনো রাসায়নিক পদার্থ বা রাসায়নিক বিক্রিয়া যেমন: এসিড, পেট্রোল, মিনার, আগুন এ সকল কিছুই দুর্ঘটনার কারণ হতে পারে ।

গ) অনুজীব ও জীবাণু আপদ- নোংরা স্থান ও বাসি পচা খাবারে বসবাসকারি অনুজীব যেমন: ব্যাকটেরিয়া, ছত্রাক, অ্যামিবা, এন্টামিবা, ভাইরাস এ সব কিছু মানুষের স্বাস্থ্যহানি ঘটাতে পারে বিষায় এটি আ হিসাবে বিবেচিত। বিভিন্ন রোগ যেমন: ইনফ্লুয়েঞ্জায় আক্রান্ত ব্যক্তি তার কফ, পঁচি, থুথু যেখানে সেখানে ফেললে রোগের জীবাণু বাতাসে ছড়িয়ে পরে। ফলে পাশে বসা কোনো সুস্থ মানুষের নাক বা মুখ দিয়ে এ জীবানু শরীরে প্রবেশের ফলে রোগের বিস্তার ঘটতে পারে। এ জীবাণু গুলো কোনো পৃষ্ঠের উপর যেমন: টেবিল, দরজার শক, যন্ত্রপাতির হাতল, টাকা প্রভৃতির উপর ২ ঘণ্টা বা তার বেশি সময় পর্যন্ত জীবিত থাকতে পারে। ভাই রোগে আক্রান্ত কোনো ব্যক্তি হাত দিয়ে তার নাক পরিষ্কার করে অথবা মুখে হাত দিয়ে হাঁচি ফেলে সেই হাতে যা স্পর্শ করবে তাতেই জীবাণু লেগে যাবে এবং সুস্থ শরীরে জীবাণুর অনুপ্রবেশ ঘটবে।

 

 

ঘ) মনস্তাত্ত্বিক আপদ- মানসিক চাপ দুর্ঘটনার কারণ হতে পারে বিধায় মানসিক চাপ মনস্তাত্ত্বিক আপদ। প্রচন্ড কাজের চাপ, পারিবারিক অশান্তি বা পীড়নদায়ক পরিবেশ প্রভৃতি কারণে মানসিক চাপ বাড়তে পারে। 

ঙ) বিকির্ণ রশ্মি বা রেডিয়েশন আপদ- ওয়েডিং মেশিন থেকে এক ধরনের রশ্মি নির্গত হয় যা চোখের সাময়িক ক্ষতিসহ স্থায়ী ক্ষতি করতে পারে। ইহা বিকির্ণ রশ্মি বা রেডিয়েশন আপদের উদাহরণ। 

চ) নরেজ ও ভাইব্রেশন আপদ - বিভিন্ন ইন্ডাস্ট্রি, শীটমেটাল ওয়ার্কশপ এবং কলকারখানার যন্ত্রপাতি ও মেশিন থেকে প্রচন্ড শব্দ নির্গত হয়। এ শব্দ মানসিক চাপ সৃষ্টি করতে পারে এবং শ্রবণ শক্তিকে লোপ করতে পারে। আবার মনুষ্য সৃষ্ট গোলমাল হৈ চৈ হঠাৎ কোনো কর্মীকে অমনোযোগী করতে পারে যা দুর্ঘটনার কারণ হতে পারে। 

ছ) আর্গোনোমিক হ্যাজার্ড- যখন শরীরের মাংশপেশী একই ধরনের স্ট্রেচ পায় কিন্তু তা পূরণ হওয়ার মত সময় পায়না তখন সে স্থানে ক্ষতের সৃষ্টি হয়। যে পরিস্থিতি এমনটা তৈরি করে তাই আর্গোনোমিক হ্যাজার্ড। যেমন সারাক্ষণ একইভাবে একই অবস্থানে কাজ করা। এই একই অবস্থানে কাজ করার দরুণ শরীরের মাংসপেশী ও হাড়ে ক্ষতের সৃষ্টি হয় তাই এটি আর্গোনোমোকি হ্যাজার্ড। এই হ্যাজার্ডের ফলে মাংসপেশী, হাড়, ব্লাড ভেসেলস, নার্ভ ও অন্যান্য টিস্যুতে আঘাত ও ক্ষতের সৃষ্টি হয় এবং এ ক্ষতের কারণে ব্যথা হয় এমনকি স্থায়ী পঙ্গুও হতে পারে।

 

 

জ) যান্ত্রিক ও বৈদ্যুতিক আপদ- বিভিন্ন যন্ত্রপাতি ও মেশিনারীর ঘূর্ণায়মান অংশের মাধ্যমে কর্মী আহত হতে পারে। তাই এগুলো আপদ। আবার বিদ্যুৎ একটি আপদ। কারণ বৈদ্যুতিক শক পেলে মানুষ আহত কিংবা মারা পর্যন্ত যেতে পারে।

 

১.৬.৩ আপদ নিয়ন্ত্রণ

আপদ নিয়ন্ত্রণ বলতে বিভিন্ন বস্তুগত বা ফিজিক্যাল, রাসায়নিক, জীবাণু, মনস্তাত্বিক, রেডিয়েশন শব্দদুষন অথবা ভূকম্পন আপদ যেন দুর্ঘটনা ঘটাতে না পারে তার জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করা এবং দুর্ঘটনা ঘটলেও কর্মীদের নিরাপত্তা প্রদানের জন্য প্রয়োজনীয় সব ধরনের ব্যবস্থাকে বুঝায়।

 

১.৬.৪ কর্মক্ষেত্রে আপন নিয়ন্ত্রণের প্রধান প্রধান উপায়

আপদ নিয়ন্ত্রণের প্রধান প্রধান উপায়গুলো নিম্নরূপ-

১। আপদকে কর্মস্থল থেকে দূর করা। 

২। আপদকে নিরাপদ বস্তু বা কৌশল দ্বারা প্রতিস্থাপন।

৩। প্রকৌশলগত ব্যবস্থা- প্লান্ট, যন্ত্রপাতি, ভেন্টিলেশন পদ্ধতি অথবা কার্য প্রক্রিয়ার এমন ভাবে পরিবর্তন ঘটানো যাতে করে দুর্ঘটনা হ্রাস পায়। 

৪। প্রশাসনিক নিয়ন্ত্রণ- শ্রমিক কর্মীদের প্রম ঘন্টা পরিবর্তন, কাজের নীতি, কলা কৌশল ও অন্যান্য নিয়ম কানুন 

৫। কর্মীদের নিরাপত্তা সরঞ্জাম সরবরাহ করা।

 

১.৭ কর্মক্ষেত্রের নিরাপদ ও অনিরাপদ কার্যাভ্যাস

কর্মীদের যেকোনো পেশা বা প্রতিষ্ঠান নির্বিশেষে, একটি নিরাপদ কাজের পরিবেশ তৈরি করতে অবশ্যই যথোপযুক্ত জ্ঞান থাকতে হবে। এটি সাধারণ শোনালেও কর্মচারী এবং নিয়োগকর্তা উভয়ই বারবার ভুল করে। দুর্ভাগ্যবশত, অনিরাপদ কাজের পরিস্থিতি একটি দুর্ঘটনার কারণ হতে পারে যা গুরুতর আঘাত বা এমনকি মৃত্যুর কারণ হতে পারে।

 

১.৭.১ অনিরাপদ কাজের অভ্যাস

১। প্রশিক্ষণের অভাব, প্রশিক্ষণ বা অনুমোদন ছাড়া সরঞ্জামাদি অপারেটিং করা 

২। যথাযথ ব্যক্তিগত সুরক্ষামুলক সরঞ্জামের 

৩। ত্রুটিপূর্ণ সরঞ্জাম ব্যবহার করা, যেমন পাওয়ার টুল বা ম‍ই 

৪। সেফটি হ্যাজার্ড সম্পর্কে অন্যদের সতর্ক করতে ব্যর্থতা 

৫। অনুপযুক্ত পদ্ধতিতে সরঞ্জাম পরিচালনা, অনুপযুক্ত ওয়ার্কস্টেশন বিন্যাস 

৬। অগোছালো হাউস কিপিং, অপর্যাপ্ত আলোতে কাজ করা 

৭। আগুনের বিপদ, অপর্যাপ্ত নিরাপত্তা সতর্কতা ব্যবস্থা 

৮। একক ব্যক্তির উপর অতিরিক্ত কাজের চাপ, নিরাপত্তা চিহ্ন উপেক্ষা করা

 

১.৭.২ নিরাপদ কাজের অভ্যাস 

নিম্নে কতগুলো নিরাপদ কাজের অভ্যাস উল্লেখ করা হল:

১। কর্মীদের ভালোভাবে প্রশিক্ষণ দেওয়া; নিরাপদ আচরণের জন্য কর্মীদের পুরস্কৃত করা 

২। পেশাগত চিকিৎসকদের নিয়োগ দেওয়া 

৩। সেফটি লেবেল এবং চিহ্ন ব্যবহার করা; জিনিস পরিষ্কার ও গুছিয়ে রাখা 

৪। নিশ্চিত করা যে কর্মীদের সঠিক সরঞ্জাম আছে এবং এর কার্যকারীতা পরীক্ষা করা হয়েছে 

৫। কাজের মধ্যে বিরতিকে উৎসাহিত করা; কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তা নিয়ে নিয়মিত মিটিং করা। 

৬। কাজের শুরু থেকেই নিরাপত্তা প্রোটোকল প্রয়োগ করা 

৭। স্টাফ এবং নিয়োগকর্তাদের মধ্যে খোলা সংলাপ রাখার ব্যবস্থা উম্মুক্ত রাখা

 

১.৭.৩ নিরাপদ অপারেটিং পদ্ধতি

নিরাপদ অপারেটিং পদ্ধতি (এসওপি) হল একটি সংস্থার দ্বারা সংকলিত ধাপে ধাপে নির্দেশাবলির একটি সেট যা কর্মীদের জটিল রুটিন কাজ-কর্ম পরিচালনা করতে সহায়তা করে।

 

১.৭.৪ জরুরি বহির্গমন

যেকোনো জরুরি অবস্থায় ভবন থেকে নিরাপদে বের হতে যে রাস্তা বা পথ ব্যবহার করা হয় তাকে বহির্গমন পথ বা এক্সিট রুট বলে। প্রয়োজন অনুসারে একটি ভবনের প্রতিটি কক্ষের এক বা একাদিক এক্সিট রুট থাকতে পারে।

বহির্গমন পথের বিধিমালাসমূহ 

১। ভবনের প্রত্যেক ফ্লোরে সহজে দৃশ্যমান এক বা একাদিক স্থানে বহির্গমন পথের নকশা দেওয়ালে টানিয়ে রাখতে হব; তিন বা তার চেয়ে কম তলা ভবনের জন্য বহির্গমন পথ সর্বনিম্ন ১ঘণ্টা অগ্নি প্রতিরোধক হতে হবে, 

২। চার তলা বা তার চেয়ে বেশী তলা বিশিষ্ট ভবনের জন্য এ পথ সর্বনিম্ন ২ঘন্টা অগ্নি প্রতিরোধক হতে হবে। 

৩। ভবনের প্রতিটি কক্ষ যেখানে ২০ জন বা তার অধিক লোক কাজ করে সেখানে ন্যূনতম ২টি বহির্গমন পথ থাকতে হবে, 

৪। বহির্গমন পথ কোনো ব্যক্তির কাজের স্থান থেকে ৫০মিটারের অধিক দূরত্বে হবে না,

৫। বহির্গমন পথের প্রস্থ ১.১৫ মিটার এবং উচ্চতা ২মিটারের কম হতে পারবে না, ভবনের মাঝের বহির্গুসন সিঁড়িপথ ও বাঁকের শেষ প্রাপ্ত ভবনের বহিমুখী হতে হবে, 

৬। বহির্গমন পথের দেওয়ান, ফ্লোর ও সিলিং অগ্নি প্রতিরোধৰ নিৰ্মাণ দ্বারা তৈরি হতে হবে, বহির্গমন ছাড়া অন্য কোনো কাজে তা ব্যবহার করা যাবে না, 

৭। বহির্গমন পথ বাঁধা যুক্ত থাকতে হবে এবং এ পথের ধারণক্ষমতা কমানো যাবে না, 

৮। উরু দরজা কখনো তালাবদ্ধ করা যাবে না, বহির্গমনের প্রত্যেক দরজা সুইংপিং ফায়ার ভোর হতে হবে। বহির্গমন সংকেত বা এক্সিট সাইন Exit Sign বহির্গমন সংকেত বা এক্সিট সাইন হলো আলোযুক্ত এমন এক প্রকার সংকেত বা চিহ্ন যা সঠিকভাবে, দ্রুত ও নিরাপদে দুর্ঘটনা প্রবণ স্থান থেকে নিরাপদ স্থানে আসতে সাহায্য করে। তাই এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বর্তমান সময়ে সকল বিল্ডিং এ এক্সিট সাইন বা প্রস্থানের চিহ্ন ব্যবহার করা হয়। আলোযুক্ত বহির্গমন সংকেত এ ব্যাটারি ব্যাকআপ ও ইমারজান্সি পাওয়ারের ব্যবস্থা থাকতে হবে। এটি বহির্গমন পথের সামনে রাখতে হবে। যে সকল স্থান থেকে বহির্গমন সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা পাওয়া যায় না সেখানে অতিরিক্ত এক্সিট সাইন ব্যবহার করতে হবে। প্রয়োজনে পথ নির্দেশক সাইন থাকতে হবে।

 

১.৭.৫ অগ্নি নির্বাপক সরঞ্জাম

১। ফায়ার এক্সটিংগুইসার 

২। ভাব ও রাইসার 

৩। হোস ও আনুষঙ্গিক উপকরণ 

৪। আগুন হাইজ্যান্ট 

৫। রিল এবং ক্যাবিনেট

 

ফায়ার এক্সটিংগুইসার ব্যবহার সহজে মনে রাখার উপায়: (PASS)

ট্যাগিং:  ট্যাগিং হল এমন একটি পদ্ধতি যা পেশাদারী কর্মীরা বিভিন্ন যন্ত্রপাতির দৃশ্যত পরিদর্শন করার পাশাপাশি লেবেলিং করে কাজের উপযুক্ত করে রাখা। পেশাগত স্বাস্থ্য এবং সুরক্ষা নিয়মানুসারে সমস্ত যন্ত্রপাতি কর্মীদের জন্য নিরাপদ কর্মক্ষম করে রাখার জন্য ট্যাগিং অপরিহার্য। কর্মচারী বা দর্শনার্থীদের ক্ষতি করতে পারে এমন কোনো বিপদ আছে কিনা তা নিশ্চিত করার জন্য নিয়মিত পরিদর্শন অবশ্যই করণীয়। পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে ট্যাগিং করলে সরঞ্জামগুলোর সমস্যা সনাক্ত করা যায়। স্বাস্থ্য সুরক্ষার এটি একটি ভালো অভ্যাস। এর মাধ্যমে রক্ষণাবেক্ষণও করা হয় এবং ক্ষতির হাত থেকেও যন্ত্রটিকে রক্ষা করা যায়। যন্ত্রপাতির ত্রুটিগুলো খুঁজে বের করার দক্ষতা থাকা প্রয়োজন এবং মেরামত করাও অপরিহার্য। ব্যবহার্য সরঞ্জামগুলোর আপডেট রেখে ট্যাগিং পদ্ধতি চলমান রাখা নিরাপদ ও ঝুঁকির হাত থেকে কর্মীকে কাজে সাচ্ছন্দ  এনে দেয়।

 

১.৮ মসোকোমিয়াল ইনফেকশন

নসোকোমিয়াল ইনফেকশন হল এমন একটি সংক্রমণ যখন একজন স্বাস্থ্যকর্মী বা গোপী বা স্বজনরা কোনো কারণে হাসপাতালে অবস্থান করার সময় সংক্রমিত হয়। একে হাসপাতাল- অর্জিত সংক্রমণ (Hospital- Aquired Infection) বা স্বাস্থ্য-সেবা সম্পর্কিত সংক্রমণও বলা হয়। নসোকোমিয়াল সংক্রমণের কারণে জীবাণুগুলো হাসপাতালে প্রবেশের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ব্যক্তিকে অসুস্থ করে তোলে।

 

১.৮.১ নোসোকোসিয়ান ইনফেকশনের প্রকারভেদ

বিভিন্ন ধরনের সাধারণ নোসোকোমিয়াল সংক্রমণ রয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে: 

১। ফ্যাকটেরিয়া সংক্রমণঃ ব্যাকটেরিয়া হল ক্ষুদ্র জীবন্ত জিনিস যা দেখতে খুব ছোট। বেশিরভাগই ক্ষতিকারক নয়, তবে কিছু গুরুতর অসুস্থতার কারণ হতে পারে। ব্যাকটেরিয়া নসোকোমিয়াল সংক্রমণের সবচেয়ে সাধারণ কারণ। সাধারণ ব্যাকটেরিয়াগুলোর মধ্যে রয়েছে ই. কোলাই এবং স্ট্যাফাইলোকক্কাস প্রভৃতি। 

২। ছত্রাক সংক্রমণ:  ছত্রাক হল জীবন্ত জিনিস, যেমন মাশরুম, মোষ্ণ। কিছু ছত্রাক ক্ষতিকারক সংক্রামক কারণ হতে পারে। সবচেয়ে যে ছত্রাক নগোকোমিয়াল সংক্রমণ ঘটায় তা হল ক্যান্ডিডা (থ্রাশ) এবং অ্যাসপারপিলাস। 

৩। ভাইরাস সংক্রমণ: ভাইরাস হল ক্ষুদ্র জীবাণু যা ব্যক্তির প্রাকৃতিক জেনেটিক কোষ অনুকরণ করে শরীরে ছড়িয়ে পড়ে। শরীরে কৌশলে সেগুলোর কপি তৈরি করে, ঠিক যেমন শরীর অন্যান্য কোষের কপি তৈরি করে। ভাইরাস মারাত্মক অসুস্থতার কারণ হতে পারে। ভাইরাস দ্বারা সৃষ্ট সাধারণ নোসোকোমিয়ান সংক্রমণ হল ইনফ্লুয়েঞ্জা (x) এবং শ্বাসযন্ত্রের সিফশিয়াল ভাইরাস।

 

সুরক্ষা লক্ষণ ও চিহ্নসমূহ

কর্মস্থলে সর্বদাই স্বাস্থ্য এবং নিরাপত্তা লক্ষন পরিলক্ষিত হয়। যেমন: পাৰনিক ভবন, নিৰ্মাণ সাইট, অফিস, গুদামাগার হাসপাতাল, প্রভৃতি। আমরা প্রতিদিন স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তার লক্ষণ বুঝার চেষ্টা করি। অনেক সময় এর আকৃতি-প্রকৃতি ও রঙ দেখেই অনুমান করা যায় এটা দ্বারা কি বুঝানো হয়েছে। সাধারণত ৫ টি স্বাস্থ্য এবং নিরাপত্তা চিহ্ন রয়েছে এবং যেগুলোর ভিন্ন ভিন্ন অর্থ রয়েছে। এগুলো নিম্নরূপ: 

১। নিষেধাঙ্গার চিহ্ন: নিষেধাজ্ঞার চিহ্ন হল এক প্রকারের প্রতীক যা একটি কার্যকলাপ নিষিদ্ধ করার নির্দেশ করে। এটির লক্ষ্য এমন একটি আচরণ প্রতিরোধ করা যা শুধুমাত্র একজন ব্যক্তির জন্য নয়, এলাকা এবং এর অন্যান্য বাসিন্দাদের জন্যও সম্ভাব্য ঝুঁকি তৈরি করতে পারে এমন ধারণা সৃষ্টি করা। এটি কখনও কখনও নিষিদ্ধ কার্যকলাপের জন্য সরাসরি আদেশ হতে পারে। এর রঙ হয় লাল, আকার বৃত্তাকার।

২। বাধ্যতামূলক লক্ষণ: বাধ্যতামূলক চিহ্ন হল একটি প্রতীক যা একটি ব্যবসা বা শিল্পের সাথে জড়িত বিধিবদ্ধ প্রয়োজনীয়তাগুলো মেনে চলতে সাহায্য করার জন্য একটি নির্দিষ্ট কর্মের আদেশ দেয়। এর রঙ নীল আকার বৃত্তাকার।

৩। সতর্ক সংকেত: বিপদ সম্পর্কে সতর্ক করার জন্য এই সতর্কতা চিহ্ন ব্যবহার করা হয়। এই চিহ্নগুলো আকৃতিতে ত্রিভুজাকার। পিকটোগ্রামটি একটি হলুদ পটভূমিতে কালো, ত্রিভুজটির একটি কালো সীমানা রয়েছে। 

৪।  নিরাপদ অবস্থার লক্ষণ : নিরাপদ অবস্থার লক্ষণগুলো বুঝাতে এই চিহ্ন ব্যবহার করা হয়। এই চিহ্নগুলো আরতক্ষেত্রাকার বা বর্গাকার। সবুজ পটভূমিতে চিত্রটি সাদা এবং প্রায়শই একটি সাদা সীমানা অংকিত থাকে।

৫। অগ্নি সরঞ্জাম চিহ্ন: ফায়ার ইকুইপমেন্ট/ফাইটিং লক্ষণ দেখায় যে, ফায়ার ইকুইপমেন্টটি কোথায় আছে। আগুনের জন্য আমরা কি রঙ মনে করি? লাল। কিন্তু আমরা ইতিমধ্যেই নিষিদ্ধ চিহ্নের জন্য লাল ব্যবহার করেছি। অয়েল, অগ্নি সরঞ্জাম চিহ্নও লাল, কিন্তু এটি একটি ভিন্ন আকৃত। এই চিহ্নগুলো বর্গাকার বা আয়তক্ষেত্রাকার। পিকটোগ্রামটি একটি লাল পটভূমিতে সাদা এবং একটি সাদা সীমানা থাকে।

 

১.৯ দুর্ঘটনায় সাড়া দেওয়া ও রিপোর্টিং

দুর্ঘটনা রিপোর্টিং হল কর্মক্ষেত্রে কোনো ঘটনা রেকর্ড করার প্রক্রিয়া, যার মধ্যে থাকতে পারে কোনো ব্যক্তি হারিয়ে যাওয়া, আঘাত এবং দুর্ঘটনা ঘটা। এটি কর্মক্ষেত্রে দুর্ঘটনা সম্পর্কিত সমস্ত তথ্য নথিভুক্ত করার পদ্ধতি। দুর্ঘটনায় সাড়া দেওয়া হল এমন একটি প্রক্রিয়া যা প্রতিষ্ঠানে কোনো আক্রমণ চিহ্নিত করছে, অগ্রাধিকার দিতে, ধারণ করতে এবং নির্মূল করতে সাহায্য করে। দুর্ঘটনায় সাড়া দেওয়ার লক্ষ্য হল সংস্থাগুলো পুৰুত্বপূর্ণ নিরাপত্তার ঘটনা সম্পর্কে সচেতন এবং সৃষ্ট ক্ষয়ক্ষতি কমাতে এবং ভবিষ্যতে কোনো ঝুঁকি বা অনুরূপ ঘটনাগুলোকে রোধ করতে দ্রুত কাজ করে তা নিশ্চিত করে।

দুর্ঘটনায় সাড়া দেওয়া পদ্ধতি 

১। ঘটনাস্থলে নিয়ন্ত্রণ নিয়ে শৃঙ্খলা পুনরুদ্ধার করার চেষ্টা করতে হবে। 

২। প্রাথমিক চিকিৎসা নিশ্চিত করে জরুরি পরিষেবা নিশ্চিং করতে হৰে । 

৩। দুর্ঘটনায় সাড়া প্রদানকারী যদি যোগ্য হয় তবে অবিলম্বে কাজ শুরু করে অন্য কাউকে সাহায্যের জন্য ডাকতে হবে। 

৪। সম্ভাব্য গৌপ দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। অন্যান্য ব্যক্তির ভীড় সরাতে হবে। 

৫। ঘটনাস্থলে মানুষ এবং অবস্থা সনাক্ত করে কেউ তার প্রকৃত ঘটনা জানে কিনা তা জিজ্ঞেস করতে হবে। কেউ দুর্ঘটনায় পণ্ডিত ব্যক্তির নাম জানে কিনা তা জানার চেষ্টা করতে হবে। দুর্ঘটনায় সাড়া দেওয়া ব্যক্তি ঘটনাস্থলে একা থাকলে তার চারপাশে তাকিয়ে সেখানে কে আছে তা লক্ষ্য করতে হবে। 

৬। ব্যক্তির শারীরিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ করতে হবে। দুর্ঘটনার সাড়া দেওয়ার জায়গাটিতে নিরাপদ অবস্থার ব্যবস্থা করতে হবে। দুর্ঘটনার কারণ ও প্রমাণ সংরক্ষণ করতে হবে। 

৭। তাৎক্ষণিক জরুরি অবস্থা স্থিতিশীল হয়ে গেলে, এই অতিরিক্ত পদক্ষেপগুলো নেওয়া উচিত:

ক। ক্ষতিটি কতটা খারাপ, এটি কতটা খারাপ হতে পারে এবং অতিরিক্ত তদন্ত করার প্রয়োজন আছে কিনা তা মূল্যায়ন করতে হবে; খ। বিষয়টি যথাযথ কর্তৃপক্ষকে অর্থাৎ মালিক এবং ঊর্ধ্বতন ব্যবস্থাপনাকে অবহিত করা হয়েছে কিনা তা নিশ্চিত করতে হবে। এছাড়াও আঘাতপ্রাপ্ত ব্যক্তির পরিবার, প্রয়োজনীয় নিয়ন্ত্রক সংস্থা এবং বীমা কোম্পানির সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

 

১.১০ বর্জ্য ব্যবস্থাপনা

প্রতিদিন আমরা নানা ধরনের কাজ করি এবং সেইসব কাজের জন্য বহুরকম জিনিস ব্যবহার করতে হয়। এরপর কাজের শেষে দেখা যায় কিছু কিছু জিনিস আমাদের আর কাজে লাগে না। সেগুলো তখন অব্যবহারযোগ্য বা অপ্রয়োজনীয় বলে আমরা ফেলে দিই। যেমন— খাবারের প্যাকেট, ভাঙাচোরা খেলনা, শিশি বোতল ভাঙা, কেটে যাওয়া বাল্প ও টিউব লাইট, ময়লা কাগজ ইত্যাদি। এগুলো আমরা বর্জন করি বা ফেলে দিই। এগুলোই হল বর্জ্য পদার্থ। প্রকৃতপক্ষে দৈনন্দিন জীবনে বাতিল সব পদার্থই বর্জ্য । অন্যভাবে বলা যায় যে কোনো কঠিন, তরল কিংবা গ্যাসীয় পদার্থ, যেগুলো আমাদের কোনো কাজে লাগে না অর্থাৎ ফেলে দেওয়া প্রয়োজন, সেগুলোই হল বর্জ্য পদার্থ। বাড়ির মতো কলকারখানা, হাসপাতাল, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, অফিস, আদালতেও এই ধরনের অপ্রয়োজনীয় জিনিস বা বর্জ্য পদার্থ বেরোয় এবং তার পরিমাণ অনেক বেশি। আর এগুলোই নোংরা বা আবর্জনা হয়ে বাড়ির আশেপাশে বা রাস্তার ধারে পড়ে থেকে পরিবেশকে দূষিত করে।

 

১.১০.১ বর্জ্যের প্রকারভেদ

ক। সাধারণভাবে বর্জ্য পদার্থসমূহকে তিনটি বিভাগে ভাগ করা যায়—কঠিন, তরল এবং গ্যাসীয়।

১। কঠিন বর্জ্য পদার্থ: বর্জ্য পদার্থের মধ্যে কাচ, প্লাস্টিক, টিন, ব্যাটারি, কাগজ, নানারকম ধাতব জিনিস, ছাই, কাপড় বা ন্যাকড়া, টায়ার, টিউব প্রভৃতি কঠিন বর্জ্য পদার্থ। 

২। তরল বর্জ্য পদার্থ: এগুলো গৃহস্থালি, কলকারখানা, হাসপাতাল প্রভৃতি থেকে নির্গত হয়, যেমন- মল- মুত্র থেকে সৃষ্ট বর্জ্য পদার্থ, বাড়িঘর-কলকারখানা নিঃসৃত নোংরা জল, সাবান ও ডিটারজেন্ট মিশ্রিত জল ইত্যাদি। 

৩। গ্যাসীয় বর্জ্য পদার্থ: কলকারখানা ও গাড়ি থেকে নির্গত বিভিন্ন ধরনের বিষাক্ত গ্যাস, যেমন— সালফার ডাইঅক্সাইড, নাইট্রোজেন ডাই অক্সাইড প্রভৃতি ।

খ। বিষক্রিয়ার ভিত্তিতে বর্জ্য পদার্থসমূহকে দুটি বিভাগে ভাগ করা যায়: 

১। বিষাক্ত বর্জ্য পদার্থ: এগুলো কঠিন, তরল, গ্যাসীয় ও তেজস্ক্রিয় অর্থাৎ সবরকমই হতে পারে, যেমন— পারদ, ক্যাডমিয়াম, ক্রোমিয়াম প্রভৃতি ধাতু, পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ছাই, অব্যবহৃত কীটনাশক, ভাঙা কম্পিউটার সামগ্রী, ব্যাটারি, নাইট্রিক অক্সাইড প্রভৃতি বিষাক্ত বর্জ্য পদার্থ। এগুলো মানুষ ও পশুপাখির জন্য ভীষণ ক্ষতিকর৷ 

২। বিষহীন বর্জ্য পদার্থ: খাদ্যজাত বর্জ্য, কাচ, ধুলো, কংক্রীটের টুকরো, প্রভৃতি বিষহীন বর্জ্য পদার্থ

 

১.১০.২ বর্জ্য পদার্থের উৎস

প্রধানত সাতটি উৎস থেকে বর্জ্য পদার্থ সৃষ্টি হয়। এগুলো হল: 

১। গৃহস্থালির বর্জ্য: বাড়ির দৈনন্দিন কাজের মাধ্যমে যেসব বর্জ্য পদার্থ উৎপন্ন হয় সেগুলো এই শ্রেণির অন্তর্ভুক্ত। যেমন—শাকসবজি ও ফলমূলের উচ্ছিষ্ট, মাছ-মাংসের ফেলে দেওয়া অংশ প্রভৃতি। 

২। শিল্পবর্জ্য: কলকারখানা থেকে নির্গত কঠিন, তরল, গ্যাসীয়, অর্ধতরল প্রভৃতি বিভিন্ন ধরনের বর্জ্য পদার্থকে শিল্পবর্জ্য বলা হয়। যেমন—চামড়া কারখানার ক্রোমিয়াম যৌগ, আকরিক নিষ্কাশন প্রক্রিয়ায় নির্গত নানাপ্রকার ধাতু, বিভিন্ন প্রকার রাসায়নিক পদার্থ প্রভৃতি।

৩। কৃষিজ বর্জ্য: কৃষিজাত দ্রব্য থেকে নির্গত বর্জ্য পদার্থকে কৃষিজ বর্জ্য নামে অভিহিত করা হয়। যেমন— আখের ছোবড়া, খড়, ধানের খোসা, নারকেলের ছোবড়া, প্রাণীজ বর্জ্য প্রভৃতি।

৪। পৌরসভার বর্জ্য: শহরের বা পৌর এলাকার বাড়ি, অফিস, বিদ্যালয়, বাজার, রেস্টুরেন্ট, হোটেল প্রভৃতিতে সৃষ্ট বর্জ্যকে পৌরসভার বর্জ্য বলে। এর মধ্যে থাকে শাকসবজির অবশিষ্টাংশ, কাগজ, কাপড়, ডাবের খোলা, প্লাস্টিক, ধাতব টুকরো প্রভৃতি। 

৫। জৈব বর্জ্য: প্রাণী ও উদ্ভিদ থেকে যেসব বর্জ্য তৈরি হয়, সেগুলো জৈব বর্জ্য, যেমন-মাংস উৎপাদনকারী কারখানাগুলো থেকে নির্গত প্রাণীজ বর্জ্য, মাছের উচ্ছিষ্ট, ফুল-ফল-সবজি বাগানের বর্জ্য প্রভৃতি। 

৬। চিকিৎসা-সংক্রান্ত বর্জ্য: বিভিন্ন প্রকার চিকিৎসা কেন্দ্রের আবর্জনা এই শ্রেণির অন্তর্গত। যেমন: ক) অসংক্রামক বর্জ্য পদার্থ: যেমন ওষুধের ফয়েল, প্লাস্টিক থালা প্রভৃতি। খ) সংক্রমক বর্জ্য পদার্থ: সিরিঞ্জ, সুঁচ, কাঁচি, ব্লেড, তুলো, গজ, রক্ত, ব্যান্ডেজ, অপারেশন সংক্রান্ত আবর্জনা প্রভৃতি। 

৭। তেজস্ক্রিয় বর্জ্য: পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের বর্জ্য, যেমন ছাই, ভারী জল, চিকিৎসায় ব্যবহাৰ্য্য তেজস্ক্রিয় বর্জ্য পদার্থ প্রভৃতি।

 

১.১০.৩ বর্জ্য ব্যবস্থাপনা (Waste Management)

বর্তমানে এটা প্রমানিত যে, বর্জ্য পদার্থ বিভিন্নভাবে পরিবেশকে দূষিত করে। তবে এটাও বাস্তব সত্য যে, এইসব পদার্থকে জীবন থেকে বাদ দেওয়াও সম্ভব নয়। সুতরাং সবসময় চেষ্টা করা দরকার যে, কীভাবে এইসব পদার্থকে পরিবেশের বাস্তুতান্ত্রিক চক্রের একটি কার্যকরী উপাদান করে নেয়া যায়। এজন্য বর্জ্য পদার্থগুলোকে শুধুমাত্র অপসারণ বা স্থানান্তরণের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ না করে প্রয়োজন মতো এগুলোর পরিমাণ হ্রাস, পুনর্ব্যবহার এবং পুনর্নবীকরণের মাধ্যমে অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে বর্জ্য পদার্থ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা গড়ে তোলা যায়। আর এটাই হল বর্জ্য ব্যবস্থাপনা (Waste Management)। প্রকৃতপক্ষে বর্জ্য ব্যবস্থাপনার মূল ভিত্তি হল এই তিনটি R, যথা: Reduce (পরিমাণ হ্রাস), Reuse (পুনর্ব্যবহার) ও Recycle (পুনর্নবীকরণ)। অর্থাৎ এই তিনভাবে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা করা যায় -

১। বর্জ্যের পরিমাণ হ্রাস (Reduce ) : গৃহস্থালি, কলকারখানা, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান প্রভৃতিতে যাতে বেশি বর্জ্য তৈরি না হয়, তাই জিনিসের ব্যবহার কমানো, জিনিস অপচয় না করা, জীবনযাত্রার মান পালটে চাহিদাকে সীমিত রাখা, ব্যবহৃত জিনিস সরাসরি ফেলে না দিয়ে জমিয়ে রাখা ইত্যাদির মাধ্যমে বর্জ্যের পরিমাণ কমানো যেতে পারে। 

২। পুনর্ব্যবহার (Reuse): কোনো পরিবর্তন না করে বর্জ্য পদার্থ ব্যবহার করলে তাকে বলা হয় পুনর্ব্যবহার। যেমন—ফেলে দেওয়া জিনিস থেকে খেলনা, ঘর সাজানোর জিনিস, লেখার সামগ্রী প্রভৃতি তৈরি করা যায়। 

৩। পুনর্নবীকরণ (Recycle): এই পদ্ধতিতে বর্জ্য পদার্থকে পুনরায় প্রক্রিয়াকরণ বা পুনরাবর্তনের মাধ্যমে ব্যবহারযোগ্য করে তোলা যায়। এর ফলে একই দ্রব্য বা নতুন দ্রব্য উৎপাদিত হয়। যেমন- লোহা বা অ্যালুমিনিয়াম সামগ্রীসমূহ ব্যবহারের ফলে অকেজো হয়ে গেলেও পুনরায় গলিয়ে নতুন নতুন লোহা-ইস্পাত বা অ্যালুমিনিয়াম সামগ্রী প্রস্তুত করে ব্যবহার করা যায়।

 

১.১০.৪ হাসপাভনে ব্যবহৃত বর্জ্যের বিন/ পাত্রের সাংকেতিক চিহ্ন ও ফালার কোড

সাধারণ বর্জ্যের বিন- 

সাংকেতিক চিহ্ন: কালো রঙের বৃত্ত 

পটভুমি: কালো রঙের বর্ডারে সাদা রঙের

ধারাল বর্জ্যের বিন-  

সাংকেতিক চিহ্ন: লাল রঙের বৃক্ষের ভিতরে সাদা রঙের দুটি হাড়ের উপর মাথার খুলি 

পটভূমি: লাল বর্ডারের উপর সাদা

সংক্রামক বর্জ্যের বিন- 

সাংকেতিক চিহ্ন: হলুদ রঙের বুদ্ধের উপর কালো রঙের তিনটি প্রতিস্থাপিত চন্দ্রাকৃতি 

পটভূমি: হলুদ বর্ডারের উপর সাদা

পুণপ্রক্রিয়াজাতকরণ বর্জ্যের বিন-  

সাংকেতিক চিহ্ন: সবুজ রঙের বৃত্তের ভিতরে কালো রঙের তিনটি তীর চিহ্ন 

পটভূমি: সবুজ রঙের বর্ডারের উপর সাদা

 

১.১০.৫ চিকিৎসা বর্জ্যের প্যাকেটজাতকরণের সাংকেতিক চিহ্ন

দহনযোগ্য বর্জ্য-  

সাংকেতিক চিহ্ন: বৃত্তের উপর আগুনের শিখা- কালো রঙ

পটভুমি: হ্লুদ রঙ

তেজস্ক্রিয় বিকিরণযোগ্য বর্জ্য- 

সাংকেতিক চিহ্ন: ঘূর্নায়মান কালো পাখা- কালো রঙ 

পটভূমি: উপরে অর্ধেক হলুদ ও নিচের অর্ধেক সাদা

সংক্রামক বর্জ্য-  

সাংকেতিক চিহ্ন: দুইটি হাড়ের উপর মাথার খুলি- কালো রঙ 

পটভূমি: সাদা রঙ

ক্ষয়কারক বর্জ্য- 

সাংকেতিক চিহ্ন: হাত এবং একটি > ধাতুর প্রতি আকর্ষিত দুটি পাত্র থেকে উপচিয়ে পড়া- কালো রঙ 

পটভূমি: উপরে অর্ধেক সাদা রঙ | নিচের অর্ধেক ও নিচের অর্ধেক | সাদা বর্ডারে কালো রঙ।

জীবানুযুক্ত বর্জ্য (Infectious substance)-

সাংকেতিক চিহ্ন: বৃত্তের উপর তিনটি প্রতিস্থাপিত | চন্দ্রাকৃতি - কালো রঙ 

পটভূমি: সাদা রঙ

অন্যান্য ক্ষতিকারক বর্জ্য (Other hazardous substance) 

সাংকেতিক চিহ্ন: - উপরের অর্ধেক অংশে সাদা রঙের পটভূমিতে কালো রঙের সাতটি লম্বা দাগ।

পটভূমিঃ নিচের অর্ধেক কালো বর্ডারে সাদা রঙ।

 

 

জব-১ সঠিকভাবে PPE পরা ও খোলার পদ্ধতি

পারদর্শীতার মানদক্ষঃ

  • স্বাস্থ্যবিধি মেনে ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জাম ও নির্ধারিত পোশাক পরিধান কর ।
  • মাপ অনুসারে একটির পর একটি লিপিই পরিধান কর।
  • জব অনুযায়ী টুলস, ইকুইপমেন্ট, ম্যাটেরিয়াল বাছাই এবং সংগ্রহ কর।
  • আপনার কাজে সহায়তা করার জন্য একজন সহকর্মী প্রস্তুত রাখুন।
  • ব্যবহৃত জিনিসসমূহ নির্ধারিত বর্জ্য বোয়োহ্যাজার্ড ব্যাগ) ধারকে ফেলে দিন।  

ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জাম (PPE)/প্রয়োজনীয় ফ্যাটারিয়্যালস: একটি পিপিই সেটে থাকে -

১. গাউন, ২. পলি এপ্রোন, ৩. অ্যালকোহল পাছি, ৪. সু-কাভার, ৫. গ্লাভস ২ জোড়া, ৬. এন- ৯৫/ সার্জিক্যাল মাক্ষ, ৭. চশমা বা গগলস। ৮. হাইপোক্লোরাইট দ্রবণ, ৯. বায়ো হ্যাজার্ড ব্যাগ ১০। স্যানিকথ

 

কাজের ধারাঃ

১। প্রথমে হাত ধুয়ে হ্যান্ড স্যানিটাইজার দিয়ে হাত পরিষ্কার করে নিতে হবে। হাতের ওপরে এবং আঙুলের ফাঁকে, আঙুলের পেছনের উঁচু জায়গা এবং বুড়ো আঙুলের পেছনে ভালো করে পরিষ্কার করে হাতের কবজি একইভাবে পরিষ্কার করে নিতে হবে। এরপর এক জোড়া গ্রাভস পরে নিতে হবে। এসময় খেয়াল রাখতে হবে, গ্লাভস হাতে ফিট করে কিনা। যার হাতে যেটা ফিট করে সেটাই পরা উচিত। এজন্য আগে থেকেই হাতের নাগ সম্পর্কে ধারণা রাখতে হবে।

২। তারপর গাউন পরতে হবে। চেষ্টা করতে হবে গাউন যেন মাটির মধ্যে না লাগে। এজন্য পুঁটিয়ে গাউন পরতে হবে। গাউনের ক্যাপ আগেই পরা যাবে না। 

৩। এরপর মাস্ক পরে নিতে হবে। মাস্কের বাইরের অংশে হাত লাগিয়ে পরতে হবে। মাস্ক পরার পর নাকের ওপরের সিল করা অংশ হাত দিয়ে চেপে বসাতে হবে, যাতে মাস্ক ভালোভাবে বসে যায় । 

৪। এরপর পালস পরতে হবে। যারা চশমা পরেন তারা চশমা পরার পর গগলস পরবেন। গঙ্গাসের দুইগালে থাকা ফিতার মতো অংশ ভালোভাৰে টেনে নিতে হবে। এতে সেটি ভালোমতো ফিট হয়ে যাবে। 

৫। এরপর গাউনের ক্যাপ দিয়ে মাথা ঢেকে নিতে হবে। গগনসের ওপরে দুটি বাটন আছে। এতে গাউনের ক্যাপ ভালোভাবে বসিয়ে নিতে হবে। অনেকসময় গাউন পরার পর পলার অংশে একটু ফাঁক থাকতে পারে। তখন মাইক্রোপোর দিয়ে জায়গাটি বন্ধ করে দিতে হবে। গাউন পরার পর সু -কাতার পরে নিতে হবে। 

৬। এরপর অতিরিক্ত নিরাপত্তার জন্য পার্ল এপ্রোন গাউনের ওপর পরতে হবে। পলি এপ্রোন পেছনে বেঁধে নিতে হবে। 

৭। এখন আরেকটি গ্লাভস পরতে হবে। অর্থাৎ মোট দুইটি প্লাস পরতে হবে। গ্লাভস পরার পর হাতের কাজির অংশ ফাঁকা থাকলে আরেকটি মাইক্রোপোর দিয়ে ফাঁকা জায়গা বন্ধ করে নিতে হবে। 

৮। রোগীর কাছে যাওয়ার আগেই পিপিই খোলার জায়গা বা ডকিং এরিয়া ঠিক করে নিতে হবে। এজন্য বারো হ্যাজার্ড ব্যাগ লাগবে। এই ব্যাগটি একটি বিনের ওপর সাজিয়ে নিতে হবে।

 

খ। পিপিই খোলার নিয়ম:

১। পিপিই ব্যবহারের পর ডকিং এরিয়াতে এসে স্যানিশ দিয়ে গ্লাভস এবং সু-কাতার প্রথমে পরিষ্কার করে নিতে হবে। এবার সু কাভার খুলতে হবে। পেছন দিক থেকে সু কাভার খুলে বিনে ফেলতে হবে। 

২। এরপর পলি এপ্রোন মাথার পেছন থেকে ধরে সামনে এনে খুলে বাইরের দিকটা ভেতরে ঢুকিয়ে ভাঁজ করে বিনে ফেলতে হবে এবং হ্যান্ড স্যানিটাইজার দিয়ে আবার হাত পরিষ্কার করে নিতে হবে। 

৩। এবার প্রথম গ্লাভসটি খুলতে হবে। গ্লাভসের বাইরের অংশ যেন ভেতরের দিকে থাকে সেভাবে খুলতে হবে। পিপিই খোলার সময় খেয়াল রাখতে হবে, শরীরে যেন কোনো স্পর্শ না লাগে। 

৪। প্রথমে পাউন ও হাস্ত্রের মাইক্রোপোর খুলে বিনে ফেলতে হবে। এরপর গাউনের চেইন খুলে মাথার ক্যাপ খুলতে হবে। গাউনের হাত উল্টে ভেতরের দিকে রাখতে হবে। মনে রাখতে হবে, গাউনের বাইরের দিকটি জীবাণু দ্বারা সংক্রমিত ও ভেতরের দিকটি পরিষ্কার। পাউন ওপর থেকে এমনভাবে খুলতে হবে যাতে বাইরের অংশটি ভেতরে ঢুকে যায় এবং রোল করে খুলতে হবে যাতে মেঝেতে গাউন স্পর্শ না করে। গাউন বিনে ফেলে দেওয়ার পর অ্যালকোহল গ্যাড দিয়ে আবার হাত পরিষ্কার করে নিতে হবে।

৫। এরপর পপলস খুঁজতে হবে। গগলস সামনে একহাত দিয়ে ধরে পেছনে ফিতা খুলে নিতে হবে। এবার হ্যান্ড স্যানিটাইজার দিয়ে আবার হাত পরিষ্কার করে মাস্ক খুলতে হবে। মাস্ক খোলার সময় একহাত দিয়ে মাস্কের বাইরের অংশ চেপে ধরে আরেক হাত দিয়ে একটি একটি করে ফিতা খুলতে হবে। এবার মাক্ষও বিনে ফেলে দিতে হবে। 

৬। আবার অ্যালকোহল প্যাড দিয়ে হাত মুছে সবশেষে দ্বিতীয় প্লাসটিও খুলে বিনে ফেলে দিতে হবে। যে বাপ্পো হ্যাজার্ড ব্যাগে এগুলো ফেলা হল সেটি বন্ধ বা সিল করে দিতে হবে। বায়ো হ্যাজার্ড ব্যাগ বন্ধ করার আগে আরেক জোড়া গ্লাভস ও সার্জিক্যাল মাস্ক পরে নিতে হবে। 

৭। এরপর ব্যাপের মধ্যে ১% হাইপোক্লোরাইড চৰণ ফেলে দিয়ে এই ব্যাগ বন্ধ করার সময় সুখ দূরে রাখতে হবে। ব্যাগে ভালো করে প্যাঁচ দিয়ে গিট দিতে হবে। সতর্কতা হিসেবে ব্যাগের বাইরের দিকেও খানিকটা হাইপোক্লোরাইড স্প্রে করে দিতে হবে। এরপর বিনে (বর্জ্য ধারক) রেখে দিতে হবে, যাতে পরবর্তীতে ক্লিনার এসে এটা নিয়ে যেতে পারে। 

৮। সবশেষে যে মাক্ষ ও গ্রীভসটি ব্যবহার করা হবে সেগুলো আরেকটি বারো হ্যাজার্ড ব্যাগে ফেলতে হবে।

 

কাজের সতর্কতা 

১. পিপিই কখনোই কর্মস্থলের বাইরে নেয়া যাবে না; 

২. পিপিই দিয়ে শরীরের সব অংশ ঢেকে রাখতে হবে; 

৩. দুইজন একত্রে পিপিই পরে নিতে হবে। এক্ষেত্রে একজন অপরজনের উপর নজর রাখা যেতে পারে; 

৪. পিপিই খোলার সময় খুব সাবধানে খুলে সেটি ঢাকনা দেওয়া নির্দিষ্ট বিনে রাখতে হবে; 

৫. পিপিই খোলার সাথে সাথে গোসল করে নতুন কাপড় পরতে হবে।

অর্জিত দক্ষতা/ফলাফল: তুমি পিপিই পরা ও খোলার প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করতে সক্ষম হয়েছ। 

ফলাফল বিশ্লেষণ/মন্তব্য: আশাকরি বাস্তব জীবনে তুমি এর যথাযথ প্রয়োগ করতে পারবে।

 

জব-২: অগ্নিনির্বাপন যন্ত্র ব্যবহার করে আগুন নেভানো

প্রয়োজনীয় ম্যাটারিয়্যালসঃ প্রযোজ্য নহে । 

কাজের ধারা: 

১। অগ্নি নির্বাপন যন্ত্রটি নির্ধারিত স্থান থেকে ক্যারি হ্যান্ডেল ধরে নামাতে হবে। 

২। অগ্নি নির্বাপন যন্ত্রটি নিয়ে আগুনের কাছে গিয়ে সেফটি লক ও সেফটি পিন টান দিয়ে খুলতে হবে। 

৩। বাতাসের অনুকুলে দাড়াতে হবে, 

৪। বাম হাত দিয়ে ডিসচার্জ পাইপের নলটি আগুনের উৎসের দিকে টার্গেট করে রাখতে হবে। 

৫। ডান হাত দিয়ে ক্যারি হ্যান্ডেল ধরে নলটি আগুনের উৎসের দিকে তাক করে রাখতে হবে। 

৬। অপারেটিং লিভার চাপ দিয়ে এভাবে আগুনের উৎস টার্গেট করে পাইপের নলটি সুইপ করিয়ে আগুন নিভাতে হবে।

 

  • কাজের সতর্কতা

১। বাতাসের অনুকুলে ব্যবহার করা। 

২। যথাসম্ভব আগুনের নিকটবর্তী অবস্থান থেকে ব্যবহার করা। 

৩। সরাসরি মানুষের শরীরে ব্যবহার না করা। 

৪। ড্রাই কেমিক্যাল পাউডার ব্যবহারের সময় সাবধানতা অবলম্বন করা যাতে শ্বাস প্রশ্বাসের সহিত শরীরে 

৫। সিওটু (CO2) ফায়ার এক্সটিংগুইসার ব্যবহারের সময় সতর্কতার সাথে এর ডিসচার্জ হর্ন ধরা। অসতর্কতার কারণে কুল বার্ণ হতে পারে। প্রবেশ করতে না পারে। 

৬। বিভিন্ন ধরনের আগুনের জন্য বিভিন্ন রকমের অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র রয়েছে। ভুল শ্রেণির অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র ব্যবহারের ফলে আগুন আরও বাড়তে পারে তাই সঠিক অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র ব্যবহার করা উচিত। 

৭। এই নীতি মনে রাখতে হবে, বেরিয়ে যান, বাইরে থাকুন, ফায়ার সার্ভিসকে খরব দিন।

 

অর্জিত দক্ষতা/ফলাফল: তুমি অগ্নিনির্বাপন যন্ত্র ব্যবহার করে আগুন নেভানোর প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করতে সক্ষম হয়েছ। 

ফলাফল বিশ্লেষণ/মন্তব্য: আশাকরি বাস্তব জীবনে তুমি এর যথাযথ প্রয়োগ করতে পারবে ।

 

 

Content added By
Content updated By
Please, contribute to add content into অনুশীলনী.
Content