বাংলাদেশে খুব ঘন ঘন ভূমিকম্প না হলেও পৃথিবীর অনেক স্থানে ভূমিকম্প খুব সাধারণ ঘটনা, যেমন জাপান এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পশ্চিম অঞ্চল। বর্তমানে বাংলাদেশ এবং ভারতে কোনো আগ্নেয়গিরি নেই। কিন্তু পৃথিবীর অন্যান্য স্থানে এমনকি মহাসাগরের তলদেশে কয়েক কিলোমিটার পানির নিচেও আগ্নেয়গিরি আছে এবং তা থেকে অগ্ন্যুপাতও হচ্ছে। ভূতত্ত্ববিদেরা গবেষণা করে দেখেছেন, ভূমিকম্প এবং আগ্নেয়গিরির সঙ্গে টেকটোনিক প্লেটের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। যেসব স্থানে দুটি প্লেট আলাদা হয়েছে (প্লেট সীমানা), দেখা গেছে ভূমিকম্প এবং আগ্নেয়গিরি সেসব স্থানেই সৃষ্টি হয়। পৃথিবীর মানচিত্রে ভূমিকম্প এবং আগ্নেয়গিরি একটি করে ডট (.) দিয়ে নির্দেশ করলে দেখা যাবে যে তা বিভিন্ন প্লেটের মধ্যে অবস্থিত সীমানার সঙ্গে মিলে যায়।

যেহেতু প্লেটের গতি অতি অল্প তাই দীর্ঘ সময় ধরে দুটি প্লেটের সীমানাতে প্রচুর শক্তি সঞ্চিত হয়। যখন প্লেটের সীমানা আর সেই শক্তি ধরে রাখতে পারে না, তখন তা ভূমিকম্প সৃষ্টি করে নিঃসৃত হয়। এটি বেশি হয় যখন একটি প্লেটে অপর একটি প্লেটে ঘেঁষে গতিশীল থাকে বা সরতে থাকে। আবার যখন একটি প্লেট অপর একটি প্লেটের সঙ্গে সংঘর্ষ করে অথবা একটি অপরটি থেকে দূরে সরতে থাকে, তখন সেই সকল প্লেট সীমানাতে ভূমিকম্প ছাড়াও আগ্নেয়গিরি সৃষ্টি হয়। আইসল্যান্ড, নিউজিল্যান্ড, ইতালি, জাপান, ফিলিপাইন প্রভৃতি দেশে আগ্নেয়গিরি রয়েছে। এমনকি প্রশান্ত মহাসাগরের তলদেশেও অনেকগুলো আগ্নেয়গিরি রয়েছে। প্রশান্ত মহাসাগরের সবচেয়ে বড় টেকটোনিক প্লেট প্রশান্ত মহাসাগরীয় প্লেটের উপর অবস্থিত। এই প্লেটের চারপাশের সীমানা বরাবর অনেকগুলো আগ্নেয়গিরি রয়েছে যা একত্রে মানচিত্রে দেখতে পুঁতির মালার মতো মনে হয়। আগ্নেয়গিরিপ্রবণ এই এলাকাকে তাই বলা হয় “প্রশান্ত অগ্নিমালা” (Pacific ring of fire)।

Content added By