SATT ACADEMY

New to Satt Academy? Create an account


or

Log in with Google Account

Academy

একটি ট্রান্সফরমারের প্রাইমারী কুন্ডলীর ভোল্টেজ 10v এবং প্রবাহ 4A । সেকেন্ডারী কুন্ডলীর ভোল্টেজ 20V হলে প্রবাহ কত?

Created: 2 years ago | Updated: 4 months ago

     আমরা জানি, চৌম্বকক্ষেত্রে গতিশীল আধান চৌম্বক বল লাভ করে। ফলে আধানটি তার গতিপথ থেকে বিচ্যুত হয়। ১৮৭৯ সালে এডুইন হল দেখান যে, বায়ু বা শূন্যস্থানের মতো কঠিন পরিবাহীর মধ্য দিয়ে চলমান আধানেরও চৌম্বকক্ষেত্র দ্বারা বিচ্যুতি ঘটে। হল আবিষ্কার করেন যে, যখন কোনো প্রবাহবাহী পরিবাহীকে চৌম্বক ক্ষেত্রে স্থাপন করা হয়, তখন প্রবায়ু এবং চৌম্বকক্ষেত্র উভয়ের সাথে লম্বভাবে একটি ভোল্টেজ উৎপন্ন হয় অর্থাৎ বিভব পার্থক্যের সৃষ্টি হয়। এই ঘটনাকে হল প্রভাব বলা হয় ।

আমরা জানি, যে সকল আহিত কণা এক স্থান থেকে অন্যস্থানে যায়, অর্থাৎ যাদের মাধ্যমে আধান স্থানান্তরিত হয় তাদেরকে আধান বাহক (Charge carrier) বলে। যেমন ইলেকট্রন হচ্ছে ঋণাত্মক আধান বাহক। কোনো চৌম্বক ক্ষেত্রে যখন পরিবাহীর মধ্য দিয়ে তড়িৎ প্রবাহিত হয় অর্থাৎ আধান বাহক চলে তখন আধান বাহকগুলো চৌম্বক বল লাভ করে, ফলে এগুলো তাদের গতিপথ থেকে বিচ্যুত হয়ে এক পাশে জমা হয়। এতে পরিবাহীর দুই পাশের মধ্যে বিভব পার্থক্য সৃষ্টি হয় । পরীক্ষালব্ধ উপাত্ত বিশ্লেষণ করে এই আধান বাহকের প্রকৃতি তথা চিহ্ন অর্থাৎ আধান বাহক ধনাত্মক না ঋণাত্মক এবং তাদের সংখ্যা ঘনত্ব (একক আয়তনে আধান বাহকের সংখ্যা) সম্পর্কে জানা যায়। এই প্রভাব থেকে চৌম্বকক্ষেত্রও পরিমাপ করা যায়। হল প্রভাব যখন আবিষ্কৃত হয় তখনও ইলেকট্রন আবিষ্কৃত হয়নি। ফলে তড়িৎ প্রবাহ যে ইলেকট্রনের প্রবাহ বিজ্ঞানীদের তা জানা ছিল না।

     সংজ্ঞা : কোনো তড়িত্বাহী পরিবাহীকে চৌম্বকক্ষেত্রে স্থাপন করলে তড়িৎ প্রবাহ ও চৌম্বকক্ষেত্র উভয়ের সাথে লম্ব বরাবর একটি বিভব পার্থক্যের সৃষ্টি হয় তথা ভোল্টেজ উৎপন্ন হয়। এ ঘটনাকে হল প্রভাব বলে ।

চিত্র : ৪.১২

 হল প্রভাবের সাহায্যে আধানের প্রকৃতি নির্ণয়

৪.১২ চিত্রে একটি পাতলা পাত আকৃতির পরিবাহী দেখানো হলো। এর মধ্য দিয়ে ধনাত্মক X অক্ষ বরাবর l তড়িৎ প্রবাহ চলছে। ধনাত্মক Y অক্ষ বরাবর একটি সুষম চৌম্বকক্ষেত্র B প্রয়োগ করা হলো। যদি আধান বাহক ইলেকট্রন হয়, তাহলে সেগুলো তড়িৎ প্রবাহের প্রচলিত দিকের বিপরীত দিকে অর্থাৎ ঋণাত্মক X-অক্ষ বরাবর গতিশীল হবে। ধরা যাক, এদের সঞ্চরণ (drift) বেগ v । এগুলো একটি চৌম্বক বল F লাভ করবে। ফ্লেমিঙের বামহস্ত সূত্রানুসারে (অনুচ্ছেদ ৪.৮) এ বলের দিক হবে ধনাত্মক Z-অক্ষ বরাবর অর্থাৎ ওপরের দিকে। সুতরাং ইলেকট্রনগুলো ওপরের দিকে বিক্ষিপ্ত হবে এবং ওপরের প্রান্তে এসে ইলেকট্রন জমা হবে, ফলে নিচের প্রান্তে অতিরিক্ত ধনাত্মক আধান জমা হবে [চিত্র ৪.১৩ ক]।

   পরিবাহীর দুই প্রান্তে বিপরীত জাতীয় আধান জমা হওয়ায় দুই প্রান্তে বিভব পার্থক্যের সৃষ্টি হবে এবং তড়িৎক্ষেত্রের উদ্ভব হবে। এই তড়িৎক্ষেত্র E দিক তথা তড়িৎ প্রাবল্যের দিক হবে ধনাত্মক আধান থেকে ঋণাত্মক আধানের দিকে অর্থাৎ পরিবাহীর নিচের প্রান্ত থেকে ওপরের প্রান্তের দিকে। এ তড়িৎক্ষেত্রের দরুন ঋণাত্মক আধান বাহক ইলেকট্রনগুলো তড়িৎক্ষেত্রের বিপরীত দিকে অর্থাৎ পরিবাহীর ওপরের প্রান্ত থেকে নিচের প্রান্তের দিকে বল লাভ করবে এবং নিচের প্রান্তের দিকে বিক্ষিপ্ত হতে চেষ্টা করবে। এতে ইলেকট্রনের উপর ক্রিয়াশীল চৌম্বক বল (Fm) এবং তড়িৎক্ষেত্রের জন্য সৃষ্ট তড়িৎ বল (Fe) পরস্পর বিপরীতমুখী হয়। এদের মান সমান হলে সাম্যাবস্থার সৃষ্টি হবে, ফলে ইলেকট্রনগুলো আর ওপরের দিকে বিক্ষিপ্ত হবে না। একটি ভোল্টমিটার দ্বারা পরিবাহীর দুই প্রান্তের বিভব পার্থক্য পরিমাপ করা যেতে পারে। এই বিভব পার্থক্যকে হল ভোল্টেজ বলা হয়।

চিত্র :৪.১৩

    আর আধান বাহক ধনাত্মক হলে সেগুলো প্রবাহের অভিমুখে অর্থাৎ ধনাত্মক X-অক্ষ বরাবর বেগে গতিশীল হবে [চিত্র ৪.১৩ খ]। ফ্লেমিঙের বামহস্ত সূত্রানুসারে (অনুচ্ছেদ ৪.৮) এগুলোও ঊর্ধ্বমুখী qv × B বল অনুভব করে। এর ফলে পরিবাহীর ওপরের প্রান্তে ধনাত্মক আধান জমা হবে এবং নিচের প্রান্তে অতিরিক্ত ঋণাত্মক আধান জমা হবে । সুতরাং এ ক্ষেত্রে পরিবাহীতে উদ্ভূত হল ভোল্টেজের চিহ্ন ইলেকট্রনের বিক্ষেপের ফলে উদ্ভূত হল ভোল্টেজের চিহ্নের বিপরীত হবে। সুতরাং হল ভোল্টেজের চিহ্ন থেকে আধান বাহুকের চিহ্ন তথা প্রকৃতি অর্থাৎ আধান বাহক ধনাত্মক না ঋণাত্মক তা জানা যায়।

     কোনো পদার্থের মধ্য দিয়ে ধনাত্মক X - অক্ষ বরাবর তড়িৎ প্রবাহ চালনা করে যদি ধনাত্মক Y-অক্ষ বরাবর একটি চৌম্বকক্ষেত্র প্রয়োগ করা হয়, তাহলে Z-অক্ষ বরাবর হল ভোল্টেজের বা বিভব পার্থক্যের উদ্ভব হবে। এখন ভোল্টমিটার বা পটেনশিওমিটার দ্বারা এই বিভব পার্থক্য পরিমাপ করলে যদি দেখা যায় ওপরের প্রান্তের বিভব নিচের প্রান্তের বিভবের চেয়ে বেশি তাহলে বুঝতে হবে আধান বাহক ধনাত্মক। আর যদি দেখা যায় পদার্থটির নিচের প্রান্তের বিভব ওপরের প্রান্তের চেয়ে বেশি তাহলে বুঝতে হবে আধান বাহক ঋণাত্মক। 

     সেমিকন্ডাক্টরে যেমন সিলিকন, জার্মেনিয়াম প্রভৃতিতে যে আধান বাহকের গতির জন্য তড়িৎ প্রবাহ চলে তা ধনাত্মক (হোল) বা ঋণাত্মক (ইলেকট্রন) উভয়ই হতে পারে। সুতরাং হল প্রভাব থেকে দেখা যায় যে, সেমিকন্ডাক্টরের ক্ষেত্রে দুই ধরনের আধান বাহকের জন্যই তড়িৎ প্রবাহ চলে।

   হল ভোল্টেজ : কোনো তড়িৎবাহী পরিবাহীকে চৌম্বকক্ষেত্রে স্থাপন করলে তড়িৎ প্রবাহ ও চৌম্বকক্ষেত্র উভয়ের সাথে লম্ব বরাবর যে বিভব পার্থক্যের সৃষ্টি হয় তথা ভোল্টেজ উৎপন্ন হয় তাকে হল বিভব পার্থক্য বা হল ভোল্টেজ বলে।

 

হল ভোল্টেজের রাশিমালা

   ৪.১২ চিত্রে একটি চ্যাপ্টা পাত আকৃতির পরিবাহী দেখানো হয়েছে। এর মধ্যদিয়ে ধনাত্মক X-অক্ষ বরাবর তড়িৎ প্রবাহ I চলছে । এর সমকোণে অর্থাৎ ধনাত্মক Y অক্ষ বরাবর একটি সুষম চৌম্বকক্ষেত্র B প্রয়োগ করা হলো।

ধরা যাক,

 A = পরিবাহীর প্রস্থচ্ছেদের ক্ষেত্রফল

 d = পরিবাহীর প্রস্থ অর্থাৎ এর ওপর ও নিচের এই দুই প্রাস্তের দূরত্ব

 t= পরিবাহীর পুরুত্ব

 B = চৌম্বকক্ষেত্র

 q = প্রতিটি আধান বাহকের আধান

 v = আধান বাহকের সঞ্চরণ বেগ

 n = পরিবাহীর প্রতি একক আয়তনে আধান বাহকের সংখ্যা

 I = তড়িৎ প্রবাহ 

 VH = হল ভোল্টেজ

 E = হল তড়িৎক্ষেত্র তীব্রতা বা প্রাবল্য

এখন আধান বাহকের উপর ক্রিয়াশীল চৌম্বক বল,

 Fm = qvB (যেহেতু v এবং B সমকোণে

:. θ = 90°)

আবার, পরিবাহীর দুই প্রান্তের বিভব পার্থক্য তথা তড়িৎক্ষেত্রের। আধান বাহকের ওপর তড়িৎ বল

Fe=qE=qVHd

সাম্যাবস্থায়,

Fm = Fe

qv B = qVHd

বা, VH = Bvd

    সুতরাং দেখা যায়, যদি পরিবাহীর প্রস্থ d এবং চৌম্বকক্ষেত্র জানা থাকে, তাহলে হল ভোল্টেজ VH আমরা আধান বাহকের সঞ্চরণ বেগ বের করতে পারি। পরিমাপ করে

  আবার, সঞ্চরণ বেগের সাথে তড়িৎ প্রবাহের সম্পর্ক হলো

 I = nA vq

Content added || updated By

Related Question

View More

Promotion