ফুলবাবু বাংলাদেশ থেকে চিকিৎসার উদ্দেশ্যে কোলকাতায় যান। তার বন্ধু রবিন তাকে দেখাশোনার কাজে সোমেনকে নিয়োজিত করে। রান্নাবান্না, ঘর গোছানো, বাজার করা, কোনো কাজে অলসতা নেই সোমেনের। আন্তরিকতার সাথে সে ফুলবাবুর সেবা যত্ন করে । দেশে ফেরার সময় হলে ফুলবাবু সোমেনকে সঙ্গে নিয়ে যেতে চাইলে সে বলে, “এ দেশ ছেড়ে আমি কোথাও যাবনা বাবু। খাই বা না খাই, দেশের মাটি আঁকড়ে পড়ে থাকতে চাই।”
গৃহকর্মী হিসেবে গ্রাম থেকে আসেন পাতার মা। ষোলো বছর যাবত সুমনাদের বাসায় প্রায় সবকাজ করেন তিনি। পাতার মা সুমনাকে মাতৃস্নেহে লালন-পালন করছেন। সুমনার মাও পাতার মাকে কাজের মানুষ নয় বরং পরিবারের একজন সদস্য হিসেবে গণ্য করেন। সুখে দুঃখে সুমনাদের পরিবারে জড়িয়ে আছেন তিনি। কেবল সুমনা নয় পরিবারের সবার প্রতিই তার স্নেহদৃষ্টি।
ইকরাম আহমেদ উনিশশো একাত্তর সালের একজন যুদ্দাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা। তার শরীরের ক্ষত শুকিয়ে গেলেও মনের ক্ষত শুকায়নি। চোখের সামনে নিজের বাড়িঘর পুড়ে যেতে দেখেছেন, হানাদার বাহিনী টেনে হিঁচড়ে নিয়ে গেছে স্ত্রী ও বোনকে। যুদ্ধ শেষে বিজয়ীবেশে তিনি ফিরেছেন, কিন্তু তাদের ফিরে পাননি। সেসব ঘটনা মনে হলে এখনও শিউরে ওঠেন তিনি।
(i) মনোরমা স্কুলের ম্যাগাজিনের জন্য একটি লেখা জমা দেয়। তার লিখিত বিষয়টি ছিল তথ্যবহুল ও সৃজনশীল। অতি দীর্ঘ না হলেও লেখাটিতে চিন্তনশীল মননের পরিচয় পাওয়া যায় । (ii) একটি কাহিনী লেখকের সাবলীল বর্ণনায় পাঠকের চোখে ভেসে উঠে বেশ কিছু চরিত্রের পদচারনায়। লেখকের সৃষ্টির মাঝে একাত্ম হয়ে মিশে যায় পাঠকের হৃদয়। জনপ্রিয় এই সাহিত্য মাধ্যমের দুর্বার আকর্ষণ রয়েছে ।
কামাল লেখাপড়া শেষ করে চাকরির জন্যে অনেক চেষ্টা করেও সফল হয় না। বন্ধু জামালকে সে দুঃখ করে বলে, “আমি যে কাজই করি, যেদিকেই হাঁটি— কেবল ব্যর্থতা আর ব্যর্থতা।” জবাবে জামাল বলে, “তোমার এই নৈরাশ্যের কারণ অমনোযোগ আর কুঁড়েমি।” প্রতিদিন কিছু না কিছু কাজ কর। বছর শেষে, এমনকি মাস শেষে তোমার কাজ দেখে তুমি নিজেই বিস্মিত হবে। জীবনকে ব্যবহার কর, দেখবে মৃত্যু হাজার জীবনের কীর্তির নিশান উড়িয়ে দিয়েছে।
চৈতন্যপুর গ্রামের প্রভাবশালী মতি মিয়া পাকিস্তানি বাহিনীর সাথে হাত মিলিয়ে গ্রামে হামলা চালায়। মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেয়া মানুষের ঘরবাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেয়। গ্রামের অধিকাংশ ঘর পুড়ে ছাই হয়ে যায়। গ্রামের সাহসী কিশোর সবুজ এই ঘটনা সহ্য করতে না পেরে মুক্তিবাহিনীতে যোগ দেয়। পরবর্তীতে সে সম্মুখযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে।
রীমা বিকেলে খেলতে গিয়ে পুকুর পাড়ে অজ্ঞান হয়ে পড়ে যায়। এ খবর শুনে তার মা অস্থির হয়ে পাড়া-প্রতিবেশিদের পরামর্শে তাকে ওঝার কাছে নিয়ে যায়। ওঝা ঝাড়-ফুক করে, পানি পড়া খাইয়ে তাকে বাড়ি পাঠিয়ে দেয়। খবর পেয়ে বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া বড় ভাই রাতুল বাড়ি এসে রীমাকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যেতে চাইলে মা বাধা দেয়। রাতুল মাকে বলে, তুমি এ যুগে এসেও ঝাড়-ফুকে বিশ্বাস কর। রীমা অসুস্থ, তাকে ডাক্তার দেখাতে হবে। এই বলে সে রীমাকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যায় ৷
"তিন বিয়ে করা ষাট বছর বয়সী গ্রামের ধনী গেরস্ত সকেট বেপারী পাপড়ির দরিদ্র বাবা-মায়ের মাছে বিয়ের প্রস্তাব দিলে তারা রাজি হয়ে যান। কিন্তু পাপড়ি তা না মেনে, স্কুলের বান্ধবী ও শিক্ষকের সহায়তায় বিয়ে বন্ধ করতে সক্ষম হয়। সকেট বেপারী কোনো প্রতিবাদ ছাড়াই এ ব্যাপারটিকে মেনে নেয়। এক্ষেত্রে তার কোনো প্রভাব প্রতিপত্তি কাজে আসেনা ।