Summary
সোনার তরী রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের একটি কাব্যগ্রন্থের নাম-কবিতা যা শতাধিক বছর ধরে আলোচনা ও নতুন ব্যাখ্যায় রূপান্তরিত হয়েছে। এটি বাংলার কবিতার ইতিহাসে একটি চিরায়ত আবেদন বহন করে।
কবিতায় একটি নিঃসঙ্গ কৃষককে দেখা যাচ্ছে, যে চারপাশের প্রবল স্রোতের মধ্যে দাঁড়িয়ে আছে একটি ধানক্ষেতে। কৃষকের আশঙ্কা বাড়ছে আকাশের গাঢ় মেঘ ও ভারী বর্ষণের কারণে। এ অবস্থায় এক মাঝি একটি সোনালী নৌকা নিয়ে নদীতে এসে কৃষকের সোনার ধান নিতে চায়। তবে মাঝির নৌকায় স্থান না হওয়ায় কৃষক হতাশ হয়ে পড়ে।
এ কবিতায় কবির জীবনদর্শন প্রকাশ পায়, যেখানে মহাকালের স্রোতে জীবনের অস্তিত্ব ভেসে গেলেও মানুষের সৃষ্ট সোনার ফসল চিরকাল টিকে থাকে। কবিতাটি মাত্রাবৃত্ত ছন্দে রচিত।
“সোনার তরী” রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘সোনার তরী' কাব্যগ্রন্থের নাম-কবিতা। শতাধিক বছর ধরে এ কবিতা বিপুল আলোচনা ও নানামুখী ব্যাখ্যায় নতুন নতুন তাৎপর্যে অভিষিক্ত। একই সঙ্গে, কবিতাটি গূঢ় রহস্য ও শ্রেষ্ঠত্বেরও স্মারক । মহৎ সাহিত্যের একটি বিশেষ গুণ হলো কালে কালে নতুন দৃষ্টিভঙ্গি ও বিবেচনার আলোকে তার শ্রেষ্ঠত্ব নিরূপিত হতে থাকে । বাংলা কবিতার ইতিহাসে “সোনার তরী” তেমনি আশ্চর্যসুন্দর এক চিরায়ত আবেদনবাহী কবিতা ।
কবিতাটিতে দেখা যায়, চারপাশের প্রবল স্রোতের মধ্যে জেগে থাকা দ্বীপের মতো ছোটো একটি ধানক্ষেতে উৎপন্ন সোনার ধানের সম্ভার নিয়ে অপেক্ষারত নিঃসঙ্গ এক কৃষক। আকাশের ঘন মেঘ আর ভারী বর্ষণে পাশের খরস্রোতা নদী হয়ে উঠেছে হিংস্র। চারদিকের ‘বাঁকা জল কৃষকের মনে সৃষ্টি করেছে ঘনঘোর আশঙ্কা ৷ এরকম এক পরিস্থিতিতে ওই খরস্রোতা নদীতে একটি ভরাপাল সোনার নৌকা নিয়ে বেয়ে আসা এক মাঝিকে দেখা যায়। উৎকণ্ঠিত কৃষক নৌকা কূলে ভিড়িয়ে তার উৎপাদিত সোনার ধান নিয়ে যাওয়ার জন্য মাঝিকে সকাতরে মিনতি জানালে ওই সোনার ধানের সম্ভার নৌকায় তুলে নিয়ে মাঝি চলে যায়। ছোট নৌকা বলে স্থান সংকুলান হয় না কৃষকের । শূন্য নদীর তীরে আশাহত কৃষকের বেদনা গুমড়ে মরে ।
এ কবিতায় নিবিড়ভাবে মিশে আছে কবির জীবনদর্শন । মহাকালের স্রোতে জীবন-যৌবন ভেসে যায়, কিন্তু বেঁচে থাকে মানুষেরই সৃষ্ট সোনার ফসল। তার ব্যক্তিসত্তা ও শারীরিক অস্তিত্বকে নিশ্চিতভাবে হতে হয় মহাকালের নিষ্ঠুর কালগ্রাসের শিকার।
“সোনার তরী” মাত্রাবৃত্ত ছন্দে রচিত। এর অধিকাংশ পক্তি ৮+৫ মাত্রার পূর্ণপর্বে বিন্যস্ত ।
Read more