পাঠ-পরিচিতি

একাদশ- দ্বাদশ শ্রেণি - বাংলা - সাহিত্যপাঠ | NCTB BOOK
11.5k
Summary

“অপরিচিতা” প্রথম প্রকাশিত হয় প্রমথ চৌধুরী সম্পাদিত মাসিক 'সবুজপত্র' পত্রিকার ১৩২১ বঙ্গাব্দের (১৯১৪) কার্তিক সংখ্যায় এবং পরে রবীন্দ্রগল্পের সংকলন ‘গল্পসপ্তক’ ও ‘গল্পগুচ্ছ’ তৃতীয় খণ্ডে অন্তর্ভুক্ত হয়।

গল্পে অপরিচিতা বিশেষণের আড়ালে মূলত কল্যাণী নামক নারীর শক্তিশালী ব্যক্তিত্ব প্রকাশিত হয়েছে। এ গল্পে যৌতুক প্রথার বিরুদ্ধে নারী ও পুরুষের সম্মিলিত প্রতিরোধের কাহিনি বলা হয়েছে। পিতা শম্ভুনাথ সেন এবং কন্যা কল্যাণীর স্বতন্ত্র দৃষ্টিভঙ্গির মাধ্যমে সমাজে যৌতুক প্রথার বিরোধিতার চিত্র তুলে ধরা হয়েছে।

গল্পটি উত্তম পুরুষে লেখা, যেখানে গল্পকার একজন যুবকের দৃষ্টিতে যুদ্ধসংলগ্ন সময়ের বাঙালি যুবকের দুর্বলতা এবং পরিবারতন্ত্রের কাছে তার অসহায়ত্ব ফুটে উঠেছে। শম্ভুনাথ সেনের কন্যার জন্য যৌতুকের সংকটের সময় পিতার প্রতিরোধ গল্পের মূল মুহূর্ত। গল্পের শেষে কল্যাণীর আত্মপ্রকাশ নতুন নারীর আগামীর প্রতীক হয়ে ওঠে।

“অপরিচিতা” নারীর প্রশংসা এবং পুরুষতন্ত্রের অমানবিকতার সমালোচনা করে। এটি একটি যুবকের আত্মবিবেচনার মাধ্যমে নারীর শক্তি তুলে ধরা হয়েছে।

“অপরিচিতা” প্রথম প্রকাশিত হয় প্রমথ চৌধুরী সম্পাদিত মাসিক ‘সবুজপত্র' পত্রিকার ১৩২১ বঙ্গাব্দের (১৯১৪) কার্তিক সংখ্যায়। এটি প্রথম গ্রন্থভুক্ত হয় রবীন্দ্রগল্পের সংকলন ‘গল্পসপ্তক’-এ এবং পরে, ‘গল্পগুচ্ছ’ তৃতীয় খণ্ডে (১৯২৭)।
“অপরিচিতা” গল্পে অপরিচিতা বিশেষণের আড়ালে যে বলিষ্ঠ ব্যক্তিত্বের অধিকারী নারীর কাহিনি বর্ণিত হয়েছে, তার নাম কল্যাণী । অমানবিক যৌতুক প্রথার নির্মম বলি হয়েছে এমন নারীদের গল্প ইতঃপূর্বে রচনা করেছিলেন রবীন্দ্রনাথ। কিন্তু এই গল্পেই প্রথম যৌতুক প্রথার বিরুদ্ধে নারী-পুরুষের সম্মিলিত প্রতিরোধের কথকতা শোনালেন তিনি। এ গল্পে পিতা শম্ভুনাথ সেন এবং কন্যা কল্যাণীর স্বতন্ত্রবীক্ষা ও আচরণে সমাজে গেড়ে-বসা ঘৃণ্য যৌতুকপ্রথা প্রতিরোধের সম্মুখীন হয়েছে। পিতার বলিষ্ঠ প্রতিরোধ এবং কন্যা কল্যাণীর দেশচেতনায় ঋদ্ধ ব্যক্তিত্বের জাগরণ ও তার অভিব্যক্তিতে গল্পটি সার্থক ।
“অপরিচিতা” উত্তম পুরুষের জবানিতে লেখা গল্প। গল্পের কথক অনুপম বিশ শতকের দ্বিতীয় দশকের যুদ্ধসংলগ্ন সময়ের সেই বাঙালি যুবক, যে বিশ্ববিদ্যালয়ের উচ্চতর উপাধি অর্জন করেও ব্যক্তিত্বরহিত, পরিবারতন্ত্রের কাছে অসহায় পুতুলমাত্র। তাকে দেখলে আজো মনে হয়, সে যেন মায়ের কোলসংলগ্ন শিশুমাত্র। তারই বিয়ে উপলক্ষ্যে যৌতুক নিয়ে নারীর চরম অবমাননাকালে শম্ভুনাথ সেনের কন্যা-সম্প্রদানে অসম্মতি গল্পটির শীর্ষ মুহূর্ত। অনুপম নিজের গল্প বলতে গিয়ে ব্যাঙ্গার্থে জানিয়ে দিয়েছে সেই অঘটন সংঘটনের কথাটি। বিয়ের লগ্ন যখন প্রস্তুত তখন কন্যার লগ্নভ্রষ্ট হওয়ার লৌকিকতাকে অগ্রাহ্য করে শম্ভুনাথ সেনের নির্বিকার অথচ বলিষ্ঠ প্রত্যাখ্যান নতুন এক সময়ের আশু আবির্ভাবকেই সংকেতবহ করে তুলেছে। কর্মীর ভূমিকায় বলিষ্ঠ ব্যক্তিত্বের জাগরণের মধ্য দিয়ে গল্পের শেষাংশে কল্যাণীর শুচিশুভ্র আত্মপ্রকাশও ভবিষ্যতের নতুন নারীর আগমনীর ইঙ্গিতে পরিসমাপ্ত।
‘অপরিচিতা’ মনস্তাপে ভেঙেপড়া এক ব্যক্তিত্বহীন যুবকের স্বীকারোক্তির গল্প, তার পাপস্খালনের অকপট কথামালা। অনুপমের আত্মবিবৃতির সূত্র ধরেই গল্পের নারী কল্যাণী অসামান্যা হয়ে উঠেছে। গল্পটিতে পুরুষতন্ত্রের অমানবিকতার স্ফুরণ যেমন ঘটেছে, তেমনি একই সঙ্গে পুরুষের ভাষ্যে নারীর প্রশস্তিও কীর্তিত হয়েছে।              

Content added By

# বহুনির্বাচনী প্রশ্ন

পাত্রীর পরিবারের সামাজিক মর্যাদার কারণে
পাত্রীর চেহারার জন্য
পাত্রীর শিক্ষার প্রতি আগ্রহের কারণে
পাত্রীর বয়স বেশি হওয়ায়
Promotion
NEW SATT AI এখন আপনাকে সাহায্য করতে পারে।

Are you sure to start over?

Loading...