পদার্থ ও পদার্থের অবস্থা

নবম-দশম শ্রেণি (মাধ্যমিক) - রসায়ন - পদার্থের অবস্থা | NCTB BOOK
1k
Summary

পদার্থ হল সেই বস্তুর যা নির্দিষ্ট ভর এবং জায়গা দখল করে। কক্ষ তাপমাত্রায় কিছু পদার্থ কঠিন, কিছু তরল এবং কিছু গ্যাসীয় অবস্থায় থাকে। উদাহরণস্বরূপ:

  • কঠিন: চিনি, খাদ্য লবণ, মারবেল
  • তরল: পানি, তেল, কেরোসিন
  • গ্যাসীয়: নাইট্রোজেন, অক্সিজেন, কার্বন ডাই-অক্সাইড

তাপমাত্রা পরিবর্তনের মাধ্যমে পদার্থের অবস্থান পরিবর্তন করা সম্ভব। নিম্নে পদার্থের বিভিন্ন অবস্থানের বৈশিষ্ট্য আলোচনা করা হল:

2.1.1 কঠিন পদার্থ (Solids):

কঠিন পদার্থের নির্দিষ্ট ভর, আকার এবং আয়তন থাকে। তাদের কণাগুলোর মধ্যে আন্তঃকণা আকর্ষণ বল বেশি, ফলে কণাগুলো কাছাকাছি থাকে এবং আকার পরিবর্তন হয় না। তাপ বাড়ালে আয়তন সামান্য বাড়ে।

2.1.2 তরল পদার্থ (Liquids):

তরল পদার্থের নির্দিষ্ট ভর ও আয়তন থাকে তবে আকার নির্দিষ্ট নয়। তারা পাত্রের আকার ধারণ করে। তরল কণাগুলোর মধ্যে আন্তঃকণা আকর্ষণ বল কঠিন পদার্থের চেয়ে কম। চাপ প্রয়োগ করলে আয়তন কমে না, তবে তাপ পেলে আয়তন বাড়ে।

2.1.3 গ্যাসীয় পদার্থ (Gases):

গ্যাসীয় পদার্থের নির্দিষ্ট ভর থাকে কিন্তু নির্দিষ্ট আকার বা আয়তন নেই। যে কোনো পাত্রে রাখলে গ্যাস পুরো পাত্রের আয়তন দখল করে। তাদের কণাগুলো অনেক দূরে থাকে, তাই আন্তঃকণা আকর্ষণ বল খুবই কম। চাপ প্রয়োগ করলে গ্যাসের আয়তন কমে যায় এবং ভাগ দিলে আয়তন বাড়ে।

যে বস্তুর নির্দিষ্ট ভর আছে এবং জায়গা দখল করে তাকে পদার্থ বলে। কক্ষ তাপমাত্রায় কোনো কোনো পদার্থ কঠিন, কোনো কোনো পদার্থ তরল আবার কোনো কোনো পদার্থ গ্যাসীয় অবস্থায় থাকে। যেমন–কক্ষ তাপমাত্রায় চিনি, খাদ্য লবণ, মারবেল ইত্যাদি কঠিন অবস্থায়; পানি, তেল, কেরোসিন ইত্যাদি তরল অবস্থায় এবং নাইট্রোজেন, অক্সিজেন, কার্বন ডাই-অক্সাইড ইত্যাদি গ্যাসীয় অবস্থায় অবস্থান করে। আবার, তাপমাত্রা পরিবর্তন করে একই পদার্থ কখনো কঠিন, কখনো তরল বা কখনো গ্যাসীয় অবস্থায় রূপান্তর করা যায়। নিচে কঠিন, তরল ও গ্যাসীয় পদার্থের কিছু ধর্ম এবং বৈশিষ্ট্য আলোচনা করা হলো।

2.1.1 কঠিন পদার্থ (Solids):
কঠিন পদার্থের নির্দিষ্ট ভর, নির্দিষ্ট আকার এবং নির্দিষ্ট আয়তন থাকে। সব পদার্থের কণাগুলোর মধ্যেই এক ধরনের আকর্ষণ বল থাকে। একে আন্তঃকণা আকর্ষণ বল বলা হয়। কঠিন পদার্থের কণাগুলোর মধ্যে আন্তঃকণা আকর্ষণ বল সবচেয়ে বেশি। এ কারণে কঠিন পদার্থের কণাগুলো খুব কাছাকাছি এবং নির্দিষ্ট অবস্থানে থাকে, ফলে কঠিন পদার্থের নির্দিষ্ট আকার হয়, কঠিন পদার্থের উপর চাপ প্রয়োগ করলে এরা সংকুচিত হয় না। আবার, তাপমাত্রা বাড়ালে কঠিন পদার্থের আয়তন খুবই কম পরিমাণ বৃদ্ধি পায়৷

2.1.2 তরল পদার্থ (Liquids):
তরল পদার্থের নির্দিষ্ট ভর ও নির্দিষ্ট আয়তন আছে কিন্তু নির্দিষ্ট কোনো আকার নেই। তরল পদার্থকে যে পাত্রে রাখা হয় তরল পদার্থ সেই পাত্রের আকার ধারণ করে। তরলের কণাগুলো কঠিন পদার্থের কণাগুলোর চেয়ে তুলনামূলকভাবে বেশি দূরত্বে থাকায় এদের মধ্যে আন্তঃকণা আকর্ষণ বল কঠিনের চেয়ে কম হয়। তরল পদার্থকে চাপ প্রয়োগ করলে এদের আয়তন হ্রাস পায় না। তবে এতে তাপ প্রয়োগ করলে তরল পদার্থের আয়তন বৃদ্ধি পায়। এই আয়তন বৃদ্ধির পরিমাণ কঠিন পদার্থের চেয়ে বেশি।

2.1.3 গ্যাসীয় বা বায়বীয় পদার্থ (Gases):
গ্যাসীয় পদার্থের নির্দিষ্ট ভর আছে কিন্তু নির্দিষ্ট আকার কিংবা নির্দিষ্ট আয়তন নেই। যেকোনো পরিমাণ গ্যাসীয় পদার্থ যেকোনো আয়তনের পাত্রে রাখলে গ্যাসীয় পদার্থ সেই পাত্রের পুরো আয়তন দখল করে। গ্যাসীয় পদার্থের কণাগুলো কঠিন ও তরলের চেয়ে অনেক বেশি দূরে দূরে অবস্থান করে বলে এদের আন্তঃকণা আকর্ষণ বল খুবই কম। গ্যাসীয় পদার্থের উপর সামান্য চাপ প্রয়োগ করলে গ্যাসীয় পদার্থের আয়তন অনেক কমে যায়। আবার, ভাগ প্রয়োগ করলে গ্যাসীয় পদার্থের আয়তন অনেক বেড়ে যায়।

Content added By
Promotion
NEW SATT AI এখন আপনাকে সাহায্য করতে পারে।

Are you sure to start over?

Loading...